হাভিয়ের পেরেস দে কুয়েইয়ার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(হাভিয়ের পেরেজ ডে কুয়েইয়ার থেকে পুনর্নির্দেশিত)
হাভিয়ের পেরেস দে কুয়েইয়ার
১৯৮২ সালে হাভিয়ের পেরেস দে কুয়েইয়ার
৫ম জাতিসংঘের মহাসচিব
কাজের মেয়াদ
১ জানুয়ারি ১৯৮২ – ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯১
পূর্বসূরীকার্ট ওয়াল্ডহেইম
উত্তরসূরীবোত্রোস বোত্রোস গালি
পেরুর ১৩৭তম প্রধানমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২২ নভেম্বর ২০০০ – ২৮ জুলাই ২০০১
রাষ্ট্রপতিভ্যালেন্টিন প্যানিয়াগুয়া
পূর্বসূরীফেদারিকো সালাস
উত্তরসূরীরবার্তো ডানিনো জাপাতা
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মহাভিয়ের ফেলিপে রিকার্দো পেরেস দে কুয়েইয়ার ই দে লা গের্‌রা
(১৯২০-০১-১৯)১৯ জানুয়ারি ১৯২০
লিমা, পেরু
মৃত্যু৪ মার্চ ২০২০(2020-03-04) (বয়স ১০০)
লিমা, পেরু
দাম্পত্য সঙ্গীভেট রবার্ট (১৯২২-২০১৩)
মার্সেলা টেম্পল সেমিনারিও (১৯৩৩–২০১৩)

হাভিয়ের ফেলিপে রিকার্দো পেরেস দে কুয়েইয়ার ই দে লা গের্‌রা (স্পেনীয়: Javier Felipe Ricardo Pérez de Cuéllar y de la Guerra; জানুয়ারি ১৯, ১৯২০ – মার্চ ৪, ২০২০) ছিলেন একজন পেরুর রাজনীতিবিদ ও কুটনীতিক। তিনি ১৯৮২ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত জাতিসংঘের ৫ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯৫ সালে পেরুর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে আলবের্তো ফুজিমুরির বিরুদ্ধে নির্বাচনে পরাজিত হন। পরবর্তীতে তিনি নভেম্বর ২০০০ থেকে জুলাই ২০০১ সাল পর্যন্ত পেরুর ১৩৭তম প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি ফ্রান্সে পেরুর রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পান, পূর্বে যেখানে তিনি বাস করতেন। এছাড়াও তিনি বিশ্বের ১০০ জনেরও অধিক সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী নিয়ে গঠিত ক্লুব দে মাদ্রিদ-এর সদস্য ছিলেন, যেটি বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে শক্তিশালী হিসেবে গড়ার লক্ষ্যে কাজ করতো।[১] ৪ মার্চ ২০২০ সালে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি ১০০ বছর, ৪৫ দিন বয়সী হিসেবে পেরুর সবচেয়ে বয়োবৃদ্ধ প্রধানমন্ত্রী ও জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে জীবিত ছিলেন।

জীবনী[সম্পাদনা]

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

পেরেস দে কুয়েইয়ার ১৯২০ সালের ১৯ জানুয়ারি পেরুর লিমায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কোলেহিও সান আউগুস্তিন দে লিমা এবং পন্টিফিকাল ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি অব পেরুতে পড়াশোনা করেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

কুটনীতিক জীবন[সম্পাদনা]

পেরেস দে কুয়েইয়ার ১৯৪০ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এবং ১৯৪৪ সালে কুটনীতিক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে তিনি ফ্রান্সে, পেরুর সচিব হিসেবে যোগ দেন, যেখানে তিনি তার প্রথম স্ত্রী ভেট রবার্টের সাথে সাক্ষাৎ হয় এবং বিয়ে করেন। এছাড়াও তিনি যুক্তরাজ্য, বলিভিয়া, ব্রাজিলে একই দায়িত্ব পালন করেন এবং পরবর্তীতে সুইজারল্যান্ড, সোভিয়েত ইউনিয়ন, পোল্যান্ড ও ভেনিজুয়েলাতে অ্যাম্বাসেডর হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান ফ্রান্সিসকো (জন্ম প্যারিস) ও আগুয়েদা ক্রিস্তিনা (জন্ম লন্ডন)।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৯৪৬ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের প্রথম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি পেরুর জুনিয়র সদস্য হিসেবে এবং পরবর্তীতে ২৫তম থেকে ৩০তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে সদস্য হিসেবে ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি জাতিসংঘে পেরুর স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পান এবং ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত তিনি তার দেশের হয়ে এ দায়িত্ব পালন করেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

