যোগী (২০০৭-এর চলচ্চিত্র)
যোগী | |
---|---|
পরিচালক | ভি. ভি. বিনায়ক |
প্রযোজক | পি. রবীন্দ্রনাথ রেড্ডি |
রচয়িতা | রাজেন্দ্র কুমার (সংলাপ) |
কাহিনিকার | প্রেম |
উৎস | যোগী[১] |
শ্রেষ্ঠাংশে | প্রভাস নয়নতারা কোটা শ্রীনিবাস রাও প্রদীপ রাওয়াত শারদা আলি |
সুরকার | রমনা গোগুলা |
চিত্রগ্রাহক | সমীর রেড্ডি |
সম্পাদক | গৌতম রাজু |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৫৫ মিনিট |
দেশ | ভারত |
ভাষা | তেলুগু |
যোগী হল ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি তেলুগু অ্যাকশন ড্রামা চলচ্চিত্র। ছবিটি পরিচালনা করেন ভি. ভি. বিনায়ক। এই ছবিতে প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করেন প্রভাস ও নয়নতারা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই ছবিতেই তারা দু’জন প্রথম একসঙ্গে কাজ করেন। ছবির অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেন আলি, সুব্বারাজু, প্রদীপ রাওয়াত, শারদা ও কোটা শ্রীনিবাস রাও। ভি. ভি. বিনায়ক পরিচালিত পূর্ববর্তী হিট লক্ষ্মী ছবির সংগীত পরিচালক রমনা গোগুলা এই ছবিটিতেও সংগীত পরিচালনা করেন। গানগুলির শ্যুটিং হয়েছিল কানাডা, মিশর ও মালয়েশিয়ায়। ছবিটি মুরাট্টু তাম্বি নামে তামিল ভাষায়, যোগী নামে মালয়ালমে এবং মা কসম বদলা লুঙ্গা নামে হিন্দিতে ডাবিং করা হয়। এই ছবিটি পরিচালক প্রেম পরিচালিত কন্নড় যোগী (২০০৫) ছবিটির পুনর্নির্মাণ।
২০০৭ সালের ১২ জানুয়ারি ২২৫টি প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি মুক্তি পায় এবং বক্স অফিসেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করে।[২]
কাহিনি-সারাংশ[সম্পাদনা]
ঈশ্বরচন্দ্র প্রসাদ (প্রভাস) হল রাম মূর্তি (চলপতি রাও) ও শান্তাম্মার (শারদা) পুত্র। মূর্তি চান তাঁর ছেলে কোনও কাজ করুক। কিন্তু শান্তাম্মা তাঁর ছেলেকে অত্যধিক প্রশ্রয় দেন। তাই সেও গ্রাম ছেড়ে যেতে চায় না। মূর্তি মারা যাওয়ার পর বাবার শেষ ইচ্ছা পূর্ণ করতে অর্থোপার্জনের উদ্দেশ্যে ঈশ্বরকে শহরে আসার পরামর্শ দেয় তার পকেটমার বন্ধু বাশা (আলি)। কিন্তু শহরে বাশার সঙ্গে তার দেখা হয় না।
অন্যদিকে কোটাইয়া (কোটা শ্রীনিবাস রাও) হায়দ্রাবাদের একজন বড়ো জমি মাফিয়া এবং নরসিং পহিলওয়ানের (প্রদীপ রাওয়াত) প্রবল প্রতিপক্ষ। সাইদুলু (সুব্বারাজু) হল নরসিং-এর ভাই। একদিন সাইদুলু কোটাইয়া ও তার সহকারীকে কুপিয়ে খুন করতে চায়। কিন্তু ঈশ্বর অজান্তেই তাদের প্রাণরক্ষা করে। চন্দ্রান্না (চন্দ্র মোহন) পরিচালিত একটি চায়ের দোকানে কাজ পায় ঈশ্বর। সে ভালোই উপার্জন করে। মায়ের জন্য দু’টি সোনার চুড়ি কিনে সে শহর ছাড়ার পরিকল্পনা করে। ইতিমধ্যে কোটাইয়ার প্রাণরক্ষার জন্য নরসিং ঈশ্বরকে অপমান করে এবং তার মায়ের সোনার চুড়ি দু’টি মাড়িয়ে দেয়। রাগের বশে তখন ঈশ্বর নরসিংকে খুন করে বসে এবং শেষে ‘যোগী’ নাম নিয়ে শহরের সবচেয়ে বড়ো গুন্ডায় পরিণত হয়। এদিকে ঈশ্বর নরসিংকে হত্যা করার পরই শান্তাম্মা হায়দ্রাবাদে এসে উপস্থিত হন। কোটাইয়া ঈশ্বরকে নিজের দলে টানতে চেয়েও ব্যর্থ হল। চন্দ্রান্না ঈশ্বরকে শহরে থেকে গিয়ে গুন্ডাদের হাতে নিগৃহীত গরিব মানুষদের রক্ষা করতে উৎসাহ দেয়। যোগী শহরের গুন্ডাদের ত্রাসে পরিণত হয়। তাই কোটাইয়া ও সাইদুলু পরস্পর হাত মিলিয়ে যোগীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা কার্যকর করতে গিয়েই যোগীর হাতে খুন হয় সাইদুলু। নন্দিনী (নয়নতারা) নিজের প্র্যাকটিক্যাল সম্পূর্ণ করার জন্য যোগীর একটি সাক্ষাৎকার নেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। কোনওভাবে সে যোগীর প্রেমে পড়ে যায়। শান্তাম্মা আর যোগী একই শহরেও থাকলেও, দু’জনের মধ্যে দেখা হয় না। একদিন বাশার সঙ্গে দেখা হওয়ায় যোগী জানতে পারে যে বাশা শান্তাম্মাকে দেখেছে।
