বিষয়বস্তুতে চলুন

পাবনা মানসিক হাসপাতাল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
পাবনা মানসিক হাসপাতাল
পাবনা মানসিক হাসপাতালের প্রধান প্রবেশপথ
মানচিত্র
ভৌগোলিক অবস্থান
অবস্থানহেমায়েতপুর, পাবনা, রাজশাহী, বাংলাদেশ
সংস্থা
তহবিলসরকারি হাসপাতাল
ধরনবিশেষায়িত
পরিষেবা
শয্যা৪০০
ইতিহাস
চালু১৯৫৭

পাবনা মানসিক হাসপাতাল মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী, অসুস্থ অথবা আহতকে ঔষধ ও শল্যচিকিৎসা এবং যথাযথ সেবাশুশ্রূষা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান।[] এটি বাংলাদেশের একমাত্র মানসিক হাসপাতাল। পাবনা মানসিক হাসপাতালে সরকার অনুমোদিত একটি জনকল্যাণ সংস্থা রয়েছে। রোগীরা সুস্থ হওয়ার পর তাদের নিজ বাড়িতে পৌঁছানোর খরচ এই সংস্থা বহন করে। জীবন রক্ষাকারী ঔষধপত্রও এই সংস্থা সরবরাহ করে থাকে। এছাড়াও হাসপাতালে থাকা অবস্থায় সক্ষম রোগীদের চাকুরি বা কাজের ব্যবস্থাও এই সংস্থাটিই করে।

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

পাবনা শহর থেকে তিন কি: মি: দূরে হেমায়েতপুর ইউনিয়নে ১৯৫৭ সালে পাবনা শহরের শীতলাই জমিদার বাড়িতে তৎকালীন পাবনা জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ হোসেন গাংগুলী এই হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠা করেন।[] প্রতিষ্ঠার বছরেই হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম বছর হাসপাতালে মানসিক রোগী ভর্তি হয়েছিল ৮০ জন। পাবনা জেলা শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার হিমাইতপুর ইউনিয়নের হিমাইতপুর গ্রামে হাসপাতালের জন্য ১১১.২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করে হাসপাতাল নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়। নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৫৯ সালে এবং হাসপাতালটি স্থানান্তরিত হয় (তম্মধ্যে ৩০ একর জমি পাবনা মেডিকেল কলেজকে হস্তান্তর করা হয়েছে)। অধিগ্রহণ করা জমির সিংহভাগই ছিল পাবনার আধ্যাত্মিক সাধক ঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের[]

পাবনা মানসিক হাসপাতাল ভবন

অবকাঠামো

[সম্পাদনা]

প্রাথমিক পর্যায়ে শয্যা সংখ্যা ছিল ৬০। পরে ১৯৬৬ সালে প্রথম দফায় শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে ১৫০ ও পরে ২০০টি করা হয়। ১৯৯৬ সালে শেষ দফায় ৫০০ শয্যায় উন্নীত করা হয় এই হাসপাতালটিকে। বর্তমানে হাসপাতালের মোট ১৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫টি নারী রোগীদের জন্য বরাদ্দ। আর বাকি ১৪ টি ওয়ার্ডে পুরুষ রোগী ভর্তি আছে। মোট শয্যার ৩৫০টি নন-পেয়িং (তম্মধ্যে ৭০ টি উন্নয়ন খাত) এবং ১৫০টি পেয়িং (তম্মধ্যে ৩০ টি উন্নয়ন খাত)। হাসপাতালের দ্বিতল ভবন, বহির্বিভাগ, প্রশাসনিক ভবন, ওষুধ সংরক্ষণ ভবন, মালামাল সংরক্ষণ ভবন, রান্নাঘর, ধোপাঘর, বিনোদন বিভাগ, সিনেমা হল, হস্তশিল্প ভবন, তাঁতশিল্প ভবন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবন ও কটেজ মিলিয়ে মোট ৫৩টি ভবন রয়েছে।

সুবিধাদি

[সম্পাদনা]

রোগীদের কক্ষে গান শোনার জন্য প্রতিটি কক্ষে সাউন্ড সিস্টেমের ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে টেলিভিশন দেখার সুবিধা। এ ছাড়া হাসপাতালের চারপাশ নজরদারিতে রাখার জন্য ১০৭টি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। লোডশেডিংয়ের সময় হাসপাতাল যাতে অন্ধকারে না থাকে, সে জন্য ৪৮টি সোলার বাতি স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে দুটি করে সোলার লাইট লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। রোগীদের জন্য একটি লাইব্রেরি তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে। নারী রোগীদের সুন্দর অবকাশ কাটানোর জন্য একটি ছোট্ট পার্ক ও হ্যান্ডবল খেলার জন্য একটি কোর্ট রয়েছে। তা ছাড়া ইনডোর রোগীদের হাতের কাজ শেখানো হয়, নিয়মিত পত্রিকা পড়তে দেয়া হয়।

পরিচালনা

[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ সরকারের সমাজকল্যাণ অধিদপ্তর থেকে এই সংস্থা বাৎসরিক অনুদান পায়। এছাড়া এটি দুগ্ধখামার, কৃষি খামারসহ কয়েকটি প্রকল্পও পরিচালনা করে। এসব কার্যক্রম থেকে অর্জিত অর্থ রোগীদের কল্যাণে ব্যবহূত হয়। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা এবং ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকেও সংস্থাটি অনুদান পায়।[]

আরো দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Pabna District / পাবনা জেলা"পাবনা মানসিক হাসপাতাল। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি ও বেসিস। ১০ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ 
  2. http://mentalhospital.pabna.gov.bd/bn/site/page/YcN0-এক-নজরে
  3. https://www.rtvonline.com/country/110242/পাবনা-মানসিক-হাসপাতালের-যতো-কথা