শান্তি টিগগা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
শান্তি টিগগা
জন্মপশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলা
মৃত্যু১৩ই মে ২০১৩
পদমর্যাদাজওয়ান
পুরস্কারনিয়োগ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে সেরা প্রশিক্ষণার্থী
সন্তানদুটি সন্তান

শান্তি টিগগা ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রথম মহিলা জওয়ান ছিলেন।[১][২] তার ফিটনেস ও দক্ষতা তার পুরুষ সহকর্মীদের ফিটনেস ও দক্ষতা অতিক্রম করে গিয়েছিল। তিনি নিয়োগ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে 'সেরা প্রশিক্ষণার্থী' নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৩ সালে মে মাসের ১৩ তারিখে তাকে রহস্যজনকভাবে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।[৩]

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

শান্তি টিগগা এসেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলা থেকে। তিনি এসেছিলেন তফসিলি সম্প্রদায় থেকে। তার পরিবার ও সমাজের বহু মানুষ প্রতিরক্ষা বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। বিষয়টি তাকে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল।[৪] তিনি বাল্যবিবাহের শিকার ছিলেন। তিনি জীবনের অধিকাংশ সময়েই গৃহিণী ও মায়ের ভূমিকা পালন করেছেন। তার দুইটি সন্তান ছিল।[১][৪]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

শান্তি টিগগার স্বামী মারা যাবার পর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ শান্তি টিগগার অবস্থা বিবেচনা করে রেলওয়ে বিভাগে চাকরি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০০৫ সালে রেলওয়ে বিভাগে যোগদান করেন শান্তি টিগগা। তিনি জলপাইগুড়ি জেলার চালশা স্টেশনে পাঁচ বছর ধরে কর্মরত ছিলেন। ২০১১ সালে তিনি ৯৬৯ রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ার ডিপার্টমেন্ট অব টেরিটোরিয়াল আর্মিতে যোগদান করেন।[৫] এর পূর্বে বহু মহিলা সেনাবাহিনীর নন কমব্যাট পদে কর্মরত থাকলেও তিনিই প্রথম মহিলা যিনি তের লাখ সদস্য বিশিষ্ট শক্তিশালী ভারতীয় সেনাবাহিনীর কমব্যাট পদে যোগ দিয়েছিলেন।[৬]

নিয়োগ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে তার কর্মক্ষমতা তাক লাগিয়ে দেয় সবাইকে। দেড় কিলোমিটার দৌড়ে তিনি প্রথম হন। নিকটতম পুরুষ প্রতিযোগী থেকে পাঁচ সেকেন্ড কমে দৌড় শেষ করেন তিনি। মাত্র ১২ সেকেন্ডে ৫০ মিটার দৌড় সম্পন্ন করেন তিনি। তিনি লক্ষ্যভেদী প্রতিযোগিতায় অসাধারণ নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। তাকে প্রশিক্ষণ শেষে 'সেরা প্রশিক্ষণার্থী'র মর্যাদা দেওয়া হয়।[১]

অপহরণ ও মৃত্যু[সম্পাদনা]

২০১৩ সালের মে মাসের ৯ তারিখে একদল অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারী শান্তি টিগগাকে অপহরণ করে। এরপর তাকে রেলওয়ে ট্র‍্যাকে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়। আহত শান্তি টিগগাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে তার জন্য নিরপত্তা প্রদান করা হয়। ঘটনাটি তদন্ত করা শুরু করে পুলিশ।

২০১৩ সালের মে মাসের ১৩ তারিখে তার কেবিনের স্নানঘর থেকে তার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।[৭] ঐ কেবিনে থাকা তার পুত্র তার মায়ের স্নানঘর থেকে দীর্ঘক্ষণ বের না হবার বিষয়টা প্রথম খেয়াল করে। অতঃপর স্নানঘরের দরজা ভেঙে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে অভিহিত করে পুলিশ কর্তৃপক্ষ।[৩]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "10 Things You Must Know about Shanti Tigga – the First Woman Jawan of the Indian Army"। thebetterindia.com portal। 
  2. "Shanti Tigga becomes first woman jawan"। thehindu.com portal। 
  3. "Indian Army's first woman jawan found dead in railway hospital"Firstpost। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-০৮ 
  4. Writer, Guest (২০১৯-০৩-০৪)। "Shanti Tigga: India's First Female Jawaan | #IndianWomenInHistory"Feminism In India (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-০৮ 
  5. November 30, Nishtha Gautam; June 3, 1999 ISSUE DATE:; June 1, 2013UPDATED:; Ist, 2013 17:16। "Shanti Tigga's tragic death should not bar the entry of women in combat roles"India Today (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-০৮ 
  6. "Shanti Tigga becomes first woman jawan"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১১-১০-০৩। আইএসএসএন 0971-751X। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-০৮ 
  7. Pillai, Shruti (২০১৬-০১-১৪)। "The Life & Death Of Indian Army's 1st Female Jawan Is One Of India's Most Tragic Mysteries"ScoopWhoop (English ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-০৮