ব্যবহারকারী:Rahat Jaman Aovi/সুসং দুর্গাপুর

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সুসং দুর্গাপুর বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার একটি উপজেলা। এটি সহস্র বছরের পুরানো এক জনপদ এবং সুসং পরগনার রাজধানী। ইতিহাস, ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, এবুং প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ এই জনপদ

কি কি দেখার আছে[সম্পাদনা]

বিজয়পুর চীনামাটির খনি,গুচ্ছ গ্রাম,হাজং মাতা রাশিমনি সৃতিসৌধ, টঙ্ক সৃতিসৌধ, সুসং মহারাজাদের রাজবাড়ি, রানীখং গীর্জা, কালচারাল একাডেমি, কমলা রাণী দিঘী, সোমেশ্বরী নদী ও কুল্লাগড়া মন্দির,আত্রাখালি নদী, মনপুরা দ্বীপ, দিগন্ত বিস্তৃত বালুচর,আর মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার গারো পাহাড়

বিজয়পুর[সম্পাদনা]

সুসং দুর্গাপুরের অন্যতম আকর্ষণ বিজয়পুর চীনামাটির খনি। ছোট বড় টিলা-পাহাড় ও সমতল ভূমি জুড়ে প্রায় ১৫ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৬০০ মিটার প্রস্থ এই খনিজ অঞ্চল। খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী ১৯৫৭ সালে এই অঞ্চলে সাদামাটির পরিমাণ ধরা হয় ২৪ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন, যা বাংলাদেশের ৩শ’ বৎসরের চাহিদা পুরণ করতে পারে।[১] চীনামাটির পাহাড় গুলো সাদা রং এর। কিছু কিছু জায়গায় মেরুন বা হালকা লাল রঙ বিদ্যমান। পাহাড় থেকে মাটি তোলায় সেখানে হ্রদের সৃষ্টি হয়েছে। বেশির ভাগ হ্রদ্রের পানির রঙ নীল। কিছু কিছু জায়গায় সবুজাভ নীল। কিছু জায়গায় সাদা, কিছু জায়গায় লাল। তবে হ্রদ থেকে পানি তুলে খনন করার জন্য লাল পানি এখন আর নেই। হ্রদের উপড় পাহাড় চূড়ায় কিছুক্ষণ জিড়িয়ে নিতে দারুন লাগবে। বিজয়পুর এর ট্যুরিষ্ট সিজন শীতকাল। তখন পানী গাঢ নীল থাকে।

রানীখং গীর্জা[সম্পাদনা]

দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদ থেকে ৬ কিলোমিটার উত্তরে সীমান্তে সোমেশ্বরী নদীর কোল ঘেঁষেই রানীখং মিশনটি একটি উচু পাহাড়ে অবস্থিত। ১৯১০ সালে এ রাণীখং মিশনটি স্থাপিত হয়। যেখান থেকে প্রকৃতিকে আরও নিবিড়ভাবে উপভোগ করা যায়।

কালচারাল একাডেমি[সম্পাদনা]

উপজাতীয় কালচারাল একাডেমিতে উপজাতীয় সংস্কৃতি চর্চা করা হয়। এখানে প্রতি বছর উপজাতীয়দের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। প্রতিটি অনুষ্ঠানে বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর জনসমাগম হয়।

কমলা রাণী দিঘী[সম্পাদনা]

দুর্গাপুরের পার্শ্ববর্তী বিরিশিরি ইউনিয়ন পরিষদের পাশেই কমলা রাণীর দিঘী। এই কমলা রাণীর দিঘী সাগর দিঘী নামেও পরিচিত। দিঘীটি পুরোপুরি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেলেও এর দক্ষিণ পশ্চিম পাড় এখনও কালের স্বাক্ষী হয়ে আছে।

সোমেশ্বরী নদী[সম্পাদনা]

বলা যায় এই নদীটি একাধারে কয়লা, পাথর ও সিলিকা বালুর খনি। সারা দিন স্থানীয় দিন-মজুররা এই নদীতে কয়লা, পাথর ও বালু তোলে। দিন শেষে স্থানীয় ব্যাবসায়িদের কাছে বিক্রি করে। তাদের মাধ্যমে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। মেঘালয়ের গারো পাহাড় থেকে নেমে এসেছে এই সোমেশ্বরী নদী যার আদি নাম ছিলো ‘সমসাঙ্গ’। বিজয়পুর, রানী খং এসব জায়গায় যেতে হলে এই নদী নৌকায় পাড় হতে হয়।

কুল্লাগড়া মন্দির[সম্পাদনা]

বিজয়পুর যাওয়ার সময় পথেই পড়বে কুল্লাগড়া লোকনাথ মন্দির

সুসং দুর্গাপুর কিভাবে যাবেন[সম্পাদনা]

