যোগান ও চাহিদা: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
সম্পাদনা সারাংশ নেই
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
আরাফাত হাসান (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
[[চিত্র:Supply-and-demand.svg|300px|thumbnail|পন্যের দামের নির্ধারন হয় চাহিদা এবং যোগানের ভারসাম্য দ্বারা, যে অবস্থায় একটি নির্দিষ্ট মুল্যে নির্দিষ্ট পরিমান দ্রব্য, বিক্রেতা বিক্রি করতে এবং ক্রেতা ক্রয় করতে প্রস্তুত থাকে। চিত্রটি আরও দেখাচ্ছে কিভাবে চাহিদা রেখার স্থান পরিবর্তন পন্যের দামকে প্রভাবিত করে।]]
[[চিত্র:Supply-and-demand.svg|300px|thumbnail|পণ্যের দামের নির্ধারণ হয় চাহিদা এবং যোগানের ভারসাম্য দ্বারা, যে অবস্থায় একটি নির্দিষ্ট মূল্যে নির্দিষ্ট পরিমান দ্রব্য, বিক্রেতা বিক্রি করতে এবং ক্রেতা ক্রয় করতে প্রস্তুত থাকে। চিত্রটি আরও দেখাচ্ছে কিভাবে চাহিদা রেখার স্থান পরিবর্তন পণ্যের দামকে প্রভাবিত করে।]]


অর্থনীতির ভাষায় '''চাহিদা''' এবং '''যোগান''' বলতে কোন একটি পণ্যের বা সেবার ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে বিদ্যমান বাজার সম্পর্ক বোঝায়। বাজারে কোন পণ্যের দাম এবং সরবরাহ কী-রূপ হবে তা চাহিদা ও যোগানের মধ্যে বিরাজমান সম্পর্ক দ্বারাই নির্ধারিত হয়। ব্যষ্টিক অথনীতির ক্ষেত্রে এটি একটি মৌলিক সম্পর্ক এবং বিভিন্ন অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাখ্যার পাশাপাশি নতুন নতুন তত্ব তৈরির ক্ষেত্রেও এটি প্রায় সর্বদা ব্যবহৃত হয়। আন্টোনিও অগাস্টিন কর্নো এটি সর্বপ্রথম বর্ণনা করেন এবং আলফ্রেড মার্শাল এটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। এই মডেল এর মতে একটি মুক্ত প্রতিযোগিতামুলক বাজারে পণ্যের প্রকৃত বিক্রয় মুল্যই ভোক্তার চাহিদা এবং বিক্রেতার সরবরাহের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করে এবং একটি সাম্যাবস্থা প্রতিষ্ঠা করে।
অর্থনীতির ভাষায় '''চাহিদা''' এবং '''যোগান''' বলতে কোন একটি পণ্যের বা সেবার ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে বিদ্যমান বাজার সম্পর্ক বোঝায়। বাজারে কোন পণ্যের দাম এবং সরবরাহ কী-রূপ হবে তা চাহিদা ও যোগানের মধ্যে বিরাজমান সম্পর্ক দ্বারাই নির্ধারিত হয়। ব্যষ্টিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে এটি একটি মৌলিক সম্পর্ক এবং বিভিন্ন অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাখ্যার পাশাপাশি নতুন নতুন তত্ত্ব তৈরির ক্ষেত্রেও এটি প্রায় সর্বদা ব্যবহৃত হয়। আন্টোনিও অগাস্টিন কর্নো এটি সর্বপ্রথম বর্ণনা করেন এবং আলফ্রেড মার্শাল এটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। এই মডেল এর মতে একটি মুক্ত প্রতিযোগিতামুলক বাজারে পণ্যের প্রকৃত বিক্রয় মূল্যই ভোক্তার চাহিদা এবং বিক্রেতার সরবরাহের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করে এবং একটি সাম্যাবস্থা প্রতিষ্ঠা করে।


