সুয়া সঙ্গীত

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সুয়া সঙ্গীত হল দীপাবলি উৎসবের সময় ছত্তিশগড় রাজ্যের গোন্ড উপজাতির মহিলাদের দ্বারা গাওয়া একটি লোকসঙ্গীত। 'সুয়া' নামটি এসেছে 'তোতা' শব্দ থেকে। তোতা একটি বুদ্ধিমান পাখি যে মানুষের শব্দ শুনে তা হুবুহু নকল করে পুনরাবৃত্তি করতে পারে। লোককাহিনী অনুসারে, মহিলারা তোতাপাখির মাধ্যমে তাদের হৃদয়ের অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য গান গায় এবং বিশ্বাস করে যে তোতা তাদের হৃদয়ের যন্ত্রণা তাদের প্রেমিকের কাছে পৌঁছে দেবে। প্রকৃতি অনুসারে একে কখনো কখনো 'বিয়োগ' বা 'বিচ্ছেদ' -এর গানও বলা হয়। এই লোকগান সাধারণত ধান কাটার সময় গাওয়া হয়। দীপাবলির পরে, গোন্ডি মহিলারা দুই মাসের অবধি পর্যন্ত এই গান গাইতে থাকে।[১]

এই গানের মাধ্যমে ভগবান শিব এবং দেবী পার্বতীর বিবাহ উতসব উদযাপন করা হয়। গানের সাথে তাই ঐতিহ্যগতভাবে নৃত্যও পরিবেশন করা হয়। কোনও কোনও অঞ্চলে মাটির সুয়া (তোতাপাখি) বানিয়েও এই গান গাওয়া হয়। দীপাবলির কয়েকদিন আগে থেকে এই সুয়া সংগীতের উতসব শুরু হয় এবং দীপাবলিতে শিব-পার্বতীর (গৌর-গৌরী) বিবাহের মাধ্যমে এই উতসবের সমাপ্তি হয়। গানের সময়, মহিলারা বাঁশের ঝুড়িতে ভরা ধানের উপরে একটি তোতাপাখির মূর্তি স্থাপন করে এবং তাদের চারপাশে একটি বৃত্তাকার সমুহে নাচ করে। তারা তাদের গানের মধ্য দিয়ে সেই মূর্তিটিকে সম্বোধন করে। সুয়া গান ও নাচ সাধারণত সন্ধ্যায় শুরু হয়। মহিলারা গ্রামের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় জড়ো হন যেখানে ধান ভরা ঝুড়িটি লাল কাপড়ে ঢেকে রেখে দেওয়া হয়। দলের একজন মহিলা সেই ঝুড়ি মাথায় তুলে পায়ে হেঁটে কৃষকদের বাড়ি যান ও উঠানের মাঝখানে ঝুড়িটিকে রেখে দেন। তারপর দলের মহিলারা তাকে ঘিড়ে এক বৃত্তাকার সমূহ রচনা করে। এরপর ঝুড়ি থেকে কাপড় সরিয়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে নাচ ও গান শুরু করা হয়। ছত্তিশগড়ে এই গানের নাচে কোনো বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হয় না।[২] মহিলারা করতালি সহযোগে এই গান গেয়ে থাকেন। কিছু গ্রামে, মহিলারা করতালির আওয়াজকে তীব্র করার জন্য তাদের হাতে একটি কাঠের চারকোনা টুকড়ো রাখে।[৩][৪]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Of Parrots, Women- songs and Harvest: Sua Naach of Chhattisgarh"Sahapedia (ইংরেজি ভাষায়)। 
  2. "सुवागीत/Suva Geet"Sahapedia (ইংরেজি ভাষায়)। 
  3. "सुआ गीत"IGNAC 
  4. "सुआ व राऊत नाचा ने बांधा समा, लोक गीत व गौरा-गौरी के गीतों में झूमे लोग"Dainik Bhaskar