বিষয়বস্তুতে চলুন

ব্যবহারকারী:Oindrilla Maity Surai/আভা মাইতি

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

আভা মাইতি (Abha Maiti) (আ. ১৯২৩ সালের ২২ শে এপ্রিল - ৩রা জুলাই, ১৯৯৪) বতর্মান পূর্ব মেদিনীপুর জেলার, খেজুরী থানার কলাগেছিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[১] স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং রাজনৈতিক কর্মী হওয়ার পাশাপাশি তিনি ছিলেন সাংবাদিক, একাধিক পত্রপত্রিকার সম্পাদক, একাধিক সংগঠনের সভাপতি এবং প্রতিষ্ঠাতা। তাঁকে "অগ্নীকন্যা" অভিহিত করা হত।[২]

তাঁর পিতা ছিলেন বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী,দেশসেবক,শিক্ষক  এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী নিকুঞ্জ বিহারী মাইতি এবং মাতা অহল্যা দেবীও ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী।[৩] তিনি অবিবাহিতা ছিলেন সারাজীবন। কলকাতার পি-১৪, দুর্গাচরণ মিত্র রোড-এ ছিল তাঁর স্থায়ী বসবাস। ভালবাসতেন বই পড়তে এবং রান্না করতে। [৪]

শিক্ষা

[সম্পাদনা]

কলাগেছিয়া গ্রামে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে বেথুন বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও শেষে ১৯৪০ সালে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৪২ এবং আই.এ  পাশ করেন প্রাইভেটে।এরপর ১৯৪৪ এ বেথুন থেকে বি এ এবং ১৯৪৭ এল এল বি পাশ করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।[৫]

রাজনৈতিক জীবন

[সম্পাদনা]

শিক্ষা শেষ দেশের কাজে মন দেন আভা। ১৯৫২-৫৮ প্রদেশ কংগ্রেস মহিলা শাখার সম্পাদিকা এবং নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির সদস্যা হন। ১৯৬২ এবং ১৯৬৭ সালে দুবার ভগবানপুর কেন্দ্রে জয়ী হয়ে ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়ের মন্ত্রী সভায় উদ্বাস্তু কল্যান- পূনর্বাসন স্বরাষ্ট্র দপ্তরের (নির্বাচন এবং সংবিধান) ভারপ্রাপ্ত পূর্ণ মন্ত্রী হন।[৬] ১৯৭৭ সালে পাঁশকুড়া লোকসভা কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করে মোরারজি দেশাই মন্ত্রী সভায় শিল্প দপ্তরের রাষ্ট্র মন্ত্রী হন।[৭] ১৯৭১ সালে কানাডার ফেডেরেশন অফ প্রোফেশনাল উইমেন-এর দ্বাদশ কংগ্রেসে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া, ইওরোপেও গিয়েছেন।[৮] বাংলাদেশের সপক্ষে জনমত গঠনের জন্য পাড়ি দিয়েছেন তাইল্যান্ড, জাপান, আরব আমিরশাহী, সুইৎজারল্যান্ড, জার্মানি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। [৯]

এডমন্টন জার্নালে ছাপা সাক্ষাৎকার

[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালের জুলাই মাসে ছাপা কানাডার এডমন্টন জার্নাল-এর এক সাক্ষাৎকারে আভা মাইতি জানিয়েছিলেনঃ বাংলাদেশ থেকে আসতে থাকা শরণার্থীদের বিরত করার জন্য অবিলম্বে পরিস্থিতির মোকাবিলা প্রয়োজন এবং "তাঁরা যেন সম্পূর্ণ অক্ষত অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করতে পারেন তার জন্য প্রতিশ্রুতির প্রয়োজন"।[১০] তিনি আরও জানান, "ইয়াহিয়াকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে এবং বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে"। এই সাক্ষাৎকারের কথা ছাপা হয়েছিল ১৫ই জুলাই, ১৯৭১-এর হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড-এর পাতায়,[১১] যাতে বলা হয়েছে, আভার দৃঢ় বিশ্বাস, "পূর্ব বাংলার অশান্ত পরিস্থির এটিই একান্ত সমাধান"। [১২] হিন্দুস্তান স্ট্যান্ডার্ড-এ আরও লেখা হয় যে, সারা বিশ্বের কাছে আভা বাংলাদেশের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য আর্জি জানিয়েছেন এবং জোরের সঙ্গে জানিয়েছেন "পাকিস্তান যেন পূর্ব বাংলা থেকে তার হাত সরিয়ে নেয়"। [১৩] আভা বলেছিলেন ভারতের মত নয় যুদ্ধে গিয়ে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করা; বরং সারা বিশ্বের সম্মীলিত মতকে গঠিত করেই এর মিমাংসার কথা ভাবা হয়েছে-- "সৈন্যের দ্বারা এর সমাধান হতে পারেনা"। [১৪]



সমাজসেবা

[সম্পাদনা]

আজন্ম জাতপাত, ধর্ম, সংকীর্ণতার উর্দ্ধে থাকা আভা নারী কল্যাণ,শিক্ষার সম্প্রসারণ,গ্রামীন রাস্তাঘাট সংস্কার সহ বহু সামাজিক কাজকর্ম করেছেন। সমাজের দুর্বল শ্রেণী এবং গ্রামীণ মানুষের উন্নয়নের জন্য প্রভূত কাজ করেছেন আজীবন।[১৫] কূল মিলনী মহাবিদ্যালয় ও নরঘাটে ( মাতঙ্গিনী সেতু)  সেতু নির্মানে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন।[১৬]

গ্রন্থরচনা এবং সম্পাদকীয় কাজকর্ম

[সম্পাদনা]

সমাজ ও নারী (১৯৭৮) আভার রচিত গ্রন্থ।[১৭] এছাড়া তিনি সত্যাগ্রহ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন; যুগের ডাক পত্রিকার সম্পাদকীয় বোর্ডের চেয়ারম্যানও ছিলেন।[১৮]

বিবিধ পদের দ্বায়িত্বভার

[সম্পাদনা]

পশ্চিমবঙ্গ খাদি কেন্দ্রের যুগ্ম সম্পাদক থেকে খাদির প্রসারে ছিল তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।[১৯]



বিরোধীপক্ষের হাতে নিগ্রহ

[সম্পাদনা]

যদ্দুর জানা যায়, বিরোধী কম্যুনিস্ট বিধায়কেরা তাঁর সিটের ওপর আলতা মাখিয়ে রেখে তাঁকে অপমান করতে চেয়েছিলেন।[২০]