বেনিন-রাশিয়া সম্পর্ক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বেনিন-রাশিয়া সম্পর্ক
মানচিত্র Benin এবং Russia অবস্থান নির্দেশ করছে

বেনিন

রাশিয়া

বেনিন-রাশিয়া সম্পর্ক, (রুশ: Российско-бенинские отношения) বেনিন এবং রাশিয়া এর মাঝে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নির্দেশ করে। ১৯৬০ এর দশকে এই দুই দেশের মাঝে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে বেনিনের একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে এবং বেনিনের রাজধানী কতোনুতে রাশিয়ার একটি স্থায়ী দূতাবাস রয়েছে।

সোভিয়েত যুগে সম্পর্ক[সম্পাদনা]

১৯৬০ সালের ১৮ আগস্ট, সোভিয়েত ইউনিয়ন, দাহোমে প্রজাতন্ত্রকে স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দান করে। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালের ২ জুন এই দুই রাষ্ট্রের মাঝে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়।[১]

তবে সে সময় দাহোমে প্রজাতন্ত্রে, সোভিয়েত ইউনিয়ন এর কোন দূতাবাস ছিল না। তখন টোগোতে অবস্থিত সোভিয়েত দূতাবাসের মাধ্যমে দাহোমে প্রজাতন্ত্রের সাথে, সোভিয়েত ইউনিয়ন কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখত। ১৯৬২ সালের ২৪ জুলাই থেকে সোভিয়েত ইউনিয়ন দাহোমে প্রজাতন্ত্রের জন্যেও টোগোর সোভিয়েত দূতাবাস ব্যবহার করা শুরু করে।

১৯৬৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বেনিনে সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের দূতাবাস চালু করে। সেসময়ই সোভিয়েত ইউনিয়ন অ্যালেক্সান্ডার নিকিটিচ আব্রামোভকে বেনিনে (তৎকালীন দাহোমে প্রজাতন্ত্র) তাদের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেয়।[২][৩]

প্রারম্ভিক অবস্থায় এই দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক সর্বনিম্ন অবস্থায় ছিল। যদিও ১৯৭২ সালের অক্টোবর মাসে, ম্যাথিউ কেরেকু এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, বেনিনের ক্ষমতায় এলে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটে। তখন ধীরে ধীরে বেনিন এবং রাশিয়ার মধ্যকার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়। ক্ষমতায় আসার পর ১৯৭৪ সালে কেরেকু বলেন, দাহোমে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ অনুসরণ করবে। এই ঘোষণার পর, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং দাহোমের মধ্যকার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়। এর পাশাপাশি সোভিয়েত ইউনিয়ন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কেরেকুর গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মিত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়।[৩][৪] ১৯৭৫ সালের ৩০ নভেম্বর কেরেকু দাহোমে প্রজাতন্ত্র বিলুপ্ত ঘোষণা করেন এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বেনিন প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। সোভিয়েত ইউনিয়ন সেসময় বেনিনকে স্বীকৃতি দেয় এবং বেনিনের মিত্র হিসেবেই থাকে।

১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত বেনিনের রাজধানী এবং বন্দর কতোনুতে সোভিয়েত নৌবাহিনী বেশ কয়েকটি মহড়া চালায়। এই সময়কালে সোভিয়েত জাহাজগুলো কতোনুতে ৪৬২ টি নৌ মহড়া চালায়।[৫]

১৯৮৬ সালের নভেম্বর মাসে কেরেকু এক রাষ্ট্রীয় সফরে সোভিয়েত ইউনিয়নে যান। সফরে তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মিখাইল গর্বাচেভ এর সাথে বৈঠক করেন। তার সেই সফরে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং সমন্বয় বৃদ্ধির বিষয়ে চুক্তি সাক্ষরিত হয়।[৬]

রাশিয়ান ফেডারেশন যুগে সম্পর্ক[সম্পাদনা]

১৯৯১ সালের ২৬ ডিসেম্বর সোভিয়েত ইউনিয়ন বিলুপ্ত হয়ে যায় এবং রাশিয়াসহ মোট ১৫ টি পৃথক এবং স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হয়। তবে এই ১৫ টি রাষ্ট্রের মধ্যে রাশিয়াই ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্তরাধিকার এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন সংক্রান্ত সমস্ত কিছুর অধিকার রাশিয়া পায়। বিভিন্ন দেশে অবস্থিত সোভিয়েত দূতাবাস তখন, রুশ দূতাবাস হিসেবে স্বীকৃত হয়।

১৯৯২ সালের ৯ জানুয়ারি বেনিন রাশিয়াকে সোভিয়েত ইউনিয়নের উত্তরাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং রাশিয়ার সাথে তাদের সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করে।[৩] সোভিয়েত বিলুপ্তির পর, বেনিনে অবস্থিত সোভিয়েত দূতাবাসটিই পরবর্তীতে রুশ দূতাবাসে রূপান্তরিত হয়।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. জিন্সবার্গস, জর্জ; স্লুসার, রবার্ট এম. (১৯৮১)। A calendar of Soviet treaties, 1958-1973ব্রিল। পৃষ্ঠা ৭৯৫। আইএসবিএন 90-286-0609-2। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১৮ 
  2. "Послы Союза Советских Социалистических Республик В Странах Африканского Региона" [Ambassadors of the Union of Soviet Socialist Republics in the Countries of the African Region] (রুশ ভাষায়)। ওয়ার্ল্ডওয়াইড হিস্টোরিক্যাল প্রোজেক্ট। ২৫ এপ্রিল ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুলাই ২০০৯ 
  3. "Российско-бенинские отношения" [Russian-Beninese relations] (রুশ ভাষায়)। রুশ দূতাবাস, বেনিন। ২০০৯-০২-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১৮ 
  4. "Benin Hazardous Waste"আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়। ১ ডিসেম্বর ২০০০। ২০০৯-০৬-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১৮ 
  5. হার্কাভি, রবার্ট ই. (১৯৮৯)। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইন্সটিটিউট, সম্পাদক। Bases Abroadঅক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা ৫৩, ৬১। আইএসবিএন 0-19-829131-0। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৭-১৮ 
  6. "Бенин (Страны мира 1987 год)" [Benin (World Countries 1987)] (রুশ ভাষায়)। Strani.ru। ৯ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০০৯ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]