নিকোলাই গোগোল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নিকোলাই গোগোল
ডেগেরোটাইপ সের্গেই লোভোভিচ লেভিৎস্কি(১৮১৯-১৯৯৮) ১৮৪৫ সালে গৃহীত গোগোলের ছবি
ডেগেরোটাইপ সের্গেই লোভোভিচ লেভিৎস্কি(১৮১৯-১৯৯৮) ১৮৪৫ সালে গৃহীত গোগোলের ছবি
জন্মনিকোলাই ভাসিলয়িএভিচ গোগোল -ইয়ানোভস্কি
(১৮০৯-০৩-২০)২০ মার্চ ১৮০৯[১] (ও.এস.)/(১৮০৯-০৪-০১)১ এপ্রিল ১৮০৯ (এন.এস.)
সোরোচিনতসি, পোল্টাভা গভর্নেট, রুশ সাম্রাজ্য
মৃত্যু২১ ফেব্রুয়ারি ১৮৫২(১৮৫২-০২-২১)
মস্কো, রুশ সাম্রাজ্য
সমাধিস্থলনোভোডেভিচি সমাধিক্ষেত্র
পেশানাট্যকার, ছোটগল্পকার, ঔপন্যাসিক
ভাষারুশ
জাতীয়তাইউক্রেনিয়
সময়কাল১৮৪০-৫১

স্বাক্ষর

নিকোলাই ভাসিলয়িএভিচ গোগোল (/ˈɡɡəl, -ɡɔːl/;[২] রুশ: Никола́й Васи́льевич Го́голь, উচ্চারণ: Nikolay Vasilyevich Gogol, আ-ধ্ব-ব[nʲɪkɐˈlaj vɐˈsʲilʲjɪvʲɪtɕ ˈgogəlʲ]; ইউক্রেনীয়: Мико́ла Васи́льович Го́голь, প্রতিবর্ণীকৃত: Mykola Vasylovych Hohol; ১লা এপ্রিল [পুরোনো শৈলীতে ২০ মার্চ] ১৮০৯ [১]– ৪ঠা মার্চ [পুরোনো শৈলীতে ২১শে ফেব্রুয়ারি] ১৮৫২ ) একজন রাশিয়ান[৩][৪][৫][৬][৭] ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার এবং নাট্যকার ছিলেন; যদিও তার জন্ম হয়েছিল ইউক্রেনে।[৮][৯][১০][১১]

গোগোলই প্রথম তার কাজে পরাবাস্তববাদ এবং ব্যাঙ্গাত্মক প্রহসনের ধারা প্রয়োগ করে দেখান (“দি নোজ”, “ভিই”, “দি ওভারকোট”, “নেভস্কি প্রস্পেক্ট”)। কর্নলিজে ক্বাস লিখেছিলেন “গোগোলের দি পিটার্সবার্গ টেলসের যৌক্তিক গঠন বাস্তবপূর্ণ, কারণ সেখানে ব্যাঙ্গাত্মক প্রহসন এবং অসাধারণ বিষয়গুলো বাস্তবপূর্ণ ঘটনার ছাঁচের সাথে সুসঙ্গতভাবে অভিনিবিষ্ট রয়েছে, এবং সেখানে ঘটনার যৌক্তিক ক্রমের সাথে আমাদের চারপাশে ঘটে চলা বাস্তব ঘটনাবলী উন্মোচন সঙ্গতি বজায় রেখেছে।”[১২] ভিক্টর শ্লোভস্কির মতে, গোগোল যে ধরনের অদ্ভুত লিখন শৈলী ব্যবহার করতেন তা অনেখানিই “অস্ট্রেনি”র মতো।[১৩] তার প্রথমদিকের কাজ, যেমন ইভনিংস অন আ ফার্ম নিয়ার ডিকাঙ্কার ওপরে তার ইউক্রেনে বড়ো হওয়া, ইউক্রেনের সংস্কৃতি এবং লোকসাহিত্যের প্রভাব পড়েছে।[১৪][১৫] তার পরবর্তী লেখাগুলোতে তিনি রুশদেশীয় সাম্রাজের রাজনৈতিক দুর্নীতিকে নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন (দি গভর্নমেন্ট ইন্সপেক্টর, ডেড সোল)। তারাস বুলবা নামক উপন্যাস (১৮৩৫), ম্যারেজ নামে নাটক (১৮৪২) এবং “ডায়রি অফ আ ম্যাডম্যান”, “ইভান ইভানোভিচ কীভাবে ইভান নিকিফোরোভিচের সাথে ঝগড়া করেছিল তার গল্প”, “দি পোর্ট্রেট” এবং “দি ক্যারেজ” তার সবথেকে সুপরিচিত কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম।

ভিসারিয়ন বেলিনস্কি এবং নিকোলাই চার্নিশেভস্কির মতে, রাশিয়ান সাহিত্য এবং বিশ্বসাহিত্যের ওপরে গোগোলের প্রচুর প্রভাব রয়েছে। মিখাইল বুলগাকভ, ফিওদোর দস্তয়েভ্‌স্কি, রুনোসুকে আকুটাগাওয়া, ফ্ল্যানারি ও’কন্নর, ফ্রান্স কাফকা এবং অন্যান্যরাও গোগোলের প্রভাবের কথা স্বীকার করেছেন।[১৬][১৭]

প্রথম জীবন[সম্পাদনা]

গোগোল ইউক্রেনের সোরোচিনৎসির কোসাক শহরে রোমান সাম্রাজ্যের অন্তর্গত পোলটাভা গভর্নেটে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।[১৮] তার মা ছিলেন ১৭১০ সালের লুবনি রেজিমেন্টের আধিকারিক লিওন্টি কোসিয়ারোভস্কির বংশধর। তার বাবা ভাসিলি গোগোল-ইয়ানোভস্কি ছিলেন ইউক্রেনের কোসাক বংশের বংশধর (লিজোহাব পরিবার দেখুন) যিনি গোগোলের ১৫ বছর বয়সেই মারা যান; তিনি ‘পেটি জেন্ট্রি’র অন্তর্গত ছিলেন এবং ইউক্রেনিয় ও রাশিয়ান ভাষায় কবিতা লিখতেন ও ইউক্রেনিয় ভাষায় শখের নাট্যকার ছিলেন। ঊনবিংশ শতকের প্রথম দিকে ইউক্রেনিয় জেন্ট্রির বাম-তীরের অধিবাসী হিসেবে তার পরিবার ইউক্রেনিয় ও রাশিয়ান ভাষা জানতেন। শৈশব থেকেই ইউক্রেনিয় ভাষার নাটকগুলোকে মঞ্চস্থ করার কাজে গোগোল তার কাকাকে বাড়ির নাট্যশালায় সাহায্য করতেন।[১৯]

১৮২০ সালে গোগোল উচ্চতর শিল্প শিক্ষার জন্য নিঝাইনের একটি বিদ্যালয়ে ভর্তি হন (বর্তমানে নিঝাইন গোগোল স্টেট ইউনিভার্সিটি) এবং ১৮২৮ সাল পর্যন্ত সেখানেই শিক্ষালাভ করেন। সেখানেই তার লেখালিখির সূত্রপাত হয়। তিনি তার বিদ্যালয়ের বন্ধুদের মধ্যে খুব একটা জনপ্রিয় ছিলেন না; বন্ধুরা তাঁকে তাদের “রহস্যময় বামন” বলে ডাকত, যদিও এইসব বন্ধুদের মধ্যে দু-তিনজনের সাথে তার দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল। একেবারে শুরুর দিনগুলো থেকেই তার একটা অন্ধকারময় ও গোপনীয়তার প্রতি টান ছিল; এর সাথে ছিল তার যন্ত্রণাময় আত্ম-সচেতনতা এবং অপরিসীম উচ্চাকাঙ্খা। পাশাপাশি খুব শীঘ্রই তার অনুকরণ করবার একটা ক্ষমতা গড়ে ওঠে যা পরে তাঁকে তার নিজের সাহিত্যকর্ম পাঠের অতুলনীয় একজন পাঠক হিসেবে গড়ে তোলে এবং এর ফলেই তার অভিনেতা হওয়ার প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি পায়।

