হ্যালাম ফো (চলচ্চিত্র)
হ্যালাম ফো | |
---|---|
পরিচালক | ডেভিড ম্যাকেন্জি |
প্রযোজক | জিলিয়ান বেরি |
রচয়িতা | উপন্যাস: পিটার জিংকস চিত্রনাট্য: ডেভিড ম্যাকেন্জি |
সুরকার | ম্যাট বিফা |
চিত্রগ্রাহক | জাইল্স নাটজেন্স |
সম্পাদক | কলিন মোনি |
পরিবেশক | দ্য পিল্ম ফ্যাক্টরি |
মুক্তি | ৩১শে আগস্ট, ২০০৭ |
স্থিতিকাল | ৯৫ মিনিট |
দেশ | |
ভাষা | ইংরেজি |
হ্যালাম ফো (ইংরেজি ভাষায়: Hallam Foe) ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি স্কটল্যান্ডীয় চলচ্চিত্র। পিটার জিংকসের একই নামের উপন্যাসের কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রটির পরিচালক হলেন ডেভিড ম্যাকেন্জি। ২০০৭ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারি এই ছবির প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়েছিল বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে। এটি সেবার সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে গোল্ডেন বেয়ার পুরস্কারের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতের জন্য এটি সিলভার বেয়ার লাভ করে। ৩১শে আগস্ট যুক্তরাজ্যে মুক্তি পায় হ্যালাম ফো। সেখানে এর রেটিং ছিল ১৮।
কাহিনীর সারাংশ
[সম্পাদনা]হ্যালাম ফো একটি মিষ্টি চেহারার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত কিশোর। জীবন সম্বন্ধে তার অভিজ্ঞতার দৌড় বাবার এস্টেটের সীমা পর্যন্তই। তার প্রিয় শখ ঈক্ষণকামের (লুকিয়ে অন্যদের বিশেষত তাদের যৌনক্রিয়া দেখা) মাধ্যমেই সে অভিজ্ঞতাগুলো অর্জন করে। দুই বছর আগে তার মা মারা গেছে। সে ধারণা করে তার সৎ মা এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। বাড়ি ছেড়ে এডিনবরা পালাতে হয় তাকে। সেখানে মায়ের মত চেহারার একটি মেয়ের সাথে প্রেম হয়। মায়ের প্রতি ভালবাসার প্রকৃতি, মায়ের মৃত্যুতে তার ক্রোধের কারণ এবং কেইটের প্রতি ভালোবাসার অর্থ; এই টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায় সিনেমার কাহিনী।
কাহিনী
[সম্পাদনা]হ্যালাম ফো একটি মিষ্টি চেহারার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত কিশোর। জীবন সম্বন্ধে তার অভিজ্ঞতার দৌড় বাবার এস্টেটের সীমা পর্যন্তই। তার প্রিয় শখ ঈক্ষণকামের (লুকিয়ে অন্যদের বিশেষত তাদের যৌনক্রিয়া দেখা) মাধ্যমেই সে অভিজ্ঞতাগুলো অর্জন করে। তার বিশ্বাস, দুই বছর আগে পানিতে ডুবে তার মা'র মৃত্যুর জন্য দায়ী তার সৎ মা ভেরাইটি। তার বোন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেয়ার জন্য বাড়ি ত্যাগ করে। তার বাবা ও সৎ মা চায় সেও বাড়ি ছেড়ে যাক। কিন্তু মা'র মৃত্যুর কারণ জানার জন্য সে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। এদিকে ভেরাইটি হ্যালামের ডায়রির মাধ্যমে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে বাড়ি ত্যাগে বাধ্য করে। এই ব্ল্যাকমেইলের একটি অংশ ছিল হ্যালামের সাথে ভেরাইটির সেক্স। যাহোক, বাবা ও সৎ মা'র কাছ থেকে পালিয়ে হ্যালাম এডিনবরা চলে যায়।
এডিনবরায় পৌঁছে সে কেইট-কে দেখে যার চেহারা হুবহু তার মা'র মত। সে কেইটকে একটি চাকরি দিতে রাজি করায়। কেইটের বদৌলতে হ্যালাম শহরের কেন্দ্রভাগের একটি হোটেলে কিচেন পোর্টারের চাকরি পায়। সে হোটেলের ক্লক টাওয়ারে থাকা শুরু করে কারণ সেখান থেকে এডিনবরার প্রাচীন শহরে অবস্থিত কেইটের বাড়ির জানালা দেখা যায়। এখান থেকে সে বাইনোকুলারের মাধ্যমে কেইটকে চোখে চোখে রাখে। মাঝে মাঝে কেইটের বাড়ির ছাদের স্কাইগ্লাস দিয়ে সে গোয়েন্দাগিরি চালিয়ে যায়।
