লালচক্ষু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

লালচক্ষু
Common redeye Or Common Branded Redeye
ডানা বন্ধ অবস্থায়
ডানা খোলা অবস্থায়
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Arthropoda
শ্রেণী: Insecta
বর্গ: Lepidoptera
পরিবার: Hesperiidae
গণ: Matapa
প্রজাতি: M. aria
দ্বিপদী নাম
Matapa aria
(Moore, 1865)[১]
প্রতিশব্দ
  • Ismene aria Moore, [1866]
  • Hesperia neglecta Mabille, 1876

লালচক্ষু[২] (বৈজ্ঞানিক নাম: Matapa aria (Moore))[৩] এক প্রজাতির ছোট আকারের প্রজাপতি। এরা ‘হেসপেরায়িডি’ গোত্রের এবং 'হেসপেরায়িনি' উপগোত্রের সদস্য।[৪][৫][৬]

আকার[সম্পাদনা]

লালচক্ষু এর প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৪০-৫৫ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[৭]

বিস্তৃতি[সম্পাদনা]

ভারত (দক্ষিণ ভারত [মুম্বাই পর্যন্ত], পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরাঞ্চল থেকে সিকিম, অসম ও উত্তর-পূর্ব ভারত, আন্দামান) নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, দ: পূর্ব এশিয়ার বিস্তীর্ণ অংশ এর বিভিন্ন অঞ্চলে এদের পাওয়া যায়।[৮]

বর্ণনা[সম্পাদনা]

প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিষদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-

ডানার উপরিতল কালচে বাদামি ও দাগ-ছোপ হীন। সামনের ডানায় কোস্টা গোড়া থেকে ডানার দুই-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত মোটামুটি চওড়াভাবে লালচে হলুদ পটি যুক্ত। সিলিয়া উভয় ডানায় সাদা। পুরুষ প্রকারে সামনের ডানার গোড়ার খানিক বাইরের (সাব-বেসাল) অংশে সরু, সাদা, তির্যক ও সামান্য বক্র দাগ (brand) দেখা যায়।

ডানার নিম্নতল লালচে-হলুদ বা লালচে -বাদামি এবং দাগ-ছোপ হীন। পিছনের ডানায় টার্মিনাল প্রান্তে নিচের দিকে ধূসর বা ফ্যাকাশে হলুদ পাড় (fringe) চোখে পরে।

স্ত্রী ও পুরুষ প্রকার অনুরূপ, শুধুমাত্র পুরুষ প্রকারে উপরিউক্ত সাদা দাগ (brand) থাকে। শুঙ্গ সাদায়-কালোয় ডোরাকাটা; শীর্ষভাগ কালো ও শীর্ষবিন্দু কমলা। মাথা, বক্ষদেশ ও উদর উপরিতলে কালচে বাদামি ও নিম্নতলে লালচে বাদামি। চক্ষু গাঢ় লাল ও কালো চক্ষুতারা যুক্ত।[৮]

আচরণ[সম্পাদনা]

অতি সুলভ-দর্শন এই প্রজাতির উড়ান অন্যান্য স্কিপারদের ন্যায় খুব দ্রুত ও স্বল্পদৈর্ঘ্যের। এরা স্থানিক স্বভাব বিশিষ্ট (territorial habit); বারবার পূর্বের বসার জায়গায় ফিরে আসে। মূলত বাঁশঝাড় ও বাঁশবনের বাসিন্দা এই স্কিপারকে সকালের প্রথম ভাগে রোদ পোহাতে ও সক্রিয়ভাবে ওড়াউড়ি করতে এবং সায়াহ্নে (dusk) জঙ্গলের পথে বা জঙ্গলের কিনারায় ফাঁকা জায়গায় বসে থাকতে দেখা যায়। দিনের বাকি সময় এরা বাঁশবনের পাতার ঘেরাটোপে বা ঘন ঝোপঝাড়ের ভিতর অবস্থান করে। এরা পাতায়, ডালে, পাখির বিষ্ঠায় ও ভিজে মাটিতে বসে খ্যাদ্যরস আহরণ করে। এই স্কিপারদের মাঝেমধ্যে ফুলে বসে মধুপান করতেও দেখা যায়। অন্যান্য স্কিপার প্রজাতির মতো লালচক্ষুকে ডানা মেলে বসতে লক্ষ্য করা যায় না। জোহুরদের (Borbo cinnara) মতো, এই প্রজাতিও কোনো শুকনো বিষ্ঠায় নিজের মূত্র যোগ করে সেই ভিজা বিষ্ঠা থেকে রস আহরণ করে। বাঁশঝাড় যুক্ত জঙ্গল এদের প্রিয় বাসস্থান। পাহাড়ের পাদদেশ থেকে ৮০০ মি, উচ্চতা পর্যন্ত উপযুক্ত পরিবেশে বর্ষা কালের আগে ও বর্ষা চলাকালীন এদের বিচরণ চোখে পরে এবং বর্ষার ঠিক পরেই এদের প্রাচুর্য নজরে আসে। মধ্য হিমালয়ে ৮৪০ মি, পর্যন্ত জুন থেকে নভেম্বর এই প্রজাতির দর্শন মেলে। পশ্চিমবঙ্গের উ: ২৪ পরগনা জেলায় অক্টোবর মাসে প্রচুর সংখ্যায় লালচক্ষু প্রজাতির দেখা মেলে।[৯]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Matapa at Markku Savela's Lepidoptera and Some Other Life Forms
  2. A Pictorial Guide Butterflies of Gorumara National Park (2013 সংস্করণ)। Department of Forests Government of West Bengal। পৃষ্ঠা ৩০৪। 
  3. দাশগুপ্ত, যুধাজিৎ (২০০৬)। পশ্চিমবঙ্গের প্রজাপ্রতি (১ম সংস্করণ সংস্করণ)। কলকাতা: আনন্দ। পৃষ্ঠা ১৬৩। আইএসবিএন 81-7756-558-3 
  4. R.K., Varshney; Smetacek, Peter (২০১৫)। A Synoptic Catalogue of the Butterflies of India। New Delhi: Butterfly Research Centre, Bhimtal & Indinov Publishing, New Delhi। পৃষ্ঠা 54। আইএসবিএন 978-81-929826-4-9ডিওআই:10.13140/RG.2.1.3966.2164 
  5. W. H., Evans (১৯৪৯)। A Catalogue of the Hesperiidae from Europe, Asia, and Australia in the British Museum। London: British Museum (Natural History). Department of Entomology। পৃষ্ঠা 171–172। 
  6. Swinhoe, Charles (১৯১২–১৯১৩)। Lepidoptera Indica. Vol. X। London: Lovell Reeve and Co.। পৃষ্ঠা 330। |}}
  7. Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (ইংরেজি ভাষায়) (1st সংস্করণ)। নতুন দিল্লি: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ৯১। আইএসবিএন 978 019569620 2 
  8. Wynter-Blyth, M.A. (1957) Butterflies of the Indian Region, pg ৪৭৩.
  9. Kunte, Krushnamegh (২০১৩)। Butterflies of The Garo Hills। Dehradun: Samrakshan Trust, Titli Trust and Indian Foundation of Butterflies। পৃষ্ঠা ১৬।