ভাগ্যবান বাঁশ

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ভাগ্যবান বাঁশ
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস সম্পাদনা করুন
জগৎ/রাজ্য: উদ্ভিদ (প্লান্টি)
গোষ্ঠী: সংবাহী উদ্ভিদ ট্র্যাকিওফাইট
ক্লেড: সপুষ্পক উদ্ভিদ (অ্যাঞ্জিওস্পার্মস)
গোষ্ঠী: মনোকট্‌স (Monocots)
বর্গ: Asparagales
পরিবার: Asparagaceae
উপপরিবার: Nolinoideae
গণ: Dracaena
Mast.[১]
প্রজাতি: D. sanderiana
দ্বিপদী নাম
Dracaena sanderiana
Mast.[১]
প্রতিশব্দ[১]

ভাগ্যবান বাঁশ বা 'লাকি ব্যাম্বু' (ইংরেজি: Lucky Bamboo), (যার বৈজ্ঞানিক নাম :Dracaena sanderiana -'ড্রাকেনা স্যান্ডেরিয়ানা') হল Asparagaceae পরিবারের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদের প্রজাতি।[২] হেনরি ফ্রেডরিক কনরাড স্যান্ডার (১৮৪৭-১৯২০) নামের এক জার্মান-ইংরেজ মালির নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় 'ড্রাকেনা স্যান্ডেরিয়ানা'। উদ্ভিদটির আদি নিবাস 'মধ্য আফ্রিকা' মনে করা হয়। চীনা ঐতিহ্য অনুসারে উদ্ভিদটি সৌভাগ্যের প্রতীক এবং মানুষের জীবনে সমৃদ্ধি আনে, তাই একে "ভাগ্যবান বাঁশ" হিসাবে ভারত, চীন এবং তাইওয়ানের মতো বিশ্বের বিভিন্ন অংশে 'অন্দরমহলের গাছপালা' হিসাবে ব্যবহৃত হয়। [৩] উদ্ভিদটিকে বাঁশ গাছ বলা হলেও,এই গাছ আদৌ বাঁশ প্রজাতির নয়, এটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলের লিলি প্রজাতির গাছ। [৪]

নামকরণ[সম্পাদনা]

স্যান্ডারের ড্রাকেনা উদ্ভিদটি সাধারণভাবে 'ফিতা ড্রাকেনা' , 'ভাগ্যবান বাঁশ', 'ফ্রেন্ডশিপ বাঁশ', 'কোঁকড়া বাঁশ' , 'চাইনিজ বাঁশ', 'চাইনিজ ওয়াটার বাম্বু', 'দেবীর দয়ার গাছ', 'বেলজিয়ান এভারগ্রীন'সহ অন্যান্য বিভিন্ন নামেও পরিচিত।[৫] চীন দেশে 'লাকি বাম্বু' উদ্ভিদটি ফু গোয়ে ঝু নামে পরিচিত। চীনা ভাষায় 'ফু' এর অর্থ সৌভাগ্য, 'গোয়ে' এর অর্থ 'শক্তি ও সম্মান' এবং 'ঝু' হল বাঁশ।[৪] ব্রাউন জোহানেস এম. নামের  জার্মানির এক মালি তথা সংগ্রাহকের নামানুসারে আর একটি প্রজাতির সপুষ্পক উদ্ভিদ ড্রাকেনা ব্রাউন - (Dracaena braunii) এর সঙ্গে ড্রাকেনা স্যান্ডেরিয়ানার - (Dracaena sanderiana) ভ্রম হয়। তবে ড্রাকেনা ব্রাউনের ফুল ড্রাকেনা স্যান্ডেরিয়ানার ফুলের চেয়ে পাঁচ গুণ ছোট হয়। [২]

বিবরণ[সম্পাদনা]

বহুবর্ষজীবী এই ভেষজ উদ্ভিদটি ১০০ সেমি (৩৯ ইঞ্চি) উচ্চতার হয়ে থাকে। গাছটিতে ২৩ সেন্টিমিটার (৯ ইঞ্চি) দৈর্ঘ্যের ধূসর-সবুজ রঙের সামান্য বাঁকানো পাতা থাকে এবং কাণ্ডটি মাংসল হয়। প্রাথমিক ভাবে উদ্ভিদটির কাণ্ড, পাতা দেখে বাঁশ গাছ মনে হলেও আদতে এটি বাঁশ গাছ নয়। গৃহস্থালী তথা অন্দরমহলের জনপ্রিয় উদ্ভিদ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।লাকি বাম্বুর জন্য অল্প থেকে মাঝারি আলোর প্রয়োজন হয়। পরোক্ষ সূর্যের আলোতে এর বৃদ্ধি স্বাভাবিক।

চাষ[সম্পাদনা]

ড্রাকেনা স্যান্ডেরিয়ানা এবং এই প্রজাতির উদ্ভিদ চীনা তথা এশিয়ান সংস্কৃতির ফেং শ্যুই মতে সৌভাগ্য এবং সমৃদ্ধি লাভের জন্য বাড়ির অন্দরমহলে আধা-ছায়াযুক্ত সীমিত স্থানে রাখা হয়। সরাসরি সূর্যালোকে গাছের পাতা হলুদ হয়ে যায়। গাছটির জন্য উপযুক্ত এবং আদর্শ তাপমাত্রা হল ১৫ থেকে ২২ ° সেন্টিগ্রেড (বা ৫৯ থেকে ৭২ ° ফারেনহাইট) পর্যন্ত। সাধারণত নুড়ি-পাথর এবং জল ভরা কাঁচের ফুলদানিতে রেখে কম রক্ষণাবেক্ষণে পরিচর্যা চলে। তবে জলের দিকে একটু খেয়াল রাখতে হয়। জলে বা নুড়িতে যেন শৈবাল না জন্মায়। প্রয়োজনে দুসপ্তাহে একবার করে জল পরিবর্তন করতে হয়। [৬] আলোর অবস্থা এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও ভালভাবে বেড়ে উঠতে পারে গাাছটি। মাটিতে রোপণ করা হলে এটি তার বাঁশের মতো চেহারা হারিয়ে ফেলে এবং এটি অন্যান্য ড্রাসিনা গাছের পাতার মতো আকৃতি নেয়। উদ্ভিদটির কাণ্ডের স্তরের ঠিক উপরের অংশ কেটে নূতন গাছ পাওয়া যায়। নতুন গাছ পেতে এই কাটিং পদ্ধতি সারা বছরই অনুসরণ করা যায়।

গ্যালারি[সম্পাদনা]

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; WCSP_304813 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  2. Damen, T.H.J. (২০১৮)। "Taxonomic novelties in African Dracaena (Dracaenaceae)"Blumea Journal of Plant Taxonomy and Plant Geography63: 31–53। 
  3. "Interesting Facts about Lucky Bamboo Plant"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-০৯ 
  4. "কেন ঘরে রাখবেন 'লাকি ব্যাম্বু'? জেনে নিন অজানা কথা"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-০৯ 
  5. Hugh T. W. Tan and Xingli Giam (২০০৮)। Plant Magic: Auspicious and Inauspicious Plants from Around the World। Marshall Cavendish Editions। পৃষ্ঠা 62। আইএসবিএন 9789812614278 
  6. "লাকি ব্যাম্বুর যত্ন"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৬-১০