স্বেচ্ছাসেবী কাজ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Farah Firdous Islam (আলোচনা | অবদান)
অনুবাদ
Farah Firdous Islam (আলোচনা | অবদান)
অনুবাদ
৭৭ নং লাইন: ৭৭ নং লাইন:
জ্যানেট এইলার এবং ডিউইট ই.গিলেস, এর ''Where's the Learning in Service-Learning? (শিক্ষণীয়-কাজের মধ্যে শিক্ষা কোথায়?)'' অনুসারে শিক্ষণীয়-কাজ আর অন্যের সেবা করার মধ্যে মগ্ন থাকার অনেক একাডেমিক আর ব্যক্তিগত ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। নতুন মানুষদের মাঝে থাকা আর একটি দলের সাথে একসঙ্গে কাজ করতে পাড়ার শিক্ষা একজনের দলগতকাজ এবং সম্পর্কের দক্ষতাগুলিকে উন্নত করতে সাহায্য করে, এটি প্রচলিত ধারণাকে হ্রাস করে, অন্যের সংস্কৃতির প্রতি উপলব্ধি বাড়ায়, আর তরুণদের যারা তাদের সাথে সম্পর্কিত এমন অন্যান্যদের খুঁজে বের করতে এটি কাজ করে।
জ্যানেট এইলার এবং ডিউইট ই.গিলেস, এর ''Where's the Learning in Service-Learning? (শিক্ষণীয়-কাজের মধ্যে শিক্ষা কোথায়?)'' অনুসারে শিক্ষণীয়-কাজ আর অন্যের সেবা করার মধ্যে মগ্ন থাকার অনেক একাডেমিক আর ব্যক্তিগত ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। নতুন মানুষদের মাঝে থাকা আর একটি দলের সাথে একসঙ্গে কাজ করতে পাড়ার শিক্ষা একজনের দলগতকাজ এবং সম্পর্কের দক্ষতাগুলিকে উন্নত করতে সাহায্য করে, এটি প্রচলিত ধারণাকে হ্রাস করে, অন্যের সংস্কৃতির প্রতি উপলব্ধি বাড়ায়, আর তরুণদের যারা তাদের সাথে সম্পর্কিত এমন অন্যান্যদের খুঁজে বের করতে এটি কাজ করে।


এইলার এবং গিলেস উল্লেখ করেছেন যে একটি কলেজের শুরু আর শেষের সেমিস্টারের এক সপ্তাহে ৩ ঘন্টা, নাগরিক সেবার সাথে যুক্ত থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক শ্রদ্ধাবোধ দেখা যায়। সেমিস্টারের শেষে যে শিক্ষার্থীরা শিক্ষণীয়-কাজে অংশগ্রহণ করেছিল, তাদের বলতে দেখা গেছে যে, তারা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি শিখেছে তা হলো কারো সম্পর্কে ধারণা করে নেয়া উচিত নয়, এবং সব ধরণের মানুষদেরকেই মূল্যায়ন করা উচিত তার কারণ হলো সব ধরণের মানুষ কিছু একই রকমের গুণাবলী ধারণ করে।<br />
এইলার এবং গিলেস উল্লেখ করেছেন যে একটি কলেজের শুরু আর শেষের সেমিস্টারের এক সপ্তাহে ৩ ঘন্টা, নাগরিক সেবার সাথে যুক্ত থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক শ্রদ্ধাবোধ দেখা যায়। সেমিস্টারের শেষে যে শিক্ষার্থীরা শিক্ষণীয়-কাজে অংশগ্রহণ করেছিল, তাদের বলতে দেখা গেছে যে, তারা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি শিখেছে তা হলো কারো সম্পর্কে ধারণা করে নেয়া উচিত নয়, এবং সব ধরণের মানুষদেরকেই মূল্যায়ন করা উচিত তার কারণ হলো সব ধরণের মানুষ কিছু একই রকমের গুণাবলী ধারণ করে।

গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাসেবী কাজ শিক্ষার্থীদের একাডেমিক জীবন আর কলেজ অভিজ্ঞতার জন্য একটি শক্তিশালী ভবিষ্যত হিসেবে কাজ করে। গবেষণার মাধ্যমে দেখা গেছে যে, যেসব শিক্ষার্থীরা তাদের কলেজ শিক্ষার একটি পাঠ্য হিসেবে নাগরিক সেবাকে বেঁচে নিয়েছে তাদের শিক্ষার সাথে এর একটি বড় যোগসূত্র রয়েছে। (Astin, 1992;[27] Pascarella and Terenzini, 1991[28]) এছাড়াও, যেসব কলেজ শিক্ষার্থীরা গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাসেবী কাজের প্রকল্পে যুক্ত হয়, তাদের কলেজ অভিজ্ঞতার বিবরণ থেকে দেখা যায় তাদের গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাসেবী কাজের প্রকল্প শেষ হবার পর তাদের একাডেমিক শিক্ষার সাথে এর প্রচুর মিল রয়েছে।[২৯] ইউনিভার্সিটি হেলথ সেবার মতানুসারে, বিবরণ থেকে পাওয়া গিয়েছে যে, স্বেচ্ছাসেবী কাজ সুনিশ্চিতভাবে শিক্ষার্থীদের সামগ্রিকভাবে মানসিক এবং আবেগপ্রবণ শারীরিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে।[৩০]

=== সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী কাজ  বা কল্যানমুলক স্বেচ্ছাসেবী কাজ ===
ইউরোপের কিছু দেশের সরকারি আর বেসরকারি সংস্থাগুলো একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত হাসপাতাল, স্কুল, স্মারক বহনকারী এবং কল্যাণ প্রতিষ্ঠানের মতো জায়গায় একটি সহায়ক অবস্থান প্রদান করে। অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী কাজের সাথে এর পার্থক্য হলো, একটি কঠোর আইনী বিধিমালা আছে যে, কোন সংস্থাগুলো স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়োগ করতে পারবে আর কত সময়ের জন্য একজন স্বেচ্ছাসেবক স্বেচ্ছাসেবী কাজে নিয়োজিত থাকতে পারবে। এই ধরণের নিয়মের ফলে, একজন স্বেচ্ছাসেবক একটি নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ সরকার থেকে আয় করতে পারে। ইউরোপের সব থেকে বড় জনশক্তি রয়েছে, জার্মান ফেডারেল ভলান্টিয়ার্স সার্ভিস এর (Bundesfreiwilligendienst), যেটি ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করে, যার ২০১২ সালে ৩৫,০০০ এর বেশি ফেডারেল স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে।[৩১] ভলান্টারী সোশ্যাল ইয়ার (Freiwilliges Soziales Jahr) হচ্ছে অস্ট্রিয়া আর জার্মানি- এর সবচে পুরোনো প্রতিষ্ঠান।[৩২][৩৩]   

১১:১০, ২৬ আগস্ট ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

১৯১৯ সালের জুলাইয়ে বিশ্বের স্বেচ্ছাসেবকরা উইমেনস ইমার্জেন্সি কর্পস (পরে উইমেনস স্বেচ্ছাসেবক রিজার্ভ) এর মাধ্যমে ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারী মোকাবেলার জন্য কুইন্সল্যান্ডের ইথাকা এসেছিলেন।
২০১২ সালের হারিকেন স্যান্ডির পরে স্বেচ্ছাসেবকরা ব্রোকলিন হাঁটার রাস্তা ঝাড়ুর সাহায্যে পরিষ্কার করছেন।
১৯৬১ সালের ২৮শে আগস্ট জন এফ. কেনেডি স্বেচ্ছাসেবকদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন।  
লরা বুশ পিস কর্পস স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে ছবি তুলছেন।
২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে হারিকেন ক্যাটরিনার পরে স্বেচ্ছাসেবকরা হিউস্টন অ্যাস্ট্রোডোমে বেঁচে থাকাদের সহায়তা করছেন।

স্বেচ্ছাসেবী কাজ বলতে সাধারণত স্বার্থহীন কার্যক্রমকে বোঝায় যা একজন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কোনো  আর্থিক বা সামাজিক লাভের জন্য করে না, "একজন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা সংস্থার সুবিধাৰ্থে করে"।[১] স্বেচ্ছাসেবী কাজ দক্ষতা বিকাশের জন্যও অতি পরিচিত এবং প্রায়শই সৎকর্ম প্রচার অথবা মানুষের জীবনমান উন্নত করার উদ্দেশ্যে করা হয়। স্বেচ্ছাসেবী কাজ, নিশ্চিতভাবে স্বেচ্ছাসেবী সেই সাথে যে ব্যক্তি বা সম্প্রদায় সেবা গ্রহণ করছে তার জন্য সুবিধাজনক।[২] এটি সম্ভাব্য কর্মসংস্থানের জন্য যোগাযোগ তৈরি করতেও করা হয়। অনেক স্বেচ্ছাসেবী তাদের কাজের ক্ষেত্র গুলোতে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত, যেমন চিকিৎসাশাস্ত্র, শিক্ষা বা জরুরি উদ্ধারকার্য। অন্যরা প্রয়োজন অনুযায়ী সেবা প্রদান করে, যেমন একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রতিক্রিয়া হিসাবে।

সামরিক সূত্রানুসারে, একজন সেচ্ছাসেবক  হলেন সেই ব্যক্তি যিনি সশস্ত্র বাহিনীতে, বাধ্যতামূলকভাবে নয় বরং নিজ ইচ্ছানুসারে যোগদান করেন এবং সাধারণত বেতন পান।