১৮২৮ সালে, বিদ্যালয় ছেড়ে যাবার সময়, গোগোল সেন্ট পিটার্সবার্গে এসেছিলেন অস্পষ্ট কিন্তু উজ্জ্বল উচ্চাশাকে সাথে নিয়ে। তিনি সাহিত্যে যশাকাঙ্খী হয়েছিলেন এবং সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন একটি জার্মানদের অলস জীবনকে নিয়ে লেখা একটা রোম্যান্টিক কবিতা – হান্স কুচেলগার্টেন। তিনি “ভি. আলোভ” নামে এই কবিতাটি নিজের খরচে প্রকাশ করেন। যেসকল পত্রিকায় তিনি কবিতাটা পাঠিয়েছিলেন তাদের প্রত্যেকটাই নামঞ্জুর করে দেয়। এর ফলে তিনি সবক’টা কপি কিনে সেগুলোকে নষ্ট করে দেন এবং প্রতিজ্ঞা করেন যে আর কোনোদিনও কবিতা লিখবেন না।

আন্তন ডেলভিগের নর্দান ফ্লাওয়ারস্‌ পত্রিকায় একটা গল্প প্রকাশ করে তিনি ভাসিলি জুকোভস্কি ও পিয়োট্র প্লেটনিয়ভের দৃষ্টি কাড়েন ও “সাহিত্যিক অভিজাতমহলের” সংস্পর্শে আসেন এবং (১৮৩১ সালে) তিনি পুশকিনের সাথে পরিচিত হন।

সাহিত্যিক উন্নতি[সম্পাদনা]

দি গভর্নমেন্ট ইন্সপেক্টর (১৮৩৬) এর প্রথম সংস্করণের প্রচ্ছদ।

১৮৩১ সালে গোগোল তার ইউক্রেনিয় গল্পের প্রথম খণ্ড প্রকাশ করেন (ইভনিংস অন আ ফার্ম নিয়ার ডিকাঙ্কা) যা তাঁকে সরাসরি সাফল্য এনে দিয়েছিল।[২০] এর পর তিনি ১৮৩২ সালে এর দ্বিতীয় খণ্ড এবং ১৮৩৫ সালে দুটি খণ্ডই মিরগোরোদ নামে প্রকাশ করেন; এর সাথে তিনি তার বিভিন্ন গদ্যরচনার দুটি খণ্ড আরাবেস্কিউস নামে প্রকাশ করেন। এইসময়ে নিকোলাই পোলেভয় এবং নিকোলাই নাডেঝডিনের মতো রাশিয়ান সম্পাদক এবং সমালোচকরা গোগোলের মধ্যে রাশিয়ানের থেকেও বেশি একজন ইউক্রেনিয় লেখকের পরিস্ফুরণ দেখতে পেয়েছিলেন; এর জন্য তারা রাশিয়ান এবং ইউক্রেনিয় জাতীয় চরিত্রাবলীর অনুমিত তফাৎ করবার জন্যে তার সাহিত্যকর্ম ব্যবহার করতেন।[২১] গোগোলের প্রথমদিকের গদ্যরচনার বিষয়বস্তু এবং শৈলী এবং তার পরবর্তীকালের নাটকগুলোও হ্রিহোরি ভিটকা-ওস্নোভিয়ানেঙ্কো এবং ভাসিলি নারেঝনির মতো তার সমসাময়িক ও বন্ধু ইউক্রেনিয় লেখক ও নাট্যকারদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যদিও গোগোলের ব্যঙ্গাত্মক রচনা ছিল আরও বেশি পরিশীলিত ও রীতিবর্জিত।[২২]

এইসময়ে গোগোল ইউক্রেনের ইতিহাস সম্বন্ধে জানতে ব্যগ্র হয়েছিলেন এবং সেইহেতু কিয়েভ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ভর্তির জন্য চেষ্টা করেন। পুশকিন এবং তৎকালীন রাশিয়ান শিক্ষামন্ত্রী সের্গেই উভারভের সমর্থন থাকা সত্ত্বেও তার ভর্তি একজন কিয়েভিয় আমলা আটকে দেন, কারণ তার মতে গোগোল ছিলেন অযোগ্য।[২৩] ইউক্রেনিয় কোসাকদের ইতিহাস নিয়ে রচিত তার ফিকশন কাহিনী তারাস বুলবা লেখার কারণেই ইতিহাস নিয়ে তার আগ্রহ জন্মায়। এইসময়ে, তিনি আরেকজন ইউক্রেনিয় ইতিহাসবিদ এবং প্রকৃতিবিদ মিখাইলো ম্যাক্সিমোভিচের সাথে ঘনিষ্ঠ এবং আজীবন বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন।[২৪]

১৮৩৪ সালে, গোগোল সেন্ট পিটার্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যযুগীয় ইতিহাসের অধ্যাপকের চাকরি পান যার জন্য কোন যোগ্যতাই তার ছিল না। তিনি এমন একটি কাজ করলেন যা তার নিজের লেখা একটি গল্পেই তিনি ব্যঙ্গ করে লিখেছিলেন। সূচনা ভাষণের সময় তিনি এমন এক উজ্জ্বল সাধারণীকরণ দিয়ে শুরু করলেন যা এই ‘ঐতিহাসিক’ অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে প্রস্তুত করেছিলেন এবং মুখস্থ করেছিলেন; এরপর পাণ্ডিত্য এবং শিক্ষকতার সময় আর তার ভণিতা দিয়ে চলল না, তিনি তিনটের মধ্যে দুটো ভাষণেই অনুপস্থিত ছিলেন, এবং যখন তিনি সর্বসমক্ষে উপস্থিত হলেন, তখন দাঁত চিপে দুর্বোধ্যভাবে বিড়বিড় করতে লাগলেন। শেষ পরীক্ষায়, তিনি একটা কালো রুমাল দিয়ে মুখ ঢেকে একেবারে নির্বাক হয়ে বসেছিলেন যেন তার দাঁতের ব্যথা হয়েছে এবং অন্য এক অধ্যাপক ছাত্রছাত্রীদের প্রশ্ন করছিলেন।[২৫] তার একাডেমিক উদ্যোগ এখানেই শেষ হল এবং ১৮৩৫ সালে তিনি পদত্যাগ করেন।

তার রোমের বাড়িতে রাখা স্মৃতিফলক

১৮৩২ থেকে ১৮৩৬ সালের মধ্যে, গোগোল প্রভূত পরিশ্রমের সাথে কাজ করেছিলেন, এবং যদিও তার প্রায় সমস্ত কাজের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ উৎস এই চার বছর ধরে পুশকিনের সাথে তার যোগাযোগ, তিনি কিন্তু তখনও এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি যে তার লক্ষ্যের সাফল্য সাহিত্যই পূরণ করবে। এই সময়ে, রাশিয়ান সমালোচক স্টিফান শেভিরেভ এবং ভিসারিও বেলিনস্কি, আগেকার সমালোচকদের বিরোধীতা করে গোগোলকে ইউক্রেনিয় লেখক থেকে একজন রাশিয়ান লেখকদের দলে অন্তর্ভুক্ত করেন।[২১] ১৮৩৬ সালের ১৯শে এপ্রিল সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেট থিয়েটারে তার কমেডি নাটক দি গভর্নমেন্ট ইন্সপেক্টর (রেভিজর)[২৬] মঞ্চস্থ হওয়ার পর থেকে তিনি তার সাহিত্য বৃত্তি সম্বন্ধে বিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। রাশিয়ার প্রাদেশিক আমলাতন্ত্রকে নিয়ে চরম এই প্রহসনটি শুধুমাত্র সম্রাট নিকোলাস I এর হস্তক্ষেপেই মঞ্চস্থ হতে পেরেছিল।

১৮৩৬ থেকে ১৮৪৮ সাল পর্যন্ত গোগোল বিদেশে থেকে জার্মানী এবং সুইটজারল্যান্ড ঘুরে বেড়ান। গোগোল ১৮৩৬-৩৭ সালের শীতে প্যারিসে[২৭] রাশিয়ান প্রবাসী এবং পোল্যান্ডের নির্বাসিতদের সাথে কাটান এবং পোল্যান্ডের কবি অ্যাডাম মিকিউইচ এবং বোহদান জালেস্কির সাথে দেখা করেন। এরপর তিনি রোমে গিয়ে বসবাস করেন। ১৮৩৬ সাল থেকে পরবর্তী বারো বছরের বেশিরভাগ সময়েই তিনি ইতালিতে কাটান এবং রোমের প্রতি তার একটা ভালোবাসা তৈরি হয়। তিনি শিল্প নিয়ে পড়াশোনা করেন, ইতালিয় সাহিত্য পড়েন এবং অপেরার প্রতি একটা আগ্রহ গড়ে তোলেন।

