শীলা মাইকেলস

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শীলা মাইকেলস
চিত্র:Ms Sheila Michaels.jpg
জন্ম
শিলা ব্যাবস মাইকেলস

(১৯৩৯-০৫-০৮)৮ মে ১৯৩৯
মৃত্যু২২ জুন ২০১৭(2017-06-22) (বয়স ৭৮)
জাতীয়তাআমেরিকান
অন্যান্য নামশিলা কেসলার
শিলা শিকি-ই-মাইকেলস
পেশানারীবাদী
কর্মজীবন১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি
পরিচিতির কারণসুশ্রী শব্দটিকে জনপ্রিয় করেছেন
পরিবারমেয়ার লণ্ডন (দাদু)
হ্যারিয়েট ফ্রাড (ভাই)
রোজালিন ব্যাক্স্যাণ্ডাল (ভাই))

শীলা ব্যাবস মাইকেলস, যিনি শিলা শিকি-ই-মাইকেলস নামেও পরিচিত (৮ই মে ১৯৩৯ – ২২শে জুন ২০১৭), ছিলেন একজন আমেরিকান নারীবাদী এবং নাগরিক অধিকার কর্মী। মহিলাদের সম্বোধনে এমএস শব্দটিকে জনপ্রিয় করার কৃতিত্ব তাঁকে দেওয়া হয়েছিল, শব্দটি বৈবাহিক অবস্থার নির্বিশেষে মহিলাদের সম্বোধন করার জন্য একটি রূপ হিসাবে ব্যবহৃত।[১][২]

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

শীলা মাইকেলসের জন্ম মিসৌরির সেন্ট লুইতে। তাঁর মা ছিলেন নাট্যকার এবং নাট্য প্রযোজক আলমা ওয়েইল মাইকেলস (বিবাহপূর্ব ওয়েইল),[৩] এবং বাবা ছিলেন একজন নাগরিক অধিকার আইনজীবী এফ্রাইম লণ্ডন। শীলা মাইকেলসের মা সেই সময়ে সেন্ট লুইসে এডিসন ব্রাদার্স স্টোরের জুতার প্রতিনিধি তাঁর স্বামী মরিস "বিল" মাইকেলস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন।

শীলা মাইকেলসের মা একটি ছোট সন্তানের সাথে থাকা পছন্দ করেন নি। তাই তিন বছর বয়সী শীলাকে ব্রঙ্কসে তাঁর দাদু দিদা, আরভিং ওয়েইল এবং ফ্রান্সেস (ফেইগেলা) ওয়েইলের (বিবাহপূর্ব স্যাক্স) সাথে থাকতে নিউ ইয়র্ক শহরে পাঠানো হয়েছিল। যখন তাঁর বয়স প্রায় আট বছর, তাঁকে তাঁর মা এবং তাঁর মায়ের দ্বিতীয় স্বামী, একজন ধনী ধাতুবিদ হ্যারি এইচ কেসলারের সাথে বসবাসের জন্য ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।[৪] তাঁকে কেসলার পদবীও দেওয়া হয়েছিল। অনেক বছর পরে, তাঁর মা এবং হ্যারি কেসলার, তাঁর রাজনৈতিক সক্রিয়তাকে অপছন্দ ক'রে, তাঁকে অস্বীকার করেন এবং তাঁকে কেসলার নাম ব্যবহার বন্ধ করতে বলেন। ফলস্বরূপ, তিনি মাইকেলস পদবীতে ফিরে যান।[২][৫]

১৯৫৭ সালে, তিনি সেন্ট লুইসের উচ্চ বিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। হাই স্কুলের পর তিনি কলেজ অফ উইলিয়াম এণ্ড মেরিতে পড়েন কিন্তু ছাত্র সংবাদপত্রে বিচ্ছিন্নতা বিরোধী নিবন্ধ লেখার জন্য তাঁকে আংশিকভাবে বহিষ্কার করা হয়। সেন্ট লুইতে কিছু সময় বসবাস করার পর প্রবেশিকা স্তরের চাকরির জন্য শীলা মাইকেলস ১৯৫৯ সালের অক্টোবরে নিউ ইয়র্ক শহরে চলে আসেন।

কর্মজীবন এবং সক্রিয়তা[সম্পাদনা]

শীলা মাইকেলস জাতিগত সমতা কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন।

১৯৬১ সালে, তিনি এমএস (ইংরেজি: Ms.) শব্দটি ব্যবহার করার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর একই ঘরের বাসিন্দার কাছে আসা একটি পত্রিকা নিউজ অ্যাণ্ড লেটারস -এ, ঠিকানা লেবেলে লেখা এই শব্দকে তিনি টাইপের ত্রুটি বলে মনে করেছিলেন।[৬][৭] মাইকেলস "একজন মহিলার জন্য একটি উপাধি খুঁজছিলেন যিনি একজন পুরুষের 'নন'।"[৮] মিসট্রেস থেকে উদ্ভূত মিস এবং মিসেস শব্দগুলি সম্পর্কে তিনি জানতেন এই উপাধিটি এখন অসম্মানজনক অর্থের সাথে ব্যবহার করা হয়। একটি নতুন সম্মানিত ব্যবহার প্রচারের জন্য তাঁর প্রচেষ্টা প্রথমে উপেক্ষা করা হয়েছিল।[৯] ১৯৬৯ সালে, দ্য ফেমিনিস্ট গোষ্ঠীর সাথে ডব্লিউবিএআই রেডিও সাক্ষাৎকারের সময় কিছুক্ষণ নীরবতার পর, শীলা মাইকেল এমএস ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন। গ্লোরিয়া স্টেইনেমের একজন বন্ধু সাক্ষাৎকারটি শুনেছিলেন এবং এটিকে তাঁর নতুন পত্রিকার শিরোনাম হিসাবে প্রস্তাব করেছিলেন। পত্রিকাটি ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে আত্মপ্রকাশ করে এবং এর বহুল প্রচারিত নামটি দ্রুত ব্যাপক ব্যবহারের দিকে নিয়ে যায়।[১০]

