শৈলবালা ঘোষজায়া
শৈলবালা ঘোষজায়া | |
---|---|
জন্ম | কক্সবাজার, বাংলা প্রেসিডেন্সি (বর্তমানে বাংলাদেশ) | ২ মার্চ ১৮৯৪
মৃত্যু | ২১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৪ আসানসোল, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত | (বয়স ৮০)
পেশা | লেখক |
জাতীয়তা | ব্রিটিশ ভারতীয় (১৮৯৪-১৯৪৭) ভারতীয় (১৯৪৭-১৯৭৪) |
সময়কাল | ১৯১৪-১৯৭২ |
ধরন | উপন্যাস, ছোটোগল্প |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | শেখ আন্দু |
দাম্পত্যসঙ্গী | নরেন্দ্রমোহন ঘোষ |
শৈলবালা ঘোষজায়া (২ মার্চ, ১৮৯৪ - ২১ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৪) একজন খ্যাতনামা বাঙালি সাহিত্যিক। বাংলায় বহু উপন্যাস, ছোটগল্প রচনা করেছিলেন তিনি।
প্রারম্ভিক জীবন
[সম্পাদনা]শৈলবালা পিতার কর্মস্থল বাংলাদেশের কক্সবাজারে জন্মগ্রহণ করেন। পরে পিতা, ডাক্তার কুঞ্জবিহারী নন্দী অবসর গ্রহণ করে বর্ধমান জেলায় চলে আসেন। তার বাল্যকাল বর্ধমানে অতিবাহিত হয়। ১৯০৭ সালে বর্ধমানের মেমারী গ্রামের নরেন্দ্রমোহন ঘোষের সাথে তার বাল্য বিবাহ হয়। তিনি বর্ধমান রাজ বালিকা বিদ্যালয়ের কৃতি ছাত্রী ছিলেন। পিতা ও জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার কাছে প্রাথমিক শিক্ষা পান। বিবাহের পরে লেখাপড়ার পরিবেশ ছিলনা কিন্তু তিনি লুকিয়ে রাত জেগে পড়তেন ও লিখতেন। শেখ আন্দু উপন্যাসটি লিখে স্বামীর হাত দিয়ে তিনি প্রবাসী পত্রিকায় পাঠান। এই রচনাটিই তাকে খ্যাতি এনে দেয়। বাংলা নারী প্রগতিশীল সাহিত্যে শৈলবালা ঘোষজায়া একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছেন।[১][২]
সাহিত্য ও সম্মান
[সম্পাদনা]১৩২১ বঙ্গাব্দে শৈলবালা শেখ আন্দু উপন্যাসটি লিখে প্রবাসী (পত্রিকা) তে পাঠালে সেটি পরের বছর প্রকাশিত হয় এবং বাংলা সাহিত্যজগতে আলোড়ন তোলে। এই আধুনিক চিন্তার উপন্যাসের নায়ক দরিদ্র মুসলিম ও নায়িকা হিন্দু। এই উপন্যাসের পর তিনি রক্ষণশীল সমাজের আক্রমণ ও সমালোচনার সম্মুখীন হন। কবিকঙ্কন চন্ডীর ওপর গবেষণামূলক প্রবন্ধ লিখে সরস্বতী উপাধি পান তিনি। শৈলবালা ঘোষজায়ার প্রকাশিত ৩৮ টি গ্রন্থ ছাড়াও বিভিন্ন মাসিকপত্রে উপন্যাস, আত্মজীবনী ছোটগল্প ইত্যাদি প্রকাশিত ও সমাদৃত হয়েছে। শিশুদের জন্যে রহস্য উপন্যাসও লিখেছেন তিনি। তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে নমিতা, জন্ম অপরাধী, জন্ম অভিশপ্তা, মঙ্গল মঠ, মনীষা, ইমানদার, মুচি, বিনির্ণয়, গঙ্গাজল, তেজস্বতী, চৌকো চোয়াল, জয়পতাকা, স্মৃতিচিহ্ন, অন্তরের পথে ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।[৩][৪] শ্বশুরগৃহে সাহিত্যচর্চা প্রায় নিষিদ্ধ ছিল, তার স্বামী নরেন্দ্রমোহন তার সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত নরেন্দ্রমোহন উন্মাদ রোগাক্রান্ত হয়ে যান ও তার আক্রমনে শৈলবালা নিজে এক চোখের দৃষ্টি হারান। স্বামী মারা গেলে তিনি একটি আশ্রমে থেকে লেখালিখি চালিয়ে গিয়েছিলেন দীর্ঘকাল অবধি।[২] তার সাহিত্যসেবার জন্যে নদীয়ার মানদ মন্ডলী তাকে 'সাহিত্য ভারতী' ও 'রত্নপ্রভা' উপাধি প্রদান করে। কলকাতার স্নাতক মহিলা সংস্থা ও সাহিত্যকার যৌথ উদ্যোগে লীলা মজুমদার এবং মহাশ্বেতা দেবীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সাহিত্যিক সম্বর্ধনা সভায় তাকে সম্মানিত করা হয়।[২][৩]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]শেষ জীবন তিনি পুরুলিয়া জেলার মুরারডির নিকট রামচন্দ্রপুর শ্মশানে বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী নামাঙ্কিত আশ্রমে কাটান। বিপ্লবী অন্নদাপ্রসাদ বা স্বামী অসীমানন্দের তৈরী এই আশ্রমে তিনি থাকতেন। ১৯৭৪ সালে মারা যান শৈলবালা ঘোষজায়া।[২]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "সংস্কৃতি যেখানে যেমন"। আনন্দবাজার পত্রিকা। ৭ মার্চ ২০১৫। ১৩ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৭।
- ↑ ক খ গ ঘ "শৈলবালা ঘোষজায়ার 'শেখ আন্দু'"। boishakhionline.com। ২৬ জুন ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৭।
- ↑ ক খ প্রথম খন্ড, সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু (২০০২)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৫২৯।
- ↑ "Title"। nationallibrary.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৭।