পুশকিনের মৃত্যু গোগোলকে একটা মারাত্মক ঘা দিয়েছিল। পুশকিনের মৃত্যুর পর থেকে পরবর্তী বছরগুলোতে তার কাজের মধ্যে প্রধানতম কাজ হল ব্যঙ্গাত্মক মহাকাব্য ডেড সোলস। এর পাশাপাশি তিনি অন্যান্য কাজেও যুক্ত ছিলেন – তারাস বুলবা (১৮৪২)[২৮] এবং দি পোর্টেটের পরিমার্জন করেন, দ্বিতীয় কমেডি নাটক ম্যারেজ (ঝেনিৎবা) শেষ করেন, রোম আংশিক সমাপ্ত করেন এবং তার সবথেকে বিখ্যাত ছোটগল্প ‘দি ওভারকোট’ লিখেছিলেন।

১৮৪১ সালে ডেড সোলসের প্রথম অংশ সমাপ্ত হয় এবং তিনি এটি ছাপানোর জন্য রাশিয়া যান। সেন্সরশিপ হওয়ায় এটি দি অ্যাডভেঞ্চারস্‌ অফ চিচিকোভ নামে ১৮৪২ সালে মস্কো পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বইটির কারণে এই ভাষায় মহানতম গদ্য লেখক হিসেবে তার খ্যাতির প্রতিষ্ঠিত হয়।

সৃষ্টিশীলতার অবনমন এবং মৃত্যু[সম্পাদনা]

ফিওদোর মোলার (১৮৪০) কর্তৃক অঙ্কিত গোগোলের কয়েকটি ছবির একটি।

ডেড সোলসের চূড়ান্ত সাফল্যের পর, গোগোলের সমসাময়িকরা তাঁকে একজন মহান প্রহসন লেখক হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন যিনি রাশিয়ার রাজতন্ত্রের অন্যায় দিকগুলো নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন। যদিও অল্প কিছু লোকেই জানতেন যে এর প্রথম অংশটা ছাড়া বাকিটুকু দান্তের ডিভাইন কমেডির বর্তমান দিনের পরিকল্পিত রূপ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] প্রথম অংশটা ইফার্নোকে প্রতিনিধিত্ব করে; দ্বিতীয় অংশ দুষ্ট চিচিকভের গভর্নরদের এবং কর-সংগ্রাহকদের সততার প্রভাবে ধারাবাহিক পবিত্রকরণ এবং রূপান্তরণ – পার্গেটরি।[২৯]

১৮৪৮ সালের এপ্রিলে গোগোল জেরুজালেমে তীর্থ ভ্রমণ করে রাশিয়ায় ফিরে এলেন এবং তার শেষ কয়েক বছরে তিনি সারা দেশ জুড়ে অবিশ্রান্তভাবে ভ্রমণ করেন। রাজধানীগুলো ভ্রমণের সময়ে, তিনি মিখাইল পোগোডিন এবং সের্গেই আক্সাকোভের মতো বন্ধুদের সাথে কাটান। এই সময়ে তিনি ম্যাক্সিমোভিচ এবং ওসিপ বোদিয়ানস্কির মত ইউক্রেনিয় পুরোন বন্ধুদের সাথেও সময় অতিবাহিত করেন। তিনি স্টারেটস বা আধ্যাত্মিক গুরু মাটভেই কনস্টান্টিনোভস্কির সাথে তার সম্পর্ক গাঢ় করেন; তাঁকে তিনি বেশ কিছু বছর ধরেই চিনতেন। কনস্টান্টিনোভস্কির প্রভাবেই সম্ভবত গোগোলের মধ্যে ভীতি জন্মায় যে তার সমস্ত কাল্পনিক কাজের পাপস্বরূপ তাঁকে আজীবন নরকবাস করতে হবে। অত্যধিক আধ্যাত্মিক চর্চার ফলে তার স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে এবং তিনি গভীর অবসাদে ডুবে যান। ১৮৫২ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারির রাতে তিনি তার অনেকগুলো পাণ্ডুলিপি পুড়িয়ে ফেলেন যার মধ্যে অধিকাংশই ছিল ডেড সোলসের দ্বিতীয় খণ্ড। তিনি একে একটি ভ্রান্তি বলে মনে করেন, এবং বলেন যে শয়তান তার সাথে প্রকৃতই মজা করছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এরপরেই, তিনি শয্যাগত হন, সমস্ত আহার বর্জন করেন এবং নয়দিন বাদে অসহ্য যন্ত্রণায় মারা যান।

সমাধিস্থ করার আগে মস্কো বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট টাটিয়ানা গীর্জায় গোগোলের শোকস্তব পাঠ করা হয় এবং দানিলোভ মনাস্ট্রিতে তার বন্ধু স্লাভোফাইল আলেক্সি খোমিয়াকোভের কাছেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। তার কবরস্থান একটা বড় প্রস্তরখণ্ড (গোলগোথা) দ্বারা চিহ্নিত করা আছে যার শীর্ষে রয়েছে একটা রাশিয়ান অর্থোডক্স ক্রুশচিহ্ন।[৩০] ১৯৩১ সালে, মস্কো কর্তৃপক্ষ এই মনাস্ট্রিটি ধ্বংস করে এবং গোগোলের দেহাবশেষ নোভোডেভিচি সমাধিক্ষেত্রে স্থানান্তরিত করা হয়।[৩১]

নোভোডেভিচি সমাধিক্ষেত্রে গোগোলের কবরস্থান।
২০০৯-পরবর্তী রাশিয়ার মস্কোয় নোভোডেভিচি সমাধিক্ষেত্রে নিকোলাই গোগোলের কবরস্থান।

তার দেহ উপুড় করে শোয়ান অবস্থায় আবিষ্কৃত হয়েছে যা থেকে এই কথাও মনে করা হয় যে গোগোলকে জীবন্ত সমাধি দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ গোলগোথা প্রস্তরখণ্ডটিকে নতুন সমাধিস্থলে নিয়ে যায়, কিন্তু ক্রুশচিহ্ন সরিয়ে দেয়; ১৯৫২ সালে সোভিয়েটরা প্রস্তরখণ্ডটিকে গোগোলের আবক্ষ মূর্তির সাথে পুনঃস্থাপিত করে। প্রস্তরখণ্ডটা পরবর্তীকালে গোগোলের প্রশংসাকারী মিখাইল বুল্গাকভের সমাধিস্তম্ভে পুনঃব্যবহৃত হয়। ২০০৯ সালে, গোগোলের জন্মের দ্বিশতবার্ষিকীতে তার আবক্ষ মূর্তিটাকে নোভোডেভিচি সমাধিক্ষেত্রের যাদুঘরে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং আসল গোলগোথা প্রস্তরখণ্ডটাকে আসল অর্থোডক্স ক্রুশের নকলসহ ফিরিয়ে আনা হয়।[৩২]

মস্কোয় প্রথম গোগোলের স্মৃতিস্তম্ভ হল আরবাত স্কোয়্যারে অবস্থিত একটা প্রতীকি মূর্তি যার মধ্যে দিয়ে গোগোলকে একজন মানুষ হিসেবে যত না প্রকাশ করা হয়েছে তার চেয়ে বেশি গোগোলের সম্বন্ধে স্থপতি নিকোলাই আন্দ্রেইয়েভের ধারণা ফুটে উঠেছে।[৩৩] ১৯০৯ সালে উন্মোচিত এই মূর্তিটা গোগোলের নির্যাতিত ব্যক্তিত্বের অসাধারণ প্রকাশ হিসেবে ইলিয়া রেপিন এবং লিও টলস্টয়ের প্রশংসা অর্জন করেছে। জোসেফ স্ট্যালিন এটিকে পছন্দ করেননি এবং ১৯৫২ সালে মূর্তিটা অপেক্ষাকৃত সমাজতান্ত্রিক বাস্তববাদী একটি স্মৃতিস্তম্ভ দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হয়। আন্দ্রেইয়েভের প্রকৃত কাজটিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে প্রভূত পরিশ্রম করতে হয়েছিল; ২০১৪ সালের তথ্যানুযায়ী এই মূর্তিটাকে গোগোল যে বাড়িতে মারা গেছিলেন তার সামনে স্থাপন করা রয়েছে।[৩৪]