বাশা ও শান্তাম্মা যোগীর ঠিকানায় গিয়ে উপস্থিত হলেও সেখানে তার দেখা পায় না। আসলে তারা যাকে ঈশ্বর নামে চিনত, তাকে সবাই চেনে যোগী নামে। বাশা শান্তাম্মাকে বলে যে, যোগী প্রতি সোমবার মন্দিরে আসে। শান্তাম্মা তাই মন্দিরের সামনে ছেলের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু সাইদুলুর লোকজনের হামলার ভয়ে সেই সোমবার যোগী মন্দিরে আসে না। মন্দিরের সামনেই শান্তাম্মার মৃত্যু ঘটে। বাশা তাঁর শেষকৃত্যের আয়োজন করে। সেই সময় যোগী উপস্থিত হয় মন্দিরে। মৃতদেহের মুখ কাপড়ে ঢাকা থাকায় সে প্রথমে বুঝতে পারেনি দেহটি তারই মায়ের। সে মৃতদেহে ফুল দিয়ে দাহকার্যের জন্য টাকার ব্যবস্থাও করে দেয়। চিতায় দেহ তোলার পর যোগী শান্তাম্মার মুখ দেখতে পায়। তখন বাশা এসে সব খুলে বলে। এদিকে নন্দিনীও এসে শান্তাম্মার ব্যবহৃত জিনিসগুলি যোগীর হাতে তুলে দেয়। এই আবেগপ্রবণ দৃশ্যটির মাধ্যমেই ছবির সমাপ্তি ঘটে।
কলাকুশলী[সম্পাদনা]
- প্রভাস – ঈশ্বরচন্দ্র প্রসাদ ওরফে যোগী
- নয়নতারা - নন্দিনী
- কোটা শ্রীনিবাস রাও – কোটাইয়া, প্রধান খলনায়ক
- প্রদীপ রাওয়াত (অভিনেতা)প্রদীপ রাওয়াত – নরসিং পহিলওয়ান, কোটাইয়ার বিপক্ষ (অতিথি শিল্পী)
- সুব্বারাজু - সাইদুলু, নরসিং-এর ভাই
- আলি ... বাশা, যোগীর বন্ধু
- শারদা ... শান্তাম্মা, যোগীর মা
- চলপতি রাও – রাম মূর্তি, যোগীর বাবা
- চন্দ্র মোহন ... চন্দ্রান্না, যোগীর সমর্থক
- ফিস বেঙ্কট – যোগীর বিশ্বস্ত সমর্থক
সংগীত[সম্পাদনা]
২০০৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর ছবির গানের অ্যালবাম প্রকাশিত হয়।[৩] ছবিটিতে রমনা গোগুলার সুরে মোট ছয়টি গান আছে:
- "ডোলু বাজা" - শঙ্কর মহাদেবন
- "ওরোই যোগী" - কার্তিক ও ব্যাঙ্গালোর সুনিতা
- "ইয়ে নোমু নোচিন্দো" - সুরেশ
- "গিল্লি গিচি" - রাজেশ কৃষ্ণন ও গঙ্গা
- "নী ইল্লু বাঙ্গারাম" - টিপ্পু ও সুনিতা
- "গানা গানা গানা" - আদনান সামি ও সুধা
বক্স অফিস[সম্পাদনা]
ছবিটি সমালোচকদের থেকে প্রধানত মিশ্র ও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া অর্জন করলেও[৪][৫] প্রথম সপ্তাহে ছবিটির মোট আয় ছিল ১৩.১২ কোটি টাকা।[৬] ফলে ছবিটি প্রভাসের একটি বড়ো হিট ছবি হিসাবে গণ্য হয়। ২০০৭ সালের মার্চে ছবির মোট আয় ছিল ২৫ কোটি টাকা এবং শেয়ার ছিল ১৮ কোটি টাকা।[৭]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৮ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ অক্টোবর ২০১৯।
- ↑ "indiaglitz.com"। Yogi to hit 225 theatres during release। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০০৭।
- ↑ "idlebrain.com"। Audio launch-Yogi। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০০৭।
- ↑ "cinegoer.com"। A Feel That Never Even Starts। ২ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৭।
- ↑ "filmchamber.com"। Movie Review — Yogi। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৭।
- ↑ "sify.com"। Yogi- A runaway hit!। ২ ফেব্রুয়ারি ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৭।
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে Yogi (ইংরেজি)
- তেলুগু ভাষার চলচ্চিত্র
- ২০০৭-এর চলচ্চিত্র
- ভি. ভি. বিনায়ক পরিচালিত চলচ্চিত্র
- কন্নড় চলচ্চিত্রের তেলুগু পুনর্নির্মাণ
- ভারতীয় অ্যাকশন ড্রামা চলচ্চিত্র
- ভারতীয় চলচ্চিত্র
- অন্ধ্রপ্রদেশে ধারণকৃত চলচ্চিত্র
- কানাডায় ধারণকৃত চলচ্চিত্র
- মালয়েশিয়ায় ধারণকৃত চলচ্চিত্র
- হায়দ্রাবাদ, ভারতে ধারণকৃত চলচ্চিত্র
- হায়দ্রাবাদ, ভারতের পটভূমিতে চলচ্চিত্র
- ভারতীয় মারপিটধর্মী নাট্য চলচ্চিত্র
- ২০০০-এর দশকের তেলুগু ভাষার চলচ্চিত্র