ক্রীতদাস বাইবেল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
১৮০৭ সালে লন্ডনে প্রকাশিত দাসদের পড়ার জন্য মুদ্রিত একটি বাইবেলের প্রচ্ছদ পাতা

ক্রীতদাস বাইবেল বা দ্য স্লেভ বাইবেল হচ্ছে খ্রিস্টানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থের এমন এক সংস্করণ যা থেকে বাইবেলের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাদ দেয়া হয়েছিল।[১] মূলত দাস প্রথা টিকিয়ে রাখতে যেভাবে সংশোধন করা হয়েছিল। এর মাধ্যমে ক্রীতদাসদের খ্রীস্টধর্মে দীক্ষা দেয়া হতো। বাইবেলের যেসব কাহিনী তাদের আবার মুক্তির স্বপ্ন দেখাতে পারে, সেসব কাহিনী এই বই থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল।

বর্ণনা[সম্পাদনা]

দুশো বছরেরও বেশি সময় আগে প্রকাশিত বাইবেলের এই খন্ডিত সংস্করণের একটি দুর্লভ কপি ওয়াশিংটন ডিসির বাইবেল জাদুঘরে প্রদর্শিত হচ্ছে। বাইবেল জাদুঘরের মাটির নিচের কক্ষটিতে বাইবেলের সরু এই সংস্করণটি আলাদাভাবে চোখে পড়ে। ক্যারিবীয় অঞ্চলে ১৮৩৩ সালে দাস প্রথার বিলোপ ঘটানো হয়। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত ঐ অঞ্চলে ক্রীতদাস আনা অব্যাহত ছিল। ক্যারিবিয় অঞ্চলের ব্রিটিশ উপনিবেশ গুলোতে যে সকল আফ্রিকানদের ক্রীতদাস হিসেবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাদের পড়ানোর জন্য এই বাইবেল প্রকাশ করা হয়েছিল। সম্ভবত 'সোসাইটি ফর দি কনভার্সন এন্ড রিলিজিয়াস ইন্সট্রাকশন অব নিগ্রো স্লেভস ইন দ্য ব্রিটিশ ওয়েস্ট ইন্ডিজ নামে একটি ব্রিটিশ মিশনারী সংস্থার জন্য এই বাইবেলটি প্রকাশ করা হয়। ১৮০৮ সালে লন্ডন থেকে এই বাইবেল প্রকাশ করা হয়েছিল।[২] যার আগের বছরই কিনা ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ক্রীতদাস ব্যবসা নিষিদ্ধ করে আইন পাশ হয়।

বাদ দেয়া অংশ[সম্পাদনা]

নূতন নিয়মের ৫০ ভাগ, এবং পুরাতন নিয়মের ৯০ ভাগ এই বাইবেল থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল। বিশেষ করে স্বাধীনতা এবং মুক্তি সংক্রান্ত বিষয়গুলো এবং যাত্রাপুস্তকেরও অনেক অংশ।

যাত্রাপুস্তক অংশটিতে মূলত মিশরে ইসরাইলীদের অবরুদ্ধ দশা এবং শেষ পর্যন্ত প্রতিশ্রুত ভূমিতে তাদের মুক্তির কথা বলা আছে। ক্রীতদাস প্রথার শিকার হওয়া আফ্রিকানরা যে বাইবেলের এই অংশটির প্রতি আকৃষ্ট হতেন, তার ঐতিহাসিক কারণ ছিল। কারণ এই ইসরাইলীদের সঙ্গে তারা নিজেদের অনেক মিল দেখতে পেতো। কারণ তারাও অন্য একটি দেশে বন্দী অবস্থায় ছিলেন। তারাও মুক্তির স্বপ্ন দেখতেন। তারা ভাবতেন, আমরা যদি ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস রাখি, আমরাও একদিন মুক্তি পাব। ঈশ্বর আমাদের মুক্তি দেবেন।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Draper, Robert (ডিসেম্বর ২০১৮)। "The Bible Hunters"। National Geographic: 40–75। 
  2. Medders, Brandy (ডিসেম্বর ৩, ২০১৮)। "Fisk University Partners with the Museum of the Bible and the Smithsonian for Slave Bible Exhibition"Fisk University। ডিসেম্বর ১৫, ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ১৪, ২০১৮ 
  3. Martin, Michel (ডিসেম্বর ৯, ২০১৮)। "Slave Bible From The 1800s Omitted Key Passages That Could Incite Rebellion"NPR। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ১৪, ২০১৮