ব্যুৎপত্তি ও ইতিহাস

ক্রিয়া পদটি প্রথম নথিভুক্ত হয়েছিল ১৭৫৫ সালে। ধারণা করা হয়, ১৬০০, এটি বিশেষ্য পদ স্বেচ্ছাসেবক volunteer থেকে উদ্ভূত, যেটি মধ্য ফরাসি voluntaire থেকে এসেছে, যার অর্থ  "যিনি নিজেকে সামরিক বাহিনীতে যোগদানের জন্য বিবেচনা করেন"।[৩] অ-সামরিক অর্থে, শব্দটি ১৬৩০ এর দশকে প্রথম নথিভুক্ত হয়েছিল। স্বেচ্ছাসেবী শব্দটির আরও সাম্প্রতিক ব্যবহার রয়েছে- এখনও প্রধানত সামরিক - এটি নাগরিক সেবার সাথে মিলিয়ে ফেলা হয়।[৩][৪] সামরিক সূত্রানুসারে, একজন সেচ্ছাসেবক সেনা হল একটি সামরিক বাহিনী, যার সৈন্যরা বাধ্যতামূলকভাবে নয় বরং সেচ্ছায় চাকরিতে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এ ধরণের স্বেচ্ছাসেবীরা "বিনা মূল্যে" কাজ করেন না এবং তাদের নিয়মিত বেতন দেওয়া হয়।

১৯ শতক

এই সময়ে, আমেরিকায় মহা জাগরণ ঘটেছিলো। মানুষ সুবিধাবঞ্চিত হবার বিষয় সচেতন হয়েছিল এবং দাসত্বের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কারণ বুঝতে পেরেছিলো। কম বয়সী জনসাধারণ তাদের সমাজের অভাবী লোকদের সাহায্য করা শুরু করে। ১৮৫১ সালে, প্রথম ওয়াইএমসিএ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয়েছিল, প্রথম ওয়াইডাব্লুসিএ দ্বারা যা  সাত বছর পরে অনুসরণ করা হয়েছিল। আমেরিকা গৃহযুদ্ধের সময়, মহিলারা সৈন্যদের সেলাই সরবরাহ করে স্বেচ্ছাসেবীর কাজ করেছিলেন এবং "যুদ্ধক্ষেত্রের অ্যাঞ্জেল" ক্লারা বার্টন এবং স্বেচ্ছাসেবীদের একটি দল তাদের সাহায্য প্রদান শুরু করেছিলেন। বার্টন ১৮৮১  সালে আমেরিকান রেড ক্রস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং ১৮৮৯  সালে জনস্টাউন বন্যার ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ত্রাণ তৎপরতা-সহ, দুর্যোগে ত্রাণ সরবরাহের জন্য স্বেচ্ছাসেবীদের একত্রিত করতে শুরু করেছিলেন।

২০ এবং ২১ শতক

স্যালভেশন আর্মি  হচ্ছে অন্যতম পুরোনো ও বৃহত্তম সংস্থা যা সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পক্ষে কাজ করছে। যদিও এটি একটি দাতব্য সংস্থা, তবে শুরু থেকেই এটি অনেক সংখক স্বেচ্ছাসেবী কর্মসূচির আয়োজন করেছে।[৫] উনিশ শতকের পূর্বে, লোকদের প্রয়োজনে সহায়তা করার জন্য কিছু আনুষ্ঠানিক দাতব্য সংস্থা ছিল।

২০ শতকের প্রথম কিছু দশকে, অনেকগুলো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা শুরু হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল রোটারি ইন্টারন্যাশনাল, কিয়ানিস ইন্টারন্যাশনাল, এসোসিয়েশন অফ জুনিয়র লিগ্স ইন্টারন্যাশনাল, আর লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল।

দ্য গ্রেট ডিপ্রেশন একটি প্রথম বৃহৎপরিসরে, দেশব্যাপী একটি নির্দিষ্ট প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবী কাজের মধ্যে সমন্বয়ের উদ্যোগ দেখিয়েছিলো।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, সহস্রাধিক স্বেচ্ছাসেবক অফিস স্বেচ্ছাসেবীদের তত্ত্বাবধান করে,যারা সামরিক এবং অসামরিক মানুষদের বিভিন্ন প্রয়োজন পূরণ করেছিল, যার মধ্যে ছিল সরবরাহ সংগ্রহ, ছুটিতে থাকা সৈন্যদের বিনোদন, এবং আহতদের দেখাশোনা করা।[৫]

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে, লোকেরা তাদের পরোপকারী আবেগের কেন্দ্রবিন্দুকে অন্য বিষয় গুলিতে স্থানান্তরিত করে, যার মধ্যে ছিল দরিদ্রদের সহায়তা করা এবং স্বেচ্ছাসেবী কাজের জন্য বিদেশ গমন। ১৯৬০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, পিস কর্পস ছিল একটি বড় অগ্রগতি। ১৯৬৪ সালে যখন রাষ্ট্রপতি লিন্ডন বি জনসন দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন, স্বেচ্ছাসেবার   সুযোগগুলি প্রসারিত হতে শুরু করে এবং পরবর্তী কয়েক দশক ধরে অব্যাহত থাকে। অনেক স্বেচ্ছাসেবা কেন্দ্র গড়ে উঠায়, স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ অনুসন্ধান করা আরও আনুষ্ঠানিক হয়ে ওঠে  এবং কাজ সন্ধান করার নতুন উপায় হয় ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব। [৫]

