বালাল আরেজু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বালাল আরেজু
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম (1988-12-28) ২৮ ডিসেম্বর ১৯৮৮ (বয়স ৩৫)
জন্ম স্থান কাবুল, আফগানিস্তান
উচ্চতা ১.৮০ মি (৫ ফু ১১ ইঞ্চি)
মাঠে অবস্থান আক্রমণভাগের খেলোয়াড়
ক্লাবের তথ্য
বর্তমান দল
আস্কার
জার্সি নম্বর ৯০
যুব পর্যায়
সেঞ্জা
–2006 গ্র্যান
2007 এফকে আরেন্ডাল
জ্যেষ্ঠ পর্যায়*
বছর দল ম্যাচ (গোল)
২০০৭ এফকে আরেন্ডাল (০)
২০০৭–২০০৮ ফ্রেড্রিকস্টাড (০)
২০০৯–২০১৫ আস্কার ১১৮ (২৪)
২০১৩–২০১৪চুরচিল ব্রাদার্স (ধার) (০)
২০১৫–২০১৬ মোস ২০ (৯)
২০১৬– আস্কার (০)
জাতীয় দল
২০১০ আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব ২৩ (৬)
২০১১– আফগানিস্তান ২২ (৯)
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ৩০ নভেম্বর ২০১৬ তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক।
‡ জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা ৪ জুন ২০১৭ তারিখ অনুযায়ী সঠিক।

বালাল আরেজু (বেলাল বা বিলাল নামে পরিচিত, জন্ম: ২৮ ডিসেম্বর, ১৯৯৮) হচ্ছেন একজন আফগান ফুটবলার যিনি একজন আক্রমণভাগের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন এবং বর্তমানে নরওয়েয়ান ক্লাব আস্কার ফুটবল ক্লাবে খেলছেন। তিনি বর্তমানে আফগানিস্তান জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে ৯ টি গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার স্থান দখল করে আছেন।

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার[সম্পাদনা]

২০১০ সালের দক্ষিণ এশিয়ার গেমসের মাধ্যমে বেলাল আরজু তার দেশ আফগানিস্তানের হয়ে তার অভিষিক্ত হয়। ভারতকে (১–০), পাকিস্তানকে (২–১) ও শ্রীলঙ্কাকে (২–০) গোলে হারিয়ে জয় এনে গ্রুপ পর্বের শীর্ষে আশ্চর্যজনকভাবে আফগানিস্তান নিজেদের নিয়ে গিয়েছিল। অতঃপর তারা সেমিফাইনালের প্রতিপক্ষ নেপালকে (সাম্প্রতিক দক্ষিণ এশীয় ফুটবল ফেডারেশন কাপের অনুরূপ) ১–০ গোলে হারিয়ে জয়লাভ করে। বালাল আরেজু উক্ত প্রতিযোগিতায় আফগানিস্তানের ছয়টি গোল করেন এবং অবশেষে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষ স্থান দখল করেন। দুর্ভাগ্যক্রমে আফগানিস্তান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে হেরে যায়, কিন্তু বালাল আরেজু টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার অর্জন করে। এটা তাদের মতো দেশ হিসাবে একটি চমৎকার এবং আশ্চর্যজনক প্রদর্শন ছিল।

