কঠিন বলবিজ্ঞান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

কঠিন বলবিজ্ঞান বা কঠিন পদার্থের বলবিজ্ঞান বলতে অবিচ্ছিন্ন বলবিজ্ঞানের সেই শাখাকে বোঝায় যাতে কঠিন উপাদান ও কাঠামোগুলির ভৌত আচরণ, বিশেষ করে প্রযুক্ত বল (ভার) ও পীড়ন, তাপমাত্রার পরিবর্তন, দশা পরিবর্তন ও অন্যান্য বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ ঘটকের অধীনে ও প্রত্যুত্তরে সময়ের সাপেক্ষে সেগুলির স্থান পরিবর্তন (গতি), স্থিতিস্থাপক ও স্থায়ী অস্থিতিস্থাপক রূপবিকার (বা রূপবিকার প্রতিরোধ ক্ষমতা), বিকৃতি, ভারবহনে ব্যর্থতা ও ভাঙন অধ্যয়ন করা হয়।[১] এতে ভারসাম্য, বিকৃতি বিশ্লেষণ, পীড়ন বিশ্লেষণ, ঔপাদানিক ধর্মাবলী, রূপবিকারের ক্রিয়াপদ্ধতি ও কাঠামোগত স্থিতিশীলতার মতো ধারণাগুলি আলোচনা করা হয়।

কঠিন বলবিজ্ঞান শাস্ত্রটি পুরকৌশল, বায়বান্তরীক্ষ প্রকৌশল, পরমাণু-কেন্দ্রীণ (নিউক্লীয়) প্রকৌশল, প্রাণচিকিৎসা প্রকৌশল ও যন্ত্রকৌশল ক্ষেত্রগুলিতে বিভিন্ন যান্ত্রিক কাঠামো নকশা, বিশ্লেষণ ও কাম্যতমকরণের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া এটি পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নশাস্ত্রের অনেক শাখা যেমন উপাদান বিজ্ঞানের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।[২] আরও বহু বিভিন্ন গবেষণাক্ষেত্রে এর নির্দিষ্ট প্রয়োগ আছে, যেমন জীবদের শারীরস্থান অনুধাবন, কৃত্রিম দাঁত ও শল্য প্রোথ (সার্জিকাল ইমপ্ল্যান্ট) বোঝার জন্য এটির প্রয়োজন। কঠিন বলবিজ্ঞানের অতিসাধারণ একটি প্রয়োগ হল অয়লার-বের্নুই কড়ি সমীকরণ। কঠিন বলবিজ্ঞানে ব্যাপকভাবে টেনসর ব্যবহার করে পীড়ন, বিকৃতি ও তাদের মধ্যকার সম্পর্ক বর্ণনা করা হয়।

কঠিন বলবিজ্ঞান একটি বিপুল আয়তনের শাস্ত্র, কেননা বহু বিভিন্ন ধরনের কঠিন উপাদান যেমন ইস্পাত, কাঠ, কংক্রিট, জৈব উপাদান, কাপড়, ভূ-উপাদান ও প্লাস্টিক বিদ্যমান। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাক্ষেত্র যার সুবাদে মানবজাতির শ্রেষ্ঠ প্রকৌশলীয় কীর্তিগুলি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে, যার মধ্যে গগনচুম্বী অট্টালিকা থেকে শুরু করে গগনভেদী মহাকাশযান অন্তর্ভুক্ত।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Charles Yang; Zhizhou Zhang; Grace X. Gu (২০২৩), "2 - Machine learning for solid mechanics", Intelligent Nanotechnology : Merging Nanoscience and Artificial Intelligence, Materials Today, Elsevier, পৃষ্ঠা 33–45  অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  2. Allan Bower (২০০৯)। Applied mechanics of solids। CRC press। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ৫, ২০১৭