বাগধারা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বাগধারা শব্দের আভিধানিক অর্থ কথার বচন ভঙ্গি বা ভাব বা কথার ঢং। বাক্য বা বাক্যাংশের বিশেষ প্রকাশভঙ্গিকে বলা হয় বাগধারা। বিশেষ প্রসঙ্গে শব্দের বিশিষ্টার্থক প্রয়োগের ফলে বাংলায় বহু বাগধারা তৈরী হয়েছে। এ ধরনের প্রয়োগের পদগুচ্ছ বা বাক্যাংশ আভিধানিক অর্থ ছাপিয়ে বিশেষ অর্থের দ্যোতক হয়ে ওঠে।

যে পদগুচ্ছ বা বাক্যাংশ বিশিষ্টার্থক প্রয়োগের ফলে আভিধানিক অর্থের বাইরে আলাদা অর্থ প্রকাশ করে, তাকে বলা হয় বাগধারা[১]

বাগধারা ভাষাকে সংক্ষিপ্ত করে, ভাবের ইঙ্গিতময় প্রকাশ ঘটিয়ে বক্তব্যকে রসমধুর করে উপস্থাপন করে। এদিক থেকে বাগধারা বাংলা সাহিত্যের বিশেষ সম্পদ।

বাগধারা গঠনে বিভিন্ন শব্দের ব্যবহারকে শব্দের রীতিসিদ্ধ প্রয়োগও বলা হয়। একে বাগবিধিও বলা হয়ে থাকে।[২]

উদাহরণ[সম্পাদনা]

  • আ ক খ গ = প্রাথমিক জ্ঞান
  • হ য ব র ল = বিশৃঙ্খলা
  • উজানের কৈ = সহজলভ্য
  • ঝাকের কৈ = দলভুক্ত
  • টাকার গরম = অর্থের অহংকার
  • তামার বিষ = অর্থের কুপ্রভাব
  • তুলসী বনের বাঘ = ভন্ড
  • অকালকুষ্মান্ড = অপদার্থ
  • ইদুর কপালে = মন্দভাগ্য
  • আমড়া গাছি করা = তোষামুদে
  • কাপুড়ে বাবু = বাহ্যিক সভ্য
  • খিচুড়ি পাকানো = জটিল করা
  • গরজ বড় বালাই = প্রয়োজনে গুরুত্ব
  • ঘর থাকতে বাবুই ভেজা = সুযোগ থাকতে কষ্ট
  • চোখে সাতার পানি = অতিরিক্ত মায়াকান্না
  • ছেড়া চুলে খোপা বাধা = বৃথা চেষ্টা
  • দুধে ভাতে থাকা = সুখে থাকা
  • নাড়ির টান = গভীর মমত্ববোধ
  • পালের গোদা = দলপতি
  • পেটে পেটে বুদ্ধি= দুষ্ট বুদ্ধি
  • ব্যাঙের আধুলি = সামান্য অর্থ

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. রচনা সম্ভার, নবম-দশম শ্রেণি, শিক্ষাবর্ষ ২০১৬, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, বাংলাদেশ
  2. রচনা সম্ভার, নবম-দশম শ্রেণি, শিক্ষাবর্ষ ২০১১, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, ঢাকা, বাংলাদেশ