অ্যালবার্ট ক্লুঁদে: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Ashiqpi (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
Ashiqpi (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
২৭ নং লাইন: ২৭ নং লাইন:
}}
}}


অ্যালবার্ট ক্লুঁদে ছিলেন একজন বেলজিয়ান-আমেরিকান ডাক্তার এবং কোষ জীববিজ্ঞানী, যিনি ১৯৭৪ সালে ক্রিস্টিয়ান ডি দুভ এবং জর্জ এমিল পালাদঁ এর সহিত যুক্তভাবে [[চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার]] লাভ করেন। তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় তার জন্মভূমি লংলিয়ারে অবস্থিত একটি সর্বাঙ্গীণ প্রাথমিক স্কুলে। [[প্রথম বিশ্বযুদ্ধ|প্রথম বিশ্বযুদ্ধে]]<nowiki/>র সময়কালে তিনি ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থায় কাজ করেছিলেন এবং তিনি দুইবার বন্দি-শিবিরে কারারুদ্ধ হয়েছিলেন। তার এই সেবার স্বীকৃতির জন্য চিকিৎসাবিদ্যা পড়তে আনুষ্ঠানিক কোনো আবশ্যক শিক্ষাগত যোগ্যতা ব্যাতীত বেলজিয়ামের [[লিগ বিশ্ববিদ্যালয়|লিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে]] ভর্তির সুযোগ  প্রদান করা হয়। ১৯২৮ সালে তিনি চিৎসাবিদ্যায় ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। চিৎসাবিদ্যার গবেষণায় অনুরাগী হয়ে  তিনি প্রাথমিকভাবে বার্লিনে অবস্থিত জার্মান ইনস্টিটিউটে যোগদান করেন। ১৯২৯ সালে তিনি নিউ-ইয়র্কে অবস্থিত রকেফেলার ইনস্টিটিউটে যোগদানের সুযোগ খুঁজে পান। রকেফেলার ইউনিভার্সিটিতে তিনি কোষ জীববিজ্ঞানে তার অধিকাংশ যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেন। ১৯৩০ সালে তিনি কোষীয় ভাঙ্গন পদ্ধতির উন্নয়ন সাধন করেন, যার মাধ্যমে তিনি [[রৌস সারকোমা এজেন্ট]] আবিষ্কার করার পাশাপাশি বিভিন্ন কোষীয় অঙ্গাণু যেমন; [[মাইটোকন্ড্রিয়া|মাইটোকন্ড্রিয়ন]], [[ক্লোরোপ্লাস্ট]], [[এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম]], [[গলগি বস্তু|গলজি বস্তু]], [[রাইবোজোম]] এবং [[লাইসোজোম]] আবিষ্কার করেন। জীববিদ্যায় তিনিই প্রথম [[ইলেক্ট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্র|ইলেক্ট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের]] ব্যবহার প্রয়োগ করেছিলেন। ১৯৪৫ সালে তিনিই প্রথম পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে কোষীয় গঠন প্রকাশ করেন। তার সমষ্টিগত কাজ কোষের জটিল গাঠনিক এবং ক্রিয়ামূলক উপাদান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের ভিত্তি রচনা করে গিয়েছে।
অ্যালবার্ট ক্লুঁদে ছিলেন একজন বেলজিয়ান-আমেরিকান ডাক্তার এবং কোষ জীববিজ্ঞানী, যিনি ১৯৭৪ সালে ক্রিস্টিয়ান ডি দুভ এবং জর্জ এমিল পালাদঁ এর সহিত যুক্তভাবে [[চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার]] লাভ করেন। তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় তার জন্মভূমি লংলিয়ারে অবস্থিত একটি সর্বাঙ্গীণ প্রাথমিক স্কুলে। [[প্রথম বিশ্বযুদ্ধ|প্রথম বিশ্বযুদ্ধে]]<nowiki/>র সময়কালে তিনি ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থায় কাজ করেছিলেন এবং তিনি দুইবার বন্দি-শিবিরে কারারুদ্ধ হয়েছিলেন। তার এই সেবার স্বীকৃতির জন্য চিকিৎসাবিদ্যা পড়তে আনুষ্ঠানিক কোনো আবশ্যক শিক্ষাগত যোগ্যতা ব্যাতীত বেলজিয়ামের [[লিগ বিশ্ববিদ্যালয়|লিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে]] ভর্তির সুযোগ  প্রদান করা হয়। ১৯২৮ সালে তিনি চিৎসাবিদ্যায় ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। চিৎসাবিদ্যার গবেষণায় অনুরাগী হয়ে  তিনি প্রাথমিকভাবে বার্লিনে অবস্থিত জার্মান ইনস্টিটিউটে যোগদান করেন। ১৯২৯ সালে তিনি নিউ-ইয়র্কে অবস্থিত রকেফেলার ইনস্টিটিউটে যোগদানের সুযোগ খুঁজে পান। রকেফেলার ইউনিভার্সিটিতে তিনি কোষ জীববিজ্ঞানে তার অধিকাংশ যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেন। ১৯৩০ সালে তিনি কোষীয় ভাঙ্গন পদ্ধতির উন্নয়ন সাধন করেন, যার মাধ্যমে তিনি [[রৌস সারকোমা এজেন্ট]] আবিষ্কার করার পাশাপাশি বিভিন্ন কোষীয় অঙ্গাণু যেমন; [[মাইটোকন্ড্রিয়া|মাইটোকন্ড্রিয়ন]], [[ক্লোরোপ্লাস্ট]], [[এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম]], [[গলগি বস্তু|গলজি বস্তু]], [[রাইবোজোম]] এবং [[লাইসোজোম]] আবিষ্কার করেন। জীববিদ্যায় তিনিই প্রথম [[ইলেক্ট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্র|ইলেক্ট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের]] ব্যবহার প্রয়োগ করেছিলেন। ১৯৪৫ সালে তিনিই প্রথম পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে কোষীয় গঠন প্রকাশ করেন। তার সমষ্টিগত কাজ কোষের জটিল গাঠনিক এবং ক্রিয়ামূলক উপাদান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের ভিত্তি রচনা করে গিয়েছে।<ref>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=http://dx.doi.org/10.1007/978-94-010-3072-4_2|শিরোনাম=Logical Writings|শেষাংশ=Chevalley|প্রথমাংশ=Claude|শেষাংশ২=Lautman|প্রথমাংশ২=Albert|তারিখ=1971|প্রকাশক=Springer Netherlands|অবস্থান=Dordrecht|পাতাসমূহ=21–23|আইএসবিএন=9789401030748}}</ref>