শৈলী[সম্পাদনা]

ডি.এস. মিরস্কি গোগোলের বিশ্বকে বর্ণনা করেছিলেন, “সবথেকে বড়ো বিস্ময়কর, অপ্রত্যাশিত বিশ্বের মধ্যে অন্যতম (কঠোরভাবে, মৌলিক অর্থে বিচার করলে)[৩৫] যা কোন শব্দশিল্পী কখনোও সৃষ্টি করতে পেরেছেন।”[৩৬]

ডেড সোলসের অলংকরণশিল্পীদের মধ্যে পিয়োট্র সলোকভ

গোগোলের রচনার আরেকটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল বাস্তবতা এবং মানুষ সম্বন্ধে তার ‘প্রতীতিবাদী’ দৃষ্টিভঙ্গী।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তিনি দেখেছিলেন বাইরের বিশ্ব অদ্ভুতভাবে রূপান্তরিত হয়ে যাচ্ছে, যা বোঝা যায় তার গথিক গল্পদ্বয় “আ টেরিবল ভেঞ্জেন্স” এবং “আ বিউইচড্‌ প্লেস” থেকে যেখানে এই স্থানিক রূপান্তরণ অসামান্যভাবে বর্ণিত হয়েছে। তার প্রকৃতির চিত্রগুলো ছিল বর্ণনার পর বর্ণনায় তৈরি একটা অদ্ভুত নির্মাণ যার কারণে একটা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হত। তার চরিত্রগুলো হত ব্যঙ্গচিত্রের মত, ব্যঙ্গচিত্রীদের পদ্ধতি অনুসরণ করে যেন আঁকা – যার ফলে গল্পের মুখ্য বিষয়গুলো অতিরঞ্জিত হয়ে উঠত এবং চরিত্রগুলো জ্যামিতিক নকশার পর্যায়ে নেমে আসত। কিন্তু এইসকল কার্টুনগুলোর একটা বিশ্বাসযোগ্যতা, সত্যবাদীতা এবং অবশ্যম্ভাবীতা থাকত – নিয়মানুযায়ী অপ্রত্যাশিত বাস্তবের হাল্কা কিন্তু স্পষ্ট রেখাঙ্কনের মত – যা দৃশ্যমান বাস্তবেও মেলে না।[৩৭] আন্দ্রেই বেলির মতে, গোগোলের কাজ গথিক রোমান্সের উত্থানে অনুপ্রাণিত করেছিল এবং এটি অলীকবাদ ও প্রতীতিবাদের পূর্বসূরীরূপেও দাবী করে।[৩৮]

পরিণত বয়সে গোগোল বাস্তবকে যে পরিপ্রেক্ষিত নিয়ে দেখতেন তাকে রাশিয়ান শব্দ পোশলস্ট’ নামে অভিহিত করা হয় যার অর্থ হল এমন কিছু যা “তুচ্ছতা, গতানুগতিকতা, হীনতা” নৈতিক এবং অ্যাধ্যাত্মিক, যা কিছু গোষ্ঠী বা সমাজের মধ্যে বিরাজ করে। পূর্বসূরী স্টার্নের মত গোগোলও ছিলেন নিষেধাজ্ঞা এবং রোমান্টিক বিভ্রমের একজন বড়ো ধ্বংসকারী। তিনি রাশিয়ান রোম্যান্টিকতাকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিলেন; যেখানে আগে কেবলমাত্র মহিমান্বিত আদর্শ এবং সৌন্দর্য থাকত সেখানে তিনি অশ্লীলতার আধিপত্য এনে দিলেন।[৩৯] “গোগোলের রচনার বৈশিষ্ট্য হল বাঁধনছাড়া অতিমাত্রিকতার বোধ যা শীঘ্রই একটা নিরেট শূন্যস্থান এবং সমৃদ্ধ কমেডি হিসেবে প্রকাশিত হয়েই হঠাৎ অধিবিদ্যাগত ভীতিতে পর্যবসিত হয়।”[৪০] তার গল্পগুলো উদ্দীপনা এবং ব্যঙ্গ প্রায়শই জড়িয়ে থাকে, যেমন “দি টেল অফ হাউ ইভান ইভানোভিচ কোয়ার্লড উইথ ইভান নিকিফোরোভিচ” গল্পটি শুরু হচ্ছে একটা সাধারণ প্রহসন দিয়ে এবং শেষ হচ্ছে একটা বিখ্যাত নীতিবাক্য দিয়ে, “ভদ্রমহোদয়গণ, এই দুনিয়ার সবকিছুই বোকা-বোকা!”

রাজনীতি[সম্পাদনা]

রাশিয়ায় গোগোলের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ (নিকোলাই আন্দ্রেইয়েভ কর্তৃক একটি প্রতীতিবাদী মূর্তি, ১৯০৯)।
রোমে ভিলা বোর্গেস বাগানে গোগোলের একটি সাধারণ মূর্তি।
ইলিয়া রেপিনের গোগোল ডেড সোলসের দ্বিতীয় খণ্ডের পাণ্ডুলিপি পুড়িয়ে ফেলছেন
ডাকটিকিট, রাশিয়া, ২০০৯। আরও দেখুন: ফিলাটেলিতে গোগোল, রাশিয়ান উইকিপিডিয়া

যখন সমালোচকরা দি গভর্নমেন্ট ইন্সপেক্টর নাটকটাকে জার শাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ হিসেবে বিবেচনা করল, নাটকটার প্রতি নিকোলাস I এর পৃষ্ঠপোষকতা থাকা সত্ত্বেও, তখন গোগোল অত্যন্ত বিস্মিত হয়েছিলেন। গোগোল নিজে, স্ল্যাভোফাইল আন্দোলনের একজন অনুগত হিসেবে হাউস অফ রোমানভ এবং রাশিয়ান অর্থোডক্স চার্চ – উভয়ের স্বর্গীয়রূপে অনুপ্রাণিত উদ্দেশ্য সম্বন্ধে বিশ্বাসী ছিলেন। ফিওদোর দস্তয়েভস্কির মত, গোগোল সেইসকল রাশিয়ানদের সাথে চূড়ান্ত দ্বিমত পোষণ করতেন যাঁরা সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের পক্ষে কথা বলতেন এবং অর্থোডক্স চার্চের অপসারণ চাইতেন।

তার সিলেক্টেড প্যাসেজেস ফ্রম করেসপন্ডেন্স উইথ হিস ফ্রেন্ডস (১৮৪৭) বইটাতে তিনি স্বৈরাচারীত্ব, সার্ফ প্রথা এবং অর্থোডক্স চার্চের পক্ষে কথা লিখে, গোগোল তার প্রাক্তন পৃষ্ঠপোষক ভিসারিও বেলিনস্কির আক্রমণের সম্মুখীন হন। কার্ল মার্ক্সের অর্থনৈতিক তত্ত্বের জনসমক্ষে প্রচারকারী প্রথম রাশিয়ান বুদ্ধিজীবী বেলিনস্কি গোগোল বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন যে গোগোল স্টেটাস ক্যুর পক্ষে কথা বলে তার পাঠকদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।[৪১]

প্রভাব ও ব্যাখ্যা[সম্পাদনা]

ডেড সোলস প্রকাশের আগে, বেলিনস্কি গোগোলকে প্রথম রাশিয়ান ভাষার একজন বাস্তবাদী লেখক হিসেবে এবং প্রকৃতি শিল্পবাদের একজন প্রধান হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং তার পাশাপাশি তিনি আরও কিছু অল্পবয়সী ও ছোটোখাট লেখকদেরও এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন যেমন, গনচারভ, তুর্গেনেভ, ডিমিট্রি গ্রিগোরোভিচ, ভ্লাদিমির ডাল এবং ভ্লাদিমির সোলোগাব। গোগোল নিজেই এইধরনের কোন সাহিত্যিক আন্দোলন সম্বন্ধে সন্দিহান ছিলেন। যদিও তিনি বুঝেছিলেন যে “কিছু অল্পবয়সী লেখকের” মধ্যে “বাস্তব জীবনকে দর্শন করবার একটা বিশেষ চাহিদা রয়েছে”, কিন্তু তিনি তাঁদের রচনার কমজোরি বাঁধুনি এবং লিখনশৈলীর নিন্দা করেছিলেন।[৪২] তৎসত্ত্বেও, উগ্র সমালোচকরা বংশের পর বংশ ধরে গোগোলকে (যে লেখকের বিশ্বে একটা নাক রাশিয়ার রাজধানীর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ায়) একজন মহান বাস্তববাদী লেখক হিসেবে সম্মানিত করেন; যে খ্যাতিটাকে এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকায় “গোগোলীয় প্রহসনের সবচেয়ে বড়ো বিজয়” বলে সমালোচনা করা হয়েছে।[৪৩]

