সুংকোটেপসু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সুংকোটেপসু হল এটি একটি যোদ্ধা শাল যেটি নাগাল্যান্ডের, মোককচুংয়ের আও নাগা উপজাতিরা তৈরি করে। ঐতিহ্যগতভাবে, এই শাল শুধুমাত্র সেই যোদ্ধারাই পরিধান করতে পারে যারা সফলভাবে শত্রু যোদ্ধাদের মাথা কেটে নিতে পেরেছিল,[১] যদিও অতি সম্প্রতি, এই শাল পরার অধিকার গয়াল বলিদানের (ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে গয়ালকে সেই সব অলৌকিক দেবতা ও দেবীদের প্রতি উৎসর্গ করা হয়, যাদের মানুষের ত্রাণকর্তা মনে করা হয়) সাথে যুক্ত করা হয়েছে, এই বলিদান সম্পদের প্রকাশ। শালগুলি এখন সারা ভারতে কেনার জন্য উপলব্ধ,[১] এবং এটি আও উপজাতির একটি বিশেষ প্রতীক।[২]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

প্রাক-ঔপনিবেশিক আও সমাজে, শাল সামাজিক মর্যাদার চিহ্ন হিসাবে ব্যবহৃত হত।[৩] সুংকোটেপসু ছিল সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন পুরুষ শাল।

নকশা এবং প্রতীকবাদ[সম্পাদনা]

শালের নকশা কালো এবং লাল ডোরাকাটা হয়, মাঝখানে একটি একক সাদা ডোরা থাকে যার মধ্যে প্রাণী ও অন্যান্য প্রতীকের চিত্র থাকে এবং নীচে একটি উজ্জ্বল লাল অঞ্চল থাকে।[২] সাদা অঞ্চলে সূর্য, চাঁদ এবং তারার প্রতিনিধিত্বকারী প্রতীক রয়েছে, যেগুলি শাল পরিধানকারী যোদ্ধাদের খ্যাতি ও শৌর্য প্রকাশ করে। এছাড়াও ডোরাযুক্ত অংশে বেশ কয়েকটি প্রাণী চিত্রিত রয়েছে,[২] যেগুলি শারীরিক শক্তি এবং যোদ্ধার বীরত্বের প্রতীক: একটি ধনেশ পাখির চিত্র থাকে, এই পাখিটি সাংস্কৃতিকভাবে উল্লেখযোগ্য, এর পালক আনুষ্ঠানিক পোশাকে আলংকারিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়, এছাড়াও থাকে গয়ালের চিত্র, যে যোদ্ধার সম্পদের প্রতিনিধিত্ব করে (যেহেতু উপজাতির মধ্যের শুধুমাত্র ধনী সদস্যরাই গয়ালকে লালন পালন করতে পারে)। প্রাণীদের চিত্রিত বিভাগে একটি বর্শা, দাও এবং মোরগ হল সাধারণ মোটিফ।[২]

সাদা ডোরার মধ্যে সূর্য, চন্দ্র ইত্যাদি প্রতীকের চিত্র কখনও কখনও গয়ালের চিত্রের সাথে প্রতিস্থাপিত হয়, এটিও যোদ্ধার সম্পদ এবং সাফল্যের প্রতিনিধিত্ব করে, এবং যোদ্ধার শক্তির প্রতীক হিসাবে শালের উপর হাতি এবং বাঘের চিত্র থাকতে পারে।[২]

সাংস্কৃতিক প্রভাব[সম্পাদনা]

বিভিন্ন নাগা উপজাতি তাদের শালের জন্য সুপরিচিত, এবং সুংকোটেপসু সবচেয়ে সুপরিচিত উদাহরণগুলির মধ্যে একটি।[৪]

যতবারই তুমি গল্প বল[সম্পাদনা]

২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে, চলচ্চিত্র নির্মাতা রুচিকা নেগি এবং অমিত মহন্তি সুংকোটেপসু সম্পর্কে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন। তার শিরোনাম ছিল এভরি টাইম ইউ টেল এ স্টোরি (যতবারই তুমি গল্প বল), এর লক্ষ্য ছিল এই শালকে ঘিরে থাকা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে নথিভুক্ত করা এবং সংরক্ষণ করা।[১] ছবিটি ২০১৭ সালে মার্চ মাসে ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন ফর দ্য আর্টস দ্বারা প্রদর্শিত হয়েছিল।[৫] তথ্যচিত্রটি দাবি করে যে সেটিতে "ইতিহাসের ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে, এই শাল তৈরির ঐতিহ্যের পরিবর্তনগুলি বোঝার একটি উপায় যা ইতিহাসের সত্যতার মুখোমুখি হওয়ার সময় - উপনিবেশবাদ, নতুন ধর্ম এবং ভারতীয় রাজ্যে আত্তীকরণ"।[৫]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Dundoo, Sangeetha Devi (৯ জানুয়ারি ২০১৫)। "Wrapped in history"Thehindu.com। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৭ – www.thehindu.com-এর মাধ্যমে। 
  2. Richa Prakash; Sharada Devi; D. Anitha (আগস্ট ২০১৩)। "Handcrafted Shawls of Nagaland" (PDF)International Journal of Scientific and Research Publications3আইএসএসএন 2250-3153 
  3. "CRAFTS of North-East - Textiles of Nagaland"Ignca.gov.in। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৭ 
  4. "Tsungkotepsu Shawls, Other Weaves and Textiles from Nagaland, India"Theculturemaze.com। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. "Every Time you Tell a Story - March 26, 2015 - Mumbai - India Foundation for the Arts"Indiaifa.org। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৭