অ্যালবার্ট ক্লুঁদে লুভিয়ান-লা-ন্যুভে অবস্থিত [[জুল বোঁর্দে ক্যান্সার গবেষণা ও চিকিৎসা ইনস্টিটিউট]] এবং [[লাবরাঁতোয়া দ্য বিয়োলোজি সেলুল্যার এ কঁসেরোঁলোজি]]-তে পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন [[ইউনিভার্সিতঁ লিব্রঁ দ্য ব্রুক্সেল]], [[লুভিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়]] এবং [[রকেফেলার বিশ্ববিদ্যালয়|রকেফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ে]]। তার অগ্রণী কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৭০ সালে জর্জ পালাদঁ ও কেইথ পোর্টারের সাথে সংযুক্তভাবে [[লুইসা গ্রোস হরভিটস পুরস্কার]], ১৯৭১ সালে [[পল অরলিক ও লুডভিগ ডার্মস্টাইডটার পুরস্কার]] এবং ১৯৭৪ সালে তার বন্ধু ক্রিস্টিয়ান দ্য দুভ এবং ছাত্র জর্জ পলাদেঁর সহিত সংযুক্তভাবে [[চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার]] অর্জন করেন।
অ্যালবার্ট ক্লুঁদে লুভিয়ান-লা-ন্যুভে অবস্থিত [[জুল বোঁর্দে ক্যান্সার গবেষণা ও চিকিৎসা ইনস্টিটিউট]] এবং [[লাবরাঁতোয়া দ্য বিয়োলোজি সেলুল্যার এ কঁসেরোঁলোজি]]-তে পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন [[ইউনিভার্সিতঁ লিব্রঁ দ্য ব্রুক্সেল]], [[লুভিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়]] এবং [[রকেফেলার বিশ্ববিদ্যালয়|রকেফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ে]]। তার অগ্রণী কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৭০ সালে জর্জ পালাদঁ ও কেইথ পোর্টারের সাথে সংযুক্তভাবে [[লুইসা গ্রোস হরভিটস পুরস্কার]], ১৯৭১ সালে [[পল অরলিক ও লুডভিগ ডার্মস্টাইডটার পুরস্কার]] এবং ১৯৭৪ সালে তার বন্ধু ক্রিস্টিয়ান দ্য দুভ এবং ছাত্র জর্জ পলাদেঁর সহিত সংযুক্তভাবে [[চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার]] অর্জন করেন।
৩৩ নং লাইন: ৩৩ নং লাইন:
== বাল্যকাল এবং শিক্ষা ==
== বাল্যকাল এবং শিক্ষা ==
অ্যালবার্ট ক্লুঁদে ১৯৯৯ সালে (কিন্তু বেসামরিক নিবন্ধ অনুযায়ী ১৯৯৮) [[বেলজিয়াম|বেলজিয়ামের]] [[ন্যূফশ্যাঁতু|ন্যূফশ্যাঁতুর]] অন্তর্গত লংলিয়ারে পিতা ফ্লোরেন্টিন জোসেফ ক্লুঁদে এবং মাতা ম্যারি-গ্লডিস ভাত্রিকোয়ান্ট ক্লুঁদের ঘর আলো করে জন্ম-গ্রহণ করেন। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন। তার পিতা ফ্লোরেন্টিন [[প্যারিস]] থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত একজন রুটিওয়ালা ছিলেন এবং তিনি লংলিয়ার উপত্যকায় রেল স্টেশনের অদূরেই একটি রুটির দোকান ও মুদি দোকান পরিচালনা করতেন। ১৯০২ সালে তার মায়ের [[স্তন ক্যান্সার|স্তন-ক্যান্সার]] ধরা পড়ে এবং সাত বছরের ছোট অ্যালবার্টকে রেখেই তার মা পরলোক গমন করেন। বিদ্যালয়-পূর্ববর্তী জীবন তিনি তার মায়ের সাথেই কাটিয়েছিলেন। লংলিয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন, যেটি ছিল এক রুমের বহুত্ববাদী একটি স্কুল, যেখানে সব শ্রেণীর শিক্ষার্থীদেরকেই