সাহিত্যিক আধুনিকতার সময় থেকে গোগোলের কাজের প্রতি একটা ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গী এবং নতুন আগ্রহ দেখা যায়। রাশিয়ান আনুষ্ঠানিকতার একটা অগ্রণী কাজ হিসেবে বলা হয় এইচেনবমের “দি ওভারকোট” ছোটগল্পটার পুনর্মূল্যায়ন। ১৯২০র সময়ে রাশিয়ার ছোটগল্পকারদের একটা দল যাঁরা সেরাপিও ব্রাদার্স নামে পরিচিত ছিল, তারা গোগোলকে তাঁদের পূর্বসূরী হিসেবে মনে করতেন এবং তার রচনাশৈলী নকল করতেন। এইসময়ের প্রথমসারির ঔপন্যাসিক – উল্লেখযোগ্যভাবে ইয়েভজেনি জামায়াতিন এবং মিখাইল বুলগাকভ – এঁরাও গোগোলের প্রশংসা করেছিলেন এবং তার পদক্ষেপ অনুসরণ করেন। ১৯২৬ সালে ভেসেভলড মায়ারহোল্ড দি গভর্নমেন্ট ইন্সপেক্টর নাটকটিকে একটি “অলীক পরিস্থিতির কমেডি” হিসেবে মঞ্চস্থ করেন এবং তার মুগ্ধ দর্শকবৃন্দের সামনে সীমাহীন আত্ম-প্রবঞ্চনাময় একটা দুর্নীতিগ্রস্ত বিশ্বকে উপস্থাপিত করেন। ১৯৩৪ সালে আন্দ্রে বেলি গোগোলের সাহিত্যিক কৌশল সম্বন্ধে একটি পাঠ প্রকাশ করে যা সেসময় পর্যন্ত ছিল সবচেয়ে সুবিবেচনাপূর্ণ একটি কাজ। এই পাঠটিতে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন যেমন সেসময়ের ওপর নির্ভর করে গোগোলের কাজে সবথেকে বেশি ব্যবহৃত রং, ক্রিয়াপদের ওপর তার প্রতীতিবাদী ব্যবহার, তার শব্দবিন্যাসে স্পষ্ট বিচ্ছিন্নতা, তার বাক্যের মধ্যে জটিল ছান্দিক ছাঁচ, এবং তার শৈলীর আরও অনেক গোপন দিক নিয়ে তিনি আলোচনা করেছেন। এই কাজটির ওপরে, ভ্লাদিমির নবোকভ গোগোলের মাস্টারপিসের একটা সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রকাশ করেছেন।[৪৪]

গোগোল মস্কোর যে বাড়িতে মারা গেছিলেন। বাড়িটিতে সেই ফায়ালপ্লেসটি রয়েছে যেখানে তিনি ডেড সোলসের দ্বিতীয় খণ্ডের পাণ্ডুলিপিটি পুড়িয়ে ফেলেন।

রাশিয়ান সাহিত্যে গোগোলের প্রভাব স্থায়ী হয়েছে, যদিও বিভিন্ন সমালোচকেরা তার কাজগুলোকে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। যেমন, বেলিনস্কি তার ভয়ের গল্পগুলোকে “মৃতপ্রায়, ভয়াবহ কাজ” বলে অ্যাখ্যায়িত করেছেন, অথচ আন্দ্রেই বেলি সেগুলোকে তার সবচেয়ে স্টাইলিসটিক সাহসী সৃষ্টি বলে উল্লেখিত করেছেন। নবোকভ বিশেষত ডেড সোলস, দি গভর্নমেন্ট ইন্সপেক্টর, এবং “দি ওভারকোট”কে একজন জিনিয়াসের কাজ বলে প্রশংসা করেছেন এবং বলেছেন যে “যখন, তার অমর সৃষ্টি ‘দি ওভারকোটে’ যেমন হয়েছিল, গোগোল বাস্তবে সেভাবে নিজে গেলেন এবং তার নিজের ব্যক্তিগত সর্বনাশের খাদের সীমানায় দাঁড়িয়েও খুশি মনে ধীরে ধীরে কাজ করতে লাগলেন, তখন থেকেই তিনি রাশিয়ার মহানতম শিল্পী হয়ে উঠতে পারলেন।”[৪৫] সমালোচকরা বলে থাকেন গোগোলের “দি ওভারকোট” হল একটি “মানবিক বাস্তববাদী” একটা মাস্টারপিস, কিন্তু নবোকভ এবং অন্যান্য কিছু মনোযোগী পাঠকরা যুক্তি দেন যে গল্পটির “ভাষার ছিদ্র” থেকে এটাই মনে করা যায় যে এটি একটি অতিবাস্তব কাহিনী যেখানে একটি “ছোট মানুষের” বিকটাকার ভুতুড়ে রূপ।[৪৬] গোগোলের সমস্ত গল্পের মধ্যে, “দি নোজ” সমস্ত দুর্বোধ্য ব্যাখ্যাকে কড়াভাবে রোধ করেছিলঃ ডি. এস. মার্সকি এটিকে বলেছিলেন “একটা সাধারণ নাটক, প্রায় সাধারণ একটা ভাঁড়ামি।” সাম্প্রতিককালে, যদিও, “দি নোজ” কিছু কৌতুহলোদ্দীপক উত্তরাধুনিক এবং উত্তর-ঔপনিবেশিক ব্যাখ্যার বিষয় হয়ে পড়ছে।

গোগোলের শিল্পকর্মগুলো অ-সাহিত্যিক ক্ষেত্রগুলোতেও বিরাট বড়ো প্রভাব ফেলেছে, এবং তার গল্পগুলো থেকে বিভিন্ন সময়ে অপেরা এবং চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়েছে। রাশিয়ান গীতিকার আলফ্রেড শ্নিটকে আটটি খণ্ডে গোগোল স্যুট লিখেছিলেন যা দি গভর্নমেন্ট ইন্সপেক্টর নাটকটিতে আবহ সঙ্গীত হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল এবং ডিমিট্রি শোস্তাকোভিচ ১৯২৮ সালে তার প্রথম অপেরায় দি নোজ গল্পটি নেন – পছন্দের বিষয়ে এটি খুবই অদ্ভুত ছিল, কারণ এর মাধ্যমে সোভিয়েত অপেরার মহান ঐতিহ্য শুরু করা হয়েছিল।[কার মতে?][৪৭] আরও সাম্প্রতিককালে, গোগোলের জন্মের দ্বিশতবর্ষ উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে, ভিয়েনার বিখ্যাত থিয়েটার আন ডের উইয়েন রাশিয়ার গীতিকার ও লেখক লেরা আওয়ারবাককে গোগোলের জীবন নিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্যের একটা অপেরার জন্য গান বানাতে ও পুস্তিকা রচনার দায়িত্ব দিয়েছিল।[৪৮]

কিছু সমালোচক গোগোলের রচনায় আপাত ইহুদীবিদ্বেষের প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন। তবে শুধু গোগোল নন, তার সমসাময়িক ফিওদোর দস্তয়েভস্কির রচনাতেও তারা তা পেয়েছেন।[৪৯] উদাহরণস্বরূপ, ফেলিক্স ড্রেইজিন এবং ডেভিড গুয়াস্পারি তাঁদের রচিত দি রাশিয়ান সোল অ্যান্ড দি জিউঃ এসে ইন লিটারারি ইথনোসেন্ট্রিজম, বইটিতে আলোচনা করেছেন “গোগোলের উপন্যাস তারাস বুলবায় ইহুদী চরিত্রের গুরুত্ব এবং ইউক্রেনিয় ইহুদী গোষ্ঠীর নেতিবাচক চিত্র থেকে এটা বোঝা যায় যে তৎকালীন ইউক্রেনিয় ও রাশিয়ান সংস্কৃতিতে প্রচলিত ইহুদী বিরোধী ভাবধারা গোগোলকে প্রভাবিত করেছিল।”[৫০] লিওঁ পোলিয়াকভের দি হিস্ট্রি অফ অ্যান্টিসেমিটিজম বইটিতে লেখক লিখেছেন যে

