মিয়া আকবর হোসেন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

মিয়া আকবর হোসেন (১৯৩২- ২ মে ২০১৫[১]) বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিক ও সংগঠক। তিনি আকবর বাহিনী গঠন করেন। একাত্তরে তার বাহিনী মাগুরা, রাজবাড়ি, ঝিনাইদহ ও সংলগ্ন অঞ্চলে পাকিস্থানী হানাদারদের বিরুদ্ধে কমপক্ষে ২৭টি সশস্ত্র যুদ্ধ অংশ নেয়।[২]

মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ[সম্পাদনা]

মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে আকবর হোসেন তার অনুসারীদেরকে নিয়ে একটি গেরিলা বাহিনী গড়ে তোলেন। ক্রমে এই বাহিনীতে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকলে সেটি 'আকবর বাহিনী' হিসেবে পরিচিতি পেতে শুরু করে। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে এই বাহিনী 'আকবর বাহিনী' হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর মঞ্জুর এই বাহিনীর নাম পরিবর্তন করে 'শ্রীপুর বাহিনী' করেন। এই বাহিনী ৮ নম্বর সেক্টরের সাব সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন (পরবর্তীতে মেজর জেনারেল) এটিএম আব্দুল ওয়াহাবের নেতৃত্বে কয়েকটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় এই বাহিনী শ্রীপুর থানা আক্রমণ করে দখল করে নেয় এবং পুলিশের অস্ত্র দখল করে মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহার করে। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ ডিসেম্বর তারিখে এই বাহিনী মাগুরা আক্রমণ করে পাকিস্তানি সৈন্যদেরকে পরাজিত করে মাগুরাকে মুক্ত এলাকা ঘোষণা করে।

ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার কামান্নায় এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে এই বাহিনীর ২৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।

জন্ম ও ব্যক্তিজীবন[সম্পাদনা]

বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেনের জন্ম ১৯৩২ সালে[২] মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার টুপিপাড়া গ্রামে। ১৯৫১ সালে যোগ দেন পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে।[৩] পাকিস্তানিদের ব্যবহারে বীতশ্রদ্ধ হয়ে ১৯৫৪ সালে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে স্বদেশে চলে আসেন। ১৯৬৫ সালে তিনি নিজ ইউনিয়ন শ্রীকোলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং টানা ২৪ বছর এই দায়িত্ব পালন করেন।[৩] আকবর হোসেন মিয়া ২০১৫ সালের ২ মে তারিখে ৮৯ বছর বয়সে মারা যান।

প্রকাশনা[সম্পাদনা]

আকবর হোসেন মিয়া তার মুক্তিযুদ্ধের বিবরণ দিয়ে একটি বই প্রকাশ করেছেন, তার বইটির নাম মুক্তিযুদ্ধে আমি ও আমার বাহিনী। এই গ্রন্থে আকবর বাহিনীর নিয়মিত সদস্য হিসেবে ৩৩৩ জন মুক্তিযোদ্ধার নাম তালিকাভুক্ত রয়েছে।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "বিদায় আকবর বাহিনী প্রধান"। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "আকবর বাহিনী ২৭টি সশস্ত্র যুদ্ধে অংশ নেয়"। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০১৭ 
  3. "আকবর বাহিনী"। সংগ্রহের তারিখ ৬ জুন ২০১৭ 

বহি:সংযোগ[সম্পাদনা]