একই সাথে একই ছাদের নিচে একই শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে পড়ানো হতো। ঝামেলাপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তিনি ওই শিক্ষা ব্যবস্থাকে চমৎকার বলে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি ঘন্টা-বাদকের চাকরি করেছিলেন, যেখানে তার কাজ ছিল প্রতিদিন সকাল ৬-টায় গির্জার ঘন্টা বাজানো। ১৯০৭ সালে অর্থনৈতিক মন্দাবস্থার দরুন তার পরিবার আথুসে এসে বসবাস শুরু করে, যা ইস্পাতের কারখানা সমৃদ্ধ উন্নত একটি অঞ্চল ছিল। তিনি জার্মান-ভাষী একটি বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এর দুই বছর পর তাকে লংলিয়ারে তার চাচার দেখাশোনা করার জন্য বলা হয়, যিনি সেরিব্রাল রক্তক্ষরণের দরুন অক্ষম ছিলেন। তিনি বিদ্যালয় ত্যাগ করলেন এবং বেশ কয়েক বছর সামগ্রিকভাবে চাচার সেবা করেছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শুরুর দিকে তিনি ইস্পাত কারখানায় শিক্ষানবিস ছিলেন এবং পরবর্তীতে কারখানার নকশাবিদ হিসেবে কাজ করেছেন। তৎকালীন ব্রিটিশ যুদ্ধমন্ত্রী [[উইনস্টন চার্চিল|উইনস্টন চার্চিলের]] দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি প্রতিরোধে যোগদান করেন এবং ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থায় স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন, যেখানে তিনি পুরো একটি বছর কাজ করেন। যুদ্ধশেষে তাকে অভিজ্ঞ কর্মীর সম্মানের সহিত আন্তঃ মিত্রপক্ষীয় পদকে ভূষিত করা হয়। এরপর তিনি শিক্ষালাভ চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। যেহেতু চিকিৎসাবিদ্যা পড়ার জন্য আবশ্যক আনুষ্ঠানিক মাধ্যমিক শিক্ষা যেমন গ্র্রীক এবং [[ল্যাটিন]] ভাষার দক্ষতা তার ছিল না, সেহেতু তিনি লিগে অবস্থিত খনিবিদ্যা স্কুলে যোগদানের চেষ্টা করেন। সে সময় [[মার্সেল ফ্লোরকিন]] বেলজিয়ামের গণ-শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন উচ্চ-শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, এবং তার প্রশাসনে একটি আইন পাস্ হয় যার ফলস্বরূপ প্রাক্তন সামরিক কর্মীবৃন্দ কোনো ধরণের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ব্যতীতই উচ্চ-শিক্ষা অর্জনের সুযোগ লাভ করেন। যুদ্ধে তার সেবার স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে ১৯২২ সালে লিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাবিদ্যা পড়ার সুযোগ করে দেয়া হয়।
অ্যালবার্ট ক্লুঁদে ১৯৯৯ সালে (কিন্তু বেসামরিক নিবন্ধ অনুযায়ী ১৯৯৮) [[বেলজিয়াম|বেলজিয়ামের]] [[ন্যূফশ্যাঁতু|ন্যূফশ্যাঁতুর]] অন্তর্গত লংলিয়ারে পিতা ফ্লোরেন্টিন জোসেফ ক্লুঁদে এবং মাতা ম্যারি-গ্লডিস ভাত্রিকোয়ান্ট ক্লুঁদের ঘর আলো করে জন্ম-গ্রহণ করেন। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন। তার পিতা ফ্লোরেন্টিন [[প্যারিস]] থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত একজন রুটিওয়ালা ছিলেন এবং তিনি লংলিয়ার উপত্যকায় রেল স্টেশনের অদূরেই একটি রুটির দোকান ও মুদি দোকান পরিচালনা করতেন। ১৯০২ সালে তার মায়ের [[স্তন ক্যান্সার|স্তন-ক্যান্সার]] ধরা পড়ে এবং সাত বছরের ছোট অ্যালবার্টকে রেখেই তার মা পরলোক গমন করেন। বিদ্যালয়-পূর্ববর্তী জীবন তিনি তার মায়ের সাথেই কাটিয়েছিলেন। লংলিয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন, যেটি ছিল এক রুমের বহুত্ববাদী একটি স্কুল, যেখানে সব শ্রেণীর শিক্ষার্থীদেরকেই একই সাথে একই ছাদের নিচে একই শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে পড়ানো হতো। ঝামেলাপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তিনি ওই শিক্ষা ব্যবস্থাকে চমৎকার বলে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি ঘন্টা-বাদকের চাকরি করেছিলেন, যেখানে তার কাজ ছিল প্রতিদিন সকাল ৬-টায় গির্জার ঘন্টা বাজানো। ১৯০৭ সালে অর্থনৈতিক মন্দাবস্থার দরুন তার পরিবার আথুসে এসে বসবাস শুরু করে, যা ইস্পাতের কারখানা সমৃদ্ধ উন্নত একটি অঞ্চল ছিল। তিনি জার্মান-ভাষী একটি বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এর দুই বছর পর তাকে লংলিয়ারে তার চাচার দেখাশোনা করার জন্য বলা হয়, যিনি সেরিব্রাল রক্তক্ষরণের দরুন অক্ষম ছিলেন। তিনি বিদ্যালয় ত্যাগ করলেন এবং বেশ কয়েক বছর সামগ্রিকভাবে চাচার সেবা করেছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শুরুর দিকে তিনি ইস্পাত কারখানায় শিক্ষানবিস ছিলেন এবং পরবর্তীতে কারখানার নকশাবিদ হিসেবে কাজ করেছেন। তৎকালীন ব্রিটিশ যুদ্ধমন্ত্রী [[উইনস্টন চার্চিল|উইনস্টন চার্চিলের]] দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি প্রতিরোধে যোগদান করেন এবং ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থায় স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন, যেখানে তিনি পুরো একটি বছর কাজ করেন। যুদ্ধশেষে তাকে অভিজ্ঞ কর্মীর সম্মানের সহিত আন্তঃ মিত্রপক্ষীয় পদকে ভূষিত করা হয়। এরপর তিনি শিক্ষালাভ চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। যেহেতু চিকিৎসাবিদ্যা পড়ার জন্য আবশ্যক আনুষ্ঠানিক মাধ্যমিক শিক্ষা যেমন গ্র্রীক এবং [[ল্যাটিন]] ভাষার দক্ষতা তার ছিল না, সেহেতু তিনি লিগে অবস্থিত খনিবিদ্যা স্কুলে যোগদানের চেষ্টা করেন। সে সময় [[মার্সেল ফ্লোরকিন]] বেলজিয়ামের গণ-শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন উচ্চ-শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, এবং তার প্রশাসনে একটি আইন পাস্ হয় যার ফলস্বরূপ প্রাক্তন সামরিক কর্মীবৃন্দ কোনো ধরণের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ব্যতীতই উচ্চ-শিক্ষা অর্জনের সুযোগ লাভ করেন। যুদ্ধে তার সেবার স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে ১৯২২ সালে লিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাবিদ্যা পড়ার সুযোগ করে দেয়া হয়।