হাভিয়ের পেরেস দে কুয়েইয়ার ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি ছিলেন। ২৯ অক্টোবর ১৯৭৫ এ সাইপ্রাসে থাকাকালীন সময়ে পেরেহ তার দ্বিতীয় স্ত্রী মার্সেলা টেম্পলকে (আগস্ট ১৪, ১৯৩৩[২] – জুলাই ৩, ২০১৩)[৩][৪] বিয়ে করেন, যার কোনো সন্তান ছিলো না।

জাতিসংঘের মহাসচিব[সম্পাদনা]

পেরেস দে কুয়েইয়ার ও ইরানের রাষ্ট্রপতি আলি খামেনি ১৯৮৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানে

৩১ ডিসেম্বর ১৯৮১ সালে পেরেস দে কুয়েইয়ার, কার্ট ওয়াল্ডহেইমের উত্তরসূরী হিসেবে জাতিসংঘের ৫ম মহাসচিব নির্বাচিত হন এবং ১৯৮৬ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি পুনঃনির্বাচিত হন। হাভিয়ের পেরেস দে কুয়েইয়ার ইরাক ও ইরানের মধ্যে আট বছর ধরে চলা যুদ্ধের সময় জাতিসংঘের মহাসচিব ছিলেন। ঐ সময় এই দুই দেশের যুদ্ধবিরতির জন্য কাজ করেন। তিনি ১৯৮১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯৯১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জাতিসংঘের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন।[৫]

পেরুর প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন[সম্পাদনা]

১৯৯৫ সালে পেরুর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে অংশ নেন হাভিয়ের পেরেস দে কুয়েইয়ার। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সে সময়ের রাষ্ট্রপতি আলবের্তো ফুজিমোরি। তবে আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্কিত ওই নির্বাচনে তিনি ২১ দশমিক ৮ শতাংশ এবং রাষ্ট্রপতি আলবের্তো ফুজিমোরি ৬৪ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পান। এরপর ২০০০ সালে ফুজিমোরি সরকারের পতন হলে পেরুর জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে সরকারপ্রধান করা হয় হাভিয়ের পেরেস দে কুয়েইয়ারকে। এরপর ২০০১ সালে নির্বাচনের পর রাষ্ট্রপতি আলেহান্দ্রো তোলেদো হাভিয়েরকে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োগদান করেন।[৫]

অবসর জীবন ও মৃত্যু[সম্পাদনা]

২০০৮ এ পেরেস দে কুয়েইয়ার

২২ জুলাই ২০০৫ তারিখে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্যারিসের হাসপাতালে ভর্তি হন এবং ৩০ জুলাই তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। ১৯ জুন ২০১৭ সালে পেরুর প্রধানমন্ত্রীর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে জীবিত থাকা আলফ্রেডো সলফ ওয়াই মুরোকে পেছনে ফেলেন। পেরেস দে কুয়েইয়ার ৪ঠা মার্চ ২০২০ তারিখে পেরুর লিমায় ১০০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।[৬]

সম্মাননা ও প্রাপ্ত পুরস্কার[সম্পাদনা]

কর্তৃক সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Former Heads of State and Government | Club de Madrid"। Clubmadrid.org। সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ১১, ২০১৫ 
  2. "Who's who in France"। J. Lafitte। ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৯ – Google Books-এর মাধ্যমে। 
  3. PERÚ21, Redacción (জুলাই ৩, ২০১৩)। "Falleció Marcela Temple, esposa de Javier Pérez de Cuéllar"Peru21 
  4. "Family tree of Marcela Temple Seminario"Geneanet 
  5. "জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব হাভিয়ার পেরেজ আর নেই"। prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০২০ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. Perú, Redacción El Comercio (মার্চ ৪, ২০২০)। "Javier Pérez de Cuéllar falleció a los 100 años"El Comercio Perú (স্পেনীয় ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ৫, ২০২০ 
  7. Four Freedoms Award#Freedom Medal
  8. http://www.archiviodisarmo.it/images/pdf/list.pdf[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  9. "Inter-American Dialogue | Javier Pérez de Cuéllar"www.thedialogue.org। এপ্রিল ১৩, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ১৩, ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

রাজনৈতিক দপ্তর
পূর্বসূরী
কার্ট ওয়াল্ডহেইম
অস্ট্রিয়া
জাতিসংঘের মহাসচিব
১৯৮২-১৯৯২
উত্তরসূরী
বুট্রোস বুট্রোস-ঘালি
মিশর