শ্বেতহস্তী
শ্বেতহস্তী এমন সম্পত্তি যা এর মালিক চরম অসুবিধা ছাড়াই নিষ্পত্তি করতে পারে না এবং যার খরচ, বিশেষ করে রক্ষণাবেক্ষণ, এটির উপযোগিতার অনুপাতের বাইরে। আধুনিক ব্যবহারে, এটি রূপক যা বস্তু, নির্মাণ প্রকল্প, পরিকল্পনা, ব্যবসায়িক উদ্যোগ, সুবিধা, ইত্যাদি বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয় যা ব্যয়বহুল বলে বিবেচিত কিন্তু এর অধিগ্রহণ ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচের তুলনায় সমতুল্য উপযোগিতা বা মূল্য ছাড়াই।[১]
ইতিহাস
[সম্পাদনা]

শ্বেতহস্তী শব্দটি মিয়ানমার, থাইল্যান্ড (সিয়াম), লাওস ও কম্বোডিয়ায় দক্ষিণপূর্ব এশীয় রাজাদের সংরক্ষিত পবিত্র সাদা হাতি থেকে উদ্ভূত।[২] থাইল্যান্ড ও বার্মায় সাদা হাতি রাখা হলো রাজার ন্যায়বিচার ও ক্ষমতার প্রতীক। ঐশ্বর্য প্রত্যাশিতরা এই প্রাণীর মালিক হতেন। রাজারা তাদের আনুষ্ঠানিক উপাধিতে সাদা হাতির অধিকারের উদাহরণ দিতেন, যেমন সিনবিউশিন, যার আক্ষরিক অর্থ 'সাদা হাতির প্রভু' এবং কোনবাউং রাজবংশের তৃতীয় সম্রাট।[৩] যেহেতু এই প্রাণীকে পবিত্র হিসাবে বিবেচনা করা হত এবং আইনগতভাবে তাদের শ্রম থেকে রক্ষা হয়েছিল, রাজার কাছ থেকে সাদা হাতির উপহার পাওয়া একই সাথে আশীর্বাদ ও অভিশাপ হিসাবে বিবেচিত হতো। এটি আশীর্বাদ ছিল কারণ প্রাণীটি ছিল পবিত্র এবং রাজার অনুগ্রহের প্রতীক, এবং অভিশাপ কারণ প্রাপকের কাছে এখন প্রাণী ছিল যা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ব্যয়বহুল ছিল, তাকে ছেড়ে দেওয়া যাবে না এবং খুব বেশি ব্যবহারিক কাজে লাগানো যাবে না।
পশ্চিমে শ্বেতহস্তীর" শব্দটি ব্যয়বহুল বোঝা যা প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, এটি প্রথম ১৭ শতকে ব্যবহার করা হয়েছিল এবং ১৯ শতকে এটি ব্যাপক হয়ে ওঠে।[৪] সূত্র অনুসারে এটি জনপ্রিয় হয়েছে পি টি বার্নামের হাতির সাথে অভিজ্ঞতার পর যাকে তিনি "বার্মার পবিত্র শ্বেতহস্তী" বলে বিলি করেছেন। অনেক প্রচেষ্টা এবং প্রচুর ব্যয়ের পরে, বার্নাম অবশেষে সিয়ামের রাজার কাছ থেকে প্রাণীটি অর্জন করেন শুধুমাত্র এটি আবিষ্কার করার জন্য যে তার শ্বেতহস্তীর আসলে কয়েকটি গোলাপী দাগ সহ ধূসর রঙের নোংরা।[৫]
অভিব্যক্তি "শ্বেতহস্তী" ও "শ্বেতহস্তী উপহার" ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে সাধারণ ব্যবহারে আসে।[৬] বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে শব্দটি "শ্বেতহস্তী অদলবদল" ও "শ্বেতহস্তীর বিক্রয়" এর সাথে সংযুক্ত ছিল।[৭] অনেক গির্জার বাজারে "শ্বেতহস্তী বিক্রয়" অনুষ্ঠিত হয় যেখানে দাতারা অবাঞ্ছিত টুকরোটাকরা আনলোড করতে পারে, এই ঘটনা থেকে লাভ তৈরি করে যে "একজনের আবর্জনা অন্য মানুষের ধন" এবং এই প্রসঙ্গে শব্দটি ব্যবহার করা অব্যাহত রয়েছে।[৮]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ "Home : Oxford English Dictionary"। oxforddictionaries.com। ১০ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০১৩।
- ↑ "Royal Elephant Stable" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ মার্চ ২০২১ তারিখে. Thai Elephant Conservation Center.
- ↑ Leider, Jacques P. (ডিসেম্বর ২০১১)। "A Kingship by Merit and Cosmic Investiture"। Journal of Burma Studies। 15 (2)। এসটুসিআইডি 153995925। ডিওআই:10.1353/jbs.2011.0012।
- ↑ Ammer, Christine (২০১৩)। The American Heritage Dictionary of Idioms, Second Edition। Houghton Mifflin Harcourt। আইএসবিএন 978-0547677538।
- ↑ Harding, Les (১৯৯৯)। Elephant Story: Jumbo and P.T. Barnum Under the Big Top। Jefferson, N.C.: McFarland। পৃষ্ঠা 110। আইএসবিএন 0786406321।
- ↑ Brown, Peter Jensen। "Two-and-a-half Idioms – the History and Etymology of 'White Elephants'"।
- ↑ Brown, Peter Jensen। "Two-and-a-Half More Idioms – "White Elephants" and Yankee Swaps"।
- ↑ Roberta Jeeves, White Elephant Rules. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে.
আরও পড়ুন
[সম্পাদনা]- Jeffrey A. McNeely; Paul Spencer Sochaczewski (১৯৯৫)। "Chapter 9: Ganesh the Potbellied Elephant God"। Soul of the Tiger: Searching for Nature's Answers in Southeast Asia (Reprint সংস্করণ)। Honolulu: University of Hawaii Press। পৃষ্ঠা 91–112। আইএসবিএন 9780824816698। ওসিএলসি 299810414। Contains a chapter on the white elephant in Southeast Asia.
- Paul Spencer Sochaczewski (২০০৮)। The Sultan and the Mermaid Queen: Surprising Asian People, Places, and Things That Go Bump in the Night। Singapore: Editions Didier Millet। পৃষ্ঠা 69–164। আইএসবিএন 9789814217743। ওসিএলসি 259252939। Contains a long chapter on how Burmese generals tried to use the white elephant to consolidate power, also looks at the cosmological origins of the animal.
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]
উইকিমিডিয়া কমন্সে শ্বেতহস্তী সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।