রূপকল্প ২০২১

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রতীক
স্বাধীনতার ৫০ বছর।

রূপকল্প ২০২১ (ভিশন ২০২১ নামেও পরিচিত) ছিল ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হওয়ার আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একটি নির্বাচনী ইশতেহার। এটি দেশের বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তীর বছরের জন্য বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক রূপরেখা হয়ে ওঠে। নীতিটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রযুক্তিগত আশাবাদের একটি নীতির প্রতীক হিসেবে এবং গণমাধ্যমের রাষ্ট্রীয় দমন, ইন্টারনেটের ক্রম অনুপ্রবেশ, অপর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের নীতি হিসেবে সমালোচিত হয়েছে।[১] ভিশন ২০২১ হল ২০২১ সালে এই জাতির কোথায় থাকা দরকার তার একটি বিবৃতি - যে বছরটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ তম বার্ষিকী চিহ্নিত করে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করাও এর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।

লক্ষ্য[সম্পাদনা]

এটির প্রধান লক্ষ্য হলো বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা যেখানে দরিদ্র্যতা সম্পূর্ণরূপে দূর হবে।[২][৩]

আরও অন্তর্ভুক্ত লক্ষ্যসমূহ :

  • ১. গণতন্ত্র ও কার্যকর সংসদ
  • ২. রাজনৈতিক কাঠামো, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ এবং জনগণের অংশগ্রহণ
  • ৩. আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সুশাসন এবং রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব এড়ানো
  • ৪. রাজনৈতিক সংস্কৃতির রূপান্তর
  • ৫. দুর্নীতি থেকে মুক্ত সমাজ
  • ৬. ক্ষমতায়ন এবং মহিলাদের জন্য সমান অধিকার
  • ৭. অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও উদ্যোগ
    • ক. মৌলিক চাহিদা মিলে
    • খ. জনসংখ্যা ও শ্রমশক্তি
    • গ. দারিদ্র্য বিমোচন
    • ঘ. খাদ্য ও পুষ্টি
    • ঙ. স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র
    • চ. শিক্ষা
    • ছ. শিল্প
    • জ. শক্তি নিরাপত্তা
    • ঝ. অবকাঠামোগত উন্নয়ন
    • ঞ. হাউজিং
    • ট. পরিবেশ
    • ঠ. পানি সম্পদ
  • ৮. বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের অবস্থান
    • ক. মুক্তি অর্জন
    • খ. সংস্কৃতি
    • গ. পররাষ্ট্র নীতি
    • ঘ. ভালো ধর্ম

ডিজিটাল বাংলাদেশ[সম্পাদনা]

ডিজিটাল বাংলাদেশ বলতে কম্পিউটারের ব্যাপক ব্যবহার বোঝায় এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চাকরির নিয়োগ এবং দারিদ্র্য নিরসনে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির কার্যকর ও উপযোগী ব্যবহারের আধুনিক দর্শনকে বাস্তবরূপে রূপায়িত করা বোঝায়। "ডিজিটাল বাংলাদেশ" এর সাফল্যের জন্য দলটি (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ) একটি পরিবর্তিত মনোভাব, ইতিবাচক চিন্তাভাবনা এবং উদ্ভাবনী ধারণা তুলে ধরে।

"ডিজিটাল বাংলাদেশ" এর দর্শনের মধ্যে রয়েছে জনগণের গণতন্ত্র নিশ্চিত করা এবং মানবাধিকার, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং সর্বোপরি প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশের নাগরিকদের সরকারী সেবা প্রদান নিশ্চিত করা, সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার সার্বিক উন্নতিই হচ্ছে চূড়ান্ত লক্ষ্য। এর মধ্যে রয়েছে কোন শ্রেণীর মানুষকে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বৈষম্য সৃষ্টি না করা।

"ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশন" এর চারটি উপাদানের উপর সরকার আরো জোর দিয়েছে, যা মানব সম্পদ উন্নয়ন, জনগণের অংশগ্রহণ, সিভিল সার্ভিস এবং ব্যবসায়ের তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ব্যবহার করে।[৪]

সমালোচনা[সম্পাদনা]