ঢাকার মহাখালী বাস স্টেশন থেকে সরাসরি দুর্গাপুর যাওয়ার বাস ছাড়ে। এ পথে চলাচলকারী দু'একটি বাস সার্ভিস হলো BRTC, সরকার, জিনাত ইত্যাদি। ভাড়া ২৫০-২৮০ টাকা। BRTC ৩০০ টাকা। প্রতিদিন বিকাল ৩.২০এ কমলাপুর বিআরটিসি বাস ডিপো হতে BRTC ছাড়ে। এই রুট এ সবচেয়ে ভাল বাস এটি। এ ছাড়া বাস কিংবা রেলে ময়মনসিংহ গিয়েও সেখান থেকে বাসে বিরিশিরি আসতে পারেন। ময়মনসিংহ পর্যন্ত আন্তঃ নগর ট্রেন এর ভাড়া- প্রথম শ্রেণী ১৮০ টাকা, চেয়ার কোচ ১৩০ টাকা, শোভন ১১০টাকা। ময়মনসিংহ হতে জারিয়া ট্রেন ভাড়া ১৮ টাকা। ময়মনসিংহ জংশন হতে জারিয়া পর্যন্ত ট্রেন এর সময় সূচিঃ সকাল- ৬.১৫ ঘটিকায় সকাল-১১.০০ঘটিকায় বিকাল- ৪.০০ ঘটিকায় রাত- ৮.২০ ঘটিকায় জারিয়া হতে দুর্গাপুর সিএনজি মোটর বাইক দিয়ে যাওয়া যায়। সিএনজি ভাড়া ৪০ টাকা মোটর বাইক ভাড়া ৫০ টাকা। এছাড়া ময়মনসিংহ ব্রিজ এর মোড় হতে আধা ঘন্টা পরপর লোকাল বাস ও চলে ভাড়া ৮০ টাকা। নতুন আগতদের জন্য সরাসরি বাস এ বিশেষত বিআরটিসি তে আসাই ভাল এত ঝামেলা সহ্য করতে পারবেন না।

দুর্গাপুর থেকে যাওয়ার উপায়[সম্পাদনা]

বিজয়পুর, রানীখং, বিজিবি ক্যাম্প এসব ঘুরতে রিক্সা অথবা মোটর সাইকেল ভাড়া করতে হবে। সমেশ্বরী নদী পাড় হয়ে ওপাশে যেতে হবে। নদী পাড় হতে নৌকাকে দিতে হবে জনপ্রতি ৫ টাকা। আর মটর সাইকেল এর জন্য ১০ টাকা। মটর সাইকেল এ গেলে সব ঘুরে আসতে ৬ ঘন্টা মত সময় লাগবে। ১ টা মটর সাইকেলে ২ জন এর ভাড়া পড়বে ৫৫০-৬০০ টাকা। আর রিক্সায় গেলে ২ জন এ খরচ পড়বে ৪০০-৪৫০ টাকা। ফিরতে সময় লাগবে ৮ ঘন্টা মত। তবে রাস্তা মোটর সাইকেলে গেলেই সুবিধা হবে। এতে ঘুরে দেখার মত পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাবে।

দুর্গাপুরে থাকার জায়গা[সম্পাদনা]

  • দুর্গাপুরে থাকার জন্য সবচেয়ে ভালো ব্যবস্থা হলো ইয়ং মেন খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন বা ওয়াইএমসিএ-এর রেস্ট হাউস। এখানকার কক্ষ ভাড়া ৩০০-৫০০ টাকা। যোগাযোগ :০১৭১৬২৭৭৬৩৭, ০১৮১৮৬১৩৮৯৬।
  • এ ছাড়া আছে ইয়ুথ ওমেন খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন বা ওয়াইডব্লিউসিএ পরিচালিত আরেকটি রেস্ট হাউস। এখানকার কক্ষ ভাড়া ৩০০-৬০০ টাকা। যোগাযোগ :০১৭১১০২৭৯০১, ০১৭১২০৪২৯১৬
  • উপজাতীয় কালচারাল একাডেমী গেস্ট হাউস
  • উপজেলা পরিষদ ডাকবাংলো
  • দুর্গাপুরে সাধারণ মানের কিছু হোটেল আছে।

=স্বর্ণা গেস্ট হাউস (০১৭২৮৪৩৮৭১২), =হোটেল সুসং (০১৯১৪৭৯১২৫৪), =হোটেল গুলশান (০১৭১১১৫০৮০৭) ইত্যাদি।

এসব হোটেলে ১৫০-৪০০ টাকায় থাকার ব্যবস্থা আছে। খাওয়া দাওয়ার ব্যাবস্থাও তারাই করে দেয়।

এছাড়া দুর্গাপুরের একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন মেহমান হিসাবে বিনামুল্যে পর্যটকদের সার্ভিস দিয়ে থাকে। প্রয়জনে তাদের ফেইসবুক পেজ এ মেসেজ বা তাদের নাম্বার এ কল দিয়েও সেবা নেয়া যায়। ফেইস বুক পেইজ> সুসং দুর্গাপুর, নেত্রকোনা।:Sushung Durgapur, Netrakona এই নামের গ্রুপ ও আছে সেখানেও যোগাযোগ করতে পারেন

  1. http://www.netrokona.gov.bd/node/399461 নেত্রকোনা জেলা, দূর্গাপুরের মনোরম সুন্দর চীনা মাটির পাহাড়