ইরাকের খেলাধুলা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইউনিস মাহমুদ হলেন আন্তর্জাতিক ম্যাচে ইরাকের সর্বকালের সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা খেলোয়াড়, তিনি ১৪৮ টি আন্তর্জাতিক ম্যাছে অংশ নিয়েছেন।

ইরাকের খেলাধুলা ইরাকে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার প্রচলন আছে এবং খেলা হয়। ইরাকের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হলো ফুটবল। বিশৃঙ্খল অবস্থা এবং যুদ্ধের বছরগুলোতে ফুটবল জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাস্কেটবল, সাঁতার, ভারোত্তোলন, শরীর গঠন, তায়কোয়ান্দো, বক্সিং, কিকবক্সিং, এবং টেনিসও ইরাকের জনপ্রিয় খেলা।

পটভূমি[সম্পাদনা]

ইরাকে খেলাধুলা সম্প্রতি জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং বাথ শাসনের কারণে এটি ঘটেছিল, বাথ পার্টি ১৯৬৮ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করে। বাথ পার্টি মূলত সমাজকে তার আদর্শ গ্রহণ করতে বাধ্য করার মাধ্যমে তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার দিকে মনোনিবেশ করেছিল এবং খেলাধুলা এই মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রতিফলিত করে না।[১] তবে ১৯৭০-এর দশকের শেষের দিকে খেলাধুলা মনোযোগ আকর্ষণ করতে শুরু করে। বিশেষ করে ঘরোয়া ফুটবল চালু হওয়ার পর ফুটবলের ব্যাপক বিস্তার লাভ করে এবং দেশটি আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্লাবসমূহের অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোগিতারও আয়োজন করে। ১৯৮০-এর দশকে ইরান-ইরাক যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরেও যখন তরুণ ইরাকিদের সশস্ত্র বাহিনীর দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে তখনও এই খেলাটির জনপ্রিয়তা এবং উৎসাহ কমেনি।[১] সাদ্দাম হোসেনের শাসনামলে খেলাধুলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যখন অনেক ক্রীড়াবিদ বিশেষ করে তার পুত্র উদয় হোসেনের দ্বারা গালাগালি ও নির্যাতনের খবরে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়।

ইরাক বিশেষ করে ফুটবল এবং বাস্কেটবল খেলার ক্ষেত্রে সাম্প্রতিককালে ইতিবাচক উন্নতি লাভ করেছে। বাগদাদের মতো শহরগুলিতে স্টেডিয়ামগুলো খেলার সময় সমর্থকরা ভিড় করছেন, এতে খেলার প্রতি তাদের আকর্ষণের দৃঢ়তা বুঝা যায়।[১]

ফুটবল[সম্পাদনা]

ইরাকের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। আজ অনেক ইরাকি গ্রামের নিজস্ব ফুটবল দল রয়েছে এটি অস্বাভাবিক কিছু নয়।[২] ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় অনুষ্ঠিত ২০০৭ এএফসি এশিয়ান কাপের ফাইনালে সৌদি আরবকে পরাজিত করে ইরাক জাতীয় ফুটবল দল চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০০৬ সালে কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত ২০০৬ এশিয়ান গেমসের ফুটবলে ইরাক ফিফা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা দক্ষিণ কোরিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে এবং শেষ পর্যন্ত রানার্সআপ হয়ে রৌপ্য পদক অর্জন করে। গ্রীসের অ্যাথেন্সে অনুষ্ঠিত ২০০৪ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের ফুটবলে ইরাক চতুর্থ স্থান লাভ করে, ইতালি জাতীয় ফুটবল দল ১-০ গোলে ইরাককে হারিয়ে ব্রোঞ্জ পদক জিতে নেয়।

ইরাকের ফুটবলের নিয়ন্ত্রণকারী হলো ইরাক ফুটবল এসোসিয়েশন, এটি ইরাক জাতীয় ফুটবল দল এবং ইরাকি প্রিমিয়ার লিগ (যা দাওরি আল-নোকবা নামেও পরিচিত) নিয়ন্ত্রণ করে। এটি ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৫০ সালে ফিফার এবং ১৯৭১ সালে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের সদস্যপদ লাভ করে।

আল-শরতা (পুলিশ ক্লাব) ইরাকের ইতিহাসের বৃহত্তম ক্লাব হিসাবে বিবেচিত, তারা ২০১৩ এবং ২০১৪ দু্বছরই লিগে চ্যাম্পিয়ন হয় এবং তারা একবার আরব চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপাও জয় করে, তারা ১৯৮২ সালে এটিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। অন্যান্য বড় ক্লাবগুলির মধ্যে আছে আল-কোওয়া আল-জাওইয়া, আল-জাওরা, এরবিল এসসি, দুহোক এসসি, আল তালাবা এবং নাজাফ এফসি। ইরাকের বেশিরভাগ খেলোয়াড় পুরুষ হলেও, ইতিমধ্যে দেশটিতে মহিলাদের জন্য ফুটবল, বাস্কেটবল এবং ভলিবল খেলা উন্মুক্ত হয়েছে। সম্প্রতি, দৃষ্টান্তস্বরূপ ইরাক প্রথম জাতীয় মহিলা ফুটবল দল মাঠে নামিয়েছে।[৩]

বাস্কেটবল[সম্পাদনা]

আরও দেখুন: ইরাক জাতীয় বাস্কেটবল দল

বাস্কেটবল ইরাকের একটি জনপ্রিয় খেলা। ইরাকে অন্তত:পক্ষে দুটি লিগ রয়েছে, ইরাক বাস্কেটবল এসোসিয়েশন দেশটির পেশাদার সংগঠন, বেশ কয়েকটি বড়দের ও যুব লিগ এবং সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে ইরাকি প্রিমিয়ার লিগ পরিচালনা করে।

বাস্কেটবল ক্লাব[সম্পাদনা]

কিকবক্সিং[সম্পাদনা]

রিয়াদ আল-আজযাওয়াই নিজ শহর ইরাকের বাগদাদে সপ্তম বিশ্ব হেভিওয়েট কিকবক্সিং শিরোপার জন্য লড়াই করছেন।

ইরাকের রিয়াদ আল-আজযাওয়াই কিকবক্সিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন।

কুস্তি[সম্পাদনা]

ইরাকের পেশাদার কুস্তিগির আদনান আল কাইসি জেনারেল আদনান নামে পরিচিত।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Nauright, John; Parrish, Charles (২০১২)। Sports Around the World: History, Culture, and Practice, Volume 3। Santa Barbara, CA: ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 295। আইএসবিএন 9781598843002 
  2. Spengler, Kremena; Simon, Reeva (২০০৫)। Iraq: A Question and Answer Book। Mankato, MN: Capstone। পৃষ্ঠা 18আইএসবিএন 0736826912 
  3. Taus-Bolstad, Stacy (২০০৪)। Iraq in Pictures। Minneapolis, MN: Lerner Publications Company। পৃষ্ঠা 56আইএসবিএন 9780822509349 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

উৎস[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:এশিয়ার খেলাধুলা


টেমপ্লেট:Iraq-sport-stub