“তারাস বুলবার “ইয়াঙ্কেল” রাশিয়ান সাহিত্যে ইহুদী হিসেবে প্রতিনিধিস্থানীয় হয়ে ওঠে। গোগোল তাকে একজন চূড়ান্ত শোষক, ভীরু এবং বিদ্বেষপূর্ণ হিসেবে দেখান, যদিও তিনি কৃতজ্ঞতা অর্জনে সক্ষম। কিন্তু গল্পে এটি খুবই স্বাভাবিকভাবেই দেখানো হয়েছে যে তাকে এবং তার সহচরবৃন্দদের কোসাক প্রভুরা নিপার নদীতে ডুবিয়ে মারে। সর্বাগ্রে, ইয়াঙ্কেল হল হাস্যকর, এবং ছাল ছাড়ানো মুরগির যে রূপকল্প গোগোল ব্যবহার করেছেন তা তাঁকে একজন মহান সাহিত্যিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।”[৫১]

ইহুদী চরিত্রগুলোর এমন চিত্রায়ণ সত্ত্বেও, গোগোল ইহুদী লেখকদের মধ্যেও গভীর ছাপ ফেলে যান যে সকল লেখকরা তার সাহিত্যিক উত্তরাধিকার বয়ে নিয়ে চলেন। আমেলিয়া গ্লেসার শোলেম আলেইচেমের ওপরে গোগোলের সাহিত্যিক সৃষ্টির প্রভাবের কথায় বলেন, তিনি

“গোগোলকে নিয়ে তার লেখনীর বেশিরভাগকেই আদর্শ হিসেবে বাছেন, এমনকি তার উপস্থিতিকেও…গোগোলের লেখা থেকে শোলেম আলেইচেম ধার করেছেন পূর্ব ইউরোপের গ্রামীণ ভূদৃশ্য যা ভয়াবহ হতে পারত, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা সম্মিলিত স্মৃতির ক্ষমতার মধ্যে দিয়ে পাঠকদের একত্রিত করতে পেরেছিল। তিনি গোগোলের থেকে এই শিক্ষাও নেন যে কীভাবে এই ভয়াবহতাকে হাস্যরসে রূপান্তরিত করতে হয়, এবং তিনি প্রায়ই গোগোলের ইহুদী চরিত্রগুলোকে পুনর্লিখন করেছেন, তার ইহুদী-বিরোধী গোঁড়ামিকে সংশোধন করেছেন এবং একজন ইহুদীর প্রেক্ষিত থেকে ইতিহাস রচনা করেছেন।”[৫২]

অন্য শিল্পে রূপায়ণ[সম্পাদনা]

বিবিসি রেডিও-৪ থ্রি ইভানস্‌, ট্যু আন্টস অ্যান্ড অ্যান ওভারকোট (২০০২, জিম পয়সারের রূপায়ণ) নামে গোগোলের ছ’টি ছোটগল্প নিয়ে একটি ধারাবাহিক তৈরি করে যেখানে গ্রিফ রিস-জোন্স এবং স্টিফেন ম্যুর অভিনয় করেছিলেন। যেসকল গল্পগুলোকে সেখানে রূপায়িত করা হয়েছিল সেগুলো হল, “দি ট্যু ইভানস্‌”, “দি ওভারকোট”, “ইভান ফিওডোরোভিচ শ্পোনকা এবং তার কাকিমা”, “দি নোজ”, “দি মিস্টিরিয়াস পোর্ট্রেট” এবং “ডায়রি অফ আ ম্যাডম্যান”।

গোগোলের “ক্রিসমাস ইভ” নামে ছোটগল্পটি চাইকোভস্কি দুবার অপেরার জন্য রূপায়িত করেন, প্রথমবার ১৮৭৪ সালে ভাকুলা দি স্মিথ নামে, তারপর আবার সেটি ১৮৮৫তে তিনি দি জারিনাস স্লিপারস্‌ নামে রূপায়িত করেন; রিমস্কি-কোরসাকভও ১৮৯৪ সালে একই গল্পের ওপর একটা অপেরা নির্মাণ করেন। অ্যাডাম বিসন এই গল্পটির রেডিও সংস্করণ বের করেন এবং বিবিসি-৪এ ২০০৮ সালের ২৪শে ডিসেম্বরে[৫৩] সেটি সম্প্রচারিত হয় এবং এরপর আবার এটি রেডিও-৪ এবং রেডিও ৪ এক্সট্রায় ক্রিসমাস ইভ দিবসে ২০১০, ২০১১ এবং ২০১৫ সালে পুনঃসম্প্রচারিত হয়।[৫৪]

‘ক্রিসমাস ইভ’ ছোটগল্পটি ১৯৬১ সালে দি নাইট বিফোর ক্রিসমাস নামে চলচ্চিত্রে রূপায়িত করা হয়।

“ভিই” নামে গোগোলের ছোটগল্পটি রাশিয়ান চিত্রপরিচালকরা চারবার চলচ্চিত্রে রূপায়িত করেনঃ আসল ভিই ১৯৬৭ সালে; ভূতের চলচ্চিত্র ভেদমা (দি পাওয়ার অফ ফিয়ার নামেও পরিচিত) ২০০৬ সালে; ভিই নামে একটি অ্যাকশন হরর চলচ্চিত্র ২০১৪ সালে; গোগোল ভিই নামে একটি ভূতের চলচ্চিত্র ২০১৮ সালে মুক্তি পায়। গল্পটি ভিইঃ দি স্টোরি রিটোল্ট (২০০৪) নামে রাশিয়ান এফএমভি ভিডিও গেমেও রূপায়িত করা হয়। রাশিয়ার বাইরে, মারিও বাভার চলচ্চিত্র ব্ল্যাক সানডে (১৯৬০) এবং দক্ষিণ কোরিয়ার ভূতের সিনেমা ইভিল স্পিরিটঃ ভিই (২০০৮)-এর মধ্যে এই গল্পের হাল্কা ছায়া আছে বলেও মনে করা হয়।

গোগোলের ছোটগল্প “দি পোর্ট্রেট” অবলম্বনে একই নামে একটি ফিচার ফিল্ম নির্মাণ করেন দুজন অসাধারণ চলচ্চিত্রকার আনাসতাসিয়া এলেনা বারানফ এবং এলেনা ভ্লাদিমির বারানফ।[৫৫][৫৬][৫৭][৫৮][৫৯][৬০]

রাশিয়ান টিভি-৩ টেলিভিশন ধারাবাহিক গোগোলে নিকোলাই গোগোলকে মূল চরিত্রে রেখে তার জীবনী নিয়ে একটি কল্পচিত্রকাহিনী নির্মাণ করেন যেখানে তার ইতিহাসের সাথে তার গল্পের উপাদানও মিশ্রিত হয়ে আছে।[৬১] এর পর্বগুলো নাটক হিসেবেও মুক্তি পায় ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে গোগোল, দি বিগিনিং নামে। গোগোলঃ ভিই নামে এর একটি সিকোয়েল মুক্তি পায় ২০১৮ সালের এপ্রিলে এবং তৃতীয় ছবিটি গোগোলঃ টেরিবল্‌ রিভেঞ্জ ২০১৮ সালের আগস্টে মুক্তিলাভ করে।

১৯৮৬ সালের ভারতীয় গল্পসংকলনের টেলিভিশন ধারাবাহিক কথা সাগরে শ্যাম বেনেগাল গোগোলের “দি ওভারকোটের” চলচ্চিত্র রূপায়ণ করেন “নয়ি শেরওয়ানি” নামে।[৬২]

