রাজীব গান্ধী মহিলা বিকাশ পরিযোজনা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
রাজীব গান্ধী মহিলা বিকাশ পরিযোজনা
প্রতিষ্ঠাকাল২০০২
ধরনবেসরকারি সংস্থা
উদ্দেশ্যনারী ক্ষমতায়ন, দারিদ্র্য হ্রাস
অবস্থান
এলাকাগত সেবা
উত্তরপ্রদেশ, ভারত
পদ্ধতিসমূহসম্প্রদায় সংহতি, ক্ষমতা বৃদ্ধি
মূল ব্যক্তিত্ব
পি. সম্পথ কুমার, সিইও

রাজীব গান্ধী মহিলা বিকাশ পরিযোজনা (আরজিএমভিপি) হল রাজীব গান্ধী চ্যারিটেবল ট্রাস্টের প্রধান এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা। এটি একটি নিবন্ধিত অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এটি ২০০২ সাল থেকে ভারতের উত্তর প্রদেশে দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। আরজিএমভিপি বিশ্বাস করে যে "দরিদ্রদের দারিদ্র্য কাটিয়ে উঠার প্রবল ইচ্ছা এবং সহজাত ক্ষমতা আছে"।[১] এর লক্ষ্য হল দরিদ্র গ্রামীণ মহিলাদের সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নিয়ে আসা এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, স্বাস্থ্য-যত্ন, জীবিকা বৃদ্ধি, শিক্ষাপরিবেশবাদ প্রচার করা।

পরিকল্পনা এবং উদ্দেশ্য[সম্পাদনা]

"মূল পরিবর্তন-প্রতিনিধি হিসাবে মহিলাদের মাধ্যমে ভারতে দারিদ্র্য কমাতে" আরজিএমভিপি তার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছে।[২] সংস্থার বিবৃত উদ্দেশ্য হল " স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আকারে সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দারিদ্র্যবৈষম্য কাটিয়ে উঠতে সাহায্য ক'রে দরিদ্র মহিলাদের ক্ষমতায়ন করা"। এইভাবে সংগঠনটি নারীদের একটি মঞ্চ প্রদান করতে চায় যার মাধ্যমে তারা তাদের অধিকার এবং পাওনাগুলি অধিগত করতে পারে এবং সামাজিক ও উন্নয়ন উদ্যোগগুলি সাফল্যের সঙ্গে কার্যকর করা যেতে পারে।

আরজিএমভিপি রাহুল গান্ধীর নারীদের স্বাধীন এবং ক্ষমতায়িত সম্প্রদায়ের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিনিধিত্ব করে। তিনি এই পরিকল্পনার একজন ট্রাস্টি।

মডেল এবং কৌশল[সম্পাদনা]

দরিদ্রদের সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠান[সম্পাদনা]

আরজিএমভিপি-এর লক্ষ্য গ্রামীণ মহিলাদের সংগঠিত করা এবং তাদের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যাতে তারা দারিদ্র্য কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয় এবং তথ্য, পরিষেবা ও পাওনা অধিগত করার লক্ষ্যে তাদের সম্মিলিত শক্তিকে চালিত করে।[৩] এই প্রতিষ্ঠানগুলি স্ব-সহায়তা গোষ্ঠী (এসএইচজি), গ্রাম সংস্থা (ভিও) এবং ব্লক সংস্থাগুলির (বিও) তিন স্তরের ব্যবস্থা নিয়ে সংগঠিত। একটি এসএইচজি সাধারণত ১০ - ২০ জন দরিদ্র মহিলা নিয়ে তৈরি, যাঁরা সাধারণত একই রকম আর্থ-সামাজিক পটভূমি থেকে এসেছেন। গ্রাম পর্যায়ে সংগঠিত সমস্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে গ্রাম সংস্থাতে (ভিও) সংযুক্ত করা হয়েছে, যারা ১০ থেকে ২০টি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মধ্যে ১৫০ থেকে ২৫০টি দরিদ্র পরিবারের প্রতিনিধিত্ব করে। ৫০০০ থেকে ৭০০০ জন মহিলার প্রতিনিধিত্ব করা ভিওগুলিকে ব্লক সংগঠনে (বিও) যুক্ত করা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলির লক্ষ্য দরিদ্র মানুষ এবং উন্নয়ন উদ্যোগের মধ্যে একটি পদ্ধতিগত যোগাযোগ হিসাবে কাজ করা।

কৌশল[সম্পাদনা]

আরজিএমভিপি-এর মূল কৌশলগুলির মধ্যে রয়েছে সামাজিক গতিশীলতা, সামাজিক মূলধন সৃষ্টি, সমন্বয় ও এক-কেন্দ্রাভিমুখতা, বৃদ্ধি এবং সম্পৃক্তি পদ্ধতি।

কার্যক্রম[সম্পাদনা]

আর্থিক অন্তর্ভুক্তি[সম্পাদনা]

আরজিএমভিপি দরিদ্রদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মধ্যে তাদের নিজস্ব সঞ্চয়ের মাধ্যমে মূলধন তৈরি করতে সাহায্য করে এবং এসএইচজি ও ব্যাঙ্কের সংযোগের মাধ্যমে আমানত অধিগত করতে সক্ষম করে।[৪] এটি তাদের প্রকল্প এলাকায় ১৭টি গ্রামীণ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সমর্থন অর্জন করেছে।

জীবিকা[সম্পাদনা]

আরজিএমভিপি-র কাজের মূল কেন্দ্রবিন্দু হল প্রতিটি দরিদ্র পরিবারের অন্তত দুই বা তিনটি আয়ের উৎস নিশ্চিত করা। তার জন্য কৃষিদুগ্ধ, পশুসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং অ-খামার কার্যক্রমের উপর পিছন থেকে যোগসূত্র প্রদান করা, যাতে প্রতিটি দরিদ্র পরিবারের অন্তত দুই বা তিনটি আয়ের উৎস থাকে।

