নলিনীকান্ত কর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
নলিনীকান্ত কর
জন্ম১৮৮৭
মৃত্যু১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৮০
আন্দোলনব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন

নলিনীকান্ত কর (১৮৮৭-১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৮০) একজন বাঙালি ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র বিপ্লববাদী।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

বিপ্লবী নলিনীকান্তের জন্ম হয়েছিল নদিয়া জেলার কুমারখালিতে। পিতার নাম শশীভূষন কর। তিনিও যুগান্তর দলের সাথে যুক্ত ছিলেন। বাঘা যতীনের সাথে একই গ্রামে থাকার দরুন নলিনী তার সংস্পর্শে আসেন। বৈপ্লবিক কাজের প্রেরনায় বাড়ি ছেড়ে কলকাতায় চলে যান এবং স্কুলে ভর্তি হন। থাকা খাওয়ার অসুবিধা সত্বেও তিনি কলকাতায় অবস্থান করে বিপ্লবী আন্দোলনের কাজে নিজেকে সমর্পণ করেন।[১]

বিপ্লবী কর্মকাণ্ড[সম্পাদনা]

১৯০৯ সালের পর থেকে বাঘা যতীনের একনিষ্ঠ সহকারী হিসেবে কাজ করতে থাকেন। হাওড়া ডাকাতি কেসে জড়িত থাকলেও পুলিশ তাকে ধরতে পারেনি। আত্মোন্নতি সমিতির সাথে যুক্ত ছিলেন। বাঘা যতীনের সাথে চলে যান উড়িষ্যাময়ুরভঞ্জ জেলায় আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায়। সেখানে স্থানীয় মানুষদের ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করা ও বিদ্রোহে অংশগ্রহণের জন্যে উৎসাহ দান করার জন্যে অস্ত্রশস্ত্র বিলি করেন। ইন্দো-জার্মান ষড়যন্ত্রের অন্যতম কুশীলব ছিলেন তিনি। মাভেরিক জাহাজে করে আসা অস্ত্র আনার জন্যে ৪ জনের সাথে বালেশ্বর রওনা দেন ও গোপাল রায় ছদ্মনামে সেখানে জমি কিনে কাঠের ব্যবসা করার অজুহাতে থাকতে শুরু করেন পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে। মনীন্দ্র চক্রবর্তীর আশ্রয়ে কাপ্তিপোদায় থাকতেন ও কলকাতা বালেশ্বর যাতায়াতের সূত্রে বিপ্লবীদের মধ্যে সংযোগরক্ষাকারী হিসেবে কাজ করতেন। বালেশ্বর বুড়িবালামের তীরে ঐতিহাসিক যুদ্ধের দিন ঘটনাচক্রে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। সম্মুখসমরে বাঘা যতীনের মৃত্যু ও বাকিদের গ্রেপ্তারির ঘটনায় তিনি পালিয়ে যান। পুলিশ তাকে ধরতে পারেনি। ডিফেন্স অফ ইন্ডিয়া এক্ট এ ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯১৬ থেকে পলাতক ঘোষিত হয়েছিলেন।[২][৩]

অজ্ঞাতবাস[সম্পাদনা]

পলাতক জীবনে নানা জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। ১৯১৭ সালে বিপ্লবী যাদুগোপাল মুখার্জী, মন্মথ বিশ্বাস, সতীশ চক্রবর্তীর সাথে বাংলা, বিহার, আসামের বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক প্রচারে অংশ নেন।

শেষ জীবন[সম্পাদনা]

চন্দননগরের প্রবীন বিপ্লবী ও প্রবর্তক সংঘের নেতা মতিলাল রায়ের চেষ্টায় ব্রিটিশ সরকারের সাথে বোঝাপড়ায় কয়েকজন বিপ্লবী আত্মসমর্পণ করেন। নলিনীকান্ত ছিলেন তাদের অন্যতম। তাকে সরকার কলকাতা থেকে বহিষ্কার করে। আত্মীয় বিপ্লবী অতুলচন্দ্র ঘোষের সহায়তায় ঠিকাদারির কাজ নিয়ে বিহার চলে যান। সেখানে ডেহরি অন শোনে তিনি আমৃত্যু বসবাস করেছেন।[১]

মৃত্যু[সম্পাদনা]

১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৮০ সালে ডেহরী অন শোনে মারা যান বিপ্লবী নলিনীকান্ত কর।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. প্রথম খন্ড, সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত (২০০২)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ২৫২। আইএসবিএন 81-85626-65-0 
  2. পৃথ্বীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় (১৯৯০)। বাঘা যতীন। কলকাতা: দেজ পাবলিশিং। পৃষ্ঠা ১০০। 
  3. শেষাংশ (২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। "কয়া থেকে শিলাইদহ"। দৈনিক জনকণ্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ১৭.০২.২০১৭  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)