তার গোল করার ক্ষমতা জাতীয় দলের হয়ে খেলার সময়ও বন্ধ হয়ে যায়নি, আফগানিস্তানের ফুটবল ইতিহাসে দ্বিতীয় আফগান খেলোয়াড় হিসেবে একটি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে তিনি গোল করেছেন। ওবায়দুল্লাহ করিমির গোলে ২০১০ ফিফা বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ১–১ গোলে (১–৫ গোলে) সিরিয়া বিপক্ষে হেরে আফগানিস্তান ২০১০ বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব থেকে বাদ পরে যায় এবং ২০১৪ ফিফা বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে আরেজুর করা গোলে তারা ফিলিস্তিনর সাথে ১–১ গোলে (১–৩ গোলে) ড্র করে। পরবর্তীতে ২০১১ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি ভারতের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের উদ্বোধনী গোলটি করেন যা তাদেরকে ১–১ ড্র করতে সাহায্য করে। তিনি ভুটানের বিরুদ্ধে ৪ টি আশ্চর্যজনক গোল করেন, যা তাদেরকে ৮–১ গোলের ব্যবধানে জয়ী হতে সাহায্য করে এবং আরেজুকে উক্ত খেলায় ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরস্কার প্রদান করা হয় এবং এর ফলস্বরূপ তিনি টুর্নামেন্টের একমাত্র হ্যাটট্রিককারীতে পরিণত হন, যেখানে তিনি দলের অধিনায়ক ছিলেন। ভুটানের বিরুদ্ধে আশ্চর্যজনক খেলা প্রদর্শন করার ফলে ফিফা বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ে আফগানিস্তান ভারতের ওপরে চলে আসে। বালাল আরেজু সেমিফাইনালে নেপালের বিপক্ষে খেলার নায়ক ছিলেন যখন তিনি অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন এবং এর ফলে তার দল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার জন্য যোগ্যতা অর্জন করে। ফাইনালে আফগানিস্তান একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তের সম্মুখীন হয়, তাদের দলের অধিনায়ককে খেলা শেষ হওয়ার ২০ মিনিট পূর্বে মাঠ থেকে লাল কার্ডের মাধ্যমে উঠিয়ে দেওয়া হয়। ২০১৪ সালের এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ বাছাইপর্বের গ্রুপ পর্যায়ে জয়ী হওয়ার পর আরেজু জাতীয় দলের হয়ে তার অসাধারণত্ব দেখাতে থাকেন। আফগানিস্তানের জয় নিশ্চিত করার জন্য তিনি শ্রীলঙ্কা এবং মঙ্গোলিয়ার সাথে খেলায় দুটি জয়ী গোল করেন। আফগানিস্তান হোয়াইট হাউসের সাথে ড্র করে কিন্তু তবুও একটি গ্রুপ বিজয়ী হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করে।

মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালের এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের জন্য আফগানিস্তানের দলে অন্তর্ভুক্ত হওয়া বালাল আরেজুর জন্য একটি সম্মানের বিষয় ছিল। টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্যায়ে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে তাদের প্রথম জয়টি তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ৩–১ ব্যবধানে আসে।[১] দুর্ভাগ্যবশত আফগানিস্তান লাউসের সাথে ০–০ গোলে ড্র করে, যার ফলে তারা গ্রুপ পর্যায় থেকে বাদ পড়া নিশ্চিত করে। যখন আফগান খেলোয়াড়দেরকে তাদের হোটেলে ফেরত পাঠানো হচ্ছিল তখন একটি দুর্ঘটনা ঘটে। উক্ত দুর্ঘটনায় বালাল আরেজু তার সহকর্মী ফয়সাল সাকিজ্জা, আহমাদ হাটিফি, জিহাদ ইসলাম আমিরি এবং মোস্তফা আজাদজয়ুর সাথে আহত হন, যা পরবর্তীতে ঠিক হতে তিন সপ্তাহ সময় লাগে। প্যালেস্টাইনের বিরুদ্ধে খেলাটিতে পূর্বের খেলা হতে পাঁচ খেলোয়াড় খেলতে পারেনি। সাবেক কোচ মোহাম্মদ ইউসুফ কারগার এবং বর্তমান কোচ এরিচ রটারমোলারও সেই ঘটনায় ছোটখাট আঘাতের শিকার হয়েছিলেন।[২][৩][৪][৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "AFC Challenge Cup: Afghanistan 3–1 Turkmenistan"AFC। ২৩ মে ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৪ 
  2. "Afghan contingent suffers minor injuries in team bus accident"AFC। ২৫ মে ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০১৪ 
  3. Shimaaz Ali (২৫ মে ২০১৪)। "Five Afghan players to miss semi"Maldives Soccer। ২৬ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১৪ 
  4. Mohamed Sajid (২৫ মে ২০১৪)। "Afghanistan is all over worried"Maldives Soccer। ২৭ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১৪ 
  5. Shimaaz Ali (২৪ মে ২০১৪)। "Afghan five players injured due to the accident"Maldives Soccer। ২৬ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১৪ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]