== ইতিহাস ==
== ইতিহাস ==
"যোগানচাহিদা" শব্দগুচ্ছ সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন [[জেমস ডানহ্যাম স্টুয়ার্ট]] তার ১৭৬৭ সালে প্রকাশিত "রাজনৈতিক অর্থনীতির কার্যকারণ অনুসন্ধান" বইটিতে। ১৭৭৬ সালে [[অ্যাডাম স্মিথ]] তার "জাতিসমূহের সম্পদ" বইটিতে এবং [[ডেভিড রিকার্ডো]] তাঁর "রাজনৈতিক অর্থনীতির কার্যকারণ ও করারোপ" বইটিতেও এই শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করেন।
“যোগানচাহিদা” শব্দগুচ্ছ সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন [[জেমস ডানহ্যাম স্টুয়ার্ট]] তার ১৭৬৭ সালে প্রকাশিত “রাজনৈতিক অর্থনীতির কার্যকারণ অনুসন্ধান” বইটিতে। ১৭৭৬ সালে [[অ্যাডাম স্মিথ]] তার “জাতিসমূহের সম্পদ” বইটিতে এবং [[ডেভিড রিকার্ডো]] তাঁর “রাজনৈতিক অর্থনীতির কার্যকারণ ও করারোপ” বইটিতেও এই শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করেন।


"জাতিসমুহের সম্পদ" বইটিতে স্মিথ ধরে নিয়েছিলেন যে সরবরাহ মুল্য সর্বদা স্থির থাকবে এবং দাম কমলে বা বাড়লে চাহিদা বাড়বে বা কমবে। রিকার্ডো তার ধারনাগুলো প্রকাশ করার সময় এই অনুমানগুলোর উপর আর অধিক জোর দিয়েছিলেন।১৮৩৮ সালে সম্পদের গাণিতিক বিধিমালা সংক্রান্ত গবেষনা প্রবন্ধে তিনি চাহিদা ও যোগানের মধ্যে একটি গাণিতিক সম্পর্ক দাড় করান।
“জাতিসমূহের সম্পদ” বইটিতে স্মিথ ধরে নিয়েছিলেন যে সরবরাহ মূল্য সর্বদা স্থির থাকবে এবং দাম কমলে বা বাড়লে চাহিদা বাড়বে বা কমবে। রিকার্ডো তার ধারণাগুলো প্রকাশ করার সময় এই অনুমানগুলোর উপর আর অধিক জোর দিয়েছিলেন। ১৮৩৮ সালে সম্পদের গাণিতিক বিধিমালা সংক্রান্ত গবেষণা প্রবন্ধে তিনি চাহিদা ও যোগানের মধ্যে একটি গাণিতিক সম্পর্ক দাঁড় করান।


উনিশ শতকের শেষদিকে প্রান্তিক(marginalist) চিন্তাধারার সুচনা ঘটে। স্ট্যনলি জেভন্স, কার্ল মেঞ্জার ও লিও ওয়াল্রস এই বিষয়টির সুচনা করেন। মুল ধারনাটি ছিলো এই যে, মুল্য নির্ধারিত হয় সর্বাধিক মুল্য দ্বারা,আর এটাই প্রান্তিক মুল্য। অ্যাডাম স্মিথ যে ধারনা করেছিলেন যে মুল্য নির্ধারিত হয় সরবরাহ মুল্য থেকে , তার থেকে এটা ছিল অনেকদুর সরে আসা।
উনিশ শতকের শেষদিকে প্রান্তিক(marginalist) চিন্তাধারার সূচনা ঘটে। স্ট্যনলি জেভন্স, কার্ল মেঞ্জার ও লিও ওয়াল্রস এই বিষয়টির সূচনা করেন। মূল ধারণাটি ছিলো এই যে, মূল্য নির্ধারিত হয় সর্বাধিক মূল্য দ্বারা,আর এটাই প্রান্তিক মূল্য। অ্যাডাম স্মিথ যে ধারণা করেছিলেন যে মূল্য নির্ধারিত হয় সরবরাহ মূল্য থেকে, তার থেকে এটা ছিল অনেকদূর সরে আসা।


