আর্মেনিয়া-উরুগুয়ে সম্পর্ক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আর্মেনিয়া-উরুগুয়ে সম্পর্ক
মানচিত্র Armenia এবং Uruguay অবস্থান নির্দেশ করছে

আর্মেনিয়া

উরুগুয়ে

আর্মেনিয়া-উরুগুয়ে সম্পর্ক, আর্মেনিয়া এবং উরুগুয়ে এর মাঝে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। উরুগুয়ে লাতিন আমেরিকার একটি ক্ষুদ্র দেশ। কিন্তু, উরুগুয়েতে, দেশটির আকারের তুলনায়, বড় সংখ্যার আর্মেনীয় অধিবাসী বসবাস করে। উরুগুয়েতে বসবাসরত আর্মেনীয় সম্প্রদায়ের মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৬ হাজার।[১]

আর্মেনিয়াতে উরুগুয়ের, অথবা উরুগুয়েতে আর্মেনিয়ার কোন স্থায়ী দূতাবাস নেই। আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনোস আইরেস-এ অবস্থিত আর্মেনীয় দূতাবাসের নিকট উরুগুয়ে সম্পর্কিত বিভিন্ন কূটনৈতিক বিষয়াবলী এবং অন্যান্য কার্যক্রমের দায়িত্ব ন্যস্ত রয়েছে এবং আর্জেন্টিনার আর্মেনিয়া দূতাবাসের মাধ্যমেই, আর্মেনিয়া উরুগুয়ে সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করে থাকে।[২] একইভাবে যেহেতু আর্মেনিয়াতেও উরুগুয়ের দূতাবাস নেই, তাই ইরান এর রাজধানী তেহরানে অবস্থিত উরুগুয়ের দূতাবাসের নিকট, আর্মেনিয়া সম্পর্কিত বিভিন্ন কূটনৈতিক বিষয়াবলী এবং অন্যান্য কার্যক্রমের দায়িত্ব ন্যস্ত রয়েছে এবং এই দূতাবাসের মাধ্যমেই, উরুগুয়ে আর্মেনিয়ার সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক রক্ষা করে।[৩]

তবে দূতাবাস না থাকলেও, দুই দেশেই পরস্পরের অনারারি কনস্যুলেট রয়েছে। উরুগুয়ের রাজধানী মন্টেভিডিওতে, আর্মেনিয়ার একটি অনারারি কনস্যুলেট রয়েছে।[২] অপরদিকে আর্মেনিয়ার রাজধানী ইয়েরেভেনে, উরুগুয়ের একটি অনারারি কনস্যুলেট রয়েছে।[৩]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

মন্টেভিডিও এর প্লাজা আমেরিকাতে অবস্থিত ক্রুশ পাথর

১৮০০ এর দশকের শেষ দিকে, উরুগুয়েতে প্রথমবারের মত আর্মেনীয়দের আগমন ঘটে।[৪] তবে, ১৯২০ সাল থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে, সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আর্মেনীয় উরুগুয়েতে যান। এর অধিকাংশই লেবানন এবং সিরিয়া থেকে উরুগুয়েতে যান। অটোম্যান সাম্রাজ্যর করা আর্মেনীয় গণহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া অনেকেও উরুগুয়েতে গমন করেন।

১৯৬৫ সালের ২০ এপ্রিল, প্রথম দেশ হিসেবে, উরুগুয়ে, আর্মেনীয় গণহত্যাকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দান করে।[৫] ১৯৩৯ সালে, আরমেনিয়ান জেনারেল বেনেভোলেন্ট ইউনিয়ন এর উরুগুয়ে শাখা চালু হয় এবং এর অফিস প্রতিষ্ঠা করা হয় উরুগুয়ের রাজধানী মন্টেভিডিওতে।

আর্মেনিয়া পূর্বে অখণ্ড সোভিয়েত ইউনিয়ন এর অংশ ছিল। পরে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যে ১৫ টি পৃথক এবং স্বাধীন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়, আর্মেনিয়া তার মধ্যে অন্যতম। ১৯৯১ সালের ২৬ ডিসেম্বর সোভিয়েত ইউনিয়ন বিলুপ্ত হয় এবং আর্মেনিয়া স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৯২ সালের ২৭ মে, আর্মেনিয়া এবং উরুগুয়ের মাঝে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।[৬]

১৯৯২ সালের জুন মাসে আর্মেনিয়ার তৎকালীন রাষ্ট্রপতি, লেভোন তার-পেত্রোসিয়ান এক রাষ্ট্রীয় সফরে উরুগুয়ে যান।[৬]

১৯৯৭ সালে, উরুগুয়ে, আর্মেনিয়ার ইয়েরেভেনে তাদের অনারারি কনস্যুলেট চালু করে। ২০১২ সালের মে মাসে উরুগুয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রী, লুইস আল মাগ্রো লেমেস এক রাষ্ট্রীয় সফরে আর্মেনিয়াতে যান। উরুগুয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর এ সফর এখন পর্যন্ত, আর্মেনিয়ায়, উরুগুয়ের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সফর[৭]

দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক[সম্পাদনা]

১৯৯২ সালে, কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার পর, ব্রাজিল এবং উরুগুয়ে বেশ কিছু দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সাক্ষর করেছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, উভয় দেশের কূটনৈতিক এবং সরকারি পাসপোর্টধারীদের ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকারের বিষয়ে চুক্তি, সাংস্কৃতিক সমন্বয় চুক্তি, চিকিৎসা এবং ঔষধ খাতে সমন্বয় চুক্তি, অর্থনৈতিক সমনয়ের চুক্তি প্রভৃতি।[৬]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Colectividad dividida se une para el centenario (স্প্যানিশ ভাষায়)"। ৩১ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৭ 
  2. "Honorary Consulate of Armenia in Uruguay"। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৭ 
  3. "Uruguayan Ministry of Foreign Affairs"। ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৭ 
  4. "Armenios: Un siglo de resistencia (স্প্যানিশ ভাসায়)"। ৩১ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৭ 
  5. Uruguay Recognizes the Armenian Genocide
  6. "Armenian Ministry of Foreign Affairs: Uruguay"। ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৭ 
  7. "Hermandad entre Armenia y Uruguay y visita del canciller Almagro (স্প্যানিশ ভাষায়)"। ৩১ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৭