ভবাই নৃত্য

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

ভবাই নৃত্য বা ভাওয়াই নৃত্য হল উত্তর ভারতের রাজস্থান রাজ্যের একটি জনপ্রিয় লোকনৃত্যের একটি ধারা। এই নৃত্যশৈলী অত্যন্ত কঠিন ও এর পরিবেশন পদ্ধতি অত্যন্ত রোমহর্ষক। এই নৃত্য পরিবেশনার সময় সময় পুরুষ বা মহিলা নৃত্যশিল্পীরা অনেকগুলি মাটির পাত্র বা পিতল/ধাতুর কলসের তাদের মাথায় রেখে একপায়ে বা এক পায়ের আঙ্গুলে ভর দিয়া ঘুরপাক খেয়ে নেচে তাদের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে এবং তারপর তলোয়ারের ধারালো ফলায়, পিতল/ধাতুর থালি (প্লেট) এর ধারালো কোনায় এবং ভাঙা কাঁচের উপর পা রেখে নৃত্য পরিবেশনা করে।

ভারতের প্রথম ভবাই নৃত্যশিল্পী ছিলেন শ্রীমতি কৃষ্ণা ব্যাস ছাঙ্গানি, যিনি রাজস্থানের যোধপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

নৃত্য পরিবেশনার সময় ঘোমটা পরিহিত মহিলা নৃত্যশিল্পীরা তাদের মাথায় প্রায় ২২ টি কলস পরপর সাজিয়ে রাখে। এই ২২ টির মধ্যে ৯ টি কলসে আগুন জ্বালানো হয়। সেই জ্বলন্ত কলস ও বাকি সকল কলস মাথায় নিয়ে নৃত্যশিল্পী বাজনার তালে তালে কোনও ধারালো বস্তু যেমন তলোয়ারের ধারালো ফলা, পিতল বা যেকোনো ধাতুর থালার ধারালো কোনা অথবা ভাঙা কাঁচের উপর নৃত্য পরিবেশনা করে। নৃত্যকালে মস্তকে স্থাপিত কলসগুলি যাতে পড়ে না যায় তার জন্য তাদের মধ্যে ভারসাম্যও বজায় রাখতে হয়।[১] এই বিপজ্জনক ও ক্ঠিন নাচের শৈলী দর্শকদের মনে তুমুল উত্তেজনা সৃষ্ট করে তার মনোরঞ্জন করে। [২]

মহিলা নৃত্যশিল্পীদের নাচের সময় পুরুষ শিল্পীরা সুরেলা গান গেয়ে এবং পাখোয়াজ, ঢোলক, ঝাঁঝর, সারেঙ্গী ও হারমোনিয়াম ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে নাচে সংগত করে।

ইতিহাস[সম্পাদনা]

ঐতিহ্যগতভাবে, রাজস্থানের জাট, ভীল, রায়গড়, মীনা, কুমহার এবং কালবেলিয়া সম্প্রদায়ের মহিলা শিল্পীরা নৃত্যের এই বিশেষ ধারার উদ্ভাবক।[৩] এই সম্প্রদায়ের মহিলারা মাথায় একের পর এক ঘড়া সাজিয়ে মরু অঞ্চলের দূরদূরান্ত থেকে জল নিয়ে আসত। মনে করা হয় তাদের এই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়েই তারা এই নৃত্যশৈলীর উদ্ভাবন করেছে।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Sharma, K. C. (2015). Dance Drama and Music: A Trinity of Indian Culture and Literature. International Journal of Literary Studies, 5(3), 127.
  2. Mehta, D. Cultural Consciousness: Elements of Gujarati Folk Forms in Dance Movement Psychotherapy.
  3. Arora, Sakshi (২০১৯-০৯-২৫)। "Bhavai Dance - History, Costume, Performance , Facts & Trivia"Gujarat Travel Blog (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৪