== কর্মজীবন ==
<br />

== ব্যক্তিগত জীবন ==
<br />

== পুরস্কার এবং স্বীকৃতি ==

* ১৯৬৫ সালে বেলজিয়ামের [[ফন্দঁ ন্যাসিওনাল দ্য লা রঁসার্স সিন্তিফিক]] কর্তৃক প্রদত্ত [[ব্যারন হলোভেট পুরস্কার]]
* ১৯৭০ সালে [[কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়|কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়]] কর্তৃক প্রদত্ত [[লুইসা গ্রোস হরভিটস পুরস্কার]]
* ১৯৭১ সালে [[পল অরলিক ও লুডভিগ ডার্মস্টাইডটার পুরস্কার]]
* ১৯৭৪ সালে কোষের কাঠামোগত এবং কার্যকরী সংগঠন সম্পর্কিত আবিষ্কারগুলির জন্য পালাদঁ এবং ডি দুভ এর সহিত তিনি সংযুক্তভাবে [[চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার]] লাভ করেন।
* বেলজিয়ান চিকিৎসাবিদ্যা একাডেমি পদক
* রয়েল একাডেমিস ফর সাইন্স এন্ড  দি আর্টস অফ বেলজিয়ামের সদস্য
* [[ফরাসি বিজ্ঞান একাডেমি]]<nowiki/>র সদস্য
* [[আমেরিকান শিল্পকলা ও বিজ্ঞান একডেমি]]<nowiki/>র সম্মানী সদস্য
* [[ফ্রান্সের প্যাঁলমস একাডেমিকস পদক]]
* [[লিওপোল্ড দ্বিতীয় এর শ্রেষ্ঠ পদক]]
* [[রকেফেলার বিশ্ববিদ্যালয়]] সহ লুভিয়ান, মোদেনা, লিগ ইত্যাদি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন

১৫:০০, ৩০ জুলাই ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ


অ্যালবার্ট ক্লুঁদে
অ্যালবার্ট ক্লুঁদে (১৯৭৪)
জন্ম(১৮৯৯-০৮-২৪)২৪ আগস্ট ১৮৯৯
মৃত্যু২২ মে ১৯৮৩(1983-05-22) (বয়স ৮৩)
জাতীয়তাবেলজিয়ান
নাগরিকত্ববেলজিয়াম এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মাতৃশিক্ষায়তনলিগ বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণকোষীয় ভগ্নাংশ
জীববিদ্যায় ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্র
পুরস্কারলুইসা গ্রোস হরভিটস পুরস্কার (১৯৭০)
পল অরলিক ও লুডভিগ ডার্মস্টাইডটার (১৯৭১)
চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার (১৯৭৪)
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রকোষ বিদ্যা
প্রতিষ্ঠানসমূহরকেফেলার বিশ্ববিদ্যালয়
জুল বোঁর্দে ইনস্টিটিউট
ইউনিভার্সিতঁ লিব্রঁ দ্য ব্রুক্সেল
ইউনিভার্সিতঁ ক্যাথোলিক দ্য লুভিয়ান