কৃষি এবং দুগ্ধজাত: কৃষি ও দুগ্ধ উদ্যোগের অধীনে মহিলাদের কিছু ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, ক্ষেত্রগুলি হলো- জৈব কম্পোস্ট, স্থায়ী কৃষি পদ্ধতি যেমন ধানের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পদ্ধতি (এসআরআই)[৫] ও গমের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পদ্ধতি (এসডব্লিউআই) এবং দুগ্ধ ব্যবস্থাপনার সর্বোত্তম অনুশীলন। আরজিএমভিপি-এর একটি লক্ষ্য কৃষক ক্লাবেরও প্রচার করা।

প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনা: এই উদ্যোগটি সম্পূরক জীবিকার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যেমন ছাগল, মৌমাছি পালন এবং পোল্ট্রির মতো ব্যবসাকে জীবনধারণের উপায় করার জন্য এগুলির উৎসগুলিতে অধিগম্যতা এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম।

অ-কৃষি খাত: আরজিএমভিপি দরিদ্র মহিলাদের সেলাই এবং সূচিকর্ম,[৬] খাদ্য সংরক্ষণ, বেতের আসবাবপত্র তৈরি, যন্ত্রের সাহায্যে বুনন, চামড়ার কাজ, মৃৎপাত্র তৈরি, ডিটারজেন্ট তৈরি ইত্যাদির মতো কার্যকলাপে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে অ-কৃষি ক্ষেত্রে সুযোগ অন্বেষণ করতে উৎসাহিত করার চেষ্টা করে।

স্বাস্থ্য[সম্পাদনা]

আইএমআর এবং এনএমআর (দুটিই শিশু মৃত্যু হারের সূচক) কমাতে দরিদ্র পরিবারের মধ্যে আচরণ পরিবর্তন ব্যবস্থাপনা প্রচার করা হয় এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা সহজে পাওয়ার জন্য স্থানীয় স্তরে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সাথে সংযোগ সহজতর করে।

শিক্ষা[সম্পাদনা]

শিক্ষায় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ বাড়ানো, মেয়েদের শিক্ষাকে উৎসাহিত করা এবং শিশুদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে ভাল মানের শিক্ষার প্রচারের লক্ষ্যে সংস্থাটি শিক্ষায় কিছু উদ্যোগ নিয়েছে।

পরিবেশ[সম্পাদনা]

সম্প্রদায় পরিচালিত সৌর শক্তি কিয়স্কের মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব সৌর- এলইডি দিয়ে আলোর সমস্যার সমাধান করা[৭] এবং গ্রামীণ দরিদ্রদের জন্য জৈব-গ্যাস শক্তি সরবরাহ ইত্যাদি হলো এই সংস্থার দ্বারা প্রচারিত অন্য কিছু উদ্যোগ।

প্রচার[সম্পাদনা]

রায়বেরেলিকে ভিত্তি করে, আরজিএমভিপি (২০১২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) উত্তরপ্রদেশের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া এবং দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চলের ৩৯টি জেলার ১৯১টি ব্লকে প্রায় ৫০০,০০০ দরিদ্র পরিবারের কাছে পৌঁছেছে।[৮][৯]

অংশীদার[সম্পাদনা]

এই প্রকল্পটি ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট এবং এসইআরপি -এর সাথে অংশীদারিত্ব করেছে। তারা এর মাধ্যমে উত্তরপ্রদেশের নির্বাচিত জেলাগুলিতে ক্রেডিট লিঙ্কেজ এবং এসএইচজিফেডারেশনের প্রচার করছে।[১০][১১] মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সম্প্রদায়ের সংহতি প্রকল্পের জন্য আরজিএমভিপি পাবলিক হেলথ ফাউণ্ডেশন অফ ইণ্ডিয়া (পিএইচএফআই) এর নেতৃত্বে বিল এবং মেলিণ্ডা গেটস ফাউণ্ডেশনের সাথে অংশীদারিত্ব করেছে এবং এর মধ্যে আছে জনসংখ্যা কাউন্সিল, কমিউনিটি এমপাওয়ারমেন্ট ল্যাব এবং বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন কেন্দ্র।[১২]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "RGMVP"। ২০১২-০৬-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৬-০১ 
  2. "RGMVP"। ২০১২-০৬-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৬-০২ 
  3. "Seeds Rahul sowed promise to bear fruit, not all of it sweet - Indian Express"www.indianexpress.com। ২৭ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মে ২০২২ 
  4. "Beyond Micro Lending | Forbes India"Forbes India। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০২১ 
  5. "System of Rice Intensification - 2010 News and Resources"। ১৫ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০১২ 
  6. "Scripting a new storyboard: Ad experts who headed into unchartered territory - timesofindia-economictimes"। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০১২ 
  7. "ACN | Noticias de Venezuela y el mundo"। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে [http:// মূল] |ইউআরএল= এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০২২ 
  8. "RGMVP"। ২০১২-০৬-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-১৪ 
  9. "Rahul's self-help groups fan out over 10 districts - Indian Express"www.indianexpress.com। ২৬ জানুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মে ২০২২ 
  10. "National Bank for Agriculture and Rural Development"। ২০১০-০৬-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৪-২৮ 
  11. "Nabard: Bringing Rural India into the Growth Fold"। ২০১২-০৯-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৫-১৪ 
  12. "Meeting new and greeting old partners in Uttar Pradesh | IDEAS"। ২০ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০১২ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]