করভি রাখসান্দ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
করভি রাখসান্দ
জন্ম(১৯৮৫-০৮-১৯)১৯ আগস্ট ১৯৮৫
জাতীয়তাবাংলাদেশ
শিক্ষাআইন
মাতৃশিক্ষায়তনস্কলাস্টিকা স্কুল
মাস্টারমাইন্ড স্কুল
লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাসংগঠক, সমাজকর্মী
পরিচিতির কারণপ্রতিষ্ঠাতা, জাগো ফাউন্ডেশন
দাম্পত্য সঙ্গীমিফরাহ জহির রাখসান্দ
পুরস্কাররামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার (২০২৩)

করভি রাখসান্দ হলেন একজন বাংলাদেশী, জাগো ফাউন্ডেশন-এর প্রতিষ্ঠাতা। শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য উদীয়মান নেতা হিসাবে ২০২৩ সালে তিনি রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার লাভ করেছেন।।[১]

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা[সম্পাদনা]

করভি ১৯৮৫ সালে ১৯ আগস্ট ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নুরুল আক্তার, ‍যিনি একজন ব্যবসায়ী, এবং মা মাফরুদা খান, যিনি একজন স্কুলের অধ্যক্ষ। ১৯৮৮ সালে, করভি রাখসান্দ স্কলাস্টিকা স্কুলের প্লে গ্রুপে ভর্তি হন, যেখানে তিনি তার স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন। মাস্টারমাইন্ড স্কুলে ভর্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি সেখোনে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। করভি আইন বিষয়ে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেন, এরপর লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে ডিগ্রি গ্রহণ করেন। ২০০৭ সালের নভেম্বরে তিনি জাগো ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন।[২][৩]

জাগো ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা[সম্পাদনা]

জাগো ফাউন্ডেশন হল বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে ২০০৭ সালে করভি রাখসান্দ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি অলাভজনক সংস্থা। ফাউন্ডেশনটি মাত্র ৭ জন শিশু এবং অল্প পরিমাণ জায়গা খুবই প্রাথমিক সরঞ্জাম যেমন যার মধ্যে একটি হোয়াইটবোর্ড এবং একটি কার্পেট দিয়ে শুরু হয়েছিল।[৪]

বাংলা শিক্ষার দিকে মনোযোগ দেওয়ার পাশাপাশি, জাগো স্কুল আন্তর্জাতিক মানের ইংরেজি-মাধ্যম শিক্ষা প্রদান করে। পাঠ্য বহির্ভূত প্রোগ্রামের মধ্যে রয়েছে শিল্প, নৃত্য, থিয়েটার, বিতর্ক, খেলাধুলা, গান, এবং ফটোগ্রাফি। "কল ফর হাইজিন প্রোগ্রাম" এবং "হেলথি লিভিং প্রোগ্রাম" এর মতো প্রোগ্রামগুলির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের আদর্শ জাগ্রত করার জন্য ফাউন্ডেশনের সদস্যরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন।[৫]

শিক্ষার পাশাপাশি, জাগো ফাউন্ডেশন সক্রিয়ভাবে সামাজিক উন্নয়নের সাথে সর্ম্পকিত উদ্যোগগুলোর সাথে যুক্ত রয়েছে যা অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং স্বাস্থ্যসেবাকে সহজেই উপলব্ধ করে। "প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র" এর মতো প্রোগ্রামগুলি শিশুদের এবং তাদের পরিবারকে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরীক্ষা এবং ওষুধ দেয় এবং স্থানীয় সম্প্রদায়গুলি বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির দ্বারা প্রদত্ত দক্ষতা বিকাশের সম্ভাবনা থেকে উপকৃত হতে পারে।[৫]

ফাউন্ডেশনটি কানেক্টিভিটি প্রদানের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকায় টেকসই জ্বালানি সমাধান গ্রহণের পথে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে সৃষ্ট অসুবিধাগুলিকে বিবেচনায় নিয়ে, বিশেষ করে জেনারেটরের উপর নির্ভরশীল অনলাইন স্কুলগুলির জন্য, ফাউন্ডেশন বর্তমানে সৌর শক্তি সিস্টেমের ব্যবহার নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে। ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা করভি রাখসান্দ গুরুত্ব দিয়েছেন যে, যদি স্কুলগুলিকে সৌর শক্তির মাধ্যমে বিদ্যুতের সরবরাহ করা যায়, তাহলে তা অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।[৬]