ডিজিটাল বাংলাদেশ এর প্রচারে বাংলাদেশের অনেকের মধ্যে সমালোচনা ও উপহাসের তৈরী হয়েছে।[৫][৬] সাধারণভাবে এটি বিশ্বাস করা হয় যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক ব্যবহৃত "ডিজিটাল" শব্দটি কোনও কাজ সহজেই এবং দ্রুত গোপনীয়তা ব্যবহার করে করা বোঝায়, এটি মুলত একটি লক্ষ্য বা একটি স্লোগান। যদিও চাকরি এবং আয় উৎপাদনের ক্ষেত্রে কিছু সুযোগ বিদ্যমান এবং অনলাইন তথ্যপ্রযুক্তি এবং অনলাইন তথ্য পরিষেবা কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী হাইব্রিড সেবা প্রদান করে আসছে, তবুও অর্থনীতিতে বেশ কিছুটা স্থিতিশীলতা রয়েছে।[১][৭] এই অভিযোগ করা হয় যে প্রকৃতপক্ষে, ২০১৫ পর্যন্ত তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়নি এবং অগ্রগতি ছিল ধীর গতির। উদাহরণস্বরূপ,সরকার ডিজিটালাইজড সিস্টেমের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়সহ দপ্তরগুলি চালানোর পরিকল্পনা করেছিল ঠিকই, কিন্তু জানুয়ারী ২০১৫ পর্যন্ত, পাবলিক অফিসগুলি ঠিক আগের মতই ফাইলিং সিস্টেমের মাধ্যমে সেবা প্রদান চালু রেখেছিল। যদিও মোবাইল ভিত্তিক অর্থ স্থানান্তর বা অনলাইন ব্যাংকিং গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং নগর থেকে গ্রামীণ এলাকায় অর্থ প্রবাহ বেড়েছে, তবুও ইলেকট্রনিক অর্থ লেনদেন এখনও পিছিয়ে রয়েছে। এই লেনদেনের পরিমাণ এখনও প্রতি মাসে মাত্র ৬ কোটি টাকা। "ডিজিটাল বাংলাদেশ" প্রকল্পের একটি অংশ ছিল সরকারের ওয়েবসাইটগুলির ব্যাপক ক্রমবিকাশ। ২০১২-এর আইসিটি স্কাইপ বিতর্কের ব্রেকআউট প্রকাশ করা হয়েছে যেখানে "বিদেশী মন্ত্রণালয়ের সমস্ত কর্মকর্তাদের আবাসিক ফোন নম্বর অনলাইনে পাওয়া গেছে"- এটা বলা হয়েছে। সরকারী প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের "ব্যক্তিগত ডাটা শীট" অনলাইনে প্রকাশ করেছে - যেখানে দেখা যায় যে বিভিন্ন রের্কড যা সংবেদনশীল যোগাযোগের তথ্য (পোস্টাল ঠিকানা, ই-মেইল এবং মোবাইল নম্বর সহ), তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, তাদের শিক্ষা বিবরণ এবং তাদের পিতামাতার বিস্তারিত বিবরণ এসব তথ্য রয়েছে।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Whither Digital Bangladesh?"The Khichuri। ২ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৫ 
  2. Government Policies: Vision 2021 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে (2012) Board of Investors, قBangladeshق (Accessed: 2012-05-23)
  3. [১]
  4. [২] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১১ আগস্ট ২০১৭ তারিখে (2012) প্রধান মন্ত্রীর দপ্তর (সংগৃহীত: ২০১৬-০৭-১৪)
  5. Das, Subir (৩০ জানুয়ারি ২০০৯)। "Digital Bangladesh"। ২ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৫ 
  6. "Choatic traffic management in 'digital' Bangladesh"। The Financial Express। The Financial Express। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০১৫ 
  7. Titumir, Rashed Al Mahmud; Roy, Nibedita; Hossain, Md. Nasir; Md. Adnan, Shahid (ফেব্রুয়ারি ২০১৩)। "Industrial Sector of Bangladesh: Status Quo or Re-Visioning?"। Bangladesh Economic Update4 (2)। 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]