মাহদী আমেল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মাহদী আমেল
জন্ম
হাসান আবদুল্লাহ হামদান

১৯৩৬ (1936)
মৃত্যুমে ১৮, ১৯৮৭ (বয়স ৫০–৫১)
মৃত্যুর কারণগুপ্তহত্যা
অন্যান্য নামহিলাল বিন জায়তুন
মাতৃশিক্ষায়তনলিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়
উল্লেখযোগ্য কর্ম
এডওয়ার্ড সাইদের প্রাচ্যবাদে মার্ক্স
যুগবিংশ শতাব্দীর দর্শন
অঞ্চলমধ্যপ্রাচ্যীয় দর্শন
প্রতিষ্ঠানলিবানিজ বিশ্ববিদ্যালয়
প্রধান আগ্রহ
দর্শন, শিক্ষা, মার্ক্সবাদ, উপনিবেশবাদ

হাসান আবদুল্লাহ হামদান (আরবি : حسن عبد الله حمدان) ছিলেন ২০ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের একজন লেবানি মার্কসবাদী দার্শনিক এবং মার্কস মতাদর্শিক সৈনিক। যিনি মাহদি 'আমেল (আরবি: مهدي عامل), ( হারুফ, লেবানন ১৯৩৬ - বৈরুত, লেবানন ১৮ মে ১৯৮৭) ছদ্মনামে বেশি পরিচিত ছিলেন।

'আমেল বৈরুতের লেবাননী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শনের অধ্যাপক এবং লেবানিজ কমিউনিস্ট পার্টি এবং লেবানি লেখক ইউনিয়ন উভয়েরই একজন বিশিষ্ট সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তিনি লেবাননের কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র আল-তারিক পত্রিকায়ও অবদান রেখেছিলেন।[১]

লেবাননের গৃহযুদ্ধকালীন (১৯৭৫-১৯৯০) সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলার সময় আমেলকে ৫১ বছর বয়সে হত্যা করা হয়েছিল।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

মাহদি ১৯৩৬ সালে দক্ষিণ লেবাননের শহর নাবাতিহের কাছে হারউফে এক শিয়া মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। অল্প কিছুদিন পর তার বাবা-মা তাকে এবং তার ভাইবোনদেরকে বৈরুতে নিয়ে যান। মাহদি বৈরুতের আল-মাকাসিদ স্কুলে উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। মাহদি ১৯৫৬ সালে ফ্রান্সের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন এবং লিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তীতে ১৯৬০ সালে মাহদি লেবানিজ কমিউনিস্ট পার্টির একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে যোগদান করেন [১]

আলজেরিয়া[সম্পাদনা]

১৯৬৩ সালে, মাহদি তার স্ত্রী ইভলিন ব্রুনের সাথে সদ্য স্বাধীন আলজেরিয়ায় চলে আসেন। [১]

লেবানন ও কমিউনিস্ট পার্টি-এ ফেরত যান[সম্পাদনা]

১৯৬৮ সালে লেবাননে ফিরে মাহদি একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন। পরবর্তীতে চাকরি পরিবর্তন করে তিনি লেবানি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামজিক বিজ্ঞান অনুষদের পূর্ণকালীন অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। সেখানে তিনি দর্শন, রাজনীতি ও প্রণালী বিদ্যা বিষয়ে শিক্ষাদান করেন। [১]

এ সময়ে মাহদি লেবানি কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র আল-তারিক-এ অবদান রাখেন। সাময়িকীটিতে লেখালেখির সময় তার নিবন্ধগুলোতে “মাহদি” (মাহদি 'আমেল) ছদ্মনাম ব্যবহার করতেন এবং যে নামে তিনি এখন সবচেয়ে বেশি পরিচিত।[১]

লেবাননে মাহদি মার্কসবাদের আলোচনা এবং কৃষকদের সমস্যা-দূর্দশা তুলে ধরে প্রচারনার জন্য সারাদেশে ব্যাপক ভ্রমণ করেছিলেন। [১]

মাহদি ১৯৮৭ সালে অনুষ্ঠিত লেবানি কমিউনিস্ট পার্টির পঞ্চম কনভেনশনে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পদে উন্নীত হন।[১]

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

মাহদি আমেল ইভলিন ব্রুনকে বিয়ে করেছিলেন। করিম, ইয়াসমিন ও রিদা নামে তার তিন সন্তান ছিল।

তিনি একজন শিয়া মুসলিম ছিলেন।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

মাহদি আমেলকে ৫১ বছর বয়সে ১৯৮৭ সালের ১৮ মে [১] হত্যা করা হয়। আলজেরিয়ার রাস্তায় হাটার সময় দুজন অজ্ঞাত লোক তার নাম ধরে ডাক দেন এবং তাদের দিকে ঘুরে দাঁড়াতেই অজ্ঞাত লোকেরা তাকে গুলি করে। পরে আমেরিকান ইউনিভার্সিটি অব বৈরুতের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে সেদিনই তিনি মারা যান। [১]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

১৯৬৮ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত তার কাজের উপর ভিত্তি করে রচিত ইন ইস্যুস অফ টিচিং অ্যান্ড এডুকেশনাল পলিসিস নামে একটি সংকলন ১৯৯১ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। এই সংগ্রহে, মাহদি বর্ণনা করেছেন কিভাবে লেবাননের শিক্ষাব্যবস্থা সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টির মাধ্যমে সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে দুর্বল করেছিল। [১]

উল্লেখযোগ্য কাজ[সম্পাদনা]

মাহদির কাজের মধ্যে এডওয়ার্ড সাইদের মার্ক্সবাদের অপব্যাখ্যামূলক প্রাচ্যবাদে’র গঠনমূলক সমালোচনা হলো উল্লেখযোগ্য ও পাণ্ডিত্যপূর্ণ যার মাধ্যমে তিনি যথেষ্ট সম্মান অর্জন করেছেন।[২]

  • জাতীয় মুক্তি আন্দোলনে সমাজতন্ত্রের প্রভাব অধ্যয়নের তাত্ত্বিক ভূমিকা।
  • আরব সভ্যতার দ্বন্দ্ব নাকি আরব বুর্জোয়াদের দ্বন্দ্ব?
  • রাজনৈতিক অনুশীলনে তত্ত্ব: লেবাননের গৃহযুদ্ধের কারণগুলিতে গবেষণা।
  • সাম্প্রদায়িকতার সমালোচনার ভূমিকা: লেবানিজ বুর্জোয়াদের আদর্শে ফিলিস্তিনের কারণ।
  • এডওয়ার্ড সাইদের প্রাচ্যবাদে মার্কস: পশ্চিমের জন্য বুদ্ধিমত্তা এবং প্রাচ্যের জন্য প্যাশন?
  • ইবনে খালদুনের স্কুল অফ থটের বৈজ্ঞানিক প্রকৃতিতে।
  • সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে সাম্প্রদায়িকতার সমালোচনার ভূমিকা।
  • আরব মার্কসবাদ এবং জাতীয় মুক্তি: নির্বাচিত লেখা।

কবিতা[সম্পাদনা]

রাজনৈতিক সক্রিয়তা এবং মার্ক্সবাদের প্রবন্ধের উপরে মাহদি কবিতাও লিখেছেন যাতে তিনি হিলাল বিন জায়তুন নামে স্বাক্ষর করেছিলেন।[১]

  • সময় উন্নতি (Time Improvisations)
  • এন স্পেস (The Space of N)

আরো পড়ুনঃ[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্রঃ[সম্পাদনা]