ব্যবহারকারী:Talha Ibn Aziz/আদিপুস্তক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আদি পুস্তক (ল্যাটিন ভাষায়ঃ Vulgate,অনুকরণ বা লিপান্তরিত করা হয়েছে গ্রিক শব্দঃ γένεσις হতে,অর্থঃ "আদি"; হিব্রু ভাষায়ঃ בְּרֵאשִׁית‬, Bərēšīṯ, "সূচনায়") হিব্রু বাইবেল ও খ্রীষ্টীয় পুরাতন নিয়ম (ওল্ড টেস্টামেন্ট) এর প্রথম পুস্তক। এটি দুইটি অংশে ভাগ করা যায়,আদি ইতিহাস(অধ্যায় ১-১১) ও বংশানুক্রমিক ইতিহাস(অধ্যায় ১২-৫০)।আদি ইতিহাসে স্রষ্টার সাথে দেবতা এবং মানব্জাতির সম্পর্কের প্রকৃতি সম্বন্ধে লেখক(দের) ধারণা সজ্জিত হয়েছেঃ প্রভু জগত সৃষ্টি করেছেন যা মানবজাতির জন্য অনুকূল ও মানানসই,কিন্তু যখন মানুষ পাপের দ্বারা একে দূষিত করে ফেলে ,তখন প্রভু তার সৃষ্টিকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেন, কেবলমাত্র সত্যপন্থী নূহকে রক্ষা করেন, যাতে করে প্রভূ ও মানুষের মধ্যকার সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করা যায়।বংশানুক্রমিক ইতিহাসে (অধ্যায় ১২-৫০) প্রাগৈতিহাসিক ইসরাঈল ও প্রভূর বাছাইকৃত লোকদের কথা বলা হয়েছে।প্রভূর নির্দেশে নূহের বংশধর ইব্রাহীম নিজ আবাস থেকে কেনানে যাত্রা করেন।এটি প্রভূর পক্ষ থেকে তাকে দেওয়া হয়,যেখানে তিনি একজন বিদেশী হিসেবে বসবাস শুরু করেন,তদ্রুপ তার সন্তান ইসহাক ও পৌত্র ইয়াকুব ও। ইয়াকুবের নাম পরিবর্তিত হয়ে ইসরাঈল হয় এবং তার পুত্র ইউসুফের মাধ্যমে ইসরাঈলের পুত্রগণ মিশরে প্রবেশ করেন ,যারা স্বপরিবারে মোট সত্তর জন ছিলেন । প্রভূ তাদেরকে মহান এক ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি দেন।ইসরাঈল মিশরে পৌঁছার মাধ্যমে আদি পুস্তকের পরিসমাপ্তি ঘটে এবং মূসার আগমন ও যাত্রাপুস্তকের প্রস্তুতি শুরু হয়।এই আখ্যানে প্রভূর সাথে কতগুলো অঙ্গীকার পরম্পরার উপর জোর দেওয়া হয়েছে,যা ক্রমান্বয়ে সমগ্র মানবজাতি(নূহের সাথে কৃত অঙ্গীকারনামা) থেকে সংকুচিত হয়ে একটিমাত্র সম্প্রদায়ের(ইব্রাহীম এবং ইসহাক,ইয়াকুবের মাধ্যমে তাঁর বংশধরদের) সাথে বিশেষ সম্পর্কে পরিণত হয়।

ইহুদি ধর্মে,আদিপুস্তকের আধ্যাত্মিক গুরুত্ব অঙ্গীকারনামাগুলোকে কেন্দ্র করে, যা প্রভূকে তাঁর বাছাইকৃত এবং প্রতিশ্রুত ভূমির লোকদের সাথে সম্পর্কযুক্ত করে। খ্রিষ্ট ধর্ম আদিপুস্তককে ব্যাখ্যা করেছে তাদের একান্ত খ্রীষ্টীয় মৌলিক বিশ্বাসগুলোর পূর্বভিত্তি হিসেবে,যেগুলোর মধ্যে প্রাথমিকভাবে রয়েছে পরিত্রাণের(সকল খ্রিস্টানের আশা ও প্রতিশ্রুতি) প্রয়োজনীয়তা এবং ক্রুশের উপর খ্রিস্ট কর্তৃক সংঘটিত পুনরুদ্ধার কর্ম,যাতে করে ঈশ্বরের পুত্র হিসেবে অঙ্গীকারনামার প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়।

ঐতিহ্যগতভাবে বিশ্বাস করা হয়, মূসা আদি পুস্তকের পাশাপাশি যাত্রা পুস্তক,লেবীয় পুস্তক,গণনা পুস্তক এবং দ্বিতীয় বিবরণের অধিকাংশ অংশের লেখক। তবে,আধুনিক পণ্ডিতগণ দিন দিন এগুলোকে খ্রীষ্টপূর্ব ৬ষ্ঠ ও ৫ম শতকের কাজ হিসেবে দেখছেন।