কর্পোরেশন ফর ন্যাশনাল অ্যান্ড  কমিউনিটি সার্ভিস অনুসারে (২০১২) প্রায় ৬৪.৫ মিলিয়ন আমেরিকান বা ২৬.৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী, ৭.৯  বিলিয়ন ঘন্টা স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ করেছে যার মূল্য ১৭৫ বিলিয়ন ডলার । এটি হিসাব করলে দাঁড়ায় প্রায় ১২৫-১৫০ ঘন্টা প্রতি বছর অথবা প্রতি সপ্তাহে ৩ ঘন্টা যেখানে প্রতি ঘন্টা ২২ডলার হারে মূল্য হবে।  স্বেচ্ছাসেবীর সময় যুক্তরাজ্যে একরকম; অন্যান্য দেশের উপাত্ত পাওয়া যায়নি।

১৯৬০ সালে কিউবার তথাকথিত বিপ্লবী যুদ্ধ শেষ হবার পর, আর্নেস্তো চে গুয়েভারা স্বেচ্ছাসেবীর কাজের ধারণা তৈরি করেছিলেন। এটা তৈরি করা হয়েছিলএই উদ্দেশ্যে যে, দেশজুড়ে কর্মচারীরা  তাদের কাজের ক্ষেত্র গুলিতে কয়েক ঘন্টা স্বইচ্ছায় কাজ করবে।

ধরণ

স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম শিক্ষণীয়-কাজ কর্মসূচিগুলিতে ব্যবহৃত হয়

অনেক স্কুলের সকল শিক্ষার স্তরেই শিক্ষণীয়-কাজ কর্মসূচিগুলির জন্য নিবেদন করা হয়, যেখানে শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছাসেবীর কাজের মাধ্যমে সমাজের সেবা করার সুযোগ দেয়া হয় যা তাদের শিক্ষামূলক কৃতিত্বে যোগ হয়।[৬] জ্যানেট এইলার এবং ডিউইট  ই.গিলেস, জেআর. রচিত Where's the Learning in Service-Learning? (শিক্ষণীয়-কাজের মধ্যে শিক্ষা কোথায় ?) এর ভূমিকাতে আলেক্সান্ডার আস্তিন বলেছেন, "... আমরা শিক্ষণীয়-কাজকে উচ শিক্ষায় আরো বেশি ব্যাপকভাবে গ্রহণ করতে চাই কারণ আমরা দেখতে পাই এটা একটা শক্তিশালী উপায় শিক্ষার্থীদের আরো বেশি যত্নশীল এবং দায়িত্বপূর্ণ অভিভাবক আর নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলার এবং কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ভালোভাবে 'সমাজ-সেবার' প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ করার।" [৭] শিক্ষণীয়-কাজ সম্পর্কে সংজ্ঞায়িত করার সময় হার্ভার্ড-এর  চিকিৎসাশাস্ত্র বলেছে, "শিক্ষণীয়-কাজ পুঁথিগত শিক্ষা এবং স্বেচ্ছাসেবী নাগরিক সেবার মধ্যে পারস্পরিক শক্তিশালী উপায় যোগসূত্র স্থাপন করে।… শিক্ষণীয়-কাজকে একধরণের অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্কের মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত করা যায়: শিক্ষার্থীরা সেবা দানকারী সংস্থা ও গোষ্ঠী থেকে শিক্ষা পায় এবং, বিনিময়ে, মানুষ এবং গোষ্ঠীর প্রয়োজন পূরণে শক্তি, বুদ্ধিমত্তা, প্রতিশ্রুতি, সময় আর দক্ষতা দেয়।"[৬] শিক্ষণীয়-কাজের জন্য স্বেচ্ছাসেবীর কাজ করলে এর ফলশ্রুতিতে দেখা যায় এটি শরীর আর মন দুটোই সংযুক্ত করে, এইভাবে একটি শক্তিশালী শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়; জ্যানেট এইলার এবং ডিউইট  ই. গিলেস, এর মতানুসারে, এর সাফল্য হলো প্রকৃত ঘটনা থেকে "…শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তুলে তাদের উন্নতির জন্য…" [৭]:১–২,৮ যদিও সবার কাছে ন্যায়সঙ্গত পথ হিসেবে বিবেচিত নয়, শিক্ষণীয়-কাজের যৌক্তিকতা নিয়ে গবেষণা অনেক বেড়েছে। জ্যানেট এইলার এবং ডিউইট  ই.গিলেস , শিক্ষণীয়-কাজ কর্মসূচির গুরূত্ব নিরুপন করতে মার্কিন কলেজের শিক্ষার্থীদের  উপর একটি জাতীয় পাঠপরীক্ষা করেছেন, [৭]:xvi এইলার এবং গিলেস এর মতে, এই পাঠপরীক্ষাগুলো করা হয়েছে একটি সেমিস্টার নাগরিক সেবার পূর্বে এবং পরে, শিক্ষার্থীদের উপর শিক্ষণীয়-কাজের প্রভাব পরীক্ষা করতে এটি করা হয়েছে।"[৭]:xvi শিক্ষণীয়-কাজের সাথে জড়িত শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে তারা তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন এভাবে: "শিক্ষার্থীরা শিক্ষণীয়-কাজ পছন্দ করে। যখন আমরা একদল শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষণীয়-কাজ সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা আলোচনা করছিলাম, তাদের উৎসাহ ছিল সুস্পষ্ট।… এটা পরিষ্কার [শিক্ষার্থীরা] বিশ্বাস করে যে, যা তারা শিক্ষণীয়-কাজ থেকে অর্জন করে তা গুণগতভাবে গতানুগতিক শিক্ষা থেকে পৃথক।" [৭]:১–২

