অশ্বগন্ধা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

অশ্বগন্ধা
Withania somnifera
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Plantae
বিভাগ: Tracheophyta
শ্রেণী: Magnoliopsida
বর্গ: Solanales
পরিবার: Solanaceae
গণ: Withania
প্রজাতি: Withania somnifera
দ্বিপদী নাম
Withania somnifera
(L.) Dunal
প্রতিশব্দ[১]
  • Physalis somnifera L.
  • Withania kansuensis Kuang & A. M. Lu
  • Withania microphysalis Suess.
ফুল
ফল

অশ্বগন্ধা একটি ভেষজ উদ্ভিদ।[২] এই গাছের পাতা সেদ্ধ করলে ঘোড়ার মূত্রের মতো গন্ধ বেরোয় বলে একে অশ্বগন্ধা বলা হয়ে থাকে। এই পাতার বৈজ্ঞানিক নাম ‘উইথানিয়া সোমনিফেরা (এল) ডুনাল’। আয়ুর্বেদে একে বলা হয় বলদা ও বাজিকরি। [৩] বা শীতকালীন চেরি [৪][৫]। যদিও এর পাতা সাধারণত আয়ুর্বেদ চিকিৎসা শাস্ত্রে ঔষধি হিসাবে ব্যবহৃত হয় তবুও এর ব্যবহার যে নিরাপদ এবং কোনো রোগের ঔষধে হিসেবে কার্যকর সে ব্যাপারে যথেষ্ট ডাক্তারি তথ্য নেই। [৫][৬]

বিবরণ[সম্পাদনা]

অশ্বগন্ধার মূল, পাতা, ফুল, ফল, ছাল, ডাল সবই ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করা হয়। ৩৫–৭৫ সেমি (১৪–৩০ ইঞ্চি) ক্রমবর্ধমান হয়ে গাছটি সাধারণত দুই-আড়াই হাত উঁচু হয় এবং শাখাবহুল থাকে। এতে ছোট ছোট মটরের মতো ফল হয়। ফুল ছোট, সবুজ এবং ঘণ্টা আকৃতির। ফল পাকলে কমলার মতো কিছুটা লাল হয়।[৭]

চাষ[সম্পাদনা]

অশ্বগন্ধা ভারতের শুষ্ক অঞ্চলের অনেক স্থানে চাষ করা হয়। এটি নেপাল, চীন [৮] এবং ইয়েমেনে পাওয়া যায়[৯] সূর্যালোক ও আংশিক ছায়া জায়গায় শুষ্ক পাথুরে মাটিতে এর উৎপাদন ভালো হয়। বসন্তকালে এর উৎপাদন সবথেকে ভাল হয়। [১০]

ভেষজ গুণ[সম্পাদনা]

  • শক্তিবর্ধক: এ গাছের রস শক্তিবর্ধক। পুরুষের শুক্রাণু বাড়াতে বেশ কার্যকর। অশ্বগন্ধার মূল ও পাতা স্নায়ুবিক বিভিন্ন রোগে উপশম আনে। দুধ ও ঘিয়ের সঙ্গে পাতা ফুটিয়ে খেলে শরীরে বল পাওয়া যায়। ইনসমনিয়ায় বা অনিদ্রায় ভুগলে অশ্বগন্ধা উত্তম ওষুধ হিসাবে কার্যকর হতে পারে।[১১]
  • ভালো ঘুমের জন্য অশ্বগন্ধা গুঁড়ো চিনিসহ ঘুমানোর আগে খাওয়া যেতে পারে। সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পেতে অশ্বগন্ধার মূল গুঁড়ো করে খাওয়া যেতে পারে। চোখের ব্যথা দূর করতে অশ্বগন্ধা বিশেষ উপকারী।
  • ক্রনিক ব্রংকাইটিসের ক্ষেত্রেও অশ্বগন্ধা একটি কার্যকর ওষুধ। অশ্বগন্ধার মূল অন্তর্ধুমে পুড়িয়ে (ছোট মাটির হাঁড়িতে মূলগুলো ভরে সরা দিয়ে ঢেকে পুনঃমাটি লেপে শুকিয়ে ঘুটের আগুনে পুড়ে নিতে হয়। আগুন নিভে গেলে হাঁড়ি থেকে মূলগুলো বের করে গুঁড়ো করে নিতে হয়) ভালো করে গুঁড়িয়ে নিয়ে আধা গ্রাম মাত্রায় একটু মধুসহ চেটে খেলে ক্রনিক ব্রংকাইটিসে উপকার হয়।
  • মানসিক ও শারীরিক দুর্বলতা, যেমন মাথা ঝিমঝিম করে ওঠা, সংজ্ঞাহীনতা, অবসাদ প্রভৃতি দূর করে অশ্বগন্ধা। মনোযোগ বাড়ায়। ক্লান্তি দূর করে সঞ্জীবনী শক্তি পুনরুদ্ধার করে।
  • অশ্বগন্ধার ফল অম্বল-অজীর্ন, পেট ফাঁপা এবং পেটের ব্যথা নিরাময় সহ যকৃতের জন্য ভীষণ উপকারী। হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে অশোধিত অশ্বগন্ধা গুঁড়ো বা পাউডার হজমে গোলমাল সৃষ্টি করে। এর ফলে তলপেটে ব্যথা উঠতে পারে। সুতরাং যাদের হজমশক্তি দুর্বল, তাদের অবশ্যই ভালো মানের অশ্বগন্ধা সেবন করতে হবে।
  • একটি বৃক্ষের দোকানটি স্টেমের খাঁটি অংশে ফিড করে, যা চেহারা এবং বাদামী রঙে রুক্ষ এবং লম্বা করে তোলে। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাতা শ্যাড হয় এবং উদ্ভিদ ধীরে ধীরে মারা যায়। [১২] কারমাইন লাল মাকড়সা মাইট ( Tetranychus urticae ) ভারতে উদ্ভিদের সবচেয়ে প্রচলিত কীটপতঙ্গ। [১৩] সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, এই উদ্ভিদ একটি আক্রমণকারী জন্য একটি নতুন জলাধার হোস্ট হিসাবে ভজনা করা হয়েছে mealybug প্রজাতি Phenacoccus solenopsis। [৫]

