লক নেস দানব

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লক নেস দানব
দলক্রিপটিড
উপ দলহৃদের দানব
সর্বপ্রথম উল্লিখিত৫৬৫ (অতীত পর্যালোচনায়),[ক]
1802 (chronologically)[২]
সর্বশেষ উল্লিখিত২০১৩ [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
অন্যান্য নাম(সমূহ)নেসী, নিসাগ, "নেসীটারাস হোমবোপটেরেক্স"
দেশস্কটল্যান্ড
অঞ্চললক নেস
আবাসজলাশয়

লক নেস দানব হলো একটি ক্রিপটিড (প্রাণী যাদের অস্তিত্ত্বের কথা শোনা যায় কিন্তু বৈজ্ঞানীক কোন প্রমাণ নেই[৩])। জনশ্রুতি অনুসারে, এটি স্কটল্যান্ডের লক নেসে বসবাসকারী অনেক বড় অদ্ভুত প্রাগৈতিহাসিক ড্রাগণ আকৃতির পাখাওয়ালা একটি প্রাণী। বিভিন্ন সময় যদিও এর ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা পাওয়া যায় তবে এটি স্কটল্যান্ড ও এর আশেপাশের হৃদের অন্যান্য রহস্যময় দানবদের যে বর্ণনা পাওয়া যায় তার সাথে অনেকটা মিলে যায় বলে মনে করা হয়। এ প্রাণী এর অস্তিত্ব সম্পর্কে বিশ্বাস ও মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সূত্র ধরে, এটি প্রথম ১৯৩৩ সালে বিশ্ববাসীর নজড়ে আসে। অনেক বিতর্কিত ফোটোগ্রাফিক উপাদান এবং অস্তিত্ত্বের প্রমাণ সম্পর্কে অপর্যাপ্ত তথ্যের জন্য এ প্রাণীটিকে অনেকেই কাল্পনিক প্রাণী বলে মনে করে থাকেন।

সাধারণ বিশ্বাস অনুসারে কোন প্রাণীর এতো দীর্ঘ সময় পৃথীবিতে টিকে থাকা সম্ভব নয় ও হৃদের গভীরে সর্যালোক প্রবেশ না করার কারণে এটিকে নিছক একটি গুজব বলে মনে করা হয়।[৪] বৈজ্ঞানীক সম্প্রদায়, এটিকে অধুনিককালের পুরাণ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।[৫] তবে এগুলো বাদ দিয়ে, লেক নেসের দানব পৃথিবীর অন্যতম রহস্য বলে বিবেচিত। ১৯৪০-এর দশক[৬] থেকে কিংবদন্তি এ দানবটিকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে ডাকা হয়ে থাকে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, নেসী (স্কটিশ নিসাগ থেকে এর উৎপত্তি)।[খ][৭] ক্রিপ্টোজুলজিতে (রহস্যময় প্রাণী সম্পর্কিত বিজ্ঞান) বিগফুট, ইয়েতি, সাসকুয়াচের মতো রহস্যঘেরা প্রাণীদের পাশাপাশি নেসীও স্থান করে নিয়েছে।

ব্যুৎপত্তি[সম্পাদনা]

লক নেস

সর্বপ্রথম ১৯৩৩ সালের ২রা মে অ্যালেক্স ক্যামপবেল নামক একজন জলভূমির গোমস্তা, পার্ট-টাইম সাংবাদিক ইনভার্নেস কোরিয়ারের এক প্রতিবেদনে ইংরেজি মোনস্টার (দানব) শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন।[৮][৯][১০] ৪ঠা আগস্ট ১৯৩৩ সালে কোরিয়ারম, লন্ডনের জর্জ পাইচার নামের এক ব্যক্তির বরাত দিয়ে একটি সম্পূর্ণ সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে তাতে উল্লেখ করা হয়, তিনি ও তার স্ত্রী একদিন দেখেন একটি ড্রাগন আকৃতির বা প্রাগৈতিহাসিক প্রাণী তার মুখে একটি জন্তু নিয়ে রাস্তা পার হয়ে হৃদের দিকে যাচ্ছে।[১১] এরপর থেকে উক্ত কোরিয়ারের অফিসে বিভিন্ন সময় অনেক চিঠি আসতে থাকে যাতে ব্যক্তিগতভাবে বা পারিবারিকভাবে লক নেসের রহস্যময় প্রাণটি দেখতে পাওয়ার কথা দাবি করা হয়।[১২] শীঘ্রিই কাহিনীটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং এটিকে দানব মাছ, জলদানব বা ড্রাগন বিভিন্ন নামে অবহিত করা হয়[১৩]; এভাবেই লক নেস দানব কথাটি জনপ্রিয় হয়।[১৪] ৬ই ডিসেম্বর ১৯৩৩ সালে হাগ গ্রে নামে একজন প্রথম প্রাণীটির একটি ছবি প্রকাশ করেন ও এটি ডেইলি এক্সপ্রেসে প্রকাশিত হয়েছিল।[১৫] এর পরপরই স্কটল্যান্ডের রাষ্ট্রপ্রধান প্রাণটির উপর কোন ধরনের আক্রমণ প্রতিরোধের জন্য পুলিসকে দায়িত্ব দেন ও রহস্যময় প্রাণীটি সরকারি মর্যাদা লাভ করে।[১৬] ১৯৩৪ সালে লন্ডনের একজন সার্জন একটি ছবি প্রকাশ করেন যা সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয় ও এটি সার্জনের আলোকচিত্র নামে পরিচিত।[১৭] একই বছর আর.টি. গোড একটি বই প্রকাশ করেন যেখানে লেখকের ব্যক্তিগত তদন্ত ও ১৯৩৩-এর পূর্বের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ব্যাখা দেওয়া হয়। অন্যান্য লেখকেরাও পরবর্তীকালে বিভিন্ন বই প্রকাশ করেন ও দাবি করে প্রাণটি ষষ্ঠ শতাব্দির দিকেও দেখা গিয়েছিল।