দক্ষতা-ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী কাজ

দক্ষতা-ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী কাজ ব্যক্তিবর্গের বিশেষ দক্ষতা আর মেধাকে সহায়ক করে ফলে এটি শক্তিশালী করে অলাভজনক স্থায়ী কাঠামোকে, বিকশিত হতে সাহায্য করে এবং সাফল্যের সাথে তাদের উদ্দেশ পূরণের লক্ষ্যে সামর্থ্য বজায় রাখে। [৮] এটি গতানুগতিক স্বেচ্ছাসেবী কাজের বিপরীত, যেখানে বিশেষ প্রশিক্ষণ জরুরি নয়। স্বাধীন বিভাগের দ্বারা গতানুগতিক স্বেচ্ছাসেবী কাজের গড় ঘন্টার মূল্য ঠিক করা হয় প্রতি ঘন্টায় ২৪.৬৯ ডলার।[৯] সময়ের বাজার মূল্য অনুসারে,দক্ষতা-ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী কাজকে মূল্যায়ন করা হয় প্রতি ঘন্টায় ৪০–৫০০ ডলার। [১০]

উন্নয়নশীল দেশে স্বেচ্ছাসেবী কাজ

স্বেচ্ছাসেবী কাজের একটি জনপ্রিয় প্রকার হলো তরুণদের মধ্যে,মূলত যেসব শিক্ষার্থী আর স্নাতকদের পড়াশোনায় কয়েক বছর বিরতি থাকে, তারা ভ্রমণ করে, উন্নয়নশীল দেশের সম্প্রদায়ের স্থানীয় সংস্থার প্রকল্পে কাজ করে। এই কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে ইংরেজি শিক্ষা, অনাথাশ্রমগুলোতে কাজ করা, সংরক্ষণ, বেসরকারি সংস্থা এবং চিকিৎসাবিদ্যা বিষয়ক কাজে সাহায্য করা। এই দেশগুলোর সম্প্রদায় এবং সংস্থাকে উপকৃত করা ছাড়াও আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী কাজের প্রায়শই মূল লক্ষ থাকে অংশগ্রহণকারীদের মূল্যবান দক্ষতা এবং জ্ঞান প্রদান করা ।[১১]  

ভার্চুয়াল স্বেচ্ছাসেবী কাজ

ই-স্বেচ্ছাসেবী কাজ বা অনলাইন স্বেচ্ছাসেবী কাজ-ও বলা হয়, ভার্চুয়াল স্বেচ্ছাসেবী কাজে একজন সেচ্ছাসেবক কাজ শেষ করে, সম্পূর্ণ অথবা আংশিক, সংস্থার বাইরে থেকে কাজে সহযোগিতা করে। তারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে এবং বাসা, স্কুল, টেলিসেন্টার অথবা কম্পিউটার বা ইন্টারনেটযুক্ত যন্ত্র যেমন পিডিএ অথবা স্মার্টফোন এর মাধ্যমে কাজ করে।ভার্চুয়াল স্বেচ্ছাসেবী কাজ সাইবার সেবা,টেলিমেন্টরিং আর টেলেটউটোরিং ছাড়াও আরো অন্যান্য নামে পরিচিত। ভার্চুয়াল স্বেচ্ছাসেবী কাজ অনেকটা টেলিকমুটিং এর ন্যায়, এছাড়াও পার্থক্য হলো অনলাইন কর্মচারীরা বেতন পায়, এরা অনলাইন সেচ্ছাসেবক যারা বেতন পায় না। [১২][১৩]