অ্যালবার্ট ক্লুঁদে ছিলেন একজন বেলজিয়ান-আমেরিকান ডাক্তার এবং কোষ জীববিজ্ঞানী, যিনি ১৯৭৪ সালে ক্রিস্টিয়ান ডি দুভ এবং জর্জ এমিল পালাদঁ এর সহিত যুক্তভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় তার জন্মভূমি লংলিয়ারে অবস্থিত একটি সর্বাঙ্গীণ প্রাথমিক স্কুলে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কালে তিনি ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থায় কাজ করেছিলেন এবং তিনি দুইবার বন্দি-শিবিরে কারারুদ্ধ হয়েছিলেন। তার এই সেবার স্বীকৃতির জন্য চিকিৎসাবিদ্যা পড়তে আনুষ্ঠানিক কোনো আবশ্যক শিক্ষাগত যোগ্যতা ব্যাতীত বেলজিয়ামের লিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ  প্রদান করা হয়। ১৯২৮ সালে তিনি চিৎসাবিদ্যায় ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন। চিৎসাবিদ্যার গবেষণায় অনুরাগী হয়ে  তিনি প্রাথমিকভাবে বার্লিনে অবস্থিত জার্মান ইনস্টিটিউটে যোগদান করেন। ১৯২৯ সালে তিনি নিউ-ইয়র্কে অবস্থিত রকেফেলার ইনস্টিটিউটে যোগদানের সুযোগ খুঁজে পান। রকেফেলার ইউনিভার্সিটিতে তিনি কোষ জীববিজ্ঞানে তার অধিকাংশ যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেন। ১৯৩০ সালে তিনি কোষীয় ভাঙ্গন পদ্ধতির উন্নয়ন সাধন করেন, যার মাধ্যমে তিনি রৌস সারকোমা এজেন্ট আবিষ্কার করার পাশাপাশি বিভিন্ন কোষীয় অঙ্গাণু যেমন; মাইটোকন্ড্রিয়ন, ক্লোরোপ্লাস্ট, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম, গলজি বস্তু, রাইবোজোম এবং লাইসোজোম আবিষ্কার করেন। জীববিদ্যায় তিনিই প্রথম ইলেক্ট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের ব্যবহার প্রয়োগ করেছিলেন। ১৯৪৫ সালে তিনিই প্রথম পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে কোষীয় গঠন প্রকাশ করেন। তার সমষ্টিগত কাজ কোষের জটিল গাঠনিক এবং ক্রিয়ামূলক উপাদান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের ভিত্তি রচনা করে গিয়েছে।[১]

অ্যালবার্ট ক্লুঁদে লুভিয়ান-লা-ন্যুভে অবস্থিত জুল বোঁর্দে ক্যান্সার গবেষণা ও চিকিৎসা ইনস্টিটিউট এবং লাবরাঁতোয়া দ্য বিয়োলোজি সেলুল্যার এ কঁসেরোঁলোজি-তে পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন ইউনিভার্সিতঁ লিব্রঁ দ্য ব্রুক্সেল, লুভিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় এবং রকেফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার অগ্রণী কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৭০ সালে জর্জ পালাদঁ ও কেইথ পোর্টারের সাথে সংযুক্তভাবে লুইসা গ্রোস হরভিটস পুরস্কার, ১৯৭১ সালে পল অরলিক ও লুডভিগ ডার্মস্টাইডটার পুরস্কার এবং ১৯৭৪ সালে তার বন্ধু ক্রিস্টিয়ান দ্য দুভ এবং ছাত্র জর্জ পলাদেঁর সহিত সংযুক্তভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন।