গোগোলের গল্প “দি টেল অফ হাউ ইভান ইভানোভিচ কোয়ার্লড উইথ ইভান নিকিফোরোভিচ” মারাঠি চলচ্চিত্র কথা দন গনপত্রভঞ্চি নামে ১৯৯৬ সালে রূপায়িত হয়েছিল।[৬৩] অরুণ খোপার ছিলেন এর পরিচালক এবং এর সংলাপ রচনা করেছিলেন সতীশ আলেকার। ছবিটিতে দিলীপ প্রভাওয়ালকার এবং মোহন আগাশে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন।

১৯৬৩ সালে গোগোলের রীতিমতো পরাবাস্তব গল্প দি নোজের একটি অ্যানিমেশন ছবি তৈরি করে কানাডার জাতীয় চলচ্চিত্র বোর্ড; কিন্তু এটি একটি অস্বাভাবিক এবং সময়সাপেক্ষ “পিনবোর্ড” কৌশল অবলম্বন করে করা হয়েছিল।[৬৪]

২০২০ সালের জানুয়ারীতে গোগোলের দি নোজ ছোটগল্পটি একটি চূড়ান্ত অ্যানিমেশন ছবি হিসেবে মুক্তি পায়। দি নোজ অর কনস্পিরেসি অফ মাভেরিকস নামে এই ছবিটি প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে নির্মাণের কাজ চলছিল।[৬৫]

উত্তরাধিকার[সম্পাদনা]

গোগোলের ছবি বিভিন্ন সময়ে রাশিয়ান এবং সোভিয়েত ডাকটিকিটে দেখা গেছে; সমগ্র বিশ্বজুড়েও ডাকটিকিটে তার ছবি বহুবার ব্যবহৃত হয়েছে।[৬৬][৬৭][৬৮][৬৯] বিভিন্ন স্মারক মুদ্রাও রাশিয়া এবং সোভিয়েত থেকে বের করা হয়েছে। ২০০৯ সালে ইউক্রেনের জাতীয় ব্যাঙ্ক গোগোলের নামে একটি স্মারক মুদ্রা বের করেছিল।[৭০] গোগোলের নামে বিভিন্ন শহরে নানা রাস্তা তৈরি হয়েছে, যেমন মস্কো, সোফিয়া, লিপেৎস্ক, ওডেসা, মিরহরদ, ক্রাসনোদার, ভ্লাদিমির, ভ্লাদিভস্তক, পেন্‌জা, পেট্রোজাভদস্ক, রিগা, ব্রাতিসলাভা, বেলগ্রেড, হারবিন এবং অন্যান্য অনেক শহর।

ফিওদোর দস্তয়েভস্কির পুওর ফোক এবং ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্টে এবং চেকভের দি সিগালে গোগোলের নামে বেশ কয়েকবার উল্লেখিত হয়েছে। গোগোলের কাজ অবলম্বন করে ১৩৫টিরও বেশি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়েছে,[৭১] যার মধ্যে সবথেকে সাম্প্রতিক হল দি গার্ল ইন দ্য হোয়াইট কোট (২০১১)।

ঝুম্পা লাহিড়ীর ২০০৩ সালে লেখা উপন্যাস দি নেমশেক এবং এর ২০০৬ সালের চলচ্চিত্র রূপায়ণের মুখ্য চরিত্রের নামও নিকোলাই গোগোলের নামেই রাখা হয় কারণ তার বাবা ট্রেন দুর্ঘটনায় যখন বেঁচে যান তখন তার হাতে গোগোলের একটি বই ধরা ছিল।

কবি কূটনীতিক অভয় কে’র রচিত “গোগোল” নামে একটি কবিতায় গোগোলের বিখ্যাত কাজগুলো যেমন “দি নোজ”, “দি ওভারকোট”, “নেভস্কি প্রসপেক্ট”, ডেড সোলস এবং গভর্নমেন্ট ইন্সপেক্টর উল্লেখ করা আছে।[৭২]