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

করভী রাখসান্দ সর্বজনীন মানসম্মত শিক্ষার বিকাশে ও দেশের তরুণদের মধ্য সক্রিয় অংশগ্রহণমূলক সংস্কৃতি বিকাশে কাজ করার জন্য অনেক পদক ও সম্মাননা লাভ করেন।

  • মোজাইক ট্যালেন্ট অ্যাওয়ার্ড - ২০১০
  • কমনওয়েলথ যুব পুরস্কার -২০১৩
  • শীর্ষ ১০ অনুপ্রেরণামূলক বাংলাদেশী - ২০১৪[৭]
  • এশিয়া ২১ ইয়াং লিডারস - ২০১৫[৮]
  • মোস্ট ইনোভেটিভ ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট - ২০১৫[৯]
  • ইউনেস্কো কিং হামাদ বিন ঈসা আল-খলিফা পুরস্কার - ২০১৬[১০]
  • সোসাইটি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কর্তৃক অ্যান্ড্রু ই. রাইস অনারেবল মেনশন অ্যাওয়ার্ড - ২০১৭
  • কমনওয়েলথ পয়েন্ট অব লাইট পুরস্কার - ২০২১[১১][১২]
  • শেখ হাসিনা ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড -২০২২
  • র‌্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার - ২০২৩[১৩]

পারিবারিক জীবন[সম্পাদনা]

করভি মিফরাহ জহির রাখসান্দের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন যিনি পেশাগতভাবে আইনজীবী। পরিষ্কার, নিরাপদ এবং স্থানীয়ভাবে উত্পাদিত পুনঃব্যবহারযোগ্য ফ্যাব্রিক প্যাড প্রদানের মাধ্যমে যুব মহিলা এবং মেয়েদের ক্ষমতায়নের জন্য মিফরাহ আগস্ট ২০২০ সালে সাথী ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন।[১৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "ম্যাগসাইসাই পুরস্কার পেলেন বাংলাদেশের করভি রাখসান্দসহ চারজন" (অন লাইন ভার্সন)প্রথম আলো। ৩১ অগাস্ট ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অগাস্ট ২০২৩ 
  2. "Profile of Korvi Rakshand" (পিডিএফ)scholasticabd.com। scholasticabd.com। ৩১ অগাস্ট ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ৩১ অগাস্ট ২০২৩ 
  3. "কালের কণ্ঠকে করভি রাখসান্দ 'স্কুল জীবন থেকে কাজ করছি'"kalerkantho.com। ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩। 
  4. Antara, Nawaz Farhin। "Korvi Rakshand: JAAGO will expand into the international arena"www.dhakatribune.com। Kazi Anis Ahmed। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০২৪ 
  5. "The Art of Enterprise Face To Face With Korvi Rakshand, Founder, Jaago Foundation"futurestartup.com। ডিসে ১৪, ২০১১। 
  6. Leach, Anna (২৪ জুলাই ২০১৫)। "How one homeless child inspired this Bangladeshi to help hundreds"The Guardian। Guardian News & Media। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০২৪ 
  7. "Face To Face With Korvi Rakshand, Founder, Jaago Foundation"futurestartup.com। ১৪ ডিসেম্বর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৩১ আগস্ট ২০২৩ 
  8. "Korvi Rakshand Named Asia 21 Young Leader by Asia Society"The Daily Star। ৩১ জুলাই ২০১৫। 
  9. rsingh (২০২৩-০৭-১৩)। "BANGLADESH | Piloting solarized digital schools to guarantee high quality education for children in rural Bangladesh"Global Development Network। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-০৬ 
  10. Sun, Daily (ফেব্রুয়ারি ২০১৭)। "Jaago Foundation receives Unesco prize"daily-sun (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-০৬ 
  11. "Korvi Rakshand named 181st Commonwealth Point of Light"The Business Standard.। ২৩ মে ২০২১। 
  12. "Korvi Rakshand gets Commonwealth Points of Light award"The Bangladesh Post। ২৪ মে ২০২১। 
  13. Tech & Startup Desk (২০২৩-০৮-৩১)। "JAAGO's Korvi receives Magsaysay award, the 'Nobel Prize of Asia'"The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১১-০৬ 
  14. "Promoting eco-friendly menstrual hygiene"thedailystar.net। Mahfuz Anam। ২৮ মে ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০২৪ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]