পদটীকা[সম্পাদনা]

টীকা
  1. The date is inferred from the oldest written source reporting a monster near Loch Ness.[১]
  2. Derived from "Loch Ness". Also a familiar form of the girl's name Agnes, relatively common in Scotland, e.g. the Daily Mirror 4 August 1932 reports the wedding of "Miss Nessie Clark, a Banffshire schoolteacher"
তথ্যসূত্র
  1. Life of St. Columba (chapter 28).
  2. Delrio, Martin (২০০২)। The Loch Ness Monster। New York City: Rosen Publishing Group। পৃষ্ঠা 48আইএসবিএন 0-8239-3564-7 
  3. Carroll, Robert T. (09-02-23)। "Cryptozoology"। The Skeptic's Dictionary। সংগ্রহের তারিখ 2009-04-12  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  4. A. G. Harmsworth (২০০৯)। Loch-ness.org says the Plesiosaur theory is "Without doubt (the) most popular candidate among monster believers and the press".। ৩০ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মার্চ ২০১৪ 
  5. Robert Todd Carroll, The Skeptic's Dictionary: A Collection of Strange Beliefs, Amusing Deceptions, and Dangerous Delusions pages 200–201 (John Wiley & Sons, Inc., 2003). আইএসবিএন ০-৪৭১-২৭২৪২-৬
  6. "Up Again"। Edinburgh Scotsman। ১৪ মে ১৯৪৫। পৃষ্ঠা 1। So "Nessie" is at her tricks again. After a long, she has by all accounts bobbed up in home waters... 
  7. Campbell, Elizabeth Montgomery & David Solomon, The Search for Morag (Tom Stacey 1972) আইএসবিএন ০-৮৫৪৬৮-০৯৩-৪, page 28 gives an-t-Seileag, an-Niseag, a-Mhorag for the monsters of Lochs Shiel, Ness and Morag, adding that they are feminine diminutives
  8. The Sun 27 November 1975: I'm the man who first coined the word "monster" for the creature.
  9. R. Binns The Loch Ness Mystery Solved pp 11–12
  10. Inverness Courier 2 May 1933 "Loch Ness has for generations been credited with being the home of a fearsome-looking monster"
  11. "Is this the Loch Ness monster?"। Inverness Courier। ৪ আগস্ট ১৯৩৩। 
  12. R. Binns The Loch Ness Mystery Solved pp 19–27
  13. Daily Mirror, 11 August 1933 "Loch Ness, which is becoming famous as the supposed abode of a dragon..."
  14. The Oxford English Dictionary gives 9 June 1933 as the first usage of the exact phrase Loch Ness monster
  15. R. P. Mackal (1983) "The Monsters of Loch Ness" p.94
  16. Daily Mirror 8 December 1933 "The Monster of Loch Ness – Official! Orders That Nobody is to Attack it" ... A Huge Eel?"
  17. Gould, Rupert T. (১৯৩৪)। The Loch Ness Monster and Others। London: Geoffrey Bles। 

গ্রন্থপঞ্জি[সম্পাদনা]

  • Bauer, Henry H. The Enigma of Loch Ness: Making Sense of a Mystery, Chicago, University of Illinois Press, 1986
  • Binns, Ronald, The Loch Ness Mystery Solved, Great Britain, Open Books, 1983, আইএসবিএন ০-৭২৯১-০১৩৯-৮ and Star Books, 1984, আইএসবিএন ০-৩৫২-৩১৪৮৭-৭
  • Burton, Maurice, The Elusive Monster: An Analysis of the Evidence from Loch Ness, London, Rupert Hart-Davis, 1961
  • Campbell, Steuart. The Loch Ness Monster – The Evidence, Buffalo, New York, Prometheus Books, 1985.
  • Dinsdale, Tim, Loch Ness Monster, London, Routledge & Kegan Paul, 1961, SBN 7100 1279 9
  • Harrison, Paul The encyclopaedia of the Loch Ness Monster, London, Robert Hale, 1999
  • Gould, R. T., The Loch Ness Monster and Others, London, Geoffrey Bles, 1934 and paperback, Lyle Stuart, 1976, আইএসবিএন ০-৮০৬৫-০৫৫৫-৯
  • Holiday, F. W., The Great Orm of Loch Ness, London, Faber & Faber, 1968, SBN 571 08473 7
  • Mackal, Roy P., The Monsters of Loch Ness, London, Futura, 1976, আইএসবিএন ০-৮৬০০৭-৩৮১-৫
  • Whyte, Constance, More Than a Legend: The Story of the Loch Ness Monster, London, Hamish Hamilton, 1957

তথ্যচিত্র[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]