১৮৯০ সালে [[আলফ্রেড মার্শাল]] রচিত "অর্থনীতির কার্যকারণ" গ্রন্থটিতে এই ধারণাটি আরো উন্নতি লাভ করে। লিও ওয়াল্রস এর সাথে মার্শালও একটি সাম্যাবস্থার খোঁজ করতে থাকেন যেখানে চাহিদা ও যোগান রেখা দুটি মিলিত হবে। তারা বাজারের ওপর এদের প্রভাবও বোঝার চেষ্টা করলেন। ঊনিশ শতকের শেষ থেকেই চাহিদা ও যোগানের এই সম্পর্কগুলো মোটামুটি অপরিবর্তিত রয়েছে। আর অধিকাংশ গবেষনায় হয়েছে এদের ব্যতিক্রম গুলোকে পর্যালোচনা করা নিয়ে।
১৮৯০ সালে [[আলফ্রেড মার্শাল]] রচিত “অর্থনীতির কার্যকারণ” গ্রন্থটিতে এই ধারণাটি আরো উন্নতি লাভ করে। লিও ওয়াল্রস এর সাথে মার্শালও একটি সাম্যাবস্থার খোঁজ করতে থাকেন যেখানে চাহিদা ও যোগান রেখা দুটি মিলিত হবে। তাঁরা বাজারের ওপর এদের প্রভাবও বোঝার চেষ্টা করলেন। ঊনিশ শতকের শেষ থেকেই চাহিদা ও যোগানের এই সম্পর্কগুলো মোটামুটি অপরিবর্তিত রয়েছে। আর অধিকাংশ গবেষণায় হয়েছে এদের ব্যতিক্রমগুলোকে পর্যালোচনা করা নিয়ে।


{{অর্থনীতি-keyconcepts}}
{{অর্থনীতি-keyconcepts}}

১৫:৫১, ১৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

পণ্যের দামের নির্ধারণ হয় চাহিদা এবং যোগানের ভারসাম্য দ্বারা, যে অবস্থায় একটি নির্দিষ্ট মূল্যে নির্দিষ্ট পরিমান দ্রব্য, বিক্রেতা বিক্রি করতে এবং ক্রেতা ক্রয় করতে প্রস্তুত থাকে। চিত্রটি আরও দেখাচ্ছে কিভাবে চাহিদা রেখার স্থান পরিবর্তন পণ্যের দামকে প্রভাবিত করে।

অর্থনীতির ভাষায় চাহিদা এবং যোগান বলতে কোন একটি পণ্যের বা সেবার ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে বিদ্যমান বাজার সম্পর্ক বোঝায়। বাজারে কোন পণ্যের দাম এবং সরবরাহ কী-রূপ হবে তা চাহিদা ও যোগানের মধ্যে বিরাজমান সম্পর্ক দ্বারাই নির্ধারিত হয়। ব্যষ্টিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে এটি একটি মৌলিক সম্পর্ক এবং বিভিন্ন অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাখ্যার পাশাপাশি নতুন নতুন তত্ত্ব তৈরির ক্ষেত্রেও এটি প্রায় সর্বদা ব্যবহৃত হয়। আন্টোনিও অগাস্টিন কর্নো এটি সর্বপ্রথম বর্ণনা করেন এবং আলফ্রেড মার্শাল এটিকে জনপ্রিয় করে তোলেন। এই মডেল এর মতে একটি মুক্ত প্রতিযোগিতামুলক বাজারে পণ্যের প্রকৃত বিক্রয় মূল্যই ভোক্তার চাহিদা এবং বিক্রেতার সরবরাহের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান করে এবং একটি সাম্যাবস্থা প্রতিষ্ঠা করে।

