লেবাননে ধর্মহীনতা

ইসলাম এবং খ্রিস্টধর্ম প্রধান ধর্মবিশ্বাস হওয়ায় লেবাননে ধর্মহীনতা খুবই বিরল একটি বিষয়। লেবাননে নাস্তিক বা অজ্ঞেয়বাদীদের সংখ্যা নির্ধারণ করা কঠিন কারণ তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের জনশুমারিতে গণনা করা হয় না। লেবাননের সংবিধান ব্যক্তির ধর্মীয় বিশ্বাসের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দিলেও সামাজিকভাবে নাস্তিক হওয়ার সাথে একপ্রকার বিড়ম্বনা বা আঁড়চোখে দেখার বিষয়টি যুক্ত রয়েছে, যেকারণে অনেক লেবানিজ নাস্তিক ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ করে। এখানে জন্মসূত্রে পাওয়া পারিবারিক ধর্মবিশ্বাস অস্বীকার করা বেশ কঠিন, যদিও একটি শিশু ২০১৪ সালে তা বাস্তবায়ন করার ইতিহাস তৈরি করেছিল।

বৃহত্তর লেবাননের ফরাসি ম্যান্ডেটের সময়ে করা লেবাননের সর্বশেষ সরকারী জনসংখ্যা শুমারি- ১৯৩২ এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে লেবাননের জনসংখ্যার ০% নাস্তিক। ফলশ্রুতিতে, সরকারের সংসদীয় আসনের কোনটিই ভোটারদের এই অংশের জন্য সংরক্ষিত নয়।

বেশিরভাগ আধুনিক অনুমানে এখনও লেবাননের কোন নাস্তিক সম্প্রদায় বা জেলা অন্তর্ভুক্ত নেই।

লেবাননের ধর্মবিশ্বাসের বিস্তৃত মানচিত্র

লেবাননে নাস্তিকদের জন্য বিয়ে করার ক্ষেত্রেও সমস্যা হতে পারে, কারণ নিয়মমাফিক বিয়ে অবশ্যই গির্জা বা মসজিদে করতে হয়। লেবাননের দণ্ডবিধির ৪৭৩ অনুচ্ছেদ অনুসারে প্রকাশ্যে ঈশ্বরকে নিন্দা করা সর্বনিম্ন ১ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত কারাদন্ডযোগ্য। এই ধারার সঠিক শব্দগুলি হল "প্রকাশ্যে ঈশ্বরকে নিন্দা করা" অবৈধ। এছাড়া, দণ্ডবিধির ৪৭৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী খ্রিষ্টধর্ম বা ইসলামকে অসম্মান করার জন্য সর্বনিম্ন ৩ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৬ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

লেবাননিজদের জীবনযাপন মূলত সাম্প্রদায়িক ধারা বরাবর বিভক্ত। স্কুল, আবাসন এবং রাজনৈতিক দলগুলো সাধারণত ধর্মীয় বিশ্বাস বরাবর পৃথক করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, পূর্ব বৈরুত এবং পশ্চিম বৈরুত যথাক্রমে প্রায় একচেটিয়াভাবে খ্রিস্টান এবং মুসলিমগরিষ্ঠ। মুসলিম এবং খ্রিষ্টানদের বিভিন্ন দেওয়ানি কোড রয়েছে, যার অর্থ হল অপরাধ এবং অন্যান্য দেওয়ানি পদ্ধতির (যেমন বিবাহবিচ্ছেদ) শাস্তি একজন মুসলমানের চেয়ে একজন খ্রিস্টানের জন্য আলাদা হতে পারে।