মাইক্রো-স্বেচ্ছাসেবী কাজ

মাইক্রো-স্বেচ্ছাসেবী কাজটি করা হয় একটি ইন্টারনেট যুক্ত যন্ত্রের মাধ্যমে। একজন ব্যক্তি একটি বাড়তি সময়ে সাধারণত ক্ষুদ্র পরিসরে, অবৈতনিক ভাবে এই কাজটি  করে। মাইক্রো-স্বেচ্ছাসেবী কাজ ভার্চুয়াল স্বেচ্ছাসেবী কাজ থেকে স্বতন্ত্র এই অর্থে যে সাধারণত একজন স্বেচ্ছাসেবী ব্যক্তির এজন্য আবেদন প্রক্রিয়া, স্ক্রীনিং প্রক্রিয়া, অথবা প্রশিক্ষণ সময়ের প্রয়োজন পরে না। [১৪][১৫]  

পরিবেশগত স্বেচ্ছাসেবী কাজ

পরিবেশগত স্বেচ্ছাসেবী কাজ বলতে সেই স্বেচ্ছাসেবকদের  (https://volunteerencounter.com/) কাজ কে বোঝায় যারা পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা বা সংরক্ষণের কাজে জড়িত।স্বেচ্ছাসেবকরা অনেক ধরণের কাজ করে থাকে যার মধ্যে রয়েছে পরিবেশগত পর্যবেক্ষণ, বাস্তুসংস্থান পুনরূদ্ধার যেমন পুনরায় গাছপালা লাগানো এবং আগাছা অপসারণ, বিপন্ন পশুপাখিকে রক্ষা করা, আর অন্যান্যদের প্রাকৃতিক পরিবেশ সম্পর্কে শিক্ষা দেয়া।[১৬]  

জরুরী পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছাসেবী কাজ

স্বেচ্ছাসেবী কাজ প্রায়শই এই প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোতে যেমন সুনামি, বন্যা, খরা, হারিকেন এবং ভূমিকম্প থেকে পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উদহারণস্বরূপ বলা যায়,১৯৯৫ সালের বৃহৎ হাঁসিন-আওয়াজি ভূমিকম্প জাপানের জন্য ছিল এক চরমমুহূর্ত, যা তখন প্রথম অনেক স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকম্প প্রতিক্রিয়ার জন্য একত্রিত করে। ২০০৪ সালের ইন্ডিয়ান ওশান  ভূমিকম্প এবং সুনামি পৃথিবীর অনেক বিরাট সংখক স্বেচ্ছাসেবকদের আকৃষ্ট করে, যাদেরকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সরকারি সংস্থাসমূহ আর জাতিসংঘ থেকে মোতায়েন করা হয়।[১৭][১৮]

২০১২ সালের হারিকেন স্যান্ডি সংকটের সময়, অকুপাই স্যান্ডি স্বেচ্ছাসেবকরা, একটি প্রয়োজনীয় সাহায্য প্রদানের জন্য দ্রুত-প্রতিক্রিয়া দল গঠন করে যা ঝড়ের পূর্বে আর পরে, খাদ্য, আশ্রয় থেকে শুরু করে পুনর্বাসন হওয়া পর্যন্ত সহযোগিতা করবে। এটি একটি কর্মক্ষেত্রে পারস্পরিকতার উদাহরণ, যেখানে সম্পদসমূহকে একত্রিত করা আর সহযোগিতা করা এবং সামাজিক মাধ্যমে সাহায্য করা।

স্কুলে স্বেচ্ছাসেবী কাজ

বিশ্বজুড়ে দরিদ্র স্কুলগুলির অনুদানের জন্য সরকারী সহায়তা বা স্বেচ্ছাসেবী এবং বেসরকারী তহবিলের উপর নির্ভর করতে হয়, যথাযথ ভাবে কার্যক্রম চালানোর জন্য। কিছু দেশে, যখন আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়, স্বেচ্ছাসেবক এবং অনুদানের প্রয়োজন অনেক বেড়ে যায়।[১৯] স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য স্কুল ব্যবস্থায় অনেক ধরণের সুযোগ আছে। যদিও, স্কুল ব্যবস্থায় স্বেচ্ছাসেবক  হবার জন্য খুব বেশি যোগ্যতার দরকার হয় না। যদি একজন একটি উচ্চ বিদ্যালয় বা টিইএফএল (বিদেশী ভাষা হিসাবে ইংরেজি শেখানো) স্নাতক বা কলেজ ছাত্র হয়, তবে বেশিরভাগ স্কুলেই শুধু স্বেচ্ছাসেবী এবং নিঃস্বার্থ প্রচেষ্টা এই যোগ্যতার দরকার হয় ।[২০]

যে কোনো ধরণের স্বেচ্ছাসেবী কাজের সুবিধাগুলোর মতোই স্বেচ্ছাসেবক, শিক্ষার্থী এবং স্কুলের জন্য রয়েছে বড় পুরস্কার। বস্তুগত কোনো পুরস্কার নয়, স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের জীবন বৃত্তান্ততে প্রাসঙ্গিক অভিজ্ঞতার তথ্য যোগ করতে পারে।স্বেচ্ছাসেবকরা যারা সাহায্যের জন্য ভ্রমণ করে তারা বিদেশী সংস্কৃতি আর ভাষা শিখে।

