দ্য ম্যান্ডারিন্স

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
১ম ইংরেজি ভাষার সংস্করণ
(প্রকাশন. ওয়াল্ড পাবলিশিং কোম্পানি)

দি ম্যান্ডারিন্স (ফরাসীঃ লে মাঁদারেঁ, Les Mandarins, বাংলাঃ শিক্ষিত অভিজাত) ১৯৫৪ সালে প্রকাশিত একটি ফরাসী উপন্যাস যার রচয়িতা ছিলেন ফরাসী নারী দার্শনিক সিমোন দ্য বোভোয়ার। সিমোন এই উপন্যাসের জন্যে 'প্রিক্স গনকোউর্ট' (ফরাসীঃ Prix Goncourt, প্রি গঁকুর) পুরস্কার লাভ করেন, পুরস্কারটি সর্বোৎকৃষ্ট এবং সৃজনশীল গদ্যশৈলীর জন্য দেওয়া হয় ১৯০৩ সাল থেকে আর সিমোন ১৯৫৪ সালেই পান পুরস্কারটি। দি ম্যান্ডারিন্স ইংরেজি ভাষায় প্রথম প্রকাশ পায় ১৯৫৬ সালে (লেওনার্ড এম. ফ্রেইডম্যান দ্বারা অনূদিত)। উপন্যাসটিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিক থেকে ১৯৫০ এর দশকের মধ্যভাগ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া কিছু ফরাসী বুদ্ধিজীবীর ব্যক্তিগত জীবন কাহিনী দেখানো হয়েছে। বইটির নাম নির্দেশ করে প্রাচীন চীনের শিক্ষিত অভিজাতদের। উপন্যাসটির চরিত্রগুলো একসময় উপলব্ধি করতে পারে যে তারা হচ্ছে ব্যর্থ 'শিক্ষিত অভিজাত' কারণ তারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে রাজনীতিতে জড়িয়ে যায়। সিমোনের লেখা অন্যান্য বিষয় যেমন নারীবাদ, অস্তিত্ববাদ এবং ব্যক্তিগত নৈতিকতা এই উপন্যাসের চরিত্রগুলোর মধ্যে পরিলক্ষিত হয় কারণ চরিত্রগুলো শুধু লেখাপড়া আর রাজনীতির মধ্যেই শুধু সীমাবদ্ধ থাকেনা তারা তাদের সম্পর্ক একজনের থেকে আরেকজনের মধ্যে স্থানান্তরিত হওয়া নিয়েও অনেক কাজ করে। ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক এবং দার্শনিক 'আইরিস মার্ডক' (ব্রিটেনের 'সানডে টাইমস' পত্রিকায়) দি ম্যান্ডারিন্সকে একটি অসাধারণ উপন্যাস, উঁচুমানের এবং সাহসী বলে আখ্যা দেন এটার সঠিকতা এবং প্রীতিসঞ্চারক স্থির গাম্ভীর্যতার কারণে।[১] অনেকে মনে করে উপন্যাসটি লিখিত হয়েছে জঁ-পল সার্ত্র্‌, আলবেয়ার কামু ও সিমোনের নিজের সম্পর্ক নিয়ে যদিও সিমোন তা স্বীকার করেননি, এবং উপন্যাসের ঘটনাগুলোর সঙ্গে তাদের জীবনের মিল পাওয়া যায়।

চরিত্রসমূহ[সম্পাদনা]

  • হেনরি পেরন (আলবেয়ার কামুর চিত্রায়ন মনে করা হয়) হচ্ছেন বামপন্থী সংবাদপত্র এল'এসপয়ের এর সম্পাদক। ইনি গত দশ বছর ধরে পলা'র সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে লিপ্ত আছেন। এর আগে ভালোবাসায় ছিলেন, এখন অসুখীভাবে লেগে আছেন। হেনরি প্রাথমিকভাবে নিজেকে একজন লেখক হিসেবে দেখেন এবং রাজনৈতিক জগতে তার বাড়ন্ত সম্পৃক্ততা নিয়ে সংগ্রাম করছেন।
  • রবার্ট ডুবরেউইল (জঁ-পল সার্ত্র্‌ এর চিত্রায়ন মনে করা হয়) 'এসআরএল' নামের একটি উদারবাদী অসাম্যবাদী রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নেতা। তিনি হেনরির লেখনীর সাফল্যের জন্য কিছুটা কৃতিত্ব বহন করেন এবং তারা দুজনই ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
  • এ্যানি ডুবরেউইল (সিমোন দ্য বোভোয়ার এর নিজের চরিত্রই মনে করা হয়) হচ্ছেন রবার্টের পত্নী। তিনি একজন পেশাদার মনোবিশ্লেষক। ইনার মার্কিন লেখক 'লুই ব্রোগান' এর সঙ্গে প্রেম চলে। অন্যান্য চরিত্রগুলোর জীবনে এ্যানির প্রতিফলন খুব ভালোভাবেই অন্তর্ভুক্ত হয়।
  • পলা মারেউইল হচ্ছেন হেনরির প্রেমিকা। সে হেনরিকে মনে প্রাণে ভালোবাসে, তার সাথে হেনরির মতবিরোধ থাকা সত্ত্বেও, এবং পরে বিতৃষ্ণা এবং বিরক্তিভাব থাকা সত্ত্বেও। পলা পরে তীব্র বিভ্রম এবং মস্তিষ্কবিকৃতিতে ভোগে এই সম্পর্কের জন্যে এবং পরে বাধ্য হয় চিকিৎসাসেবা নিতে।
  • ন্যাডাইন ডুবরেউইল হচ্ছেন এ্যানি আর রবার্টের মেয়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময় জার্মান নাটশি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ন্যাডাইনের প্রেমিক 'ডিয়েগো' মারা যায় এবং এ নিয়ে সে সবসময় ভীত থাকে। উপন্যাসের শুরুতে দেখানো হয় যে এই মেয়েটি হেনরির সঙ্গে প্রেম করেছে এবং পরে বিয়ে করেছে এবং একটি বাচ্চা জন্ম দিয়েছে।
  • লুই ব্রোগান (মার্কিন লেখক নেলসন এ্যালগ্রেন এর চিত্রায়ন ধরা হয়) হচ্ছেন একজন মার্কিন লেখক যার সঙ্গে এ্যানির সম্প্রসারিত প্রেমের সম্পর্ক চলছে।
  • স্ক্রিএ্যাসাইন - ব্রিটিশ ইতিহাসবেত্তা ড্যাভিড কেসারানির লেখা বই আর্থার কোয়েস্টলারঃ দি হোমলেস মাইন্ড (১৯৯৮) এর আর্থার কোয়েস্টলারের (১৯০৫ - ১৯৮৩) চরিত্রটি স্ক্রিএ্যাসাইনকে নির্দেশ করে বলে মনে করা হয় যিনি ছিলেন একজন হাঙ্গেরীয়-ব্রিটিশ লেখক এবং সাংবাদিক।[২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Quote printed on the back cover of The Mandarins (Harper Perennial Modern Classics). Amazon.co.uk.
  2. Cesarani, David, 1998. Arthur Koestler: The Homeless Mind, p. 278.

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

  • Mim Udovitch, "Hot and Epistolary", The New York Times, 6 December 1998 — review of De Beauvoir's A Transatlantic Love Affair: Letters to Nelson Algren, and the facts behind that plot line of the novel.