হোসেইন রাফী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

মোহাম্মদ হোসেইন রাফী ফানুদ (ফার্সি: محمد حسین رفیعی فنود)(জন্মঃ ৯ই এপ্রিল, ১৯৪৫) একজন ইরানি পণ্ডিত, গণতন্ত্রপন্থী কর্মী এবং লেখক। তিনি তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিমার রসায়ন বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, মেলি-মাজহাবী(জাতীয়-ধর্মীয়) জোটের সদস্য এবং ইরানের জাতীয় শান্তি কাউন্সিলের সদস্য।

জীবনী[সম্পাদনা]

তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক বিশ্লেষণের কারণে ২০০০ সালে মেলি-মাজাহাবি জোটের অন্যান্য সদস্যদের সাথে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে, ২০০৩ সালে তাকে চার বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয় এবং কোনো ধরনের "সামাজিক কার্যকলাপ" থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।[১]

২০১৪ সালে ইরানের ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাপারাটাস হোসেইন রাফীর উপর হুমকি এবং চাপ বৃদ্ধি করে, যখন তিনি ইরানের পারমাণবিক পরিস্থিতি নিয়ে ১২০-পৃষ্ঠার একটি ব্যাপক বিশ্লেষণ লেখেন, যার শিরোনাম ছিল "জেনেভা চুক্তি", এটি ইরান এবং পি৫+১ দেশগুলোর মধ্যে "ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে জেনেভার অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তির" সমর্থনে লেখা হয়েছিল।[২]

তিনি প্রেসিডেন্ট রুহানিকে বেশ কয়েকটি চিঠি লিখেছেন এবং জেনেভা পারমাণবিক চুক্তির প্রতি তার জনসমর্থনের কারণে তিনি যে চাপের সম্মুখীন হয়েছেন তা ব্যাখ্যা করেছিলেন। তার একটি চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেনঃ

"... যেহেতু আমার বয়স ৭০ বছর এবং বিশ্বতা, ক্ষমতা এবং পোস্ট খোঁজার সময় শেষ হয়ে গেছে, আমি অভিবাসন বা হাল ছাড়তে চাই না। যারা মনে করে ইরানের সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে; কারাগার, অভিবাসন, মৃত্যু, হুমকি, নিষেধাজ্ঞা, বিচ্ছিন্নতা এবং বুদ্ধিজীবী এবং রাজনৈতিক-সমাজকর্মীদের দমন। তাই, আমি মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত..."[৩]

২০১৫ সালের মে মাসে তাকে ছয় বছরের কারাদণ্ড প্রদান করা হয় এবং রাজনৈতিক ও সাংবাদিকতার উপর দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।[৪] তার শাস্তি তার কার্যকলাপ এবং পারমাণবিক চুক্তির সমর্থনের সাথে যুক্ত।[৫]

২০১৫ সালের ১৬ই জুন তারিখে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী বিচারকের জারি করা আদালতের আদেশ ছাড়াই তাকে রাস্তায় গ্রেফতার করে। তিনি চার দিন ধরে গ্রেফতারের প্রতিবাদে অনশন ধর্মঘট পালন করতে অস্বীকৃতি জানান। তারপর থেকে তাকে এভিন কারাগারের ৮ নং ওয়ার্ডে কঠোর অবস্থায় রাখা হয়। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্য অনুযায়ী হোসেইন রাফীকে "বিবেকের বন্দী" হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

আন্তর্জাতিক সমর্থন[সম্পাদনা]

অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা হোসেইন রাফীর সমর্থনে ইরানি কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে, যেমনঃ স্কলার্স অ্যাট রিস্কস, কমিটি অফ কন্সার্নড সাইন্টিস্টস, আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি এবং ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইরানের প্রেসিডেন্টকে লেখা এক চিঠিতে ৩০০ জনেরও বেশি পণ্ডিত এবং বিজ্ঞানী হোসেইন রাফীর মুক্তির দাবি জানান। এবং আবার ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে উত্তর আমেরিকার প্রায় ৬০ জন অধ্যাপক প্রেসিডেন্ট রুহানিকে চিঠি লেখেন এবং তার মুক্তির দাবি জানান।[৬]

নির্বাচিত বই[সম্পাদনা]

১. রাভান্ড জওয়াদী, ১৯৮০

২. দ্যা টেকনোলোজি অফ পলিমারস, ১৯৯৭

৩. দ্যা ডেভেলপমেন্ট অফ ইরান, ২০০১

৪. দ্যা আদার সাইড অফ গ্লোবালাইজেশন, ২০০২

৫. দ্য ব্ল্যাক উইনটার ফ্রম "বাঘদাদস স্প্রিং", ২০০৯

৬. ফিফটি ইয়ারস অফ পেট্রোকেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি ইন ইরান, ২০১১

৭. দ্যা জেনেভা এগ্রিমেন্ট, ২০১৪

৮. ফ্রম শারিয়াতি টু মেলি-মাজহাবী,

৯. "লিগ্যাল সাবভার্সন"

১০. হোয়্যার আর দে টেকেন "ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরান"?

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Iran: Trial of Political Activists Begins"Human Rights Watch (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০২-০১-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-২৯ 
  2. (পিডিএফ) http://www.mhrafieefanood.com/wp-content/uploads/2015/06/%D8%AA%D9%88%D8%A7%D9%81%D9%82-%DA%98%D9%86%D9%88.pdf  |শিরোনাম= অনুপস্থিত বা খালি (সাহায্য)
  3. "نامه پنجم فروردین1394 به دکتر روحانی - دکتر محمد حسین رفیعی فنود"www.mhrafieefanood.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-২৯ 
  4. Bureau, Anna Maryam Rafiee for Tehran (২০১৫-০৬-২৯)। "President Rouhani must show the same courage he expects in other Iranians"the Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-২৯ 
  5. Catanzaro2015-09-15T00:00:00+01:00, Michele। "Jailing of retired Iranian chemist linked to nuclear deal"Chemistry World (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-২৯ 
  6. Bureau, Tehran (২০১৬-০৪-২৭)। "North American professors' plea to President Rouhani: the full letter"The Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0261-3077। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-২৯