বিষয়বস্তুতে চলুন

যুদ্ধশিশু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

যুদ্ধশিশু সেইসব শিশুদের বলা হয় যারা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ও তাদের এদেশীয় সহযোগীদের দ্বারা নির্যাতিত বীরাঙ্গনাদের সন্তান। যুদ্ধশিশুর সংখ্যা কত তা নিশ্চিত করে হিসাব করা সম্ভব হয়নি। ইতালীয় চিকিৎসক দলের এক সমীক্ষায় যুদ্ধশিশু জন্মদানকারী নারীর সংখ্যা ৪০ হাজার বলা হয়েছে। লন্ডনভিত্তিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যান্ড প্যারেন্টহুড ফেডারেশনের (আইপিপিএফ) হিসাব অনুযায়ী, এই সংখ্যা দুই লাখ। একটি সরকারি হিসাবে এ সংখ্যা তিন লাখ বলে উল্লেখ করা হয়। তবে এ সংখ্যা নির্ধারণে অনুসৃত পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্য বলা যায় না। ফলে যুদ্ধশিশুর প্রকৃত সংখ্যা কত, তা এখনও হিসাবের বাইরে। একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে একটি অন্ধকার অধ্যায়ের সাক্ষী এই যুদ্ধশিশুরা। পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের যৌন নির্যাতনে তাঁদের জন্ম। নির্যাতন ও তৎকালীন সমাজের বিরূপ দৃষ্টির সামনে ধর্ষণের শিকার সেসব নারী ছিলেন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। ফলে সন্তান লালন-পালনের মতো অবস্থায় ছিলেন না তাঁরা। প্রতিবেশী ও লোকচক্ষুর আড়াল করতে অনেক নারীই সে সময় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। যদিও এর কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নথিপত্রে নেই। আবার অনেকে স্বেচ্ছায় জন্মদানের পর সন্তানকে শিশু ভবনে রেখে যান। স্বাধীন হওয়ার পর সেসব শিশুকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আবার অনেকে জন্ম-পরিচয় গোপন রেখেই বাংলাদেশের মাটিতে বেড়ে উঠেছেন।[১]

২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর অনুষ্ঠিত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৮২তম বৈঠকে যুদ্ধশিশুদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এটি বাস্তবায়িত হলে পিতার নাম উল্লেখ ছাড়াই যুদ্ধশিশুরা রাষ্ট্রের সকল সুবিধা বা অধিকার ভোগ করার সুযোগ পাবেন।[২][৩]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "স্বীকৃতি পাচ্ছেন 'যুদ্ধশিশুরা'" 
  2. "যুদ্ধশিশু"বাংলাপিডিয়া। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০২২ 
  3. "অবশেষে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন 'যুদ্ধশিশুরা'"প্রথম আলো। ২৫ অক্টোবর ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ২৬ অক্টোবর ২০২২