গোগোল বর্দেলো নামে একটি পাঙ্ক ব্যান্ড গোগোলের নাম গ্রহণ করেছে; ব্যান্ডটি তার আদর্শগত দিকটি নিয়েছে কারণ গোগোল ইউক্রেনিয় সংস্কৃতিকে রাশিয়ান সমাজে “পাচার” করেছিলেন যা গোগোল বর্দেলো ইংরেজিভাষী বিশ্বে জিপসি/পূর্ব-ইউরোপিয় সঙ্গীতের ক্ষেত্রে করতে চায়।[৭৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Some sources indicate he was born 19/31 March 1809.
  2. "Gogol". Random House Webster's Unabridged Dictionary.
  3. Robert A. Maguire, সম্পাদক (১৯৮৯)। Gogol। Duke University Press। পৃষ্ঠা 7। আইএসবিএন 9780822309079 
  4. Joe Andrew (১৯৯৫)। Writers and society during the rise of Russian realism। The Macmillan Press LTD। পৃষ্ঠা 13, 76। আইএসবিএন 9781349044214 
  5. Fanger, Donald (২০০৯)। The Creation of Nikolai Gogol। Harvard University Press। পৃষ্ঠা 42। আইএসবিএন 978-0-674-03669-7। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১৬ 
  6. Amy C. Singleton (১৯৯৭)। Noplace Like Home: The Literary Artist and Russia's Search for Cultural Identity। SUNY Press। পৃষ্ঠা 65। আইএসবিএন 978-0-7914-3399-7 
  7. Robert A. Maguire, সম্পাদক (১৯৭৬)। Gogol from the Twentieth Century: Eleven Essays। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 4। আইএসবিএন 9780691013268 
  8. "Nikolay Gogol | Biography, Novels, & Short Stories"Encyclopedia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-৩১ 
  9. Fanger, Donald (২০০৯-০৬-৩০)। The Creation of Nikolai Gogol। Harvard University Press। আইএসবিএন 9780674036697 
  10. "Gogol: russe et ukrainien en même temps"LExpress.fr (ফরাসি ভাষায়)। ২০০৯-০৪-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-২৫ 
  11. "Gogol, Nikolai"www.encyclopediaofukraine.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-২৫ 
  12. Kvas, Kornelije (২০২০)। The Boundaries of Realism in World Literature। Lanham, Boulder, New York, London: Lexington Books। পৃষ্ঠা 28–29। আইএসবিএন 978-1-7936-0910-6 
  13. Viktor Shklovsky. String: On the dissimilarity of the similar. Moscow: Sovetsky Pisatel, 1970. - p. 230.
  14. Ilnytzkyj, Oleh. "The Nationalism of Nikolai Gogol': Betwixt and Between?", Canadian Slavonic Papers Sep–Dec 2007. Retrieved 15 June 2008.
  15. Karpuk, Paul A. "Gogol's Research on Ukrainian Customs for the Dikan'ka Tales". Russian Review, Vol. 56, No. 2 (April 1997), pp. 209–232.
  16. "Natural School (Натуральная школа)"। Brief Literary Encyclopedia in 9 Volumes. Moscow। ১৯৬৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১২-০১ 
  17. Nikolai Gogol//Concise Literary Encyclopedia in 9 volumes.
  18. "Nikolay Gogol"Encyclopædia Britannica। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১০ 
  19. Edyta Bojanowska. 2007). Nikolai Gogol: Between Ukrainian and Russian Nationalism. Cambridge Mass: Harvard University Press.
  20. Krys Svitlana, “Allusions to Hoffmann in Gogol’s Ukrainian Horror Stories from the Dikan'ka Collection.” Canadian Slavonic Papers: Special Issue, devoted to the 200th anniversary of Nikolai Gogol'’s birth (1809–1852) 51.2–3 (June–September 2009): 243–266.
  21. Edyta M. Bojanowska. (2007). Nikolai Gogol: Between Ukrainian and Russian Nationalism. Cambridge, Massachusetts: Harvard University Press. pp. 78–88
  22. Richard Peace (৩০ এপ্রিল ২০০৯)। The Enigma of Gogol: An Examination of the Writings of N.V. Gogol and Their Place in the Russian Literary Tradition। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 151–152। আইএসবিএন 978-0-521-11023-5। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১২ 
  23. Luckyj, G. (১৯৯৮)। The Anguish of Mykola Ghoghol, a.k.a. Nikolai Gogol। Toronto: Canadian Scholars' Press। পৃষ্ঠা 67। আইএসবিএন 1-55130-107-5 
  24. "Welcome to Ukraine"। Wumag.kiev.ua। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৩ 
  25. Lindstrom, T. (১৯৬৬)। A Concise History of Russian Literature Volume I from the Beginnings to Checkhov। New York: New York University Press। পৃষ্ঠা 131। এলসিসিএন 66-22218 
  26. "The Government Inspector" (পিডিএফ)American Conservative Theater। ২০০৮। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০২১ 
  27. RBTH (২০১৩-০৬-২৪)। "Le nom de Nikolaï Gogol est immortalisé à la place de la Bourse à Paris" (ফরাসি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-৩০ 
  28. Ilnytzkyj, Oleh S. (২০১০–২০১১)। "Is Gogol's 1842 Version of Taras Bul'ba really 'Russified'?"। Journal of Ukrainian Studies। 35-36: 51–68। 
  29. Gogol declared that "the subject of Dead Souls has nothing to do with the description of Russian provincial life or of a few revolting landowners. It is for the time being a secret which must suddenly and to the amazement of everyone (for as yet none of my readers has guessed it) be revealed in the following volumes..."
  30. Могиле Гоголя вернули первозданный вид: на нее поставили "Голгофу" с могилы Булгакова и восстановили крест.(রুশ ভাষায়)
  31. "Novodevichy Cemetery"Passport Magazine। এপ্রিল ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  32. Могиле Гоголя вернули первозданный вид: на нее поставили "Голгофу" с могилы Булгакова и восстановили крест.(রুশ ভাষায়) Retrieved 23 September 2013
  33. Российское образование. Федеральный образовательный портал: учреждения, программы, стандарты, ВУЗы, тесты ЕГЭ. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে (রুশ ভাষায়)
  34. For a full story and illustrations, see Российское образование. Федеральный образовательный портал: учреждения, программы, стандарты, ВУЗы, тесты ЕГЭ. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে (রুশ ভাষায়) and Москва и москвичи ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে (রুশ ভাষায়)
  35. Gogol's originality does not mean that numerous influences cannot be discerned in his work. The principle of these are: the tradition of the Ukrainian folk and puppet theatre, with which the plays of Gogol's father were closely linked; the heroic poetry of the Cossack ballads (dumy), the Iliad in the Russian version by Gnedich; the numerous and mixed traditions of comic writing from Molière to the vaudevillians of the 1820s; the picaresque novel from Lesage to Narezhny; Sterne, chiefly through the medium of German romanticism; the German romanticists themselves (especially Tieck and E.T.A. Hoffmann); the French tradition of Gothic romance – a long and yet incomplete list.[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
  36. D.S. Mirsky. A History of Russian Literature. Northwestern University Press, 1999. আইএসবিএন ০-৮১০১-১৬৭৯-০. p. 155.
  37. Mirsky, p. 149
  38. Andrey Bely (১৯৩৪)। The Mastery Of Gogol (রুশ ভাষায়)। Leningrad: Ogiz। 
  39. According to some critics[কোনটি?], Gogol's grotesque is a "means of estranging, a comic hyperbole that unmasks the banality and inhumanity of ambient reality". See: Fusso, Susanne. Essays on Gogol: Logos and the Russian Word. Northwestern University Press, 1994. আইএসবিএন ০-৮১০১-১১৯১-৮. p. 55.
  40. "Russian literature." Encyclopædia Britannica, 2005.
  41. "Letter to N.V. Gogol"। marxists.org। ফেব্রুয়ারি ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ 
  42. "The structure of the stories themselves seemed especially unskilful and clumsy to me; in one story I noted excess and verbosity, and an absence of simplicity in the style". Quoted by Vasily Gippius in his monograph Gogol (Duke University Press, 1989, p. 166).
  43. The latest edition[কোনটি?] of the Britannica labels Gogol "one of the finest comic authors of world literature and perhaps its most accomplished nonsense writer." See under "Russian literature."[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
  44. Nabokov, Vladimir (2017) [1961]. Nikolai Gogol. New York: New Directions. p. 140. আইএসবিএন ০-৮১১২-০১২০-১
  45. Nabokov, Vladimir (২০১৭) [1961]। Nikolai Gogol। New York: New Directions। পৃষ্ঠা 140। আইএসবিএন 978-0-8112-0120-9 
  46. Dostoevsky, at least, appears to have had such a reading of the story seems in mind when he wrote The Double. The quote, often apocryphally attributed to Dostoevsky, that "we all [future generations of Russian novelists] emerged from Gogol's Overcoat", actually refers to those few who read "The Overcoat" as a double-bottom ghost story (as did Aleksey Remizov, judging by his story The Sacrifice).
  47. Gogol Suite, CD Universe
  48. "Zwei Kompositionsaufträge vergeben" [Two Compositions Commissioned]। wien.orf.at (জার্মান ভাষায়)। Archived from the original on ২৫ জুলাই ২০১১।  Alt URL
  49. Vladim Joseph Rossman, Vadim Rossman, Vidal Sassoon. Russian Intellectual Antisemitism in the Post-Communist Era. p. 64. University of Nebraska Press. Google.com
  50. "Antisemitism in Literature and in the Arts"। Sicsa.huji.ac.il। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৩ 
  51. Léon Poliakov. The History of Antisemitism. p. 75. University of Pennsylvania Press, Google.com
  52. Amelia Glaser. "Sholem Aleichem, Gogol Show Two Views of Shtetl Jews." The Jewish Journal, 2009. Journal: Jewish News, Events, Los Angeles
  53. "Christmas Eve"। BBC Radio 4। ২৪ ডিসেম্বর ২০০৮। Archived from the original on ১০ জানুয়ারি ২০০৯। 
  54. Gogol, Nikolai (২৪ ডিসেম্বর ২০১৫)। "Nikolai Gogol – Christmas Eve"। BBC Radio 4 Extra। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৬ 
  55. "Patrick Cassavetti boards Lenin?!" 
  56. "Gogol's short story The Portrait to be made into feature film"। russianartandculture.com। ৪ জুলাই ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  57. Screen International [১], Berlin Film Festival, 12 February 2016.
  58. Russian Art and Culture “Gogol’s “The Portrait” adapted for the screen by an international team of talents”[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], London, 29 January 2016.
  59. Kinodata.Pro [২] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ মে ২০১৯ তারিখে Russia, 12 February 2016.
  60. Britshow.com [৩] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ আগস্ট ২০১৮ তারিখে 16 February 2016.
  61. "Сериал о Гоголе собрал за первые выходные в четыре раза больше своего бюджета"Vedomosti 
  62. "Katha Sagar EP 13 Part 1"Cinevistaas। জুন ১৫, ২০১২। 
  63. https://www.youtube.com/watch?v=-GeDrny1izk
  64. https://www.youtube.com/watch?v=h9jHm455fuE
  65. "Если бы речь шла только об отрицании, пароход современности далеко бы не уплыл"Коммерсантъ। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৮ 
  66. "ru:200 лет со дня рождения Н.В.Гоголя (1809–1852), писателя" [200 years since the birth of Nikolai Gogol (1809–1852), writer] (রুশ ভাষায়)। marka-art.ru। ১ এপ্রিল ২০০৯। ২২ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০০৯ 
  67. К 200-летию со дня рождения Н.В. Гоголя выпущены почтовые блоки [Stamps issued for the 200th anniversary of N.V. Gogol's birthday]। kraspost.ru (রুশ ভাষায়)। ২০০৯। ১৭ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০০৯ 
  68. Зчіпка 200-річчя від дня народження Миколи Гоголя (1809–1852) [Coupling for the 200th anniversary of the birth of Mykola Hohol (1809–1852)]। Марки (ইউক্রেনীয় ভাষায়)। Ukrposhta। সংগ্রহের তারিখ ৩ এপ্রিল ২০০৯ [অকার্যকর সংযোগ]
  69. Украина готовится достойно отметить 200-летие Николая Гоголя [Ukraine is preparing to celebrate the 200th anniversary of Nikolai Gogol's birth] (রুশ ভাষায়)। otpusk.com। ২৮ আগস্ট ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  70. Events by themes: NBU presented an anniversary coin «Nikolay Gogol» from series "Personages of Ukraine", UNIAN-photo service (19 March 2009)
  71. "Nikolai Gogol"IMDb 
  72. "Possessed Idiots and Deadly Demons: Abhay K"Pratilipi: A Bilingual Literary Journal। pratilipi.in। ডিসেম্বর ২০১২। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  73. https://www.npr.org/templates/story/story.php?storyId=5371385

উল্লেখ[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]