[১৪] টি অ্যাসানোলাইড, উপক্ষার এবং অসংখ্য সিটাইন্ডোসাইডগুলি বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। [৫] Withanolides গঠনের দিক একই রকম ginsenosides এর Panax Ginseng, লে somnifera, "ভারতীয় Ginseng" এর জন্য একটি সাধারণ নাম নেতৃস্থানীয়। [৫]

ঐতিহ্যগত ঔষধ[সম্পাদনা]

অশ্বগন্ধার শুকনো গাছের গুঁড়ো, শতাব্দী ধরে ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় ঔষধ ব্যবহার করা হয়েছে। [৫][৮] প্রধানত উদ্ভিদের সাথে ক্লিনিকাল গবেষণার আয়ুর্বেদিক ছাড়া, কোনও উচ্চমানের প্রমাণ নেই যে এটি কোনও ঔষধি সুবিধা প্রদান করে এবং প্রেসক্রিপশনযুক্ত ওষুধগুলির সাথে একে চিকিৎসকগণ কখনো এটি সেবনে উৎসাহিত করে না। [৫][৬][১৫] আসগগাঁওযুক্ত সম্পূরক খাদ্য তালিকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি বিক্রি করা হয়। তবে তাদের মাঝে এ ঔষটি নিয়ে কোনো প্রভাব আছে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়নি।[৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Withania somnifera (L.) Dunal"Tropicos। Missouri Botanical Garden। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রু ২০১২ 
  2. শিবকালী ভট্টাচার্য, আয়ুর্বেদাচার্য (১৯৭৬)। চিরঞ্জীব বনৌষধি। আনন্দ পাবলিশার্স (ভারত)। আইএসবিএন 9788170666066 
  3. "Withania somnifera (L.) Dunal"PROTA (Plant Resources of Tropical Africa / Ressources végétales de l’Afrique tropicale) [Online Database]। Gurib-Fakim A. and Schmelzer G. H.। ২০১৪-০৮-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৮-০৭ 
  4. "Withania somnifera"জার্মপ্লাজম রিসোর্স ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক (জিআরআইএন)কৃষি গবেষণা পরিসেবা (এআরএস), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-২৯ 
  5. "Ashwagandha"। Drugs.com। ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৭ আগস্ট ২০১৭ 
  6. "Ashwagandha"। MedlinePlus, US National Library of Medicine। ২৬ জুন ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  7. "Ashwagandha"। Drugs.com। ২ নভেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ 
  8. Pandit, S.; Chang, K.-W. (ফেব্রুয়ারি ২০১৩)। "Effects of Withania somnifera on the growth and virulence properties of Streptococcus mutans and Streptococcus sobrinus at sub-MIC levels": 1–8। ডিওআই:10.1016/j.anaerobe.2012.10.007পিএমআইডি 23142795 
  9. Hugh Scott & Kenneth Mason, Western Arabia and the Red Sea, Naval Intelligence Division: London 1946, p. 597 আইএসবিএন ০-৭১০৩-১০৩৪-X.
  10. Deni., Bown, (১৯৯৫)। Encyclopedia of herbs & their uses। RD Press। আইএসবিএন 0888503342ওসিএলসি 32547547 
  11. Pati, P. K.; Sharma, M. (২০০৯)। "Studies on leaf spot disease of Withania somnifera and its impact on secondary metabolites": 432–437। ডিওআই:10.1007/s12088-008-0053-yপিএমআইডি 23100743পিএমসি 3476785অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  12. Sharma, A.; Pati, P. K. (২০১১)। "First report of Withania somnifera (L.) Dunal, as a New Host of Cowbug (Oxyrachis tarandus, Fab.) In Plains of Punjab, Northern India" (pdf): 1344–1346। আইএসএসএন 1818-4952 
  13. Sharma, A.; Pati, P. K. (২০১২)। "First record of the carmine spider mite, Tetranychus urticae, infesting Withania somnifera in India" (pdf): 1–4। আইএসএসএন 1536-2442ডিওআই:10.1673/031.012.5001পিএমআইডি 22970740পিএমসি 3476950অবাধে প্রবেশযোগ্য 
  14. Sharma, A.; Pati, P. K. (২০১৩)। "First record of Ashwagandha as a new host to the invasive mealybug (Phenacoccus solenopsis Tinsley) in India": 59–62। ডিওআই:10.3157/021.123.0114 
  15. "Ashwagandha"। Memorial Sloan Kettering Cancer Center। ১৩ এপ্রিল ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১৮