ইতিহাস

“যোগান ও চাহিদা” শব্দগুচ্ছ সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন জেমস ডানহ্যাম স্টুয়ার্ট তার ১৭৬৭ সালে প্রকাশিত “রাজনৈতিক অর্থনীতির কার্যকারণ অনুসন্ধান” বইটিতে। ১৭৭৬ সালে অ্যাডাম স্মিথ তার “জাতিসমূহের সম্পদ” বইটিতে এবং ডেভিড রিকার্ডো তাঁর “রাজনৈতিক অর্থনীতির কার্যকারণ ও করারোপ” বইটিতেও এই শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করেন।

“জাতিসমূহের সম্পদ” বইটিতে স্মিথ ধরে নিয়েছিলেন যে সরবরাহ মূল্য সর্বদা স্থির থাকবে এবং দাম কমলে বা বাড়লে চাহিদা বাড়বে বা কমবে। রিকার্ডো তার ধারণাগুলো প্রকাশ করার সময় এই অনুমানগুলোর উপর আর অধিক জোর দিয়েছিলেন। ১৮৩৮ সালে সম্পদের গাণিতিক বিধিমালা সংক্রান্ত গবেষণা প্রবন্ধে তিনি চাহিদা ও যোগানের মধ্যে একটি গাণিতিক সম্পর্ক দাঁড় করান।

উনিশ শতকের শেষদিকে প্রান্তিক(marginalist) চিন্তাধারার সূচনা ঘটে। স্ট্যনলি জেভন্স, কার্ল মেঞ্জার ও লিও ওয়াল্রস এই বিষয়টির সূচনা করেন। মূল ধারণাটি ছিলো এই যে, মূল্য নির্ধারিত হয় সর্বাধিক মূল্য দ্বারা,আর এটাই প্রান্তিক মূল্য। অ্যাডাম স্মিথ যে ধারণা করেছিলেন যে মূল্য নির্ধারিত হয় সরবরাহ মূল্য থেকে, তার থেকে এটা ছিল অনেকদূর সরে আসা।

১৮৯০ সালে আলফ্রেড মার্শাল রচিত “অর্থনীতির কার্যকারণ” গ্রন্থটিতে এই ধারণাটি আরো উন্নতি লাভ করে। লিও ওয়াল্রস এর সাথে মার্শালও একটি সাম্যাবস্থার খোঁজ করতে থাকেন যেখানে চাহিদা ও যোগান রেখা দুটি মিলিত হবে। তাঁরা বাজারের ওপর এদের প্রভাবও বোঝার চেষ্টা করলেন। ঊনিশ শতকের শেষ থেকেই চাহিদা ও যোগানের এই সম্পর্কগুলো মোটামুটি অপরিবর্তিত রয়েছে। আর অধিকাংশ গবেষণায় হয়েছে এদের ব্যতিক্রমগুলোকে পর্যালোচনা করা নিয়ে।

মৌলিক অর্থনৈতিক ধারণা - সম্পাদনা

ব্যাষ্টিক অর্থনীতি (Macroeconomics)  • ভোগ ও উপযোগ (Consumption and Utility)  • প্রান্তিক উপযোগ (Marginal Utility)  • উৎপাদন (Production)  • ক্রমহ্রাসমান উৎপাদন বিধি (Law of Diminishing returns)  • পুঁজি (Capital)  • যোগান ও চাহিদা (Supply and Demand)  • ভারসাম্য (Equilibrium)  • ব্রেক ইভন পয়েণ্ট (Break-even point)  • অপটিমাইজেশান (Optimization)  • মুনাফার অতিশায়ন (Profit maximization)  • বাজার (Market)  • প্রতিযোগিতা (Competition)  • একচেটিয়া বাজার (Monopoly)  • সমষ্টিক অর্থশাস্ত্র (Macroeconomics) বন্টনতত্ত্ব (Distribution theory)  • ব্যষ্টিক অর্থশাস্ত্র (Microeconomics)  • লেইসে-ফেয়ার (Laissez-faire)  • শ্রমবিভাজন (Division of Labor)  •