বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর শহরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে নির্মীয়মান একটি অবকাঠামোগত সুবিধা প্রদানকারী উচ্চ প্রযুক্তিমূলক বাণিজ্যিক অঞ্চল। ১৯৯৯ সালে প্রথম এ ব্যাপারে আলোচনা শুরু হয়। এরপর প্রায় ১০ বছর এ ব্যাপারে কর্মকাণ্ড স্থগিত থাকে। ২০১০ সালে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যাপক কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব হ্রাস ও আর্থ-সামাজিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করে। বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি হল বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের প্রথম প্রকল্প। সব মিলিয়ে ৬টি প্রকল্প এখন নির্মাণাধীন আছে। বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি-র আদি নাম ছিল "কালিয়াকৈর হাইটেক পার্ক"। পরে ২০১৬ সালে এর নাম বদলে "বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটি" রাখা হয়। চালু হবার পরে এখানে বহু শত কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ, বহু শত কোটি ডলারের সফটওয়্যার রপ্তানি এবং হাজার হাজার যুবকের কর্মসংস্থান হবে বলে সরকার আশা করছে।

পরিকল্পনা ও বিনিয়োগ[সম্পাদনা]

বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে থাকবে বাংলাদেশের জাতীয় তথ্যভান্ডার বা জাতীয় ডেটা সেন্টার, যার নির্মাণ খরচ প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এখানে সামিট টেকনো পলিশ লিমিটেডের ৬০ হাজার বর্গফুটের শিল্প ভবন, যুক্তরাজ্য ভিত্তিক কোম্পানি ভাইব্রেন্ট সফটওয়্যারের ভবন, বাংলাদেশ টেকনো সিটি, ইত্যাদি ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। ২৬টি দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগকারী তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছে জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এখান থেকে তারা ল্যাপটপ (বহনযোগ্য কম্পিউটার), মোবাইল ফোন (বহনযোগ্য টেলিফোন), পিসি (ব্যক্তিগত কম্পিউটার) ও বিভিন্ন সহায়ক যন্ত্রাংশ (এক্সেসরিজ) তৈরি বা সংযোজন করবে।[১] ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে সাতটি কোম্পানিকে প্লট বরাদ্দের চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। আগামী ৪০ বছরের জন্য বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, টেকনোমিডিয়া লিমিটেড, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিমিটেড, সেলট্রোন ইলেক্ট্রো ম্যানুফ্যাকচারিং সার্ভিস লিমিটেড, উল্কাসেমি প্রাইভেট লিমিটেড, ম্যাকটেল লিমিটেড, চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন বিনিয়োগের সুযোগ পাবে। এরা হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, আইওটি, বিপিও, গবেষণা ও উন্নয়ন, ডাটা সেন্টার ইত্যাদি নিয়ে কাজ করবে।[২] নভেম্বর ২০২১ পর্যন্ত এখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ১২০.৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে এবং ৪৬০ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে ১২৬৪.৮৪ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ এবং ৪১ হাজার ২৬৯ জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। [৩]

উৎপাদন[সম্পাদনা]

এই হাইটেক সিটিতে ভাইব্র্যান্ট সফটওয়্যার (বিডি) লিমিটেড ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মোবাইল ফোন ব্র্যান্ড নকিয়া স্মার্টফোনের প্রথম লটের উৎপাদন শেষ করেছে।[৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. মো. মিন্টু হোসেন (আগস্ট ৪, ২০১৯), হাইটেক পার্কের প্রত্যাশা পূরণ কত দূর?, প্রথম আলো (ইন্টারনেট সংস্করণ) 
  2. "হাইটেক পার্ক পাচ্ছে ৫৫ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ, বাংলা ট্রিবিউন, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১"। ৫ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০২১ 
  3. বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটিতে ১২০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ, জাগো নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডটকম, ৬ নভেম্বর ২০২১
  4. "নকিয়ার কারখানায় উৎপাদন শুরু, আসছে শাওমিও, বাংলা ট্রিবিউন, ১২ অক্টোবর ২০২১"। ১২ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০২১ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]