স্কুলে স্বেচ্ছাসেবী কাজ শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বাড়তি শিক্ষণীয় পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে আর স্থানীয় শিক্ষকদের শিক্ষাদনে যে ঘাটতি থাকে তা দূর করতে সাহায্য করে। শিক্ষাদান এবং অন্যান্য স্কুল কার্যক্রমের সময় সংস্কৃতিক আর ভাষার আদান-প্রদান হচ্ছে শিক্ষার্থী আর স্বেচ্ছাসেবক এই দুজনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা।[২০] 

কর্পোরেট স্বেচ্ছাসেবী কাজ

বেনেফ্যাক্টো, একটি কমিশন, কর্পোরেট স্বেচ্ছাসেবী কাজকে বর্ণনা করেছে এভাবে "কোম্পানিগুলি তাদের কর্মীদের যে ভাতা প্রদান করে বার্ষিক কর্ম বিরতির সময়, সেটা তারা পছন্দ মতো অনুদান হিসেবে ব্যবহার করে স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য।"[২১]

ফরচুন ৫০০ এর অনেক সংখক কোম্পানিই তাদের কর্মীদের স্বেচ্ছাসেবী কাজের জন্য অনুমতি প্রদান করে।এই ধরণের বৈধ করা এমপ্লয়ী ভলান্টিয়ারিং প্রোগ্রামস (এভিপিস), যা এই নামেও পরিচিত এমপ্লয়ার সাপোর্টেড ভলান্টিয়ারিং (এসভি), কে কোম্পানিগুলির স্থায়িত্বের জন্য চেষ্টা আর তাদের সামাজিক দায়িত্বপূর্ণ কাজকর্মের একটি অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয় [২২] ফরচুন ৫০০ এর প্রায় ৪০% কোম্পানি আর্থিক অনুদান প্রদান করে , যা স্বেচ্ছাসেবী কাজের অনুদান হিসেবে ধরা হয়, যা অলাভজনক, এটি সেই কর্মীদের বেছে নেয়ার জন্য একটি উপায় যারা তাদের নির্দিষ্ট পরিমান সময় গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাসেবী কাজের জন্য দেয়।[২৩]

ভলান্টিয়ারর্মাচ এর তথ্য অনুসারে, কর্মী স্বেচ্ছাসেবী কাজের কার্যক্রমের সেবা যে সমাধান সরবরাহ করে, তা হচ্ছে কোম্পানিগুলির মূল চালক যারা উৎপাদন আর পরিচালনা করে ইভিপিগুলি, যেগুলি গড়ে তুলে ব্র্যান্ড সচেতনতা আর আকর্ষণ, ভোক্তাদের মধ্যে আস্থা ও আনুগত্যকে জোরদার করে,কর্পোরেট  ভাবমূর্তি এবং খ্যাতি বাড়ায়, কর্মীদের ধরে রাখে, কর্মীদের উৎপাদনশীলতা আর আনুগত্য বজায় রাখে, এবং কৌশলী লক্ষগুলোতে পৌঁছাতে একটি কার্যকর বাহন হিসেবে কাজ করে।[২৪]

২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে, ডেভিড ক্যামেরন যুক্তরাজ্যের সকল চাকরিজীবী যারা কোম্পানিতে কাজ করছেন তাদের কাছে প্রতিশ্রুতি দেন যে ২৫০ এর-ও বেশি কর্মীকে ৩ দিনের বেতনসহ বাধ্যতামূলক স্বেচ্ছাসেবী কাজের জন্য ছুটি দেয়া হচ্ছে, যা তারা সে অর্থে ব্যবহার করলে এটি এক বছরে ৩৬০ মিলিয়ন ঘন্টা বাড়তি একটি স্বেচ্ছাসেবী কাজ হিসেবে ধরা হবে।[২৫]

গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাসেবী কাজ

গোষ্ঠী স্বেচ্ছাসেবী কাজকে যুক্তরাষ্ট্রে বলা হয়, "নাগরিক সেবা", যা বিশ্বব্যাপী তাদের কাজকে বোঝায় যারা নিজেদের এলাকার গোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য কাজ করে। এই কাজ কেবল হয় সাধারণত লাভজনক সংস্থা, স্থানীয় সরকার আর গির্জা সমূহের মাধ্যমে নয়; বরং আরো হয় বিশেষভাবে বা অনানুষ্ঠানিক দলের মাধ্যমে যেমন বিনোদনমূলক খেলার দল।[২৬] 

গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাসেবী কাজের সুবিধা

গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাসেবার অনেক প্রমাণিত ব্যক্তিগত সুবিধা রয়েছে। একসঙ্গে কাজ করা একদল লোক যাদের রয়েছে আলাদা জাতিসত্তা, জন্মভূমি, এবং দৃষ্টিভঙ্গি প্রচলিত ধারণাগুলি হ্রাস করে দেয়। গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাসেবা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক সাফল্যকেও উন্নত করার প্রমান রেখেছে।

