বগা বাবার মাজার

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

বগা বাবার মাজার বা বগা ফকিরের মাজার আসামের ডিব্রুগড় জেলা-এর ডিব্রুগড় শহরের মাঝের পাঁচআলি অঞ্চলে অবস্থিত ইসলাম ধর্মালম্বীর উপাসনাস্থল। এটি সুফী সন্ত সৈয়দ রশন আলি চিস্তির মাজার।[১] সুফী সন্ত সৈয়দ রশন আলি চিস্তি স্থানীয়ভাবে বগা বাবা হিসাবে বিখ্যাত ছিলেন। তিনি আজমের থেকে ইসলাম ধর্ম-এর বাণী প্রচার করতে আসামে এসে ডিব্রুগড়ে বাস করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পরে সেখানেই তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছিল। পরে সেই স্থানে তাঁর মাজার প্রতিষ্ঠা করা হয়।[১]

কিংবদন্তি[সম্পাদনা]

সুফী সন্ত সৈয়দ রশন আলি চিস্তি রাজস্থান-এর আজমেড় থেকে আসামে ইসলাম ধর্ম প্রবর্তনের জন্য আসেন।[১] প্রথমে তিনি কিছুকাল উত্তর প্রদেশে ছিলেন এবং পরে তিনি আসামে আসেন। তিনি সুফীবাদর চিস্তিয়া গোষ্ঠীর সন্ত ছিলেন।[২] কিংবদন্তি অনুসারে উঁচু-পাখ এবং সুন্দর শুভ্র অবয়বের সৈয়দ রশন আলি চিস্তি বগা ঘোড়ায় উঠে ঊণর চোলা পরে আজমের থেকে বিংশ শতকের প্রথমার্ধে আসামে আসেন। তারপরে তিনি আসামে উপস্থিত হয়ে ডিব্রুগড় শহরের রেলওয়ে স্টেশনের কাছের একটি ঝুপড়িতে বাস করতেন।[১] কথিত আছে যে, তাঁর একটি মাত্র ছোট খাদ্য রান্না করার পাত্র ছিল। সেখানে তিনি নিজেদের খাদ্য রান্না করতেন এবং তাঁকে দেখা করতে আসা সবলোক এই পাত্র থেকে খাদ্য ভাগ করে দিতেন। এই অস্বাভাবিক ঘটনা শুনে সকল ধর্মের মানুষ তাঁর বাণী শুনতে আসেন। বিংশ শতকের ষাটের দশকে তাঁর মৃত্যু হয়।[২] মৃত্যুর পরে তাঁর দেহ পরুয়া আবরে ধরেছিল বলেও বিশ্বাস করা হয়। তারপরে তাঁকে তাঁর ঝুপড়িটিতে কবর দেওয়া হয়েছিল। পরে তাঁর কবরকে মাজার হিসাবে গড়ে দেওয়া হয়।[২] কিছুজনের মতে বগা বাবা মাজারের জন্যই ব্রহ্মপুত্র নদী ডিব্রুগড় শহরকে গ্রাস করতে পারেনি।

নামের উৎপত্তি[সম্পাদনা]

সৈয়দ রশন আলি চিস্তি ওরফে বগা বাবা বা বগা ফকীর দেখতে সুদর্শন ছিলেন। উঁচু এবং দেহর উজ্জ্বল বর্ণের জন্য তিনি বগা বাবা বা বগা ফকীর রূপে পরিগণিত হয়েছিলেন। পরে তাঁর মাজারটি বগা বাবার মাজার বা বগা ফকীরের মাজার বলে পরিচিত হয়।[১]

পর্যটন[সম্পাদনা]

বগা বাবা মাজার ডিব্রুগড় শহরের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনস্থল। ইসলাম ধর্মালম্বীরা একে পবিত্র বলে জ্ঞান করেন। এর সাথে অন্য অন্য ধর্মালম্বীদেরও বগা বাবা মাজার উল্লেখযোগ্য স্থান। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পীর বগা বাবা মাজারে মানুষের আগমন হয়। তাঁরা এখানে মোমবাতি জ্বালায়। কিছুজন মাজারে চাদর দেন। অনেকে তাঁদের প্রার্থনার উত্তর পাওয়ার জন্যও এখানে আসেন।[৩]

যাতায়ত[সম্পাদনা]

বগা বাবার মাজার ডিব্রুগড় শহরের মাঝের ৩৭ নং জাতীয় সড়কের কাছে অবস্থিত। এটি পুরানো ডিব্রুগড় টাউন রেলওয়ে স্টেশনের নিচেই কাছে অবস্থিত। ডিব্রুগড় রেলওয়ে স্টেশন এবং ডিব্রুগড় বিমানবন্দর মহাবিদ্যালয়টি থেকে ক্রমে ৬ এবং ১৬ কি.মি. দূরে অবস্থিত।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Mumtaz, Nahida (২০১০)। SUFIS AND THEIR CONTRIBUTION TO THE CULTURAL LIFF OF MEDIEVAL ASSAM IN 16-17"' CENTURY। আলিগড়, উত্তর প্রদেশ: আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ৯০,৯১।  line feed character in |title= at position 37 (সাহায্য)
  2. আহমেদ, কে জামাল (অক্টোবর, ২০০০)। সমন্বয় আলোচনী,। ডিব্রুগড়: বগা বাবার মাজার। পৃষ্ঠা ২০।  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  3. "What to do this weekend"