হাতিগড় শিব দেবালয়

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
হাতিগড় শিব দেবালয়
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
জেলাযোরহাট
অবস্থান
অবস্থানহাতিগড়
দেশভারত
স্থাপত্য
সৃষ্টিকারীপূর্ণানন্দ বরগোহাঁই

হাতিগড় শিব দেবালয় বা দৌল যোরহাট নগর থেকে প্রায় পাঁচ মাইল দূরে ট্রাংক রোডের পাশে অবস্থিত একটি দেবালয়। ট্রাংক রোড (এ. টি. রোড) থেকে প্রায় তিনিশ মিটার দক্ষিণে দৌলটি আছে। ১৭৮৬-৮৭ সালে এই দৌলের ভিত্তি স্থাপন করা হয়।[১] আহোম স্বর্গদেউ গৌরীনাথ সিংহর ইচ্ছামতে মন্ত্রী পূর্ণানন্দ বুঢ়াগোহাঁই শিবদৌলের কাজ আরম্ভ করেছিলেন।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

আহোম স্বর্গদেউ গৌরীনাথ সিংহের (১৭৮০-৯৫) সময়ে মোয়ামরীয়া বিদ্রোহ তলে তলে চলতে থাকায় ১৭৮২ সালে মন্ত্রী ঘনশ্যাম বুঢ়াগোহাঁইর মৃত্যু হয়। তখন তাঁর পুত্র পূর্ণানন্দ বুঢ়াগোহাঁই রাজমন্ত্রী হন।[২] রাজার ইচ্ছামতে পূর্ণানন্দ হাতিগড়ে একটি শিবদৌল প্রতিষ্ঠা করতে পাকা ভিত্তির কাজ আরম্ভ করেন। ১৭৮৬-৮৭ সালে এই ভিত্তি স্থাপন করা হয়। দেবালয়ের জন্য লেহুবর শর্মাকে ঠাকুর এবং একঘর শূদ্র মানুষকে পরিচালক নিয়োগ করা হয়। দৌলের নামে ন পুরো জমি বুঢ়াগোহাঁই দান করেন। ভিত্তির কাছে একটি পুকুরও খনন করা হয়।

ভিত্তির কাজ সম্পূর্ণ হয়ে আসাকালে মোয়ামরীয়ারা বিদ্রোহ আরম্ভ করে এবং আহোম রাজ্যর রাজধানী যোরহাট আক্রমণ করে। স্বর্গদেউ গৌরীনাথ সিংহ গুয়াহাটীতে পালিয়ে যান এবং পূর্ণানন্দ বুঢ়াগোহাঁই অন্য কয়েকজন প্রধানের সাথে রাজধানীতে থাকেন। অল্প সৈন্যে কয়েকদিন যুদ্ধ হওয়ার পরে বুঢ়াগোহাঁই সাহায্য চেয়ে ভটিয়া যান। ফলে ১৭৮৮ সালের জানুয়ারি মাসে মোয়ামরীয়া পুনরায় আহোম রাজধানী অধিকার করে।[২] এই বিদ্রোহে লেহুবর ঠাকুরের পরিবারকে ধরে বহু মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় এবং ফলে ভিত্তি স্থাপন করিয়েই হাতিগড়ের শিবদৌল তৈরির কাজও বিলম্বিত হয়। ১৭৯২ সালে বুঢ়াগোহাঁইর অনুরোধে ক্যাপ্টেন বেল্‌স ব্রিটিশ সৈন্য এনে বিদ্রোহ দমন করে গোরীনাথ সিংহকে পুনরায় রাজসিংহাসনে বসান।

বিদ্রোহর পরে দেশে আকাল দেখা দেয়। দৌল তৈরি কাজ করতে মানুষের অনিচ্ছা দেখা দেয়। বিদ্রোহর পরে লেহুবর ঠাকুর ফিরে এসে দেবালয়ের শিবলিঙ্গে নিয়মিত পূজা-অর্চনা আরম্ভ করেন। পূর্বে স্থাপিত ভিত্তির উপরে একটি টিনের ঘর গড়ে নেওয়া হয়।

পূজা-অর্চনা[সম্পাদনা]

দৌলের কাছে লেহুবর ঠাকুরের সন্ততি এখনো কয়েক ঘর আছে। প্রত্যেক ঘরই পালা করে দেবালয়ে পূজা-অর্চনা করেন।[১] বর্তমান দৌলটিকে নতুন করে তৈরির কাজ চলছে।

চিত্র[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সম্পাদক- ড: মহেশ্বর নেওগ (২০০৪)। পবিত্র আসাম। গুয়াহাটী: লয়ার্ছ বুক ষ্টল। পৃষ্ঠা ৬৬। 
  2. ড: স্বরণলতা বরা। মাধ্যমিক আসাম বুরঞ্জী। পৃষ্ঠা ৩১৫। আইএসবিএন 81-85905-11-8 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

টেমপ্লেট:Hindu Temples in Assam