অচিরেই হ্যালাম হোটেলের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আলাসডেয়ারের সাথে কেইটের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক আবিষ্কার করে। আলাসডেয়ার ক্লক টাওয়ার থেকে তার গোয়েন্দাগিরির খবর জেনে যায়। আলাসডেয়ারের স্ত্রীকে তার সম্পর্কের কথা জানিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে সে তাকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করে। কিন্তু আলাসডেয়ার তাকে বরখাস্ত করে। কিন্তু হ্যালাম আলাসডেয়ারের বাসায় গিয়ে বুঝিয়ে দেয় আসলেই বলে দেয়ার ক্ষমতা তার আছে। অগত্যা তাকে আবার কাজে বহাল করা হয়।
কেইটের সহায়তায় হ্যালাম প্রমোশন পেয়ে ফ্রন্ট-অফ-হাউজ পোর্টারের দায়িত্ব পায়। তার ১৮তম জন্মদিনে কেইট তাকে জন্মদিনের কার্ড উপহার দেয়া এবং তাকে ড্রিংকস করতে নিয়ে যায়, তার জীবনের প্রথম আইনসিদ্ধ ড্রিংকস। হোটেল বারে মা'র প্রতি ভালবাসা পুনরায় আবিষ্কার করে হ্যালাম। এই কথা জেনে কেইট তাকে পছন্দ করতে শুরু করে। কারণ কথা শুনলে গা ছমছম করে উঠে এমন ছেলেদের তার পছন্দ। এখান থেকে কেইট ও হ্যালামের জটিল সম্পর্কে গড়ে উঠতে শুরু করে। কেইটের সাথে তার সেক্স হয় এবং তারা ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠে।
এর মধ্যে হ্যালাম পুলিশের কাছে জানায় যে, সৎ মা তার মাকে মেরেছে। এই সূত্রে তার বাবা-মা তার খোঁজ পেয়ে যায় এবং হোটেলে তার সাথে দেখা করতে আসে। তার বাবা'র এখানে আসার কারণ তিনি অনেক ঋণের দায়ে আছেন এবং সে কারণে বাড়ির লখটি বিক্রি করে দেয়া প্রয়োজন। কিন্তু তার মা'র উইল অনুযায়ী ছেলে মেয়ের অনুমতি ছাড়া সেটা করা সম্ভব না। হ্যালাম অনুমতি দিতে অস্বীকার করে, সৎ মা ভেরাইটির প্রতি সন্দেহের বশেই। এই হোটেলে কেইটের সাথে তার বাবা-মা'র দেখা হয়। কেইট তাকে হ্যালামের বন্ধু হিসেবে পরিচয় দেয়। অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় ভেরাইটি কেইটের চেহারা তার মায়ের মত এই বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করে বলে, মায়ের সাথে সেক্স করতে কেমন লাগছে?
ভেরাইটি ও তার বাবা চলে যায়। ভেরাইটির শেষ কথায় নিজেকে আর স্থির রাখতে পারে না হ্যালাম। মনে করে, ভেরাইটিকে মেরে ফেললেই একমাত্র এর সমাধান হতে পারে। তার বাবা'র এস্টেটে ফিরে যায় এবং ভেরাইটিকে লখের পানিতে ডুবিয়ে দেয়। কিন্তু মানবতাবোধ পিরে আসায় সে ভেরাইটিকে তুলে আনে। এই সময়েই কেবল বাবা তার মা'র মৃত্যুর কারণ জানায়। তার মা ঘুমের ওষুধ খেয়ে লখের পানিতে ঝাপ দিয়েছিল। তার বাবা এটা জানা সত্ত্বেও ঠেকায়নি। এটাই তার বাবা'র দোষ, সেটা খুন বা দুর্ঘটনা ছিল না, আত্মহত্যা ছিল।
এটুকু শুনে হ্যালাম বুঝতে পারে তার ক্রোধের মূল কারণ এই যে, তার মা তাকে ত্যাগ করেছে। তারন কথা ভেবেও চলে গেছে তার মা। তাই সব ঝেড়ে ফেলে প্রথম জায়গায় ফিরে আসে সে, এডিনবরায় কেইটের বাড়িতে। কেইট জানায়, এখন সম্পর্ক গড়ার উপযুক্ত সময় না। পাঁচ বছর আবার এক হওয়ার কথা ব্যক্ত করে দুজনেই। আলাদা হয়ে যায় এবারের মত। নতুন জীবনের পথে হাটতে থাকে হ্যালাম।
চরিত্রসমূহ
[সম্পাদনা]- জেমি বেল - হ্যালাম ফো
- সোপিয়া মাইল্স - কেইট ব্রেক
- সিয়ারান হিন্ড্স - জুলিয়াস ফো (হ্যালামের বাবা)
- জেমি সাইভ্স - আলাসডেয়ার
- মরিস রোয়েভ্স - রেইমন্ড (হোটেলে হ্যালামের সহকর্মী)
- ক্লেয়ার ফোরলেনি - ভেরাইটি ফো (হ্যালামের সৎ মা)
- ইউয়েন ব্রেমনার - অ্যান্ডি
- লুসি হোল্ট - লুসি (হ্যালামের বোন)