শ্যামসুন্দর চক্রবর্তী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(শ্যাম সুন্দর চক্রবর্তী থেকে পুনর্নির্দেশিত)

শ্যামসুন্দর চক্রবর্তী (১২ জুলাই ১৮৬৯ - ৭ সেপ্টেম্বর ১৯৩২) এক জন বিশিষ্ট সাংবাদিক, দেশপ্রেমিক ও বক্তা।[১]

জন্ম ও সংক্ষিপ্ত জীবনী[সম্পাদনা]

শ্যামসুন্দর চক্রবর্তীর জন্ম ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১২ ই জুলাই বৃটিশ ভারতের অধুনা বাংলাদেশের পাবনা জেলার বারেঙ্গ গ্রামে। পিতার নাম হরসুন্দর চক্রবর্তী। ছাত্রাবস্থাতেই তার বিপ্লবী অনুশীলন সমিতির সাথে যোগাযোগ ছিল। কিন্তু সেসময় তার পিতৃবিয়োগের কারণে স্নাতকস্তর পর্যন্ত পড়াশোনার পরই ১৮৮৯-৯০ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষকতার কাজ নেন। কিছুদিন পর কলকাতায় চলে আসেন। প্রথমে অ্যাংলোভেদিক স্কুলের শিক্ষক নিযুক্ত হন এবং "প্রতিবেশী" নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন এই পত্রিকাটিই পরে 'পিপল অ্যান্ড প্রতিবেশী' নামে দ্বিভাষিক পত্রিকায় রূপান্তরিত হয়।

সাংবাদিকতার সূত্রেই তিনি স্বদেশী আন্দোলনে অংশ নিতে আরম্ভ করেন। ক্রমে স্বদেশী দলের অরবিন্দ ঘোষ, বিপিনচন্দ্র পাল প্রমুখ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় ও তাঁদের সমপর্যায়ের নেতারূপে গণ্য হন। নিজের পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হলে তিনি বিখ্যাত বিপ্লবী পত্রিকা " বন্দে মাতরম" এর সম্পাদনা শুরু করেন।[২] ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে সহকর্মী ও স্বদেশী দলের আটজন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তিনিও মান্দালয়ে নির্বাসিত হন।[৩] ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি লাভের পর সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'বেঙ্গলি' পত্রিকায় সহকারী সম্পাদকের কাজ করতে থাকেন। কিন্তু ১৯১৭-২০ খ্রিস্টাব্দে অন্তরীণ থাকেন। মুক্তি লাভের পর আবার নিজের সম্পাদনায় বিখ্যাত ইংরাজী দৈনিক 'সার্ভেন্ট' প্রকাশ করেন।[৪][৫] বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের সভাপতি হন। মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলে তিনি আন্দোলন সামিল হন এবং ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করেন। "সন্ধ্যা' পত্রিকার সঙ্গেও তার যোগাযোগ ছিল।

রচিত গ্রন্থ[সম্পাদনা]

তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে অন্যতম হল-

  • 'Through Solitude and Sorrow' (একাকিত্ব এবং শোকের মাধ্যমে)
  • 'My mother's face' ( আমার মায়ের মুখ), মিস্ মেয়ো 'মাদার ইন্ডিয়া' গ্রন্থের প্রতিবাদে

জীবনাবসান[সম্পাদনা]

শ্যামসুন্দর চক্রবর্তী জাতিভেদ প্রথার সমর্থক এবং পর্দা আইনের বিরোধী ছিলেন। শেষ জীবনে তিনি ভারতীয় দর্শন ও বৈষ্ণব ও সাহিত্যের চর্চায় মনোযোগী হন। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ৭ ই সেপ্টেম্বর তার জীবনাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬ পৃষ্ঠা ৭২৮, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. "Bande Mataram"sankalpindia (ইংরেজি ভাষায়)। ১৭ জুলাই ২০০৮। ১৬ জুন ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১০ 
  3. Political Agitators in India (ইংরেজি ভাষায়)। পৃষ্ঠা ৮। 
  4. শর্মা, জগদীশ শরণ (১৯৮১)। Encyclopaedia Indica, Volume 2 (ইংরেজি ভাষায়)। এস. চন্দ। পৃষ্ঠা ১১২১। 
  5. গান্ধী, গোপালকৃষ্ণ; অমর্ত্য সেন (২০০৮)। A frank friendship: Gandhi and Bengal : a descriptive chronology (ইংরেজি ভাষায়)। সেগুল বুকস। পৃষ্ঠা ৮২। আইএসবিএন 978-1-905422-63-0