মারাবা কফি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

মারাবা কফি দক্ষিণ রোয়ান্ডার মারাবা এলাকায় উৎপাদন করা হয়।

মারাবার কফি উদ্ভিদ হচ্ছে বোরবন শ্রেণীর কফি আরাবিকা প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত এবং এগুলো জন্মানো হয় উচ্চ-উচ্চতার পাহাড়ের উর্বর আগ্নেয় মাটিতে। ফলগুলো হাতে তোলা হয়, অধিকাংশ ক্ষেত্রে মার্চ ও মে মাসে বর্ষাকালের সময় এবং এরপর এগুলোকে আনা হয় মারাবা এলাকার ধৌত কারখানায়, যেখানে কফি দানাগুলো নিষ্কাশিত করা হয় এবং শুকানো হয়। বিভিন্ন পর্যায়ে দানাগুলো তাদের গুণমান অনুসারে ভাগ করা হয়। কৃষকেরা তাদের সরবরাহকৃত কফি বীজের পরিমান এবং গুণমানের উপর ভিত্তি করে ন্যায্য পাওনা পায়।

বীজগুলো বিভিন্ন শুকানোর কারখানায় বিক্রয় করা হয়, যেখানে সবচেয়ে ভালো মানের বীজগুলো চলে যায় যুক্তরাজ্যের ইউনিয়ন কফি রোস্টারের কাছে, যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ন্যায্য বাণিজ্য-প্রত্যয়িত পণ্য এবং সম্প্রদায় কফি প্রস্তুত করে। রোয়ান্ডা বিশিষ্ট কফি রোস্টার মারাবা হতে ক্রয় করে এবং স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে। মারাবা কফি হতে বিয়ারও চোলাই করা হয়।

আবাহুযামুগাম্বি সমবায় এর বিপরীতে প্রায় ২,০০০ ক্ষুদ্রজোতদার কৃষক কফি উদ্ভিত চাষ করে, যেটি সংস্থাপিত হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। ২০০০ হাল হতে, এই সমবায় রোয়ান্ডা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং পার্ল কর্তৃক সমর্থন পেয়ে আসছে। এই সমবায় কফির গুনমান বৃদ্ধি করেছে এবং বাজারে বিশিষ্টতা প্রবেশ করিয়েছে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

মারাবা কফি[সম্পাদনা]

মারাবা বীজ পৃথকীকরণ

ঔপনিবেশিক সময় হতে রোয়ান্ডারা কফি উৎপাদন করে আসছে, কিন্তু ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত এই পণ্য সি গ্রেডের নিচে পর্যায়ভুক্ত করা হয়েছিল, যাহা এটিকে বৈশ্বিক বাজারে অবিক্রিত করে রেখেছিল। কৃষকের কফি চেরীগুলো যথাযথ উপায়ে এবং যথাযথ সময়ে ধৌত করার এবং প্রস্তুত করার কোন মাধ্যম ছিল না। ক্রেতারা প্রতি কেজির জন্যে ০.৩৩ ইউএসডি প্রদান করত, যা কৃষকদের গরীব করে রেখেছিল।

এই সমস্যাকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে ১৯৯৯ সালে, ২২০ কফি উৎপাদনকারী মারাবা বিভাগে ( প্রাক্তন বুতারে প্রদেশের একটি অংশ) একটি সংঘ প্রতিষ্ঠা করে। কৃষকদের মধ্যে অনেকেই ১৯৯৪ সালের গনহত্যায় তাদের পরিবারের সদস্যদের হায়িয়েছিলেন, যখন অন্যদের স্বামী্রা জেলে ছিলেন, গণহত্যায় অংশগ্রহণের দায়ে এবং তাদের গতানুগতিক গাচাচা আদালতে বিচারের সম্মুখীন হয়ে হয়েছিল। তারা সংঘটির না দিল আবাহুযামুগাম্বি, একটি কিনইয়াওইয়ান্ডা শব্দ, যার অর্থ মানুষ যারা একসঙ্গে কাজ করেএকটি লক্ষ্য অর্জনে। কৃষকেরা এই আশায় সংঘটি প্রতিষ্ঠা করেছিল, যাতে তারা তাদের আয় বাড়াতে পারে সরাসরি কিগালির রপ্তানিকারকদের কাছে বিক্রি করে, মধ্যস্থতাকারী পরিবহন কোম্পানির পরিবর্তে। তারা তাদের লভ্যাংশ ভাগ করে নিয়েছিল এবং শস্য বাড়ানোর লক্ষ্যে সেগুলো ব্যবহার করেছিল যন্ত্রপাতি, সার এবং বীজ ক্রয় করতে।

