সীতারাম জিন্দাল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
সীতারাম জিন্দাল
জন্ম (1932-09-12) ১২ সেপ্টেম্বর ১৯৩২ (বয়স ৯১)
পেশাশিল্পপতি, জনহিতৈষী ও সমাজসেবী ব্যক্তিত্ব
কর্মজীবন১৯৬৯ - বর্তমান
সন্তানআশা জিন্দাল খৈতান (কন্যা)
প্রগুণ জিন্দাল খৈতান
পিতা-মাতানেত্রাম জিন্দাল (পিতা)
চন্দ্রবলী দেবী (মাতা)
পুরস্কার পদ্মভূষণ (২০২৪)

ড. সীতারাম জিন্দাল ( জন্ম:১২ সেপ্টেম্বর ১৯৩২) হলেন একজন ভারতীয় শিল্পপতি এবং জিন্দাল গোষ্ঠীর, জিন্দাল অ্যালুমিনিয়াম লিমিটেড-এর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপক পরিচালক। প্রাকৃতিক নিরাময় তথা নেচারোপ্যাথির বিশেষজ্ঞ, জনহিতৈষী এবং স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রেও একজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব তিনি 'জিন্দাল নেচারকিওর ইনস্টিটিউট' ও 'সীতারাম জিন্দাল ফাউন্ডেশন' প্রতিষ্ঠা করেন। [১] ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকার ব্যবসা ও শিল্প ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার জন্য দেশের সর্বোচ্চ তৃতীয় বেসামরিক পুরস্কার পদ্মভূষণে ভূষিত করে। [২]

জন্ম ও শিক্ষা জীবন[সম্পাদনা]

সীতারাম জিন্দালের জন্ম ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ ভারতের অধুনা হরিয়ানার হিসার জেলার এক প্রত্যন্ত নালওয়া গ্রামে। পিতা নেত্রাম জিন্দাল ও মাতা চন্দ্রাবলী দেবী। সীতারাম তার মাতাপিতার চতুর্থ সন্তান। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে সীতারাম কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক হন। এরপর কর্নাটকের টুমকুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নেচারোপ্যাথি তথা প্রাকৃতিক নিরাময়ে স্নাতকোত্তর এবং ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। ন্যাচারোপ্যাথিতে ড. জিন্দালের যুগান্তকারী অবদান হল - 'ডিটক্সিফিকেশন' (যা বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে অত্যন্ত কার্যকর ওষুধবিহীন পদ্ধতিতে নিরাপদে মানব শরীরের তন্ত্র সমূহকে পরিষ্কার করে) উদ্ভাবন ও প্রবর্তন। [৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

সীতারাম জিন্দাল ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে কর্নাটক রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে প্রতিষ্ঠা করেন- 'জিন্দাল অ্যালুমিনিয়াম লিমিটেড'। সীতারাম জিন্দালের দূরদৃষ্টি আর ব্যবস্থাপনায় পঞ্চান্ন বৎসরের পুরানো এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে ভারতের বৃহত্তম অ্যালুমিনিয়াম এক্সট্রুশন কোম্পানির অন্যতম, যার ২০২১-২২ আর্থিক বৎসরে উৎপাদন ছিল পাঁচশো কোটি টাকার উপরে। কোম্পানিটি বায়ু শক্তিসৌর শক্তিসহ পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির জন্যও অগ্রণী ভূমিকা রাখে। বাণিজ্যিক এই প্রতিষ্ঠান গড়ার পর নিজের গবেষণার ক্ষেত্রে কার্যকরী অবদান রাখতে ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে দুরারোগ্য রোগের প্রাকৃতিক নিরাময়ের জন্য তৈরি করেন 'জিন্দাল নেচারকিওর ইনস্টিটিউট'। সীতারামের দূরদর্শী নেতৃত্বে বর্তমানে ৫৫০ টি শয্যার স্বাস্থ্যসেবার প্রতিষ্ঠানে হাঁপানি এবং ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে আর্থ্রাইটিস এবং এমনকি ক্যান্সারের কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন রোগের সফল চিকিৎসা বিশ্বমানের। [৩] ব্যবসায়ের সামাজিক দায়বদ্ধতা ধারণা বাস্তবায়নের বহু আগে দূরদর্শী সীতারাম জিন্দাল জনহিতকারী ও সামাজিক কল্যাণ কার্য নিষ্পাদনে ব্যক্তিগত তহবিলে ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে বেঙ্গালুরুর উপকণ্ঠে প্রতিষ্ঠা করেন সীতারাম জিন্দাল ফাউন্ডেশন (তৎকালীন এসজে জিন্দাল ট্রাস্ট)। একক প্রচেষ্টায় সমাজের দুর্বল সম্প্রদায়ের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে যেমন- শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে, শিক্ষার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নে এটি দেশের অন্যতম প্রধান এনজিও

বছরের পর বছর ধরে তার এই বেসরকারি সংস্থা হতে সমাজের দুর্বল ও অনুন্নত শ্রেণীর কয়েকলাখ মানুষ এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজ, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা ইত্যাদি আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধা লাভ করে আসছে।[৪]

ফাউন্ডেশন ও তার সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে বেঙ্গালুরুরতে জনহিতকারী ও সামাজিক কল্যাণ কার্যে নিয়োজিত আছে সেগুলি হল- বেঙ্গালুরুর তুমকুর রোডস্থিত 'মানব চ্যারিটেবল হাসপাতাল', বেঙ্গালুরু শহরে 'জিন্দাল চ্যারিটেবল হাসপাতাল' (জেসিএইচ), 'জিন্দাল পাবলিক স্কুল', জিন্দাল প্রি-ইউনিভার্সিটি গার্লস কলেজ, জিন্দাল ডিগ্রী কলেজ ফর উইমেন (জেডিসিডব্লিউ)। এছাড়াও, ফাউন্ডেশন সারা বছর বারো হাজারেরও বেশি ছাত্র-ছাত্রীকে বৃত্তি প্রদান এবং বুক ব্যাঙ্ক প্রকল্পের মাধ্যমে পাঠ্যপুস্তক দানের ব্যবস্থা করে।[৪]

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

ভারত সরকার ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশের এই জনহিতৈষী এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যক্তিত্বকে ব্যবসা ও শিল্প ক্ষেত্রের কৃতিত্বের জন্য দেশের সর্বোচ্চ তৃতীয় মর্যাদাপূর্ণ পদ্মভূষণ পুরস্কারে ভূষিত করে। [২]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "NationalSitaram Jindal honoured with Padma Bhushan"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-২৭ 
  2. "Padma Awards 2024 announced"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-২৭ 
  3. "President of India Honours Dr.Sitaram Jindal of Jindal Aluminium"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-২৭ 
  4. "Sitaram Jindal Foundation - Jindal Naturecure Institute"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৪-২৭