১৯৭৫ সালে, শীলা মাইকেলস ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় আহত শিশুদের সাথে কাজ করার জন্য লাওসে গিয়েছিলেন।[১১]

শীলা মাইকেলস একজন মৌখিক ইতিহাসবিদ হিসেবেও কাজ করেছেন যেখানে তিনি কংগ্রেস অফ রেসিয়াল ইকুয়ালিটি (কোর)র সদস্যদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।[১২] :১৭০তিনি দশ বছর ধরে নিউ ইয়র্ক শহরে একটি ট্যাক্সি চালিয়েছেন এবং তাঁর স্বামীর সাথে একটি জাপানি রেস্তোরাঁ চালাতেন।[১১] তিনি নিউ ইয়র্ক পত্রিকার জন্য তাঁর ট্যাক্সি যাত্রীদের সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পর্যবেক্ষণমূলক কলাম লিখেছেন।[১৩]

শীলা মাইকেলসের লেখা ম্যাককেইন লাইব্রেরিতে, ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন মিসিসিপিতে সংরক্ষিত আছে।[১৪]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

শীলা মাইকেলস সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, ভারত, লাওস, কোরিয়া এবং জাপান ভ্রমণ এবং সেখানে কাজ করেছেন।[১১][১৫] তিনি নিউইয়র্ক শহরের জাপানি পাচক হিকারু শিকিকে বিয়ে করেছিলেন। তাঁরা ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে একটি জাপানি রেস্টুরেন্ট চালাতেন এবং শীলা মাইকেলস বিয়ের সময় তাঁর নাম পরিবর্তন করেন। পরে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়।[১৫]

শীলা মাইকেলস ২০১৭ সালের ২২শে জুন, লিউকেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে ৭৮ বছর বয়সে মারা যান।[১][২][৫] তাঁর বাবার দিকে, শীলা মাইকেলসের দাদু ছিলেন মার্কিন প্রতিনিধি মেয়ার লণ্ডন, তাঁর খুড়তুতো বোন ছিলেন রোজালিন ব্যাক্স্যাণ্ডালহ্যারিয়েট ফ্রাড

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Davies, Caroline (৭ জুলাই ২০১৭)। "Sheila Michaels, who brought 'Ms' into mainstream, dies at 78"The Guardian 
  2. "Ms Sheila Michaels: Feminist who popularised 'Ms', dies aged 78"BBC News। ৭ জুলাই ২০১৭। 
  3. Alsbury, Ray (১৮ মে ১৯৫৬)। "Beautiful and Tender Story Grips Audience" (Clip উন্মুক্ত প্রবেশাধিকারযুক্ত প্রকাশনা - বিনামূল্যে পড়া যাবে via Newspapers.com closed access publication – behind paywall)St. Louis Jewish Light। পৃষ্ঠা 6। 
  4. Martinez, Al (৩ জুলাই ১৯৭২)। "The World Awaits You, Alma Kessler" (Clip উন্মুক্ত প্রবেশাধিকারযুক্ত প্রকাশনা - বিনামূল্যে পড়া যাবে via Newspapers.com closed access publication – behind paywall)Hamilton JournalNews। পৃষ্ঠা 13। 
  5. Fox, Margalit (৬ জুলাই ২০১৭)। "Sheila Michaels, Who Brought 'Ms.' to Prominence, Dies at 78"The New York Times 
  6. Jeffs, Angela (নভেম্বর ৫, ২০০০)। "Missing piece of puzzle in story of 'Ms.'"The Japan Times Online 
  7. Michaels, Sheila (মার্চ–এপ্রিল ২০০৮)। "Forty Years of Defying the Odds"Solidarity WebzineSolidarity। জুলাই ৬, ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ৯, ২০০৯ 
  8. Kay, Eve (২৮ জুন ২০০৭)। "Call Me Ms"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ২০, ২০০৭ 
  9. Fishko, Sara (জুন ২৮, ২০১২)। "Fishko Files: Ms."। WNYC। ২০১৩-০৩-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৩-১২ 
  10. Zimmer, Ben (২০০৯-১০-২৫)। "On Language: Ms."The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১১-১৬ 
  11. Cohen, Robert A. (৬ জুলাই ২০১৭)। "Sheila Michaels, iconic feminist and justice advocate, dies at 78"St. Louis Jewish Light। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০২৪ 
  12. Adickes, Sandra E. (২০০৫)। Legacy of a Freedom School। Palgrave Macmillan। পৃষ্ঠা 69, 88-89, 161। আইএসবিএন 978-1-403-97935-3ওসিএলসি 312463972 
  13. Shiki y Michaels, Sheila (২৫ জুন ১৯৮৪)। "True Tales: Music Men"New York। পৃষ্ঠা 22। 
  14. "Michaels (Sheila) Papers, 1960-2001"McCain Library, University of Southern Mississippi (ইংরেজি ভাষায়)। ২ মার্চ ২০১৬। ১৮ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল (Finding Aid) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০২৪ 
  15. Jeffs, Angela (৫ নভেম্বর ২০০০)। "Missing piece of puzzle in story of 'Ms.'"The Japan Times 

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:Radical feminism