২০০০ সালে, মারাবার নগরপিতা রোয়ান্ডা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (যেটি বুতারের কাছাকাছি অবস্থিত) হতে উন্নয়ন সাহায্যের অনুরোধ করেছিলেন; পরের বছর ইউএনার সাহায্য করেছিল কৃষি বর্ধিতকরণের লক্ষ্যে রোয়ান্ডার মধ্যে (পার্ল)। অনেক সংস্থাঃ জাতীয় কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট( আইএসএআর) এবং কিগালি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনা ইন্সটিটিউট পার্ল প্রজেক্টকে সমর্থন করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কফি বাজারের বিশেষ চাহিদা অনুযায়ী কফির মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে পার্ল ফেব্রুয়ারি ২০০১ সালে আবাহুযামুগাম্বির সাথে কাজ করা শুরু করে।

মারাবার কৃষকদের প্রথম চাহিদা ছিল কফি বিচির আবরণ,ত্বকের নিচ হতে চিনির অপসারণের লক্ষ্যে একটি ধৌত কারখানা। সংগ্রহ করার ১২ ঘণ্টার মধ্যে এই চিনির স্তর অপসারণ করা না বলে কফির স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। তারা প্রথম কারখানা তৈরি করে সাইরুম্বো সেক্টরে,প্রধান সড়কের পাশে জুলাই ২০০১ সালে, ইউএনআর এবং Institut des Sciences Agronomiques du Rwanda (ISAR) এর সহায়তার। শস্য সংগ্রহ করার ঋতু দেরী হয়ে গিয়েছিল, তাই মাত্র ২০০ কেজি (৪৪১এলবি) শস্য ঐ বছর ধৌত করার উপযুক্ত ছিল। তথাপি, ফলাফল যুক্তিসঙ্গতভাবে ভাল ছিল এবং আরো বেশি কফি প্রক্রিয়াজাত করার লক্ষ্যে ২০০২ সালে কারখানাটির উন্নতি সাধন করা হয়েছিল। মাউন্ট হিউ থেকে বিশুদ্ধ পানি উন্নত কারখানায় আনায়নের লক্ষ্যে ACDI/VOCA পাইপলাইন বসাতে সহায়তা করে, যেটি চালু হয়েছিল মার্চ ২০০২ সালে।

কারখানায় আনিত ২০০২ সালে উৎপাদিত শস্যের গুণমান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি নতুন প্রশংসাপত্র পদ্ধতি পরিচয় করানো হয়েছিল । প্রায় অর্ধেক আবাহুযামুগাম্বি সদস্য এই প্রশংসাপত্র লাভ করে, যেটি সমবায়কে ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার বিশিষ্ট বাজার খুঁজতে আন্তরিক করে তোলে।

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি[সম্পাদনা]

ইয়ারুম্বা ধৌতকরণ কেন্দ্র

পার্ল রোয়ান্ডায় বিশিষ্ট কফি বিশেষজ্ঞ আনে, যে তাদের লুইজিয়ানা ভিত্তিক সম্প্রদায়ের একজন বিক্রেতার সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে, যেটি তাদের বাজার গড়ে তুলতে সহায়তা করেছিল। তারা লুইজিয়ানা তে নমুনা পাঠিয়াছিল এবং জুন ২০০২ সালে সম্প্রদায় হতে একজন প্রতিনিধি মারাবা পরিদর্শন করেন। রোয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট সেখানে উপস্থিত ছিলেন, যেহেতু সরকার ঐ প্রকল্পটিতে গুরুত্ব প্রদান করেছিল। সমবায় ১৮,০০০ কেজি(৪০,০০০এলবি)'র মারাবা বিচির একটি কন্টেইনার ক্রয় করে গড়ে প্রায় ইউএসডি ৩ প্রতি কেজির বিপরীতে। বিচিগুলো রোয়ান্ডায় স্থানান্তর করা হয়েছিল, যেখানে সেগুলো শুকানো এবং মিশ্রিত করা হয়েছিল কোম্পানির অন্যতম গুরমেট কফিতে।এটি ছিল আমেরিকান রোস্টার এবং আফ্রিকান কফি সমবায় এর মধ্যকার প্রথম সরাসরি চুক্তি।