জ্যানেট এইলার এবং ডিউইট ই.গিলেস, এর Where's the Learning in Service-Learning? (শিক্ষণীয়-কাজের মধ্যে শিক্ষা কোথায়?) অনুসারে শিক্ষণীয়-কাজ আর অন্যের সেবা করার মধ্যে মগ্ন থাকার অনেক একাডেমিক আর ব্যক্তিগত ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। নতুন মানুষদের মাঝে থাকা আর একটি দলের সাথে একসঙ্গে কাজ করতে পাড়ার শিক্ষা একজনের দলগতকাজ এবং সম্পর্কের দক্ষতাগুলিকে উন্নত করতে সাহায্য করে, এটি প্রচলিত ধারণাকে হ্রাস করে, অন্যের সংস্কৃতির প্রতি উপলব্ধি বাড়ায়, আর তরুণদের যারা তাদের সাথে সম্পর্কিত এমন অন্যান্যদের খুঁজে বের করতে এটি কাজ করে।

এইলার এবং গিলেস উল্লেখ করেছেন যে একটি কলেজের শুরু আর শেষের সেমিস্টারের এক সপ্তাহে ৩ ঘন্টা, নাগরিক সেবার সাথে যুক্ত থাকার ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক শ্রদ্ধাবোধ দেখা যায়। সেমিস্টারের শেষে যে শিক্ষার্থীরা শিক্ষণীয়-কাজে অংশগ্রহণ করেছিল, তাদের বলতে দেখা গেছে যে, তারা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি শিখেছে তা হলো কারো সম্পর্কে ধারণা করে নেয়া উচিত নয়, এবং সব ধরণের মানুষদেরকেই মূল্যায়ন করা উচিত তার কারণ হলো সব ধরণের মানুষ কিছু একই রকমের গুণাবলী ধারণ করে।

গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাসেবী কাজ শিক্ষার্থীদের একাডেমিক জীবন আর কলেজ অভিজ্ঞতার জন্য একটি শক্তিশালী ভবিষ্যত হিসেবে কাজ করে। গবেষণার মাধ্যমে দেখা গেছে যে, যেসব শিক্ষার্থীরা তাদের কলেজ শিক্ষার একটি পাঠ্য হিসেবে নাগরিক সেবাকে বেঁচে নিয়েছে তাদের শিক্ষার সাথে এর একটি বড় যোগসূত্র রয়েছে। (Astin, 1992;[27] Pascarella and Terenzini, 1991[28]) এছাড়াও, যেসব কলেজ শিক্ষার্থীরা গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাসেবী কাজের প্রকল্পে যুক্ত হয়, তাদের কলেজ অভিজ্ঞতার বিবরণ থেকে দেখা যায় তাদের গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাসেবী কাজের প্রকল্প শেষ হবার পর তাদের একাডেমিক শিক্ষার সাথে এর প্রচুর মিল রয়েছে।[২৯] ইউনিভার্সিটি হেলথ সেবার মতানুসারে, বিবরণ থেকে পাওয়া গিয়েছে যে, স্বেচ্ছাসেবী কাজ সুনিশ্চিতভাবে শিক্ষার্থীদের সামগ্রিকভাবে মানসিক এবং আবেগপ্রবণ শারীরিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে।[৩০]

সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী কাজ  বা কল্যানমুলক স্বেচ্ছাসেবী কাজ

ইউরোপের কিছু দেশের সরকারি আর বেসরকারি সংস্থাগুলো একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত হাসপাতাল, স্কুল, স্মারক বহনকারী এবং কল্যাণ প্রতিষ্ঠানের মতো জায়গায় একটি সহায়ক অবস্থান প্রদান করে। অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী কাজের সাথে এর পার্থক্য হলো, একটি কঠোর আইনী বিধিমালা আছে যে, কোন সংস্থাগুলো স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়োগ করতে পারবে আর কত সময়ের জন্য একজন স্বেচ্ছাসেবক স্বেচ্ছাসেবী কাজে নিয়োজিত থাকতে পারবে। এই ধরণের নিয়মের ফলে, একজন স্বেচ্ছাসেবক একটি নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ সরকার থেকে আয় করতে পারে। ইউরোপের সব থেকে বড় জনশক্তি রয়েছে, জার্মান ফেডারেল ভলান্টিয়ার্স সার্ভিস এর (Bundesfreiwilligendienst), যেটি ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করে, যার ২০১২ সালে ৩৫,০০০ এর বেশি ফেডারেল স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে।[৩১] ভলান্টারী সোশ্যাল ইয়ার (Freiwilliges Soziales Jahr) হচ্ছে অস্ট্রিয়া আর জার্মানি- এর সবচে পুরোনো প্রতিষ্ঠান।[৩২][৩৩]