বাল্যকাল এবং শিক্ষা

অ্যালবার্ট ক্লুঁদে ১৯৯৯ সালে (কিন্তু বেসামরিক নিবন্ধ অনুযায়ী ১৯৯৮) বেলজিয়ামের ন্যূফশ্যাঁতুর অন্তর্গত লংলিয়ারে পিতা ফ্লোরেন্টিন জোসেফ ক্লুঁদে এবং মাতা ম্যারি-গ্লডিস ভাত্রিকোয়ান্ট ক্লুঁদের ঘর আলো করে জন্ম-গ্রহণ করেন। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন। তার পিতা ফ্লোরেন্টিন প্যারিস থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত একজন রুটিওয়ালা ছিলেন এবং তিনি লংলিয়ার উপত্যকায় রেল স্টেশনের অদূরেই একটি রুটির দোকান ও মুদি দোকান পরিচালনা করতেন। ১৯০২ সালে তার মায়ের স্তন-ক্যান্সার ধরা পড়ে এবং সাত বছরের ছোট অ্যালবার্টকে রেখেই তার মা পরলোক গমন করেন। বিদ্যালয়-পূর্ববর্তী জীবন তিনি তার মায়ের সাথেই কাটিয়েছিলেন। লংলিয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন, যেটি ছিল এক রুমের বহুত্ববাদী একটি স্কুল, যেখানে সব শ্রেণীর শিক্ষার্থীদেরকেই একই সাথে একই ছাদের নিচে একই শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে পড়ানো হতো। ঝামেলাপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তিনি ওই শিক্ষা ব্যবস্থাকে চমৎকার বলে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি ঘন্টা-বাদকের চাকরি করেছিলেন, যেখানে তার কাজ ছিল প্রতিদিন সকাল ৬-টায় গির্জার ঘন্টা বাজানো। ১৯০৭ সালে অর্থনৈতিক মন্দাবস্থার দরুন তার পরিবার আথুসে এসে বসবাস শুরু করে, যা ইস্পাতের কারখানা সমৃদ্ধ উন্নত একটি অঞ্চল ছিল। তিনি জার্মান-ভাষী একটি বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এর দুই বছর পর তাকে লংলিয়ারে তার চাচার দেখাশোনা করার জন্য বলা হয়, যিনি সেরিব্রাল রক্তক্ষরণের দরুন অক্ষম ছিলেন। তিনি বিদ্যালয় ত্যাগ করলেন এবং বেশ কয়েক বছর সামগ্রিকভাবে চাচার সেবা করেছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শুরুর দিকে তিনি ইস্পাত কারখানায় শিক্ষানবিস ছিলেন এবং পরবর্তীতে কারখানার নকশাবিদ হিসেবে কাজ করেছেন। তৎকালীন ব্রিটিশ যুদ্ধমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি প্রতিরোধে যোগদান করেন এবং ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থায় স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন, যেখানে তিনি পুরো একটি বছর কাজ করেন। যুদ্ধশেষে তাকে অভিজ্ঞ কর্মীর সম্মানের সহিত আন্তঃ মিত্রপক্ষীয় পদকে ভূষিত করা হয়। এরপর তিনি শিক্ষালাভ চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। যেহেতু চিকিৎসাবিদ্যা পড়ার জন্য আবশ্যক আনুষ্ঠানিক মাধ্যমিক শিক্ষা যেমন গ্র্রীক এবং ল্যাটিন ভাষার দক্ষতা তার ছিল না, সেহেতু তিনি লিগে অবস্থিত খনিবিদ্যা স্কুলে যোগদানের চেষ্টা করেন। সে সময় মার্সেল ফ্লোরকিন বেলজিয়ামের গণ-শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন উচ্চ-শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, এবং তার প্রশাসনে একটি আইন পাস্ হয় যার ফলস্বরূপ প্রাক্তন সামরিক কর্মীবৃন্দ কোনো ধরণের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ব্যতীতই উচ্চ-শিক্ষা অর্জনের সুযোগ লাভ করেন। যুদ্ধে তার সেবার স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে ১৯২২ সালে লিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাবিদ্যা পড়ার সুযোগ করে দেয়া হয়।

কর্মজীবন


ব্যক্তিগত জীবন


পুরস্কার এবং স্বীকৃতি

  1. Chevalley, Claude; Lautman, Albert (১৯৭১)। Logical Writings। Dordrecht: Springer Netherlands। পৃষ্ঠা 21–23। আইএসবিএন 9789401030748