মালঞ্চ (উপন্যাস)
মালঞ্চ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস। ‘বিচিত্রা’ মাসিক পত্রে ১৩৪০ বঙ্গাব্দের আশ্বিন থেকে অগ্রহায়ণ সংখ্যায় ধারাবাহিকভাবে প্রথম প্রকাশ।[১] গ্রন্থাকারে প্রকাশ ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে (১৩৪০ বঙ্গাব্দের চৈত্র মাসে)।[১] শেষ জীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দুটি পরকীয়া-বিষয়ক উপন্যাস রচনা করেছিলেন। তার প্রথম উপন্যাসটি ছিল দুই বোন (১৯৩৩)। এটি মিলনান্তক। দ্বিতীয় উপন্যাসটি হল মালঞ্চ। এটি বিয়োগান্তক উপন্যাস।[২] ১৯৭৯ সালে পরিচালক পূর্ণেন্দু পত্রী মালঞ্চ চলচ্চিত্রায়িত করেন।
সারাংশ
[সম্পাদনা]নীরজার স্বামী আদিত্যের ছিল ফুলের ব্যবসা। আর সেই থেকে ফুলের প্রতি অনুরাগ জন্মায় নীরজার। দশ বছর সুখে দাম্পত্যজীবন অতিবাহিত করার পর নীরজা সন্তানসম্ভবা হয়। কিন্তু প্রসবকালে নীরজার সন্তানের মৃত্যু হয়। এরপর নীরজা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাগানের কাজে নীরজা আর আদিত্যকে সাহায্য করতে পারে না। তাই আদিত্যের দূরসম্পর্কের বোন সরলা আসে বাগানের কাজে তাকে সাহায্য করতে। এদিকে বাগান পরিচর্যা ও ব্যবসার কাজে অমনোযোগী হয়ে পড়ে আদিত্য। সরলা ও আদিত্য পরস্পর পরস্পরের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। নীরজার প্রতি আদিত্যের অবহেলা স্পষ্ট হয়ে পড়ে। আদিত্য নিজে না এসে তার খুড়তুতো ভাই রমেনকে পাঠাতে থাকে নীরজার সেবাযত্নের জন্য। ব্যাপারটা বুঝতে পেরে নীরজা সরলার সঙ্গে রমেনের বিয়ে দেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করে। তারপর একদিন আদিত্যের অবহেলা সইতে না পেরে নীরজা সরাসরি আদিত্যের বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ আনে। এতে বাড়ি থেকে বিদায় নেয় আদিত্য। এদিকে আদিত্যের প্রতি তার আকর্ষণের কথা বুঝতে পেরে বিবেকের দংশনে আদিত্যের কাছ থেকে সরে যাওয়ার কথা ভাবে সরলা। পরে আদিত্য নিঃসহায় সরলার প্রতি তার কর্তব্যের কথা স্মরণ করিয়ে নীরজাকে চিঠি লেখে। সেই চিঠির ছত্রে ছত্রে ধরা পড়েছিল সরলার প্রতি আদিত্যের অনুরাগ। তীব্র মানসিক আঘাতে দীর্ণ নীরজা আশ্রয় নেয় ঠাকুরঘরে। তারপর একদিন আদিত্যের ফিরে আসার খবর পেয়ে নীরজাও ঠাকুরঘর থেকে বেরিয়ে রমেনের মাধ্যমে সরলাকে ডেকে পাঠায়। সরলাকে নিজের গয়না পরিয়ে দেয়। কিন্তু বিবেকের দংশনে সরলা একটি চুরির অভিযোগ মাথায় নিয়ে কারাবরণ করে। আদিত্য আবার ফিরে আসে নীরজার জীবনে। কিছুদিন পরে খালাস পেয়ে ফিরে আসে সরলাও। সরলাকে দেখে রাগে ফেটে পড়ে নীরজা। সহ্য করতে না পেরে তক্ষুনি মৃত্যু হয় তার।