বউচি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বউচি বাংলাদেশের একটি গ্রামীণ ও ঐতিহ্যবাহী খেলা।[১]

খেলার পদ্ধতি[সম্পাদনা]

বউচি খেলায় দুইটি দলের প্রয়োজন হয়। প্রত্যেক দলে ৮ থেকে ১০ জন করে খেলোয়াড় হলে খেলা জমে। মাঠ অথবা বাড়ির উঠোন যেখানে খুশি সেখানে এই খেলা যায়। খেলার প্রারম্ভে ২০-২৫ ফুট দূরত্বে মাটিতে দাগ কেটে দুটি ঘর তৈরি করতে হয়। দুই দলের মধ্যে যারা প্রথমে খেলার সুযোগ পায় তাদের মধ্যে থেকে একজনকে বউ বা বুড়ি নির্বাচন করা হয়। দুটি ঘরের মধ্যে একটি ঘর হবে বড়, যেখানে এক পক্ষের বউ বাদে সব খেলোয়াড় থাকবে। আর ছোট ঘরে দাঁড়াবে বউ। ছোট ঘরটিকে বউঘর বা বুড়িঘর বলে। বউয়ের বিচক্ষণতার ওপর খেলার জয় পরাজয় নির্ভর করে। খেলায় বউঘর থেকে বউকে ছুটে আসতে হবে বড় ঘরটিতে। বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়েরা সব সময় পাহারায় থাকে যেন বউ ঘর থেকে বের হতে না পারে। বউ বাইরে এলে যদি বিপক্ষ দলের কেউ তাকে ছুঁয়ে দেয় তাহলে ওই পক্ষের খেলা শেষ হয়ে যায়।

পরবর্তীতে বিপক্ষ দল খেলার সুযোগ পায়। বড় ঘরটিতে যারা থাকে তারা দম নিয়ে বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের তাড়া করে। দম নিয়ে তাড়া করলে বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়রা দিগ্বিদিক ছুটে পালায়। তা সত্তে ও সবসময় খেয়াল রাখে বউ যেন যেতে না পারে। দম নিয়ে যাওয়া খেলোয়াড় যদি বিপক্ষ দলের কাউকে ছুঁয়ে দেয় তবে সে খেলোয়াড় মারা পড়ে। মারা পড়া খেলোয়াড় চলতে থাকা খেলায় অংশ নিতে পারে না। এভাবে বিপক্ষ দলের খেলোয়াড় মেরে বউকে বড় ঘরে ফিরে আসতে সুযোগ করে দেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে বউয়ের সঙ্গী খেলোয়াড়েরা। বউ যদি বিনা ছোঁয়ায় বড় ঘরে চলে আসতে পারে তাহলে বিজয় অর্জন হয়। বিজয়ী দল পুনরায় খেলা শুরু করবে। যদি বউকে বিপক্ষ দল ছুঁয়ে দেয় তাহলে বিপক্ষ দল খেলার সুযোগ পাবে। এভাবে পর্যায়ক্রমে খেলা চলতে থাকে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. বাংলাদেশের খেলাধুলা, রশীদ হায়দার, বাংলা একাডেমী