মুহম্মদ খসরু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(মুহাম্মদ খসরু থেকে পুনর্নির্দেশিত)
মুহম্মদ খসরু
জন্ম১৯৪৬
মৃত্যুফেব্রুয়ারি ২০১৯ (বয়স ৭২–৭৩)
পেশালেখক, সংগঠক

মুহম্মদ খসরু (১৯৪৬ - ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯) ছিলেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ।[১][২]

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

মুহম্মদ খসরু ১৯৪৬ সালে ভারতের হুগলি জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।[৩][৪] তার পৈতৃক বাড়ি কেরানীগঞ্জ উপজেলার রুহিতপুর ইউনিয়নের মোহনপুর গ্রামে।[১] তার পিতা হুগলি জুট মিলে কর্মরত ছিলেন। তবে ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হওয়ার পর ১৯৫০-এর দশকে তার পরিবার ঢাকা চলে আসে।[১]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

খসরু বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থার (বিসিক) নকশা কেন্দ্রে আলোকচিত্রী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন।[১] ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘পাকিস্তান চলচ্চিত্র সংসদ’-এর প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে খসরু অন্যতম।[১] পরবর্তীতে ১৯৬৮ সাল থেকে চলচ্চিত্র বিষয়ক পত্রিকা ‘ধ্রুপদি’ সম্পাদনা করা শুরু করেন যার সর্বশেষ সংকলন প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালে। এছাড়ও তিনি চলচ্চিত্র বিষয়ক আরও একটি পত্রিকা ‘চলচ্চিত্র’ সম্পাদনা করেছেন।[৫] খসরু বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ ও জাতীয় ফিল্ম আর্কাইভ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইন্সটিটিউটের প্রশিক্ষক হিসাবেও কাজ করেন। ১৯৭৫ সালে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ প্রযোজনার পালঙ্ক ছবিটিতে খসরু ভারতীয় চলচ্চিত্রকার শ্রী রাজেন তরফদারের সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন।[১]

বাংলাদেশে সর্বপ্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি নির্মাণ শুরু করার পেছেনেও তার অবদান রয়েছে।[৬] এছাড়া তিনি ১৯৭০-এর দশকে বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের একটি সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে তার ‘ধ্রুপদি’ পত্রিকাতে প্রকাশ করেন যা সে সময় বেশ সাড়া ফেলেছিল যা পরে উপমহাদেশের বিভিন্ন পত্রিকায় পুনর্মুদ্রণ হয়েছিল।[৫]

প্রকাশিত গ্রন্থ[সম্পাদনা]

  • বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলন।[১]
  • বাংলাদেশে চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের ভূমিকা
  • সাক্ষাৎকার চতুষ্টয়

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

  • বাংলাদেশে চলচ্চিত্র সংস্কৃতির বিকাশে দীর্ঘ ৫০ বছর নিরবচ্ছিন্ন অবদানের জন্য হীরালাল সেন আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হন।[৭]
  • বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সুবর্ণ জয়ন্তী পদক[৮]
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ আজীবন সম্মাননা ২০১৭।

মৃত্যু[সম্পাদনা]

খসরু দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিক, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট ও হৃদ্‌রোগে ভুগছিলেন।[১] ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে হাসপাতালে ভর্তি হলে তার নিউমোনিয়া ধরা পরে।[৯] ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বারডেম হাসপাতালে দুপুর ১২টায় মৃত্যুবরণ করেন।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "চলে গেলেন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব মুহম্মদ খসরু"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  2. "আর নেই চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব মুহম্মদ খসরু"। একুশে টেলিভিশন। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  3. "Film activist Muhammad Khasru dies at 73"Dhaka Tribune। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯। 
  4. প্রতিবেদক, গ্লিটজ। "চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলনের পুরোধা মুহম্মদ খসরুর প্রস্থান"bangla.bdnews24.com। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  5. "সুস্থ চলচ্চিত্র আন্দোলনের পথিকৃৎ মুহম্মদ খসরু নেই"। চ্যানেল আই। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  6. "চলচ্চিত্র আন্দোলনের অন্যতম মুহম্মদ খসরু আর নেই"। বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  7. "News Details" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-২১ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  8. "সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবে পদক এবং স্মারক সম্মাননা প্রদান | Kaler Kantho"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০১-২১ 
  9. "চলে গেলেন চলচ্চিত্র আন্দোলনের পুরোধা মুহম্মদ খসরু"। ইত্তেফাক। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