মার্জ সানুর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মার্জ সানুর, ২০১৩

মার্জ সানুর (আরবি: مرج صانور, অনুবাদ: "সানুর উপত্যকা"; যাকে মারজ আল-ঘুরুকও বলা হয়, অনুবাদ: "ডুবতে থাকা উপত্যকা")[১] হল ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের উত্তর পর্বতমালার মধ্যে অবস্থিত একটি বন্ধ অববাহিকা। এটি সম্পূর্ণভাবে দক্ষিণ জেরিন গভর্নরেটের জেরিন (উত্তরে) এবং নাবলুস (দক্ষিণে) শহরের মধ্যে অবস্থিত। এর মোট আয়তন প্রায় ২০ বর্গ কিলোমিটার, আর এর পানিনির্গমন অববাহিকার আয়তন প্রায় ৫৫ বর্গ কিলোমিটার, যার বেশিরভাগই জেরিন গভর্নরেটে অবস্থিত, এছাড়া দুই বর্গ কিলোমিটার তুবাস গভর্নরেট পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। মার্জ সানুর উত্তরে কাবাতিয়া পর্বতমালা, পশ্চিমে জাওয়াইয়া পাহাড় এবং দক্ষিণে মুশেরিফ উচ্চভূমি রয়েছে।[২] এছাড়া আরও উত্তর-পশ্চিমে সাহল আররাবা উপত্যকা এবং আরও পূর্বে আক্কাবা ও তুবাস শহর ও পরে জর্ডান উপত্যকা রয়েছে।

মার্জ সানুরের সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য ৭.৫ কিলোমিটার এবং সর্বোচ্চ প্রস্থ ৩.৫ কিলোমিটার। উপত্যকার গড় উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৫০ ও ৩৬০ মিটারের মধ্যে, সর্বোচ্চ উচ্চতা ৩৭০ মিটার এবং সর্বনিম্ন উচ্চতা ৩৪৮ মিটার। উপত্যকার চারপাশে পাহাড় এবং পর্বতমালা রয়েছে যেগুলির উচ্চতার পরিসীমা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪৫০ ও ৭৬৪ মিটারের মধ্যে। হুরেইশ পর্বত যার উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭৬৪ মিটারের উপরে। মার্জ সানুরে একটি মৌসুমী হ্রদ রয়েছে,[৩] যাতে সাধারণত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পানি থাকে, এই অববাহিকায় কোনও পানিনির্গমন কেন্দ্র নেই।[২] বৃষ্টিপাত প্রতি বছর ৬০০ মিলিমিটারের বেশি হলে এটি সাধারণত প্লাবিত হয়।[৩] মার্জ সানুরে যাওয়ার পাঁচটি প্রবেশপথ রয়েছে।[২]

জেনিন গভর্নরেটের জলসম্পদ হল ভূগর্ভস্থ জল, ভূপৃষ্ঠের জল এবং কুয়া। বর্তমানে প্রধানত ইজরায়েলি নিষেধাজ্ঞার কারণে এই সম্পদ জেনিন গভর্নরেট বা ফিলিস্তিনের অন্যান্য অংশে ব্যবহার করা হয় না।[৪] যার ফলে এটি অনেক সময় বন্যার কারণ হয়ে দাড়ায়।[৫]

সানুর পাহাড়ের চূড়ায় একটি মহিমান্বিত দুর্গ রয়েছে যার কিছু বৈশিষ্ট্য এবং দেয়াল আজও দৃশ্যমান। আরবিতে, মার্জ অর্থ "উর্বর উপত্যকা" বা "তৃণভূমি"। মার্জ সানর, ফিলিস্তিনের তৃতীয় বৃহত্তম তৃণভূমি। এটি একটি অত্যন্ত উর্বর ভূমি। উপত্যকার নামকরণ করা হয়েছে সানুর গ্রামের নাম থেকে, যেটি উপত্যকার সীমান্তবর্তী সাতটি ফিলিস্তিনি গ্রামের একটি। অন্য ছয়টি গ্রাম হল মেইথালুন, সিরিস, আল-জুদেইদা, সির, মিসিলিয়া এবং জাওয়াইয়া। মেইথালুন হল উপত্যকার আশেপাশের গ্রামগুলোর মধ্যে আয়তনে সবচেয়ে বড় এবং এটিতে মারজ সানুরের জমির বৃহত্তম অংশ রয়েছে।[৬] কাবাতিয়া এবং জেনিনের মত বড় শহরগুলি মারজ সানুরের আরও উত্তরে অবস্থিত।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. রবিনসন, এডওয়ার্ড; স্মিথ, এলি (১৮৪১)। Biblical researches in Palestine, Mount Sinai and Arabia Petraea : a journal of travels in the year 1838। রোবার্টস - টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়। বস্টন : ক্রকার। পৃষ্ঠা ১৫৩। 
  2. জারতাল, অ্যাডম (২০০৪-০১-০১)। The Manasseh Hill Country Survey: The Shechem Syncline (ইংরেজি ভাষায়)। BRILL। পৃষ্ঠা ৩৬। আইএসবিএন 978-90-04-13756-1 
  3. Water in the Middle East and in North Africa: Resources, Protection and Management (ইংরেজি ভাষায়)। স্প্রিংগার সায়েন্স অ্যান্ড বিজনেস মিডিয়া। ২০০৪-০২-০৯। পৃষ্ঠা ৭২। আইএসবিএন 978-3-540-20771-9 
  4. জুব, ঘাসন আবু; শেটেলিগ, কার্ট (২০০৪)। জেরিনি, ফাথি; জায়েশকে, ভোলফগাং, সম্পাদকগণ। Surface Water in Jenin Governorate-Palestine (ইংরেজি ভাষায়)। বার্লিন, হাইডেলবার্গ: স্প্রিংগার। পৃষ্ঠা ৬৩–৭৩। আইএসবিএন 978-3-662-10866-6ডিওআই:10.1007/978-3-662-10866-6_7 
  5. জিএইচ. আবু জু'উব, কে. শেটেলিগ (২০২০)। Management of aquifer recharge for sustainability। পি. জে. ডিলন। বোকা রাটন, এফএল। আইএসবিএন 978-1-003-07883-8ওসিএলসি 1190776899 
  6. মের্কেল, ব্রোডার (২০০২)। Selected Contributions to Applied Geology in the Jordan Rift Valley (ইংরেজি ভাষায়)। বার্গকাডেমি কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ১৫০। আইএসবিএন 978-3-86012-162-7