ব্যবহারকারী:এ বি এম ফয়সাল হোসেন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

চাপালিশ[সম্পাদনা]

চাপালিশ
চাপালিশ


চাপালিশ, চামল, চাম্বল, চাম্বুল বা চাম কাঁঠাল -ইংরেজিতে Monkey Jack বলে। বৈজ্ঞানিক নাম Artocarpus chama, সমনাম Artocarpus chaplasha, Moraceae পরিবারের উদ্ভিদ। বর্তমানে বিপন্ন উদ্ভিদ চাপালিশ। নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে প্রাকৃতিক অবস্থায় চাপালিশের বংশবৃদ্ধি সীমিত হয়ে গেছে।

প্রায় কাঁঠালের মতো দেখতে তুলনামূলক ছোট আকৃতির এই ফলটিকে মানুষেরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলেও বন্যপ্রাণীর খাদ্য হিসেবেই এটি প্রসিদ্ধ। এটি একটি পত্রঝরা গাছ, এটি ৩০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। গাছের কচি কাণ্ড রোম দিয়ে ঢাকা। ডাল ভাঙলে দুধের মতো ল্যাটেক্স বের হয়। বোঁটাযুক্ত, উপপত্র বড় এবং এটি কাণ্ডকে ঘিরে রাখে। চারা, চারার চেয়ে বড় গাছ এবং নতুন ডগার পাতা অনেক বড়। ফুল ও ফল আসে এপ্রিল থেকে আগস্টে।

আবাসস্থল[সম্পাদনা]

পত্রঝরা এবং চিরহরিৎ বন এর আবাসস্থল। বাংলাদেশে মধুপুর, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেটের বনভূমিতে পাওয়া যায়। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে অনেক চাপালিশ গাছ রয়েছে। ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের ৩৫নং সেকশনে লাগানো চাপালিশের গাছ সংরক্ষিত অবস্থায় দেখা যায়। ময়মনসিংহের মধুপুরের রসুলপুরের বনে চাপালিশ গাছ আছে। এ ছাড়া ময়মনসিংহের মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সামনে কয়েকটি চাপালিশ গাছ রয়েছে।

ভারতের সিকিম, আসাম ও আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ, ভুটান, নেপাল, শ্রীলংকা, চীন, লাওস, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় এ গাছ জন্মে।

ফল[সম্পাদনা]

চাপালিশ গাছের ফল খাওয়া যায়। স্বাদে হালকা টক-মিষ্টি। বীজ আগুনে পুড়িয়ে খাওয়া যায়। স্বাদে আনেকটা চীনা বাদামের মতো। ফল হাতির খুবই প্রিয় খাবার। সারি কাঠ মূল্যবান, হলুদাভ বাদামি, শক্ত, মজবুত, টেকসই ও মসৃণ। দরজা-জানালা, আসবাবপত্র এবং রেল পথের স্লিপার তৈরির জন্য বেশি ব্যবহৃত হয়। এর জাতিতাত্ত্বিক ব্যবহার জানা নেই।

বন এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে চাপালিশের বীজ থেকে চারা ও গাছ জন্মায়। জুন-জুলাই মাসে সংগৃহীত পরিপক্ব ফল ৫ থেকে ৬ দিন রেখে দিলে পচে যায়। এ অবস্থায় পানিতে ধুয়ে বীজ বের করে পলিব্যাগে বপন করতে হয়।